ঢাকার ব্রিটিশ কাউন্সিল কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ

ঢাকার ব্রিটিশ কাউন্সিল কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ

জংগী পরিস্থিতিতে সন্ত্রস্ত অবস্থায় ঢাকার ব্রিটিশ কাউন্সিল তার কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ করাতে ক্ষুদ্ধ হয়েছেন আমার কিছু বন্ধু। তাদের বক্তব্য ফ্রান্স, জার্মানিতেও হামলা হচ্ছে কিনতু ব্রিটিশ কাউন্সিল সে সব জায়গায় তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখে ঢাকায় তাদের কার্যক্রমকে বন্ধ করাটাকে তারা অপমান হিসাবে দেখছেন!

ভাইগন একটু বাস্তববাদী হোন। গুলশানের ঘটনার আগ পর্যন্ত বিদেশিরা, বাংলাদেশের মানুষেরাও জংগী ইস্যুটাকে এভাবে কেউ সিরিয়াসভাবে নেইনি। কিন্তু গুলশানের ঘটনা পাল্টে দিয়েছে সবার সব ধারনা! টারগেট করে বেছে বেছে বেশি করে বিদেশি হত্যা! এরপর আবার শোলাকিয়া-কল্যানপুর! ঘটনা থামছেইনা! জংগী প্রতিরোধ নিয়ে সরকারি সংস্থাগুলোর সমন্বিত ভূমিকার অভাব স্পষ্ট হলো যেদিন এসএমএস করে সবাইকে সাবধান থাকতে বলা হলো! বিদেশি মিশনের লোকজন সেদিন ভয়ে অনেকে অফিসেই আসেনি! এরপর ভুল টের পেয়ে পুলিশ উল্টো বললো গুজবে কান দেবেন না! বিদেশিরাতো যার যার দেশে পুলিশের ওপরই আস্থা রাখে। কিন্তু এই পুলিশের ওপর আস্থা রাখবে কী করে?

ফ্রান্স, জার্মানির অবস্থা ঢাকার মতো গিজগিজ মানুষের না। তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা, সর্বত্র ক্যামেরা সহ নানান প্রযুক্তিগত অবস্থানও অনেক শক্তিশালী। সেখানে এবং এখানে সবার মধ্যে এখন মুসলিম জংগী সন্ত্রাসীদের নিয়ে ভয়। এখানে আরো ভয় ঢিলেঢালা পুলিশ, মনের মধ্যে দুরু অবস্থার পুলিশ নিয়ে! দেখেন না রিমান্ডে নেবার পর পুলিশ দেখে জংগী শুধু নামাজ পড়ে। কিছু জিজ্ঞেস করতে গেলে জোরে জোরে জিকির করতে শুরু করে দেয়! এরপর আর ভয়ে কিছু জিজ্ঞেস করেনা । কারন সে পুলিশওতো মুসলমান। তারওতো ঈমানি দূর্বলতা আছে। বেহেস্তে সেওতো যেতে চায়। কিন্তু এসব নিয়ে নড়াচড়া করতে গিয়ে যদি কিছু হয়ে যায়! হায় যদি মিস হয়ে যায়! এই আতংক তারওতো আছে। বাংলাদেশের পুলিশের এই রিপোর্ট একাধিক বিদেশি মিডিয়ায় ছাপা হয়েছে। এমন সব মিডিয়া রিপোর্ট প্রতিদিন বাইরে যাচ্ছে। ভয় ছড়াচ্ছ সর্বত্র বাংলাদেশ নিয়ে!

নগরে আগুন লেগেছে। এখন দেবালয়ও বাদ যাবেনা। আরও অনেককিছু সহ্য করতে হবে। এতদিন শুধু বলেছি আইএস নেই। এখন আইএস এর পতাকা মিডিয়ায় সাপ্লাই দিয়েছে পুলিশ! এরপর আবার বলছে দেখতে আইএস এর মতো পতাকা, আইএস এর নয়!

ব্রিটিশ কাউন্সিল বন্ধটাকে আমি অনেক দিকে বিপদের দেখছি। আমাদের ছেলেমেয়েরা পড়াশুনা করতে বিদেশ যেতে আইএলটিএস করতে হয় এই ব্রিটিশ কাউন্সিলের মাধ্যমে। অনেক ছাত্রছাত্রীর অনেক পরিকল্পনা গড়বড় হয়ে যাবে। আমি ভয়ে আছি এরপর হয়তো খবর আসবে ব্রিটিশ ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফর স্থগিত! এমন আরও অনেক দূ:সংবাদ হয়তো অপেক্ষা করছে সামনে। আর এসব নিয়ে ঢাকার ব্রিটিশ কাউন্সিল বা ক্রিকেট দলকে দোষারোপ করে লাভ নেই। এসব সিদ্ধান্ত দেয় ব্রিটিশ হোম অফিস। সে দেশের গোয়েনদা বিভাগ। সবাই যার যার দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকতে হয়।

অস্ট্রেলিয়ায় ক্রিকেট টিমের বাংলাদেশ সফর বাতিলের পর একটা কথা লেখায় অনেকে আহত হয়েছিলেন। আমি লিখেছিলাম বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের এগারজন সদস্য যদি কোথাও কোন ঘটনায় মারা যান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ হবেনা। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় টিমের কোন একজনের সমস্যা হলে কিন্তু এর দায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে সরে যেতে হবে। কারন ক্রিকেট ক্যাপটেনের মর্যাদা এদেশে প্রধানমন্ত্রীর সমান। ইংল্যান্ড দলেরও একই অবস্থা। কাজেই এখন আমি বড় ভয়ে ভয়ে আছি। কারন অস্ট্রেলিয়ায় দলের সফর স্থগিতের সময় বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি এতোটা খারাপ ছিলোনা। এখন নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে বিদেশিদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে বাংলাদেশকেই। যে সব দুষাদুষি চলছে এসবের রেজাল্ট ভালো হবার নয়।


Place your ads here!

Related Articles

Election and Democracy in Bangladesh, The Unknown Riddle and Proposal for Improvement

Introduction: In the contemporary world, in comparison with dictator’s, military’s or kings’ rule, democratic governance by the elected representatives is

Saving the rice of Bangladesh from extinction; it is 11th hour

From the foothills of the Himalayas to the shores of Sundarbans and the beaches of Teknaaf is situated one of

Research Paper on Dhaka Transport Part 3

ঢাকার যাতায়াত ও অন্যান্য সমস্যার একটি নিশ্চিত সমাধান (তৃতীয় পর্ব) দেশপ্রেমী সরকার কি ভাবে ঢাকার সমস্যার সমাধান করতে পারেঃ সব

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment