Toggle Menu

টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হবে নেপিয়ারে

টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হবে নেপিয়ারে

ফজলুল বারী, নেপিয়ার থেকে
নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হবে নেপিয়ারে। এরজন্যে বাংলাদেশ ক্রিকেটদল রোববার এখানে এসে পৌঁছেছে। এটি নিউজিল্যান্ডের উত্তর দ্বীপের ছবির মতো সাজানো অপরূপ সুন্দর ছোট্ট শহর। কম জনসংখ্যার দেশে নিউজিল্যান্ডের এই শহরেও মানুষ খুব কম। জনসংখ্যা ৬২ হাজারের একটু বেশি। ১৯৩১’এর এক প্রলয়ংকরী ভূমিকম্পে এ শহর বিধবস্ত হয়েছিল। পুরো শহরটিকে আবার নতুন করে গড়তে হয়েছে। সকালে নেলসন থেকে ভাড়া করা ফ্লাইটে টিম বাংলাদেশ চলতি নিউজিল্যান্ড সফরের তৃতীয় গন্তব্যের উদ্দেশে রওয়ানা হয়। ক্রাইস্টচার্চের পর নেলসন। এরপর নেপিয়ার। এখন পর্যন্ত কোন সাফল্য নেই। সমর্থকরা হতাশ। নেপিয়ারে কী নিউজিল্যান্ডের মাটিতে নিউজিল্যান্ডকে হারানোর অধরা জয় পাবে দল? কেউ সাহস করে বলতে পারছেন না সে কথা।

কারন এই নেপিয়ারে ২০০৮ সালে খেলে গেছে বাংলাদেশ। জয় পায়নি তখনও। তখন অবশ্য বাংলাদেশের আজকের মতো একটি দল বা ক্রিকেট অবকাঠামো ছিলোনা। ছিলোনা আজকের সাকিব-মুস্তাফিজের মতো উজ্জ্বল-আন্তর্জাতিক রেংকিং, তারকাখ্যাতি সম্পন্ন খেলোয়াড়। দেশের মাটিতে বাঘা সব বিদেশি দলকে হারিয়ে ষোল কোটি দেশবাসীর ভালোবাসা প্রশংসার তুঙ্গে পৌঁছেছিলেন টিম বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। সর্বশেষ দেশের মাটিতে ইংল্যান্ড দলের ঘাম ঝরানোর পর ইংলিশ ক্রিকেট গ্রেট ইয়ান বোথাম বলেছিলেন বাংলাদেশকে বিদেশের মাটিতে খেলে সামর্থ্যের প্রমান দিতে হবে। নিউজিল্যান্ড সফরে এসে বোথামকে জবাব দেবার সুযোগ ছিলো। নেলসনের প্রথম ম্যাচে বোলাররা সে সুযোগও তৈরি করেছিলেন। এক রানআউটেই যে ব্যাটিং লাইন এভাবে হুড়মুড় ভেঙ্গে পড়বে তা কে ভেবেছে? একই মাঠে শেষ ওয়ানডেতে বাংলাদেশের শুরুটা দেখে অনেকে ধারনা করেছিলেন রান সংগ্রহ তিনশোর ঘর পেরুবে অনায়াসে। কিন্তু সেই একই পুনরাবৃত্তি! ওপেনাররা ১ উইকেটের বিনিময়ে ১০২ রান করার পর ফের মিডল অর্ডার তথা সাকিবরা ব্যর্থ। কোনকিছুই কারো হিসাবে মিলছেনা।

বিপর্যস্ত এই দলটিকে রোববার সকালে যখন আমরা নেলসন বিমান বন্দরে দেখি খেলোয়াড়দের হাসিখুশি দেখালেও মন যে তাদের ফুরফুরে তা বলা যাবেনা। সাংবাদিকদের সঙ্গে দেখা হতেই তাদের অনেকে হ্যাপি নিউইয়ার বলে ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান। কোচ চান্দিকা হাথুরু সিংহে, প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুও সেখানে ছিলেন। চান্দিকা দায়িত্ব নেবার পর বাংলাদেশ দল অনেক উন্নতি করেছে। কিন্তু নিউজিল্যান্ডে পরপর তিন পরাজয়ে সবকিছু এখন প্রশ্নের মুখে। সাংবাদিকরা কোচের সঙ্গে কথা বলতে চান। কোচ জানেন তিনি দেশের মানুষের কতোটা অসন্তোষের মুখে আছেন। তার ছাত্রদের জন্যে যখন যা চাইছেন সব দিচ্ছে বিসিবি। তার ঘর সংসার সিডনিতে। তিনি সিডনিতে করতে চেয়েছিলেন কন্ডিশনিং ক্যাম্প। তাই করা হয়েছে। শতভাগ স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে কোচকে। তিনি যাদেরকে চান তাদেরকেই দলে দেয়া হয়। কিন্তু ফলাফলটা কী? নিউজিল্যান্ডে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে গেছেন কোচ। সকালে খেলোয়াড়রা পৌঁছবার আগেই পরিবার নিয়ে তিনি পৌঁছেন বিমান বন্দরে। মিডিয়া মুখিয়ে ছিল দলের হালফিল অবস্থা সম্পর্কে তার বক্তব্য শুনতে। মিডিয়া কাঠগড়াটি অবশ্য এড়িয়ে গেলেননা চান্দিকা। বললেন নেপিয়ার গিয়ে কথা বলবো।

বাংলাদেশ দলের তাসকিনকে বেশ সামাজিক স্বতঃস্ফূর্ত মনে করা হয়। তাসকিনের সঙ্গে বিমান বন্দরে কথা বলতে গেলে দেশবাসীকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, দেশবাসীর দোয়া চাই। যাতে আমরা নতুন বছরটা ভালো খেলতে পারি। দলের সঙ্গে এখন মুশফিক, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের স্ত্রী সন্তানরা আছেন। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা, সহ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের স্ত্রী-সন্তানরা আসছেন। বিমান বন্দরে নিউজিল্যান্ড দলের সদস্যদেরও সঙ্গেও দেখা হয়ে গেল বাংলাদেশ দলের। তারাও নেপিয়ার যাচ্ছিলেন। একদল বিজয়ী আরেকদল বিজিত। কিন্তু বরাবর সামাজিক সৌজন্যবোধের ঘাটতি নেই বিনয়ী কিউইদের মধ্যে। আইপিএল পার্টনার এক কিউই খেলোয়াড় এগিয়ে গিয়ে গল্প জুড়ে দিলেন সাকিবের সঙ্গে। তার স্ত্রী জানতে চাইলেন সাকিবের স্ত্রী-সন্তানের খোঁজ-খবর। সাকিব জানান তারা শীগগির আসছেন। জবাব আসে দ্যাটস গুড।

বিকেলে টিম হোটেলে গিয়ে দেখা যায় খেলোয়াড়রা কোচ-প্রধান নির্বাচকের সঙ্গে বৈঠক শেষে ফিরে আসছেন হোটেলে। এখানকার তে পানিয়া হোটেলে উঠেছে টিম বাংলাদেশ। লাগোয়া মেরিন রোড পেরুলেই সাগর। সারাক্ষন গর্জন করা পৃথিবীর যে কোন সাগরের অভ্যাস। ‘তিন ভাগ গ্রাসিয়াছো এক ভাগ বাকি, সুরা নেই পাত্র হাতে কাঁপিতেছে সাকী’! দেশবাসীর প্রত্যাশা আর নিউজিল্যান্ডে প্রাপ্তির যোগফলের টালি হিসাবের মধ্যে এখন দুলছে টিম বাংলাদেশ। নেপিয়ারে কী হারের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে বাংলাদেশ? মঙ্গলবার সে পরীক্ষার দিন।


Place your ads here!

Related Articles

সিডনীর এক সন্ধ্যায় কবি কবিতা এবং মাহিদুল ইসলাম


ফাহাদ আজমারঃ মাহিদুল ইসলাম মাহি, বাংলাদেশের প্রথমসারির সম্পূর্ন পেশাদার আবৃত্তিশিল্পী হিসেবেই তিনি সর্বমহলে পরিচিত। আবৃত্তিযোদ্ধা মাহিদুল ইসলাম এসেছেন সিডনিতে, এই

রব ফকির – একজন নিভৃতচারী সাধকের গল্প

রব চাচাকে নিয়ে কখনও লিখবো ভাবিনি। কারণ রব চাচার মত নিভৃতচারী মানুষ আমি আমার এই ছোট জীবনে দ্বিতীয়টি দেখিনি আর

Bangla Article on Food by Almamun Ashrafi

খাবারে বৈচিত্র, বাচ্চার স্বাস্থ্য ও সরকারের ভূমিকা – আলমামুন আশরাফী বাংলাদেশের অর্থনীতি ধীরে ধীরে কৃষি নির্ভরতা থেকে ছোট ছোট শিল্পপ্রতিষ্টান

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment