নির্বাচন নয় আরাকান চাই
![নির্বাচন নয় আরাকান চাই](https://priyoaustralia.com.au/wp-content/uploads/2017/05/arakan-890x395_c.png)
১৯৭০ সালে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বাঙ্গালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নির্বাচন পেছাতে বাধ্য করেছিলেন। ফলে সে নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু (১৬৯ আসনের মধ্যে ১৬৭টিতে) নিরঙ্কুশ বিজয়লাভ করেছিলেন। এখন রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ আরো কঠিন ও দীর্ঘস্থায়ী বিপর্যয়ে পড়েছে। মায়ানমারের ধর্মদ্রোহী মগজান্তা তাদের অনুসৃত বৌদ্ধ ধর্মের পবিত্রনীতি জীব হত্যা মহাপাপ’ ভঙ্গ করে আরাকানের রোহিঙ্গা জাতিকে বাঙ্গালি হিসেবে নির্মম হত্যাযজ্ঞ শুরু করেছে। লাখ লাখ দুর্গত রোহিঙ্গা সবকিছু ছেড়ে কোনোমতে বাংলাদেশ সীমানায় প্রবেশ করেছে। এটি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বে আঘাত জেনেও বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসহায় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে মাদার অব হিউম্যানিটি’ খেতাব পেয়েছেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর ন্যায় বাংলাদেশের সকল নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় নিশ্চিত করেছেন। বিশ্বের বিবেকবান জনগোষ্ঠি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে সাধুবাদ জানাচ্ছে এবং একইসাথে নিষ্ঠুর মগজান্তার প্রতি তীব্র ঘৃণা প্রকাশ করছে। এতে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, বাঙ্গালি জাতিসত্ত্বা, বৌদ্ধ ধর্মের পবিত্রনীতি রক্ষা এবং উদ্বাস্তু রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন ইস্যুতে আরাকান দখলের সুবর্ণ সুযোগ এসেছে। এ সুযোগে আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচন স্থগিত রেখে আরাকান দখল করে বাংলাদেশের সীমানা বৃদ্ধি করা উচিত। তাই এমুহুর্তে নির্বাচন নয় আরাকান চাই’ শীর্ষক দিকনির্দেশনা ও পরামর্শ আবশ্যক।
মায়ানমারের নিষ্ঠুর মগজান্তা বৌদ্ধ ধর্মের সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ পবিত্রনীতির অবমাননা করেছে। তারা হাজার হাজার রোহিঙ্গা হত্যা করেছে। নারী ধর্ষণসহ সকল প্রকার জঘন্য মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত করেছে। তাই যত স্বার্থই থাক, বিশ্বের কোনো বিবেকবান জাতি তাদেরকে সমর্থন করার কথা নয়। আর সমর্থন করলেও তাদের মনোবল অতি দুর্বল। এজন্য জাতিসংঘের সমর্থনে ধর্মদ্রোহী মগজান্তাকে রুখে দিয়ে আরাকান দখলে নেয়ার এখনই উপযুক্ত সময়।
জ্ঞানপাপী মগজান্তা রোহিঙ্গাদের মুসলিম না বলে বাঙ্গালি নামে হত্যাযজ্ঞ করেছে। তারা ভালভাবেই জানে, রোহিঙ্গারা বাংলা ভাষাভাষী কিন্তু বাঙ্গালি নয়। তারা প্রাচীনকাল থেকে বাংলা ভাষা ব্যবহার করছে। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ১৯০৭ সালে রোহিঙ্গাদের আরাকান থেকেই বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন নিদর্শন চর্যাপদ আবিস্কার করেছেন। ১৫শ শতকে সৈয়দ আলাওল, কোরেশি মাগন ঠাকুর ও দৌলত কাজীর মতো বাংলা সাহিত্যের বহু কবি-লেখক আরাকানের সভাসদ ছিলেন। এভাবে প্রাচীনকাল থেকে আরাকানে বাংলা ভাষার প্রচলন হয়েছে। তাই বলে তারা বাঙ্গালি নয়। তারা নিজেদেরকে রোহিঙ্গা মুসলিম পরিচয় দেয়। অর্থাৎ মগাজান্তা ইচ্ছেকৃতভাবে বাঙ্গালি জাতিসত্ত্বার অবমাননা করেছে। বাঙ্গালি জাতিকে সংখ্যালঘু মুসলিমের চেয়ে দুর্বল সাব্যস্ত করেছে। এর সঠিক জবাব হল, চর্যাপদের লীলাভূমি আরাকান দখল করে সেখানে বাঙ্গালি জাতিসত্ত্বার বিকাশ ঘটানো।
আরাকানের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, রোহিঙ্গারা প্রাচীনকাল থেকে সেখানে স্বাধীনভাবে বাস করছে। তারা স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কখনো ইংরেজ ও মগদের বশ্যতা স্বীকার করেছে। এছাড়া সবকালেই আরাকান স্বাধীন ছিল। তাই আরাকান বহু সংস্কৃতির স্বাধীন লীলাভূমি। মায়ানমারের মগজান্তা অন্যায়ভাবে আরাকানের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বে আঘাত করেছে। রোহিঙ্গাদের হত্যাযজ্ঞ করে আরাকান রাজ্য দখলে নিয়েছে। লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাঙ্গালি হিসেবে পুশব্যাক করে একইভাবে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বে আঘাত করেছে। এতে বাংলাদেশের ১৬কোটি নাগরিকের উচিত- জাতিসংঘের সমর্থনে আরাকান দখল করে মানবতাবিরোধী মগজান্তাকে উপযুক্ত শিক্ষা দেয়া যে, বাঙ্গালি জাতি সংখ্যালঘু মুসলিমের চেয়ে মোটেও দুর্বল নয়।
সুতরাং রোহিঙ্গা ইস্যুতে বৌদ্ধ ধর্মের পবিত্রনীতি, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও বাঙ্গালি জাতিসত্ত্বা সবই আক্রান্ত হয়েছে। এগুলো রক্ষায় যে কোন নাগরিকের যুদ্ধ করা আবশ্যক। এদিকে বাংলাদেশে একাদশ সংসদ নির্বাচনও নিকটবর্তী হয়েছে। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ নির্বাচনে মেতে উঠেছে। এমতাবস্থায় কোনটি বেশি জরুরী?
লাখ লাখ অসহায় রোহিঙ্গা নারী, শিশু ও বৃদ্ধের চাপ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলেছে। রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের পাহাড়ের ঢালে অবস্থান নিয়ে চরম মানবেতর দিন কাটাচ্ছে। শীতের প্রকোপে তাদের কষ্ট আরো বেড়েছে। যে কোন সময়ে ভয়াবহ মহামারি, পাহাড়ধস বা দুর্ভিক্ষে হাজার হাজার রোহিঙ্গা প্রাণ হারাতে পারে। অথচ বাংলাদেশের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মগজান্তার প্রতি সবিনয় অনুরোধ করা হয়েছে। এতে মগজান্তা আরো ধৃষ্টতা দেখিয়েছে। তারা অভিযোগ করেছে, বাংলাদেশ সরকার বিশাল অঙ্কের ত্রাণের লোভে রোহিঙ্গাদের ফেরত দিচ্ছেনা। তারা জানিয়েছে, চুক্তি সম্পাদনের পর উপযুক্ত প্রমাণ সাপেক্ষে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৩০০রোহিঙ্গা ফেরত নেবে। এভাবে কোনোদিনই রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়া শেষ হবেনা। কারণ রোহিঙ্গা শিবিরে হাজার হাজার গর্ভবতী নারী রয়েছে, যারা প্রতিদিন শতশত শিশু জন্ম দিচ্ছে। মূলত মগজান্তা রোহিঙ্গা নিয়ে বাংলাদেশের সাথে তামাশার খেলা খেলছে। এমতাবস্থায় একাদশ সংসদ নির্বাচন কতোটা যুক্তিযুক্ত? এরপরও নির্বাচন হলে বুঝতে হবে, বাংলাদেশের মানুষ নাভীর নীচের অংশ খোলা রেখে উপরের অংশ ঢাকতে মহাব্যস্ত।
সুতরাং একাদশ সংসদ নির্বাচন স্থগিত রেখে অতিশীঘ্র আরাকান অভিযান করা জরুরী। এজন্য বাংলাদেশের ১৬কোটি নাগরিককে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের মহান চেতনায় ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। সকল বিভাজন-বৈষম্য দূর করে ঘোষণা করতে হবে, ৩০লাখ শহীদ পরিবারকে বঞ্চিত করে বর্তমানে ২লাখ মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভুক্ত থাকলেও আরাকান বিজয়ের পর তা থাকবেনা। তখন শহীদ-গাজী নির্বিশেষে দেশের সবাই মুক্তিযোদ্ধা বিবেচিত হবে। এতে সমগ্র জাতি সহজেই ঐক্যবদ্ধ হবে এবং সকল বাধা পেরিয়ে আরাকান মুক্ত করে ছাড়বে ইনশাল্লাহ।
সিরাজী এম আর মোস্তাক
শিক্ষানবিস আইনজীবী, ঢাকা।
mrmostak786@gmail.com.
Related Articles
‘করোনা’র সময়ের কাহন
কভিড-১৯ বা করোনা নামের ভাইরাসের দর্পিত পদচারণায় বিশ্ব কম্পিত এখন। ধনসম্পদে শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলোও করোনাকে কাবু করতে অপারগ। রাজপুত্র-রাজকন্যা, রাষ্ট্রনায়ক কাউকেই
Request for BAAC Membership Fee
Dear All, Thank you very much for your continuous support!! After all, “we’re proud of what we’ve been able to