জাতীয় পুরষ্কারপ্রাপ্ত লেখক, কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন আর নেই

জাতীয় পুরষ্কারপ্রাপ্ত লেখক, কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন আর নেই

কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন, গত রোববার (৩ জানুয়ারী ২০২১) বিকেল ৫টায় হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে বনানীর বাসায় তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।

৫০ টিরও বেশি উপন্যাসের লেখক হৃদরোগে ভুগছিলেন। লেখার পাশাপাশি রাবেয়া শিক্ষক ও সাংবাদিক হিসাবে কাজ করেছিলেন। তিনি বাংলা একাডেমির কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন। সাহেবের অবদানের জন্য রাবেয়া ১৯৯৩ সালে একুশে পদক এবং ২০১৭ সালে স্বাধীনতা পদক পেয়েছিলেন।

রাবেয়া মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরের শোলোগার গ্রামের বাসিন্দা। ঢাকার বিক্রমপুরে জন্ম ১৯ ডিসেম্বর, ১৯৩৫ তার মামার বাড়িতে, তিনি তার শৈশবটি তাঁর পরিবারের সাথে পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজারে কাটিয়েছিলেন।

তিনি ১৯৫২ সালের ২৩ জুলাই এটিএম ফজলুল হককে বিয়ে করেন। তাদের সন্তান হলেন ফরিদুর রেজা সাগর, কেকা ফেরদৌসী, ফরিদুর রেজা প্রবাল এবং ফারহানা কাকোলি।

রাবেয়া খাতুন, যিনি রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারের একজন ছিলেন, স্কুল পড়াশোনা শেষ করে কোনও কলেজে পড়াশোনা করতে পারেননি। তিনি ৫০ এর দশকে ছোট গল্প লেখা দিয়ে তাঁর শুরু। তাঁর প্রথম উপন্যাস “নীরশ্রয়”।

জাহানারা ইমামের সাপ্তাহিক “খাওয়াতিন” এ কাজ করার সময় তিনি চলচ্চিত্র পরিচালক ও সম্পাদক ফজলুলের সাথে পরিচিত হন। পরে, তিনি তার স্বামীর সাথে একটি ফিল্ম ম্যাগাজিনে কাজ শুরু করেন এবং এর জন্য লেখার কাজ চালিয়ে যান। তিনি পঞ্চাশের দশকে মহিলাদের জন্য একটি মাসিক “অঙ্গনা” সম্পাদনা করেছিলেন।

রাবেয়া খাতুনের উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে- মধুমতী, সাহেব বাজার, অনন্ত অন্বেষা, রাজারবাগ শালিমারবাগ, মন এক শ্বেত কপোতী, ফেরারী সূর্য, অনেকজনের একজন, দিবস রজনী, সেই এক বসন্তে, মোহর আলী, নীল নিশীথ, বায়ান্ন গলির একগলি, পাখি সব করে রব, সে এবং যাবতীয়, হানিফের ঘোড়া, চাঁদের ফোটা, বাগানের নাম মালনিছড়া, সৌন্দর্যসংবাদ, মেঘের পর মেঘ, যা কিছু অপ্রত্যাশিত, দূরে বৃষ্টি, শুধু তোমার জন্য, কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি, আকাশে এখনো অনেক রাত, মহা প্রলয়ের পর, শহরের শেষ বাড়ি, নষ্ট জ্যোস্নার আলো।

বাচ্চাদের জন্যে তিনি লিখেছিলেন দুঃসাহসিক অভিযান, সুমন ও মিঠুন গল্প, তীতুমীরের বাঁশের কেল্লা, একাত্তরের নিশান, দূর পাহাড়ের রহস্য, লাল সবুজ পাথরের মানুষ, সোনাহলুদ পিরামিডের খোঁজে, চলো বেড়িয়ে আসি, রক্তমুখী শিলা পাহাড়, সুখী রাজার গল্প, হিলারী যখন ঢাকায় আমরা তখন কাঠমুন্ডুতে, রোবটের চোখ নীল৷

রাবেয়া খাতুন বাংলাদেশের ভ্রমণসাহিত্যের অন্যতম লেখক। কর্মজীবনে অনেক মানুষের সান্নিধ্যে এসেছেন তিনি। উদ্বুদ্ধ হয়েছেন যাদের দ্বারা স্মৃতিমূলক রচনার মধ্য দিয়ে তাদের ব্যক্তিত্ব ও বৈচিত্র্যময় ব্যক্তিত্বকে পাঠকের কাছে তুলে ধরেছেন।

রাবেয়া খাতুনের লেখা কাহিনী নিয়ে নির্মিত হয়েছে চলচ্চিত্র ‘মেঘের পর মেঘ’, ‘কখনও মেঘ কখনও বৃষ্টি’, ‘ধ্রুবতারা’। এছাড়া অসংখ্য নাটকও নির্মিত হয়েছে তার লেখা ধরে।

রাবেয়া খাতুন জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্রের গঠনতন্ত্র পরিচালনা পরিষদের সদস্য, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জুরি বোর্ডের বিচারক, শিশু একাডেমির পর্ষদ সদস্যের দায়িত্বও পালন করেন।

বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ, ঢাকা লেডিজ ক্লাব, বিজনেস ও প্রফেশনাল উইমেন্স ক্লাব, বাংলাদেশ লেখক শিবির, বাংলাদেশ কথা শিল্পী সংসদ ও মহিলা সমিতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি।

তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার, হুমায়ূন কাদির স্মৃতি পুরস্কার, বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ পুরস্কার, নাসিরউদ্দিন স্বর্ণপদক, জসিমউদ্দিন পুরস্কার, শেরে বাংলা স্বর্ণপদক, চন্দ্রাবতী স্বর্ণপদক, টেনাশিনাস পুরস্কার, ঋষিজ সাহিত্য পদকসহ আরও বহু পুরস্কারে ভূষিত।

কৃতজ্ঞতা bdnews.com এবং প্রথম আলো


Place your ads here!

Related Articles

Writers three nagorik shangbadikota 2011

‘রাইটসথ্রি নাগরিক সাংবাদিকতা ২০১১’ প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরষ্কার পেলেন সাংবাদিক এস এম নাজমুল হক ইমন ৭ জুলাই ঢাকার আগারগাঁও-এ অবস্থিত আইডিবি

Book: Bangladesh Guide

This report has written in Bangla. Please read attached pdf file for details about this book. 2011/pdf/press_261967518.pdf ( B) 

বাংলাদেশী ইসরাতের কানাডায় ধর্মবিশ্বাস নিয়ে শিশু ও যুব সেবার উপর গবেষনা ও কৃতিত্ব

এডমন্টন, আলবার্টা (কানাডা) নবেম্বর ২৬ঃ কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ম্যাকইউন এর ইয়থ এন্ড চাইল্ড কেয়ার ডিপার্টম্যান্টের স্নাতক চুড়ান্ত বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের গবেষণা

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment