ক্রাইস্টচার্চের প্রথম ম্যাচ
ফজলুল বারী, ক্রাইস্টচার্চ(নিউজিল্যান্ড) থেকে: কেমন হবে টাইগারদের নিউজিল্যান্ড মিশনের সূচনা পর্বের ক্রাইস্টচার্চ ম্যাচ? সোমবারের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচকে সামনে রেখে এটি এখন মিলিয়ন ডলার প্রশ্নের। যেখানে নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে খেলতে গিয়ে দুনিয়ার সব ক্রিকেট শক্তিও নাকানিচুবানি খায় সেখানে নতুন উদীয়মান ক্রিকেট শক্তি বাংলাদেশ কেমন করবে ক্রাইস্টচার্চ ওভালের মাঠে? এ প্রশ্ন আর নিউজিল্যান্ডাজদের চোখ রাঙানি সব এড়িয়ে বাংলাদেশ দলের কোচ-অধিনায়ক-খেলোয়াড়দের কথা শুনলে সাফ যে ধারনাটি হবে তাহলো খেলা নিয়ে এদের কারো মাঝে কোন ভয়ডর কাজ করেনা আর। এ যেন উজ্জিবিত নতুন আরেক বাংলাদেশ।
সোমবারের খেলা নিয়ে গত দু’দিন আমরা দলের কোচ হাতুরে সিংহে, বোলিং কোচ কোট ওয়ালেস, ব্যাটিং পরামর্শক, ক্যাপ্টেন মাশরাফি বিন মুর্তজা, খেলোয়াড়দের অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি। এদের সবাই যত কথা বলেছেন এর সারসংক্ষেপটা হলো দেশে সর্বশেষ ইংল্যান্ড দলের ট্যুর, বিপিএল’এর পর অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে অভ্যস্ত হয়ে ওঠা দলটি পজিটিভ ক্রিকেট খেলার জন্যে উদগ্রিব। বোলিং কোচ কোট ওয়ালেস বলেছেন তিনি দীর্ঘদিন নিউজিল্যান্ডের নানান মাঠে খেলে অভ্যস্ত। তার শিষ্যদেরও তিনি সেভাবে গড়েছেন। কোচ হাতুরে সিংহেকে বলা হয় বাংলাদেশ টিমের হেড মাস্টার। নিয়মকানুনের ব্যাপারে পুরোদস্তুর কড়া একজন প্রধান শিক্ষকের কমান্ড যেমন থাকে তার প্রতিষ্ঠানে, এই কোচের নিয়ন্ত্রণও দলের ওপর ষোল আনা। হাতুরে সিংহে সোমবার বললেন তাদের প্রস্তুতি আশানুরূপ হয়েছে। খেলোয়াড়রা এখন তা মাঠে নেমে দেখাতে পারবে বলেই তার আশা। সর্বশেষ ইংল্যান্ড দলের বাংলাদেশ সফর আর বিপিএলের অর্জনকে তিনি বিশেষ গুরুত্ব দেন।
আর অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার কথা আমরাতো কন্ডিশনের কথা জেনেশুনেই নিউজিল্যান্ড সফরে এসেছি। পৃথিবীর বড়বড় দলকে এ কন্ডিশনে খেলতে এসে স্ট্রাগল করতে হয়। আমাদের বেলায়ও হয়তো তাই হবে। কিন্তু আমাদের এখন বড় যে শক্তি তা হলো মাইন্ড সেটআপ। বাংলাদেশ দল এখন আর কয়েক বছরের আগের জায়গায় নেই। খেলোয়াড়দের অনেকে অনেক পরিণত, নিজেদের সামর্থ্যের আস্থার জায়গাটিও বেশ পোক্ত বলা চলে।
সবাই এখন পজিটিভ ক্রিকেট খেলার জন্যে উদগ্রিব। কোচ-ক্যাপ্টেন যা মানলেন তাহলো যে কোন সফরের শুরুটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। শুরুর ম্যাচে যদি জয় পাওয়া যায় তাতো ভালোই।
সোমবারের ম্যাচের পিচ-টস দুটোই গুরুত্বপূর্ন বাংলাদেশের জন্যে। মাশরাফির বক্তব্য প্রথমদিনের পিচে সবুজ ঘাস দেখেছি। রোববার সেটিকে দেখলাম ব্রাউন হয়ে গেছে। মজা করে বলেন কাল হয়তো সেটি সাদা হয়ে যাবে। এরপর আরো যোগ করে বলেন, এরা অবশ্য দু-তিনদিনে একটি উইকেটের পরিচর্যার মাধ্যমে সেটিকে চূড়ান্ত করে। বিশ্বকাপের সময় আমরা এক ধরনের উইকেটে খেলেছি এখন হয়তো তা ভিন্ন হবে। কারন বিশ্বকাপের উইকেট সব সময় উন্নত থাকে। তাদের ধারনা দেয়া হয়েছে উইকেট হবে ব্যাটিং উইকেট। টসে জেতার ওপর দলের অনেক কিছু নির্ভর করছে কীনা এ ধারনায় একমত হননি মাশরাফি। বলেছেন, আমাদের যে কোন পরিস্থিতি মাথায় নিয়েই স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে হবে। দলকে সেভাবেই তৈরি করা হয়েছে। তার মতে এ মাঠে রান হয়তো ২৮০-৩০০ বা এরও বেশি হতে পারে। আমাদের সেভাবেই খেলতে হবে। সোমবারের মিডিয়া ব্রিফিং’এর পুরোটা সময়ে কোন কথাতেই কোন রকম ভয়ডরের ছাপ পাওয়া যায়নি বাংলাদেশের কাপ্তানের চোখেমুখে। কোচ-খেলোয়াড়দের কথাবার্তাও ছিল একই রকমের। যা আভাস দেয় বদলে যাওয়া একটি বাংলাদেশের। যে দলটি সোমবার প্রথম গিয়ে দাঁড়াবে স্বদেশি পরিবেশে শক্তিশালী কিউই দলের।
রোববার ক্রিসমাসের ছুটির দিলে বাংলাদেশ দল ক্রাইস্টচার্চ ওভালে সকাল ১১ টা থেকে অনুশীলন করেছে। ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং সবকিছুতেই দলকে ঝালিয়ে নিয়েছেন কোচ হাতুরে সিংহে আর বোলিং কোচ কোট ওয়ালেস। ব্যাটিং পরামর্শক, ব্যাটিং কোচও সারাক্ষন পুরো দলকে চোখে চোখে রেখেছেন। সকালে কিছু সময়ের জন্যে মাঠে এসে মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলে চলে যায় কিউই দলের কয়েক সদস্য। ক্রিসমাস-বড়দিন মানে তাদের ঈদের দিন। কে আমাদের দেশে ঈদের খেলতে বা অনুশীলন করতে পছন্দ করে? এরাও নয়। এমন উৎসবে মজে থাকা একটি দলকে বাংলাদেশ কী প্রথম দেখায় হারাতে পারবেনা? সোমবার জানা যাবে।
Related Articles
প্যারিসের চিঠি : প্লাস দো লা কনকর্ড – ওয়াসিম খান পলাশ
প্যারিসের প্রায় কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত প্লাস দো লা কনকর্ড এলাকাটি এক কথায় অপূর্ব। এলাকাটি যেমন ঐতিহাসিক স্থান তেমনি ব্যস্ত। একটি এথলেটিক্স
IEB Australia Chapter Engineers meet Engineers Australia GM Greg Ewing
An Engineers delegation of The Institution of Engineers, Bangladesh (IEB) chapter Australia met Engineers Australia General Manger (GM) Mr. Greg
জীবন ভ্রমন
জীবন ভ্রমন ২৪ : খেজুরের রস । হাই স্কুল জীবনে প্রতি বছর শীতে গ্রামের বাড়িতে যেতাম । আব্বা চিটাগাং মেইল