অভ্যর্থনা, প্রতিবাদের পাল্টাপাল্টির ভিতর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পেলেন মর্যাদাপূর্ন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

অভ্যর্থনা, প্রতিবাদের পাল্টাপাল্টির ভিতর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পেলেন মর্যাদাপূর্ন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

ফজলুল বারী, সিডনি: অস্ট্রেলিয়া থেকে প্রথমবারের মতো বড় মর্যাদাপূর্ন একটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার নিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আয়োজক দেশ অস্ট্রেলিয়া হলে সিডনির বিখ্যাত ইন্টারন্যাশনাল কনভেশন সেন্টারেই এরা মর্যাদাপূর্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনগুলোই করে। বাংলাদেশের কোন সরকার প্রধানকে নিয়ে এর আগে বিশাল এই মিলনায়তনে কোন অনুষ্ঠানই হয়নি। পুরস্কার দূরে থাক। কিন্তু শুক্রবার রাতে এখানে শেখ হাসিনার উপস্থিতি, পুরস্কার গ্রহনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় পুলিশের যে পেরেশানি গেছে এর প্রভাব পড়তে পারে এদেশের বাংলাদেশি শ্রমবাজারে! একদিকে আওয়ামী লীগের অভ্যর্থনা, আরেকদিকে বিএনপির মারমুখো প্রতিবাদের চিৎকারের মুখে সিডনির পুলিশকে যথেষ্ঠ সতর্কতা, ক্ষিপ্রগতিতে কৌশলে নিয়ে যেতে হয়েছে কনভেনশন সেন্টারে।

সিডনির বিখ্যাত অপেরা হাউস, হারবার, কনভেনশন সেন্টার এলাকাটি মূলত নানাদেশ থেকে আসা পর্যটকদের আনাগোনায় মুখর থাকে। এদেশের শ্রমবাজার মানে ছাত্রদের কাজের ক্ষেত্র। অপেরা হাউস, হারবারের আশেপাশের বিভিন্ন রেষ্টুরেন্টে কাজ করেন বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রী। এর রোজগারের টাকায় তাদের পড়াশুনা চলে। পর্যটন এলাকাটির লোকজন শুক্রবার সেখানে যে অনভ্যস্ত হৈ হুল্লুড়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি পরিকস্থিতি দেখলো এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতে পারে ওই এলাকায় বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীদের কাজের ক্ষেত্রে। দুইদলই অবশ্য পুলিশের অনুমতি নিয়ে যার যা কাজ করেছে। এদেশের সব কর্মসূচি পুলিশের অনুমতি নিয়ে করতে হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুক্রবার রাতে এমন একটি পরিস্থিতির মধ্যে গ্রহন করেছেন ‘গ্লোবাল উইমেনস লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড। বাংলাদেশের নারীর ক্ষমতায়ন, ব্যবসাসহ নানাক্ষেত্রে বিস্ময়কর সাফল্যের জন্যে তাকে এই পুরস্কার দেয়া হয়। এ ব্যাপারে অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুলি বিশপ বলেছেন শেখ হাসিনা একজন সাহসী নারী নেত্রী। সারা বিশ্বের দেড় হাজার নারী নেত্রী উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে । যেহেতু ইস্যুটি এক রকম নারীস্থানের, নারীদের সম্মেলন, তাই এই সম্মেলন উপলক্ষে শেখ হাসিনা দেশ থেকে যে দলটি সঙ্গে নিয়ে গেছেন সেটিতে নারীর সংখ্যাধিক্য। মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বেগম মেহের আফরোজ চুমকি, সচিব নাসিমা বেগমতো আছেন, বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব ক্যাটাগরিতে যে পাঁচজন দলটির সঙ্গে সিডনি গেছেন তারা পাঁচজনই নারী। ব্যবসায়ী হিসাবে যে ১২জন গেছেন তারাও সবাই নারী। প্রধানমন্ত্রীর বোন শেখ রেহানাও এই সফরে এখন সিডনিতে রয়েছেন।

‘গ্লোবাল উইমেনস লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড গ্রহন উপলক্ষে শুক্রবার সকালে সিডনি পৌঁছেন প্রধানমন্ত্রী। থাই এয়ারওয়েজের ফ্লাইটে সিডনি পৌঁছবার পর মোটর শোভাযাত্রা সহ তাকে নিয়ে আসা হয় সিডনি ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে। সিডনির অপেরা হাউসের পাশেই এই হোটেল। শুকবার অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুলি বিশপ, ভিয়েতনামের ভাইস প্রেসিডেন্ট তার সঙ্গে দেখা করতে হোটেলে যান। মনে করা হচ্ছিল প্রধানমন্ত্রী অপেরা হাউস দেখতে যাবেন। যাননি। সফরসঙ্গীদের তিনি বলেছেন এর আগের সিডনি সফরে তিনি সিডনি হারবারে নৌবিহার ছাড়াও অপেরা হাউস ঘুরে দেখেছেন। শনিবার সকালে ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবেন শেখ হাসিনা। ওখানকার সমুদ্র বিজ্ঞান ইন্সস্টিটিউটের সামনে বঙ্গবন্ধুর একটি আবক্ষমূর্তি আছে। প্রধানমন্ত্রীর সেখানে পুষ্পার্ঘ অর্পনের কথা আছে। এছাড়া শনিবার অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুলের সঙ্গে বৈঠক আছে প্রধানমন্ত্রীর। শনিবার বিকেলে অস্ট্রেলিয়া আওয়ামী লীগ সম্বর্ধনা দেবে প্রধানমন্ত্রীকে। রোববার সকালে দেশের পথে ব্যাংকক রওয়ানা হবেন প্রধানমন্ত্রী। সোমবার তার দেশে পৌঁছবার কথা।


Place your ads here!

Related Articles

২৪ শে ফেব্রুয়ারী সিডনির ইঙ্গেলবার্নে পালিত হবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস

কবি লিখেছেন ‘যতদূর বাংলা ভাষা, ততদূর এই বাংলাদেশ’ । আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি! বাংলা

Mujahidul Islam Selim

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম আপনাদের এই বস্তা পচা বানী আর কত শুনব? আমার মন্তব্য আজকের ইত্তেফাকে (২৩ এপ্রিল) মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের

ছোটগল্প – “নগ্ন নির্জন হাত”

অ বিকেল বেলা। ব্যাগ ভর্তি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও কাপড়চোপড় নিয়ে জৈন্তা বাস স্ট্যান্ডে আসলাম। তখনও বিরতিহীন না আসায় আমি স্টান্ডের

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment