শেখ হাসিনাকে আমার কৃতজ্ঞতা

শেখ হাসিনাকে আমার কৃতজ্ঞতা

আমি যখন পায়ে হেঁটে বাংলাদেশ ভ্রমনের সময় রাজাকারের তালিকা সংগ্রহ করতাম তখন অনেকে অবাক হয়ে আমাকে দেখতো। কারন পর্যটকরা সাধারনত প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, নদী-পাহাড়-সমুদ্র এসব দেখতে চায় বেশি। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিয়ে আমার আগ্রহের কারনে অনেকে তখন আমাকে মজা করে ডাকতেন, রাজনৈতিক পর্যটক!

আমি যখন ঢাকার মিডিয়ায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চেয়ে লিখতে শুরু করি, অগ্রজদের সামান্য কয়েকজন এই সাবজেক্ট নিয়ে লিখতেন। এই সাবজেক্ট নিয়ে লেখার লোকজন আমার সম-সাময়িক খুব বেশি যে ছিলেন তাও নয়। লেখার সূত্রেই শহীদ জননী জাহানারা ইমাম, শাহরিয়ার কবীর প্রমুখদের সঙ্গে আমাদের ঘনিষ্ঠতা হয়। আমার আরেকটি ভাগ্য বিচিন্তা, নয়া পদধবনি, প্রিয় প্রজন্ম, জনকন্ঠ এমন সব কাগজে আমি কাজ করেছি যেগুলো ছিল এই বিচারের পক্ষের কাগজ।

এই ইস্যুতে আমরা যে কত লক্ষ শব্দ লিখেছি এর কোন লেখাজোকা নেই। এ নিয়ে জামায়াতের যুদ্ধাপরাধী নেতা যাদের এরমাঝে ফাঁসি হয়ে গেছে তাদের অনুযোগ-ক্ষোভের শেষ ছিলোনা। যুদ্ধাপরাধী কামারুজ্জামান একবার আমাকে এও বলেছিলেন যে, ভারত নাকি আমাদের এসব টাকা দিয়ে এসব লেখায়। আর পাকিস্তান দূতাবাসের এক প্রেস সেক্রেটারি আমাকে বলেছিলেন ভারতীয় পত্রিকাও তাদের বিরুদ্ধে এতো লেখেনা, যতোটা আমরা লিখি। আফগান যুদ্ধের সময় সব সাংবাদিক পাকিস্তানের পেশোয়ারে যাচ্ছিলেন। কিন্তু এসব কথা বলে ঢাকার পাকিস্তানি দূতাবাস তখন আমাকে ভিসা দেয়নি। আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে দিয়ে হাইকমিশনারকে ফোন করিয়েছিলাম। তাও দেয়নি।

এখন কিন্তু যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে লেখার অনেক মানুষ। কিন্তু আমরা যখন স্বল্প সংখ্যক কয়েকজন লিখতাম, তখন এ বিচারের স্বপ্ন দেখতাম, কিন্তু বিচার যে হয়ে যাবে তা মনের থেকে বিশ্বাস করতাম না। কারন বাংলাদেশের সুবিধাবাদী আপোষকামী রাজনীতি। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনের আগে কৌশলগত রাজনীতির নামে জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগের আন্দোলনের সময় সে ধারনা আরও পোক্ত হয়। আওয়ামী লীগের কতো সাংবাদিক যে তখন আমাকে-আমাদের এ ইস্যুতে পড়ে আছি দেখে কতো গালমন্দ করতেন!

২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ হেরে যাবার পর তাদের বোধোদয় হয়। আবার ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যুদ্ধাপরাধীর বিচারের বিষয়টি নির্বাচনী মেনিফেস্টোয় রেখেই নির্বাচন করেছে। বিজয়ী হয়ে বিচারের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তখনো অনেকে বলতেন শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ আদৌ এই বিচার করবে কীনা! আমি শুধু একটা কথাই বলতাম, সাপের লেজে যখন আওয়ামী লীগ পা দিয়েই ফেলেছে, এই বিচার তাদের শেষ করতেই হবে। দীর্ঘ বিচারিক প্রকিয়ার পর এরমাঝে শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার-ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। আওয়ামী লীগের অনেক নেতার দুই নাম্বারি স্বত্তেও শেখ হাসিনার দৃঢ়তার কারনেই এটি সম্ভব হয়েছে। শেখ হাসিনাকে এরজন্য কৃতজ্ঞতা। শহীদ জননী জাহানারা ইমাম সহ এই আ ন্দোলনের নেতাকর্মীদের অভিনন্দন।

fhashi


Place your ads here!

Related Articles

টনি এ্যাবটের অস্ট্রেলিয়া

টনি এ্যাবটের অস্ট্রেলিয়া শুধু মাত্র আনুষ্ঠানিক শপথ বাকি, তারপরই লিবারেল পার্টির প্রধান টনি এ্যাবট অস্ট্রেলিয়ার ২৮ তম প্রধানমন্ত্রী। সর্বশেষ হিসাব

Bangladesh Politics: All evil guided BDRs ! Hunt them!! Hang them!!!

There is no excuse why these evil guided BDRs. will not be hunted and given due punishment. They have not

Why did Russia support the new Hasina government?

It is reported that on 11th January, Russian foreign ministry issued a statement backing the January 5 general elections in

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment