ফুলের প্রতি ভালবাসা

‘ফুলের মেঘ’ দেখেছেন কখনো!
হাল্কা গোলাপী আভা ছড়িয়ে নিথর কাঠে ফোঁটা সহস্র ফুলের বাহার কেবল চেরী ব্লসমেই মেলে। পাতাবিহীন গাছ, দেখে মনে হবে মরা গাছে ফুল ফুটেছে। কেউ যদি মর্ত্য ও স্বর্গ একত্রে দেখিতে চান, তবে চেরি ব্লসমই শ্রেষ্ট। এর নিখুঁত পরিপাটি রুপ সৌন্দর্য্য, ছোট ছোট পাপড়ির ভাঁজে কি অদ্ভুত এক শিহরণ! দূর থেকে যে কেউ ভাবতে পারেন মেঘ আজ রং পাল্টে গোলাপী বর্ন ধারন করেছে। এর আগে আমি কখনো চেরী ব্লসমে যাইনি। প্রথম দেখায় ভাল লাগা, যেন__ এই বুঝি প্রেম হয়ে গেল!
সিডনি চেরি ব্লসম ফেস্টিভ্যাল অস্ট্রেলিয়ার ঐতিহ্যবাহী জাপানিজ ফেস্টিভ্যালগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। চেরি ফুল ফোঁটার রাজসিক সৌন্দর্য্যকে কেন্দ্র করে পুরো জাপান জুড়ে যে ফুল উৎসব হয় তা ‘সাকুরা’ নামে পরিচিত। এই গাছগুলোর প্রকৃত নাম প্রনাস সেরুলতা (Prunus serrulata), জাপানীরা আহ্লাদিত হয়ে ডাকে ‘সকুরা’ নামে। ফুল ফোটার মূহুর্তকেও জাপানী ভাষায় গাছ ও ফুলকে সমন্বিতভাবে বলা হয় সাকুরা। প্রেম আর ভক্তির এক র্মূত প্রতীক এই সাকুরা। জাপানিজদের অগাধ বিশ্বাস চেরী ব্লসম ও মানব জীবনের মোহনা এক, বিনে সূতোঁয় গাঁথা। সৌন্দর্য্যের আধাঁর বয়ে আনা ক্ষনিকের জীবনই এ দু’য়ের মিল! চেরি ফুটলে জাপানে ‘হানামি’ উৎসব পালিত হয়।
মূলত, জাপানকে পরিচিতি করানোই এই উৎসবের মূল উদ্দেশ্য, সঙ্গে খাবার ও সংস্কৃতির বিনিময়। জাপানের একক একটি সংস্কৃতি হিসেবে ‘হানামি’ নামক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জাপানিজরা। যার আক্ষরিক অর্থ হল, “পুষ্প দর্শন (flower viewing)”। সাকুরাকে বরণ করে নেয়ার জন্য অষ্টম শতাব্দীর দিকে জাপানীরা সর্বপ্রথমে প্রস্ফুটিত ফুলের নীচে প্রার্থনা করে পৃথিবীর উর্বরতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য। তখন থেকেই চেরী ব্লসম ফেস্টিভ্যাল শুরু। জাপানের চেরি ব্লসম এখন শুধুমাত্র জাপানিজদের উৎসব নয়। সেই উৎসবের রঙ গত কয়েক শতকে বিশ্বকেও রাঙিয়ে দিতেই অন্যান্য দেশেও পালিত হয়ে আসছে। ভৌগলিক দূরত্ব পেরিয়ে অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা, কানাডা ও ইংল্যান্ডসহ পৃথিবীর নানা দেশে মৈত্রীর বা বিজয়ের প্রতীক হিসেবে ব্লুমিং হয়। চেরি ব্লসম প্রতি বছর মাত্র দুই সপ্তাহের জন্য ফোটে।
অস্ট্রেলিয়ার সিডনি শহরের অবার্ন বোটানিক্যাল গার্ডেনের চেরি ব্লসম ফেস্টিভ্যালটি পর্যটকদের জন্য প্রসিদ্ধ। প্রতি বছর বসন্তের আগমনী বার্তা নিয়ে আসে এই উৎসব। গত বছর ৬০ হাজার পর্যটক উপভোগ করেছে এর নান্দনিক প্রকৃতির রুপ। অবার্ন বোটানিক্যাল গার্ডেনের মনোমুগ্ধকর লেকের দুই তীর ঘেঁষে দৃষ্টিনন্দন সারি সারি চেরি ব্লসম। গার্ডেনের অন্য প্রান্তে চলছে খাবারের দোকানে হাঁক-ডাক। জাপানিজদের প্রিয় ঐতিহ্যবাহী খাবার শুসি (কাঁচা মাছ দিয়ে তৈরি বিশেষ একপ্রকার খাবার) ভিন্ন বৈচ্যিত্রে সাজিয়ে রেখেছে দোকানিরা। এসবে লোভ সামলানো দায়। উপচে পড়া ভীড়, সারিবদ্ধ দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েও ক্রেতাদের ক্লান্তি নেইl কেউ নির্ধারিত চেয়ারে বসে খাবার খাচ্ছে, কেউ আবার সবুজ ঘাসের চাদরে বসে পড়ছেন। সাথে পরিবার, আত্মীয়-স্বজন বা বন্ধু। কি নেই উৎসবটিতে___ খাবার,সিনেমা, মিউজিক, নানান পারফম্যান্স, সুমো কুস্তি থেকে ডি জে/ডিস্কো সবই আছে।খাবারের স্টলগুলোর পাশাপাশি আরো অনেক স্টলও ছিল, এর কোনটায় জাপানিজদের তৈরি করা সরঞ্জমাদি, পারফিউম। ছিল একটি তথ্যকেন্দ্র_ এখান থেকে পোষ্টার লিফলেট বিলি করা হচ্ছে বিনামূল্যে। জাপানের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি কালচার ও দর্শনীয় ঐতিহাসিক স্থানগুলো তুলে ধরা হয়েছে এতে। চেরি ব্লসম তো আছেই।
চেরি ফুল ফোটাকে জাপানিজরা গভীর আবেগের চোখে দেখে। শীতের পর বসন্তের ঝলমলে দূত হচ্ছে এই চেরি ফুল।
‘ওগো বিদেশিনী তোমার চেরি ফুল দাও, আমার শিউলি নাও, এসো দুজনে প্রেমে হই ঋণী’— গানটি শুনেছেন নিশ্চয়! ছোটবেলায় সঙ্গীত শিল্পী এন্ড্রুকিশোরের কন্ঠে শুনেছিলাম বিখ্যাত এই গান। কিন্তু তখনো এত চেরী ফুলে এত মুগ্ধতা ছিল না! তার’চে আমাদের দেশীয় শিউলি শেফালী বকুল শিমুল বা কৃষ্ণচূড়া ফুলই বেশী টানে! আমাদের প্রাইমারি স্কুল প্রাঙ্গনের এক প্রান্তে শিমুল অন্য প্রান্তে কৃষ্ণচূড়ার গাছ ছিল। লাল সিঁদুররঙা শিমুল ও ফুল কৃষ্ণচূড়া এমনভাবে পড়ে থাকতো, স্কুল মাঠটিকে মনে হতো ফুলের বিছানা। যেন কেউ খুব যত্ন করে বিছিয়ে রেখেছে। ঢাকার সংসদ ভবন ও গন ভবনের গা ঘেঁষে মাঝ বরাবর প্রস্তত যে রাস্তাটি লালমাটিয়া বা আসাদ গেট চলে গেছে, সেই রাস্তাটির কথা আজ খুব মনে পড়ছে। হলুদ ও লাল রঙের কৃষ্ণচূড়া ফুলে ছেঁয়ে যেতো। পিচঢালা পথ নাকি ফুলশয্যা তাৎক্ষনিক বুঝে উঠা দায়!
আজ সিডনি চেরি ব্লসম ফেস্টিভ্যাল দেখে, জাপানিজদের প্রকৃতি প্রেম, নিজেদের কৃষ্টি কালচার ধরে রাখার প্রবনতা দেখে বারবার মনে হচ্ছিল আমরাও পারতাম! আমাদেরও ছিল! ভুলতেই বসেছিলাম আমরা তো সেই কবেই সুরে সুরে বদল করে বসে আছি, শিউলির বিনিময়ে বিদেশিনী চেরি ফুল।
এইতো কিছুদিন আগে পত্রিকায় পড়েছিলাম__ ঢাকার রাস্তায় সারি সারি বনসাই, যার প্রতিটির মূল্য ২ লাখ! চীন থেকে আমদানি করা হয়েছে। এই গাছগুলো আনতে খরচ হয়েছে প্রায় ৩ কোটি টাকা। শুধু এই বনসাই নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে আনা হবে বাহারি পাতার গাছ। বুকে পাথর চাপা শুধু পড়ে নিঃশ্বাস বন্ধ লাগছিলো, নাকি বনসাইগুলো আমার মাথায় পড়লো, অনেকদিন অনুমান করতে পারিনি।
অন্য প্রসঙ্গে চলে এসেছি। চেরি ব্লসমে ফিরি আবারো।
বোটানিক্যাল গার্ডেনের বুক চিঁরে সবুজাভাব অস্বচ্ছ জলের লেক দু’পাশ আলো করে রেখেছে হাজার হাজার চেরি ফুলের গাছ। চারিদিকে শুধু ফুলের সমারোহ। ধবধবে সাদা আর ফিকে গোলাপি। বৃক্ষের পরিচয় ফলে হলেও চেরি ব্লসম কেবলি অলঙ্কারিক ফুল, এতে ফল ধরে না। চেরি কিন্তু একটি ফলেরও নাম। সুস্বাদু রসালো ফল। এই ফুলের চেরি ফল এটি নয়! পুষ্পবতী হবার আগে বা পরে সে শুধুই প্রুনাস সেরুলতা। সম্ভবত একারনেই ফুলটির এমন আশ্চর্য সুন্দর নাম ‘প্রস্ফুটিত চেরি’ বা ‘চেরি ব্লসম’। এ ফুলের নাম কখনই চেরি ফ্লাওয়ার নয়! ফুল-ফল মিলিয়ে সারা পৃথিবীতে ৪৫০ জাতের চেরি পাওয়া যায়। এ গাছ সর্বোচ্চ ৩০ মিটারের মতো উঁচু হতে পারে। সেই সঙ্গে ফুলেরও অসংখ্য রকমফেরও রুপ আছে, চোখধাঁধানো বৈচিত্র্য আছে। মূলত ফুল ও ফলের অলংকৃত শোভাই এই গাছের জনপ্রিয়তার প্রধান কারণ। ফুল ঝরে পড়ার পর নতুন পাতায় সবুজ রূপ ধারণ করে।
রাতের আয়োজনেও থাকে নানান রকম। অন্ধকার রাতে সাকুরা গাছগুলোকে লাল-নীল রঙের আলোকসজ্জায় আলোকিত করে দেয়া হয়, আগত প্রত্যেক পর্যটকদের মগ্ন চৈতন্যে শিষ দেয় সেই আলো-আধাঁরির মায়াময় রুপ! রাতের এই হানামি’কে জাপানিজ এ ‘ইওজাকুরা’ বলা হয়।
চীনের মাটিতেও নিজস্ব ফুল হিসেবে জন্মায় পুষ্পিত এই চেরি। চাইনিজরা এই চেরী ফুলকে নারীর সৌন্দর্য্যের প্রতীক ভাবে। জাপানীরা বিজয়ের স্মারক হিসেবে রোপণ করে এসেছে এই ফুল। কথিত আছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে শত্রুর বিরুদ্ধে আত্মাহুতি দেবার সময় সুইসাইড মিশনের বৈমানিকরা বোমারু বিমানগুলোতে এঁকে নিত ফুলটি।
জাপান যখন আমেরিকার পার্ল হারবারে বোমা নিক্ষেপ করে তখন পটোম্যাকের ৪টি সাকুরা বৃক্ষ প্রতিবাদস্বরূপ কেটে ফেলা হয়। আমেরিকায় তখন এই বৃক্ষগুলোকে বলা হতো ওরিয়েন্টাল চেরি ট্রি। পরবর্তীতে সম্পর্ক উন্নয়নের কালে আবার ফিরে আসে চেরি ব্লসম নাম।
আগত প্রায় প্রতিটি পর্যটকের সাথে দামী দামী ডিজিটাল এস এল ক্যামেরা, এর আগে কখন এমন দৃশ্য চোখে পড়ে নাই। কেমন যেন অলিখিত প্রতিযোগিতা সবারই অক্লান্ত চেষ্টা এই স্বর্গীয় দৃশ্যকে ক্যামেরায় বন্দী করে রাখা। আমাদের ক্যামেরাও থেমে থাকেনি!
উল্লেখ্য, বৃক্ষের পরিচয় ফলে হলেও চেরি ব্লসম কেবলি অলংকৃত ফুল, এতে ফল ধরে না। পুষ্পবতী হবার আগে বা পরে সে শুধুই প্রুনাস সেরুলতা। এ কারণেই বোধকরি ফুলের এমন এক আশ্চর্য সুন্দর নাম ‘প্রস্ফুটিত চেরি’ বা ‘চেরি ব্লসম’। এ ফুলের নাম কখনই চেরি ফ্লাওয়ার নয়! যে ফলদ চেরি গাছের কথা আমরা জানি সেটা জাম জাতীয় অন্য প্রজাতির। জাপানের চেরি ব্লসমগুলোর বেশিরভাগের গোত্রের নাম ইওশিনো। এর রং হাল্কা থেকে গাঢ় গোলাপী।কতগুলোর শুভ্র মেঘের বর্ণ। নানান জাত নানা নাম তাদের।কোনটার নামকরণ কোয়াযান, কেউবা আকিবুনো এই রকম কত কত বাহারি নাম। কোন কোন বৃক্ষ বুঝি প্রস্ফুটিত কুসুমের চাদর বিছিয়ে দিয়েছিল আকাশপানে কেউবা নুইয়ে পড়া অভিমানী প্রেমিকা, যার নাম উইপিং জাপানিজ ফ্লাওয়ারিং চেরি। জাপানী মানুষ তাদের ঐতিহ্য অনুসারে সাকুরার প্রতিটি মুহূর্তকে প্রত্যক্ষ করে। একটি গোলাপের পরমায়ু নিয়ে আসে চেরি ব্লসম।ক্ষণিকের জন্য জীবনের এই বিস্ময়কর মোহনীয় সৌন্দর্য্যের হাতছানি উদ্যোমতা, তারপরেই ঝরে যাওয়া এ যে বিচ্ছেদের অনল!
অবার্ন বোটানিক্যাল গার্ডেনে নাম না জানা লেকের অস্বচ্ছ জলে ফুল ফোটানোর খ্যাপামিতে আক্ষরিক অর্থেই হয়ে ওঠেছে কুসুমে মত্ত কানন। উষ্ণতার স্পর্শ পেয়ে অস্ট্রেলিয়া-জাপান মৈত্রীর প্রতীক হাজার হাজার ফ্লাওয়ারিং চেরি বৃক্ষের সবুজ কুঁড়িগুলো একটু একটু করে মেতে ওঠে কুসুম ফোটানোর খেলায়। লেকের দু’ধারের রাস্তাটি রাঙ্গা হয়ে যেতে থাকে সাকুরার অপরূপ গোলাপী রংয়ে।প্রতি বসন্তের আগমনেই এই প্রস্ফুটন পাল্টে দেয় বোটানিক্যাল গার্ডেনটির শীতের নীল বর্ণ। বসন্তকে রাঙ্গিয়ে দিতেই বোধ হয় গুচ্ছবদ্ধ ফুলগুলো গোলাপি, সাদা ও লাল রং এর হয়। তবে, পাপড়ি ও ফুলের গড়ন বিচিত্র!
এই পুষ্প বৃক্ষগুলোর প্রস্ফুটনের সময় প্রতিবছর বিপুল উৎসাহ ও জাঁকজমকের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার সব’চে ব্যস্ততম বানিজ্যিক নগরী সিডনিতে অনুষ্ঠিত হয় চেরি ব্লসম। প্রতি বছর দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসে চেরি ব্লসম প্রেমিকেরা।
জীবনের প্রতি, ভালোবাসার প্রতি ম্লান হয়ে যাওয়া বিশ্বাস আর চেরি ব্লসমের ক্ষণিকের অব্যক্ত সৌন্দর্য্য কোথায় গিয়ে যেন মিলেছে! হৃদয়ের মোহনার সৃষ্টি এক বিন্দুতেই।জীবনের প্রতিটি ধাপেই আছে রুপের বৈচিত্র্য, সৌন্দর্য্যও তীব্র। তেমনি চেরিফুল।চেরি ব্লসমের পুঞ্জীভূত সৌন্দর্য্য বদল হয় প্রহরে প্রহরে। শিশির ভেজা ভোরে ফুলকুঁড়ির চোখ মেলা, সূর্যের প্রখর রোদে প্রস্ফুসটিত, রাতে চাঁদের মায়ায় ভেসে যাওয়া চেরি ফুলের অসামান্য রূপোলী রুপ প্লাবন-মননে অব্যক্ত শিহরন জাগায়। অভিঘাত সৃষ্টি করে। হৃদয়ে সুরের ঝড় উঠে__ ফুল ফোটে, ফুল ঝরে। ভালবাসা ঝরে পড়ে না ..!
হ্যাপি রহমান
সিডনি, অস্ট্রেলিয়া
২৭.০৮.২০১৭ইং
Related Articles
সুইসাইড প্রতিরোধে গনসচেতনতার প্রয়োজন
বেশ কয়েক মাস আগে কেনবেরাতে এক বাংলাদেশী সুইসাইড করেছিল। সেই সুইসাইডের পরপরই কেনবেরাতে বাংলাদেশের কয়েকজন লোক মিলে ‘সুইসাইডের কারন ও
কিছু অপরাধ তামাদি হয় না
গায়ক আপেল মাহমুদকে নিয়ে লেখা প্রকাশের পর অনেকেই আমাকে জিজ্ঞাসা করেছেন যে ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ এর ভোরে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সাথে
Sujata Mehta’s visit to Dhaka
Ms. Sujata Mehta, Indian Ministry of External Affairs Secretary (Multilateral and Economic Relations) will visit Bangladesh from 5 to 7