নিরাপদ সড়ক চাই’ একটি ভুল শিরোনামের আন্দোলন
![নিরাপদ সড়ক চাই’ একটি ভুল শিরোনামের আন্দোলন](https://priyoaustralia.com.au/wp-content/uploads/2019/11/aajkaal-1-890x395_c.jpg)
ফজলুল বারী: বাংলাদেশে ভুল শিরোনামে একটি জনপ্রিয় আন্দোলন চলমান রয়েছে। তাহলো নিরাপদ সড়ক চাই। সড়ক দূর্ঘটনায় প্রিয়তমা স্ত্রীর মৃত্যুর পর প্রথম দিকে প্রায় একক উদ্যোগ প্রচেষ্টায় আন্দোলনটির সূচনা করেন এক সময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। বাংলাদেশে যেহেতু সড়কে নিত্য মৃত্যুর মিছিল চলে সে কারনে আন্দোলনটি দেশজুড়ে বিশেষ জনপ্রিয়। সময়ে সময়ে এটির জনপ্রিয়তা তুঙ্গে উঠলে সেটি থামিয়ে দেয় রাষ্ট্র। কারন সড়ক মাফিয়াদের অবস্থান রাষ্ট্র কাঠামোর ভিতরেই। সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকায় সড়ক দূর্ঘটনায় সহপাঠীর ছাত্রছাত্রীদের উদ্যোগে ক্ষোভের অনলে এমন আন্দোলন গড়ে উঠলে সরকার ও রাষ্ট্র কোমলমতি ছেলেমেয়েদের সঙ্গে প্রতারনামূলক নির্দয় আচরন করেছে।
কিন্তু আদতে আন্দোলনের শিরোনামই ভুল। পৃথিবীর কোথায় নিরাপদ সড়ক বলে কিছু নেই। সব সড়কেই দূর্ঘটনা এবং মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। আধুনিক উন্নত বিশ্বে গুরুত্ব দিয়ে নিশ্চিত করা হয় নিরাপদ সড়ক ব্যবহারকারী। সড়ক ব্যবহারকারীরা নিরাপদ আচরন করলেই একটি সড়ক নিরাপদ হয়। দূর্ঘটনা সংঘটনে যেহেতু চালকদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ সে কারনে এ ব্যাপারে উন্নত বিশ্ব নিরাপদ চালক সৃষ্টিতে বেশি মনোযোগী হয়। বাংলাদেশে এই কাঠামোটি দূর্বল-দুর্নীতিগ্রস্ত এবং অনেকটা সেকেলে ধাচের। পথ ব্যবহারকারীরাও অনেক ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাচারী। আইনকানুন খুব কম জানেন। জানার আগ্রহও তাদের কম বলা চলে। দূর্ঘটনার সঙ্গে জড়িত গাড়ি চালক-পথচারী পরষ্পরকে দোষাদুষিতে পটু। আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রতিদিন দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব ক্তৃতা দেন। কিন্তু তাঁর নেতৃত্বাধীন বিআরটিএ দেশের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম।
বাংলাদেশে সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে সম্প্রতি প্রায় প্রচার প্রস্তুতিবিহীন একটি আইন কার্যকর হয়েছে। এমন একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন কেনো এভাবে প্রায় প্রচার প্রস্তুতিবিহীন ভাবে কার্যকর হলো এর কারন জানলেও চমকে যাবে ভবিষ্যত প্রজন্ম। স্বেচ্ছাচারী সড়ক মাফিয়াদের বসবাস সরকার ও রাষ্ট্রের মধ্যে। এরা যে কোন সময় ধর্মঘট ডেকে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়ে সরকারকে বিপদে ফেলে দেয়। রাস্তায় যানবাহন থামিয়ে চালকদের মুখে কালি মাখিয়ে দেবার মতো প্রতিকারবিহীন অবিশ্বাস্য নৈরাজ্যের ঘটনাও ঘটেছে। বাংলাদেশে এবং বাইরে অনেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আয়রন লেডিও বলেন। বলা চলে এই সড়ক মাফিয়াদের সঙ্গে দেশের প্রধানমন্ত্রীকেও বুঝেশুনে আচরন করতে হয়। তাই সংসদে পাশ হবার পর ঘুম পাড়িয়ে রাখতে হয় আইনটিকে! প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হঠাৎ করে ঘোষনা দিলেন পহেলা নভেম্বর থেকে আইনটি কার্যকর হবে। এরপর সক্রিয় হয় রাষ্ট্রযন্ত্র তথা পুলিশ।
এই আইনটি কার্যকর করতে সরকারি প্রশাসনিক শক্তির সঙ্গে মিডিয়ার ভূমিকাটিও গুরুত্বপূর্ন। কিন্তু দেশের মিডিয়ার নানা রিপোর্ট পড়ে দেখে মনে হয়েছে অনেক বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের স্পষ্ট ধারনার অভাব রয়েছে। একটি টিভি রিপোর্টার তার রিপোর্টে বলছিলেন ‘অস্বাভাবিক হারে জরিমানার বিধান করা হয়েছে’! প্রিয় সাংবাদিক ভাই, আমরা যারা বিদেশে থাকি তারা যে সড়কে আইন মেনে চলতে বাধ্য থাকি এর কারনও জরিমানার পরিমানের উচ্চহার। ভয় না থাকলে সংসারের সাপ্তাহিক বাজেটে টান পড়ার ঝুঁকি আছে বলেই আমরা সড়কে আলিফের মতো সোজা হয়ে চলি। বাংলাদেশও এখন দুই-পাঁচশ টাকার জরিমানা লোকজনের গায়ে লাগেনা। বেআইনি রাস্তা পারাপারে আমাদের জরিমানার পরিমান বাংলাদেশের চার হাজার টাকার বেশি।
জরিমানার ভয়টি সারা বিশ্বে এমনভাবে সাজানো হয় যাতে একজন দ্বিতীয়বার কেউ ভুলটি না করেন। আমাদের ড্রাইভিং’এর যে কোন জরিমানার পরিমানই বাংলাদেশের টাকায় কুড়ি-পঁচিশ হাজার টাকার কম হয়। দেড় দুই লাখ টাকার জরিমানা, ড্রাইভিং লাইসেন্স ৬ মাসের জন্যে সাসপেন্ড বা বাতিলের বিধান আছে। নতুন আইনে চালকদের ডিমেরিটস পয়েন্টেসের বিধানের কথা বলা হয়েছে। এটিরও দুর্নীতিমুক্ত কার্যকর করার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু যেখানে পুলিশ কর্তারাই পুলিশের সততা নিয়ে ওয়াকিফহাল, পুলিশ সদস্যের গায়ে ক্যামেরা সহ নানাকিছু লাগানোর চিন্তা করেন সেখানে আইন যে কিভাবে কার্যকর করা যাবে তা বলা মুশকিল। আমাদের মানে অস্ট্রেলিয়ায় এক একটি পয়েন্ট ডিমেরিটস হয়ে গেলে তা ফেরত আসে তিন বছর চারমাস পর। অর্থাৎ আমাদের একজন চালকের ১৩ টি পয়েন্ট খোয়া গেলে এই তিন বছর চারমাস আমরা গাড়ি চালাতে পারবোনা।
আমাদের রেড পি, গ্রীণ পি এবং ফুল লাইসেন্স এই তিনধাপে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়া হয়। প্রথম ড্রাইভিং টেস্টে পাশ করার পর এক বছরের জন্যে দেয়া হয় রেড পি তথা প্রভিশনাল লাইসেন্স । একজন রেড পি ধারী চালকের ডিমেরটিস পয়েন্ট তিনটি। অর্থাৎ এমন একজন চালক স্পিডিং এর মতো অপরাধে ধরা পড়লে ওই চালকের কুড়ি হাজার টাকার জরিমানার পাশাপাশি তিনটি পয়েন্টই খোয়া যাবে। পরবর্তী তিন মাস এই চালক গাড়ি চালাতে পারবেননা। রেড পি ধারী চালক এক বছর পর অনলাইনে একটি হেজার্ড টেস্ট দিয়ে পাশ করে দুই বছরের জন্যে গ্রীন পি লাইসেন্স পান। গ্রীণ পি ধারী চালকের পয়েন্ট ৬ টি। অর্থাৎ দুটি ট্রাফিক অপরাধে ধরা পড়লে একজন গ্রীন পি লাইসেন্সধারী ৬ মাস গাড়ি চালাতে পারবেননা। রেড ও গ্রীণ পি লাইসেন্সধারী চালকরা এদেশে বাস-ট্রাক চালাতে পারেননা। বাস-ট্রাক চালাতে বিশেষ প্রশিক্ষণের বিশেষ লাইসেন্স পেতে হয়।
একটা তথ্য প্রায় দেশের বিভিন্ন মিডিয়ায় পড়ি-শুনি অমুকে অমুকে আইন জানেননা। এসব অজুহাত আমাদের জীবনে নেই। আইন জেনেশুনে রাস্তায় নামা আমাদের দায়িত্ব। ড্রাইভিং শেখার আগেই আমাদের অনলাইনে একটি লারনার টেস্ট দিয়ে পাশ করতে হয়। সেখানেই আইন জানার ব্যবস্থা। এই চর্চাটিও নিজ উদ্যোগে করতে হয় অনলাইনে। যানবাহন মালিকরা প্রায় একটি কথা বলেন সরকার দক্ষ চালক তৈরি করছেনা। অথচ সারা বিশ্বে দক্ষ চালক তৈরির পুরো কার্যক্রমটিই বেসরকারি উদ্যোগের। পৃথিবীর কোথাও সরকার এটি করেনা। ড্রাইভিং শেখার গাড়িটিই একেকটি ড্রাইভিং স্কুল। যিনি ড্রাইভিং শেখান তার প্রথম যোগ্যতাটি হচ্ছে পূর্ববর্তী পাঁচবছর তার কোন ড্রাইভিং অপরাধ থাকতে পারবেনা। ড্রাইভিং শিখতে প্রতি ঘন্টায় পঁচিশ-তিরিশ হাজার টাকা খরচ করতে হয়। ড্রাইভিং শিক্ষক সিদ্ধান্ত নেবেন তার ছাত্র কখন পরীক্ষায় পাশ করার উপযুক্ত। এই পরীক্ষার পরীক্ষকই শুধু সরকার নিযুক্ত।
এই পরীক্ষক পরীক্ষার দিন একজন প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত পরীক্ষার্থী চালককে নিয়ে ব্যস্ততম কোন একটি রাস্তায় গাড়ি চালানোর পরীক্ষা নিতে বেরোন। ৩০-৪৫ মিনিটের ড্রাইভিং-পার্কিং পরীক্ষায় শতভাগ সন্তুষ্ট হলে পাশ নাম্বার দেন। দুর্নীতি এবং প্রভাবমুক্ত এই কার্যক্রমের কারনেই এখানে সড়ক এত নিরাপদ। পথে নিরাপদ গাড়ি চালানোর উপযুক্ত নন অথচ গাড়ি চালানোর লাইসেন্স পেয়ে গেছে এমন কেউ শনাক্ত হলে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষকের শুধু চাকরি যাবেনা, বড় জেল-জরিমানাও হবে। এদেশে কেউ সে ঝুঁকি নেয়না। বাংলাদেশ থেকে যত ছাত্র অস্ট্রেলিয়ায় পড়তে আসেন তাদের নিরানব্বুই ভাগের হাতে বাংলাদেশি একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকে। অথচ এদের খুব কম সংখ্যক বাংলাদেশে গাড়ির হুইল ধরেছেন। গাড়ি চালানো দূরে থাক। বাংলাদেশের বিআরটিএ’র দুর্নীতি এভাবে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশে লাইসেন্সপ্রাপ্তি, লাইসেন্সরক্ষার পুরো কার্যক্রমটি দুর্নীতিমুক্ত না করা পর্যন্ত পথ নিরাপদ হবেনা।
সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে ছাত্রদের আন্দোলনের সময় কোমলমতি বাচ্চারা তাদের বড়দের হাতে প্রতারিত হয়েছে। বাচ্চারা লাইসেন্সের মেয়াদ দেখেছে। কিন্তু তারা জানেইনা এসব লাইসেন্সের প্রায় শতভাগ ভূয়া। এরা যথাযথ প্রশিক্ষনের মাধ্যমে ড্রাইভিং পরীক্ষায় পাশ করে প্রাপ্ত লাইসেন্সধারী নয়। শুধু চালকের লাইসেন্স নয় গাড়ির ফিটনেসের নানাকিছু দুর্নীতিগ্রস্ত বাংলাদেশে। আমাদের প্রতিটি গাড়ির প্রতিবছর রেজিষ্ট্রেশনের সময় বাংলাদেশের প্রায় দেড় লক্ষ বা এরচেয়ে বেশি টাকা লাগে। প্রথম গুরুত্বপূর্ন পিঙ্ক স্লিপ। এই পিঙ্ক স্লিপ দেয় সরকার অনুমোদিত কোন ওয়ার্কর্সশপ। গাড়ির চাকা, ব্রেক, ইঞ্জিন, লাইট-ইন্ডিকেটর সহ নানান খুঁটিনাটি পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় পিঙ্ক স্লিপ পেতেই পঞ্চাশ হাজার টাকা লেগে যায়। এরপর আসে গ্রীণ স্লিপ। এটি মূলত সড়ক নিরাপত্তার ইন্সুরেন্স। এই গাড়ি কোন দূর্ঘটনায় পড়লে দূর্ঘটনায় শিকারদের চিকিৎসা বা পুনর্বাসনে গ্রীণ স্লিপের টাকা কাজে লাগানো হয়।
বাংলাদেশে সম্প্রতি দুই গাড়ির প্রতিযোগিতায় হাত হারানো পরে মারা যাওয়া এক যুবকের ক্ষতিপূরন আদায়ে সর্বোচ্চ আদালতকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে। কিন্তু দেশে এই গ্রীণ স্লিপের ব্যবস্থা থাকলে এরজন্যে কারও কাছে যাবার দরকার পড়তোনা। বছর দুই আগে সিডনিতে বাংলাদেশি দুই ছাত্র এক দূর্ঘটনায় মারা গেলে গ্রীন স্লিপের টাকাতেই তাদের লাশ দেশে পাঠানো হয়েছে। চালকের অভিজ্ঞতা অনুসারে বছরে এই গ্রীণ স্লিপের জন্যে প্রতিটি গাড়িকে পঞ্চাশ থেকে আশি হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ করতে হয়। গাড়ির বার্ষিক রেজিস্ট্রেশন ফী কুড়ি হাজার টাকার বেশি। কিন্তু আপনি রেজিস্ট্রেশনের জন্যে গেলে সরকারি কর্তৃপক্ষ অনলাইনে আগে দেখবে গাড়িটির পিঙ্ক স্লিপ-গ্রীণ স্লিপ করা হয়েছে কিনা। এদেশে পেনশনারদের গাড়ির রেজিস্ট্রেশন ফী লাগেনা।
প্রতিটি গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নবায়নে বিপুল টাকাকড়ির বিষয় জড়িত থাকায় এখানে একজন লোক পারত একাধিক গাড়ি ব্যবহার করেননা। প্রতিটি গাড়ির সঙ্গে আবার মাসিক ইন্সুরেন্স এবং বার্ষিক রোডসাইট এসিটেন্স ফী জড়িত। সম্পূর্ন দুর্নীতিমুক্ত এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশ বিপুল পরিমান আয় করে। এসব টাকাপয়সা নিয়মিত রাস্তা মেরামতে, নতুন সড়ক নির্মানে কাজে লাগানো হয়। জরিমানার আয় সরকারের রাজস্ব আদায়ের বড় একটি মাধ্যম। অস্ট্রেলিয়ার এসব বিষয় লেখায় উল্লেখ করলে অজুহাত মাস্টার অনেকে বলার চেষ্টা করেন, বাংলাদেশ আর অস্ট্রেলিয়া এক নয়। কিন্তু বাস্তব হচ্ছে পথ দূর্ঘটনায় মানুষ মারা গেলে সে বাংলাদেশ হোক বা অস্ট্রেলিয়া হোক তা সমান মর্মন্তুদ। আহতদের অঙ্গহানি সারাজীবনের জন্যেই বেদনার। সাইকেল-মোটরসাইকেল চালকের হেলমেট, গাড়ির চালক-যাত্রীদের সিটবেল্ট সংশ্লিষ্টদের নিরাপত্তার জন্যেই বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সাইকেল-মোটর সাইকেল দূর্ঘটনায় কারো মাথায় আগুন লাগলে তাকে আর বাঁচানো যায়না। কিন্তু বাংলাদেশের অজুহাত মাস্টাররা বলার চেষ্টা করেন গ্রামের রাস্তার মোটর সাইকেল চালাতে হেলমেট ব্যবহার না করলেও চলে! মাথায় আঘাত লাগলে তা গ্রাম হোক শহর হোক সবক্ষেত্রেই মৃ্ত্যঝুঁকি সমান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে স্কুল পর্যায়ে ট্রাফিক আইন শেখাতে তাগিদ দিয়েছেন। বাংলাদেশে এর বাস্তব অবস্থা কী জানিনা, অস্ট্রেলিয়া প্রাইমারী স্কুলে ভর্তির পরই বাচ্চাদের নিয়ে শিক্ষকরা প্রায় রাস্তায় বেরোন। রাস্তা পারাপার সহ নানাকিছু শেখানো হয় তখন থেকে। পার্কিং নৈরাজ্য বড় একটি সমস্যা বাংলাদেশে। শহরে পার্কিং ব্যয়বহুল হওয়াতে আমরা যে কতদূরে গাড়ি রেখে হেঁটে-বাসে-ট্রেনে যাই তা আমাদের দেশের সাহেবরা জানেননা। অথচ এই সাহেবরাই বিদেশে এলে আমাদের সঙ্গে হাঁটেন।
মানুষের হাঁটার ফুটপাথ দখল করে আপনি বেআইনি ব্যবসা বসাবেন আর তুলে দিতে গেলে নাগরিক অধিকার, পেটে লাত্থি মারার অভিযোগ করবেন এসব আইনানুগ বলপ্রয়োগের মাধ্যমে বন্ধ করতে হবে। কারন গ্রামে এখন কৃষিমজুর পাওয়া যায়না। শাকসব্জি লাগিয়েই যে কেউ গ্রামে থেকেই এখন স্বচ্ছল জীবন কাটাতে পারে। কাজেই কোথাও কোন পথে কারও কোন বেআইনি অজুহাত শোনা যাবেনা। আরকটি বিষয় উল্লেখ করে এ লেখা শেষ করি। আসাদুজ্জামান মিয়া পুলিশে থাকতে হাস্যকর একটি কাজ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন পথে পথে ক্রেডিট-ডেভিট কার্ডে জরিমানা আদায় করা হবে! এই কাহিনীর আবিষ্কারক কে জানা যায়নি।
অথচ দুর্নীতিমুক্ত উন্নত বিশ্বে স্পটে জরিমানা আদায়ের কোন ব্যবস্থা নেই। যেখানে নগদ টাকা সেখানেই দুর্নীতি-দরকষাকষির সুযোগ। স্পটে আপনি বড়জোর জরিমানার টিকেট দিতে পারেন। এরপর পরিশোধের তারিখ বেঁধে দিয়ে বাসার ঠিকানায় চলে যাবে জরিমানার চিঠি। নির্দিষ্ট তারিখে জরিমানা শোধ না করলে তৃতীয় চিঠি পর্যন্ত জরিমানার পরিমান বাড়তে থাকবে। এরপরও জরিমানা শোধ করলে ফ্রিজ করা হবে ব্যাংক একাউন্ট-টেলিফোন সহ নানাকিছু। মজার বিষয় প্রতিবছর এসব নানাকিছু সরেজমিন দেখতে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য প্রশাসনিক কর্মকর্তা-বিচারক অস্ট্রেলিয়ায় আসেন। এরজন্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বড় অংকের তহবিলের বরাদ্দ দিয়েছেন। কিন্তু তাঁর এসব কর্মকর্তার ব্যয়বহুল বিদেশ ভ্রমনের আউটকাম কী সে পরীক্ষাটিও প্রধানমন্ত্রীর নেয়া দরকার।
Related Articles
সামারে একদিন: পর্ব -১ ওয়াসিম খান পলাশ প্যারিস থেকে
এখানে প্রায় সবাই সামারকে উপভোগ করার আপ্রান চেষ্টা করে । সামার আসে খুব অল্প সময়ের জন্য। দেখতে দেখতে দিন, সপ্তাহ
বড়ু ভড়ু নড়ু
অদ্ভুতুড়ে শিরোনাম। চমকে যাওয়ার কথা। সত্যি তো! ইংরেজী বাংলা অক্ষর সাজিয়ে বা মিলিয়ে কি কথা বলার বা ভাষণ দেওয়ার চেষ্টা
প্রিয় লেখকের পক্ষপাতিত্ব! – জন মার্টিন
এক: ইন্টারনেট আমাদের অনেক কিছু বদলিয়ে দিয়েছে। সারা পৃথিবী হাতের মুঠোয় এনে দিলেও মানুষের সাথে মানুষের দূরত্বটি অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে।