গ্রীষ্মের নিউজিল্যান্ডে শীতে কাবু বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা!
নিউজিল্যান্ডের পথে পথে – গ্রীষ্মের নিউজিল্যান্ডে শীতে কাবু বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা!
ফজলুল বারী, ক্রাইস্টচার্চ(নিউজিল্যান্ড)থেকে: নিউজিল্যান্ডে এখন গ্রীষ্মকাল। কিন্তু বৃষ্টি হলে এই গ্রীষ্মেও এখানে বেশ শীত পড়ে। শুক্রবার বাংলাদেশ দল ক্রাইস্টচার্চ পৌঁছবার দিনেও এখানে বেশ বৃষ্টি ঝরেছে। তাপমাত্রা সর্বশেষ নেমেছিল ১২ ডিগ্রী সেলসিয়াসে। সর্বোচ্চ ছিল ১৭ ডিগ্রী সেলসিয়াসে। সঙ্গে বাতাস থাকায় এই তাপমাত্রাতেই শীতে বেশ কাবু হয়ে পড়েছে বাংলাদেশ দল! বাংলাদেশের খেলোয়াড়, বাংলাদেশ থেকে আসা সাংবাদিকদের পোশাক দেখেই বোঝা যাবে দ্বীপ এই শহরটিতে এরা বেশ শীত অনুভব করছেন। এর প্রমান মিললো বাংলাদেশ দলের কাপ্তান মাশরাফি বিন মুর্তজার কথায়। শনিবার মাশরাফি কথায় কথায় বললেন তার দলের সদস্যরা এখনো এখানকার পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেবার সংগ্রাম করছেন। শীতে বেশ কাবু হয়ে পড়েছেন দলের সদস্যরা।
ক্রাইস্টচার্চের রেইজার্স লাটিমার হোটেলে উঠেছেন বাংলাদেশ দলের সদস্যরা। হোটেল ভবনটি দোতলা। ভূমিকম্পে বিধবস্ত হবার পর এখানকার পুরনো অনেক হোটেল-ভবন ভেঙ্গে ফেলতে হয়েছে। ওই হোটেলে গিয়ে খেলোয়াড়দের অনেককে বাইরের রোদে হাঁটাচলা করতে দেখা যায়। উল্লেখ্য গ্রীষ্মে এখানে সূর্য ডুবতে ডুবতে রাত প্রায় দশটা বাজে! বিদেশে গেলে হোম সিকনেসের পাশাপাশি দেশের অনেকের মতো খেলোয়াড়রাও আরও যে বিষয়টি মিস করেন তাহলো দেশি খাবার। পাঁচতারকা হোটেলের নানা বাহারি খাবার তাদের মন ভরাতে পারেনা। এরচেয়ে আলু ভর্তা, ডাল বা সরষে ইলিশ এসবই হাত দিয়ে মাখিয়ে খাবার বিষয়টিই বেশি মহার্ঘ। শুক্রবার রাতে টিম হোটেলে গিয়ে দেখা গেলো খেলোয়াড়দের অনেকে বাইরে চলে গেছেন বাঙলা খাবারের সন্ধানে। রাত বেশি হবার আগেই অবশ্য সবাই ফিরতে শুরু করেন। গত বিশ্বকাপের সময় আল আমিনের শাস্তির বিষয়টি কেউ ভুলে যায়নি।
দলের অনুশীলন উপলক্ষে শনিবার আমরা প্রথম এখানকার হেগলি ওভালে যাই। বিশাল এলাকাজুড়ে এখানকার হেগলি পার্ক। এর চারপাশে অনেকগুলো মাঠ। কোনটি ক্রিকেটের, কোনটি ফুটবল-রাগবির বা কোনটি গলফের। সোমবার যেখানে বাংলাদেশের খেলা হবে সেখানেই শুধু একপাশে গ্যালারি আছে। তবে এখানে ধারাভাষ্যের-টেলিকাস্টের ব্যবস্থা থাকলেও কোন প্রেসবক্স নেই। ওভালের একপাশে তাবু এনে সেখানে প্রেসবক্সের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এমন অস্থায়ী ব্যবস্থা গত বিশ্বকাপের সময় আমরা নেলসনেও দেখেছি।
অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের সবগুলো ক্রিকেট স্টেডিয়াম-ওভালের মতো এখানকার মাঠটিও সবুজ গালিচার। উইকেটে এরা কিছু ঘাসও রাখে! এর মাধ্যমে তৈরি বাউন্সি উইকেটে এরা অনভ্যস্ত বিদেশি দলগুলোকে বিশেষ নাস্তানুবুদ করে। কিছুদিন আগে পাকিস্তান ক্রিকেটদলও এখানে এসে নাস্তানুবুদ হয়েছে। এবার কী বাংলাদেশের পালা? কিন্তু বাংলাদেশের বোলিং কোচ, পরামর্শক, খেলোয়াড় এদের কারও মুখেই এসব নিয়ে কোন ভয়ডর পাওয়া যায়নি। নিউজিল্যান্ডে খেলা প্রথম প্র্যাকটিস ম্যাচে বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন ভালো রান পেয়েছেন। বিশেষ করে সৌম্য সরকারের রানে ফেরাটায় অনেককে আশাবাদী করে তুলেছে। আবার যে সত্য সামনে চলে এসেছে তা হলো এমন বাউন্সি উইকেটেই খোলে-খেলে সৌম্যর ব্যাট। বল উঠে আসলেই সে তুলে মারতে জানে। মরা উইকেট ভালো্বাসেনা সৌম্য’র ব্যাট।
বাংলাদেশের নিউজিল্যান্ড ট্যুরকে সামনে রেখে এমন বাউন্সি উইকেটের বিষয়টিই আলোচনায়। এই দেশের পীচ সমগ্র হলো গিয়ে ফার্স্ট বোলারদের স্বর্গরাজ্য। শনিবার প্র্যাকটিস সেশনে নিউজিল্যান্ডার্স বোলার যাদেরকে দিয়ে বল করানো হয়েছে তাদের সবাই পেস বোলার। বাংলাদেশের মাশরাফি, তাসকিনরাও নেট প্র্যাকটিসের সময় উপভোগ করেছেন উইকেটের বাউন্সি। বাংলাদেশ বোলিং আক্রমনে পেস না স্পিনকে নির্ভর করবে এটি জানতে চাইলে দলের বোলিং পরামর্শক থিলান সামারা ভিরা বলেন আমাদের সব প্রস্তুতিই যথেষ্ট পরিমানে আছে। বলতে পারেন সবদিক থেকেই বাংলাদেশের এ দলটি সমৃদ্ধ একটি দল। এসবের যথাযথ জবাব মিলবে সোমবার। বাংলাদেশকে শুধু ভালো খেলা নয়, ভালো খেলে জিততে হবে।
Related Articles
মোসলেহ উদ্দিন নামের কোন লোক ধরা পড়েনি ভারতে
ফজলুল বারী: নিজের বিরুদ্ধে আজ রিপোর্ট লিখছি। নিজের বিরুদ্ধে কী রিপোর্ট লেখা যায়? রিপোর্ট যদি সত্য হয় তাহলে লিখা যাবেনা
বাংলাদেশ ক্রিকেট নিয়ে প্রাসঙ্গিক ভাবনা – অমিত আহমেদ
কালেভদ্রে ইন্টারনেটে ক্রিকেট ফোরামগুলোতে ঢুঁ মেরে দেখি। এম্নিতেই। কে কি বললো, নতুন কি ঘটলো, কে সেঞ্চুরি মারলো – এসব মাঝে
মেলবোর্নের চিঠি – ৭
বিমান বাংলাদেশ এয়ারে স্বাগতম, আমি ক্যাপ্টেন নাদেরা নদী বলছি, ভদ্রলোক ও ভদ্রমহোদয়গ্ণ, আপনারা আপনাদের সিটবেল্ট বেঁধে বসুন, এখনও না বেঁধে