পালিত হলো স্বাধীনতা দিবস ও বঙ্গবন্ধুর জন্মোৎসব

পালিত হলো স্বাধীনতা দিবস ও বঙ্গবন্ধুর জন্মোৎসব

বঙ্গবন্ধু পরিষদ অস্ট্রেলিয়ার আয়োজনে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার নিয়ে পালিত হলো স্বাধীনতা দিবস ও বঙ্গবন্ধুর জন্মোৎসব

অতিথি প্রতিবেদক কায়সার আহমেদ : ২৯শে মার্চ ২০০৮ শনিবার সিডনিতে মহা আড়ম্বরে যৌথভাবে পালিত হলো বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৮৯তম জন্মোৎসব। হলে তিলধরনের জায়গা ছিল না। অনেককে বাহিরে দাড়িয়ে অনুষ্ঠান শুনতে হয়েছে। উৎসব মুখর এই অনুষ্ঠানটিকে সাজানো হয়েছিল তিনটি পর্বে। প্রথম পর্বে ছিল স্বাধীনতা দিবস ও বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শনের উপর আলোকপাত। দ্বিতীয় পর্বে ছিল সিডনির গুনি শিল্পীদের ‘স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ’ বিষয়ক মনোজ্ঞ সঙ্গীতানুষ্ঠান। তৃতীয় পর্বে নৈশ ভোজ ও মুুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারন। অনুষ্ঠানটিতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপসি’ত ছিলেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক অধ্যাপক আবুল হাশেম। সিডনির বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের মধ্যে যারা উপসি’ত ছিলেন তাদের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সভাপতি মিজানুর রহমান তরুন, আওয়ামী লীগ অস্ট্রেলিয়া শাখার সদস্য-সচিব আনিসুর রহমান রিতু, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব অস্ট্রেলিয়ার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নজরুল ইসলাম, একুশ একাডেমির সভাপতি নেয়ামুল বারী নেহাল, ক্যাম্বেলটাউন ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সভাপতি নজরুল ইসলাম ও সাধারন সম্পাদক ফারুক ইকবাল, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন সাধারন সম্পাদক মো: আলাউদ্দিন অলোক, টেম্পেস্ট্রার কর্ণধার বাবলু এবং সিডনিবাসী ওয়েভসাইটের এম.এ.মতিন অন্যতম।

জাতীয় সঙ্গীত ও স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট দাড়িয়ে নিরবতা পালনের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব শুরু হয়। সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মাদ উসমান গনি। পর্বটি পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন সংগঠনের সাধারন সম্পাদক ড. রোনাল্ড পাত্র, তার আহ্বানে সংগঠনের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সহ-সভাপতি ডা. লাভলী রহমান।

Audience2_376387891.jpg

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক আবুল হাশেম বলেন সিডনিতে এসে বঙ্গবন্ধু প্রেমীদের আয়োজিত আজকের অনুষ্ঠানে উপসি’ত হতে পেরে এবং এত লোক সমাগম দেখে আমি আনন্দিত। তিনি বলেন স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধুর ডাকে সারা জাতি একত্রিত হয়েছিল পাকিস্তান হানাদারদের বিরুদ্ধে। আজ দেশ ক্রান্তি লগ্নে, বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রীকে ষড়যন্ত্রমুলক কারাগারে রেখে মিথ্যা মামলা সাজানো হচ্ছে, প্রবাসে থেকে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করতে হবে।

অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা আওয়ামী লীগ অস্ট্রেলিয়া শাখার আহ্বায়ক ড. শামস রহমান ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি : প্রবাসের প্রেক্ষাপটে’ এর উপর বক্তব্য রাখেন। ড. শামসের বক্তব্য প্রাণবন্ত ও বিশ্লেষন ধর্মী ছিল। তিনি তার বক্তব্যের মাঝে দর্শক শ্রোতাদের উদ্দেশ্য করে বলেন আজ আমরা এখানে এসেছি স্বাধীনতা দিবস ও জাতির পিতার জন্মোৎসব পালন করতে। এটা কোন রাজনৈতিক অনুষ্ঠান নয়, এখানে দল-মত নির্বিশেষে সবাই এসেছেন। তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন ‘জয় বাংলা’ ও ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ কোন দলীয় শ্লোগান নয়। এটা কেহ অস্বীকার করতে পারবেন না যে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মাঠ পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রেরনার উৎস ছিল এই শ্লোগান দুটি। যে যে দলই করুন না কেন এমন একজন সেক্টর বা উপ-সেক্টর কমান্ডার বা মুক্তিযোদ্ধা পাওয়া যাবে না যারা এই শ্লোগান দুটি যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার করেননি।

স্বাধীনতা পূর্ব বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি নিয়ে অত্যন্ত প্রশংসনীয় ও তথ্য বহুল লিখিত বক্তব্য পেশ করে

ন পরিষদের অন্যতম প্রবীণ সদস্য ড. নিজামউদ্দিন আহমেদ। তিনি তার বক্তব্যে বলেন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা আজো বাস্তবরূপ নিতে পারেনি। তার স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার জন্য বঙ্গবন্ধুর সৈনিকদের একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। বিশেষ আমন্ত্রনে অনুষ্ঠানে উপসি’ত ছিলেন বঙ্গবন্ধু পরিষদ অস্ট্রেলিয়ার একাংশের সভাপতি ড. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক গুনাবলীর কিছু অংশ তুংলে ধরে বলেন বঙ্গবন্ধুর জন্ম হয়েছিল বাংলাদেশকে স্বাধীন করার জন্য। সভাপতির সমাপ্তি ভাষনে উসমান গনি অনুষ্ঠানে উপসি’ত সবাইকে এবং অনুষ্ঠানের নৈশ ভোজ আয়োজনে বিশেষ অবদান রাখার জন্য জনাব আব্দুস সাদেক, ড. নিজাম, মো: রফিকউদ্দিন, হোসেন আরজু, খন্দকার মেরাজ ও তাদের পত্নীদের বিশেষ ধন্যবাদ জানান।

দ্বিতীয় পর্ব নাচে গানে ভরপুর পরিকল্পিত সঙ্গীতনুষ্ঠানটি সফলতার সাথে পরিচালনা করেন পরিষদের সদস্য আওয়ামী লীগ অস্ট্রেলিয়ার নেতা আল নোমান শামীম ও শাহীন মোহাম্মদ আমানউল্লাহ। অনুষ্ঠানটি ছিল প্রানবন্ত ও উপভোগ্য। জাতির পিতাকে নিয়ে লেখা কবিতা আবৃত্তি করেন বিশিষ্ট কলামিস্ট অজয় দাশ গুপ্ত। গান পরিবেশন করে দর্শক ও শ্রোতাদের মুগ্ধ করেন জনপ্রিয় শিল্পী অমিয়া মতিন, বিপাশা বড়-য়া, অভিজিত বড়-য়া, সুলতানা, রবিন, রুনু রফিক, রেবেকা সুলতানা প্রমুখ। নৃত্য শিল্পী অদিতি বড়-য়া দর্শক মাতিয়েছেন তার মন মাতানো নৃত্য দিয়ে।

তৃতীয় পর্বের আয়োজনে ছিল রাতের খাবার। সংগঠকদের সাথে আলোচনা করে জানা যায় যে এবার তারা কোন ক্যাটারারকে খাবারের দায়িত্ব দেননি। রান্নাবান্নার দায়িত্বে ছিলেন পরিষদের সদস্যদের গৃহিনীবৃন্দ। বিষয়টি প্রশংসার দাবী রাখে বলে অনেকেই মন্তব্য করেন। রাত দশটায় অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।

Shadhinota Dibosh o Bongobondhur Jonmoutsab 2008

News posted by Al Noman Shamim


Place your ads here!

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment