কলকাতা থেকে বাঙ্গালোর পথে হঠাৎ দেখি ধোনি-কোহলি-যুবরাজ

ফজলুল বারী, বাঙ্গালোর থেকে: এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট এ-ওয়ান সেভেন সেভেন ওয়ানে কলকাতা থেকে বাঙ্গালোরের যাত্রী। উদ্দেশ্য ক্রিকেট। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ দেখা। রোববার সকালে আমি শিলচর এয়ারপোর্ট থেকে কলকাতা-বাঙ্গালোর দুটি ফ্লাইটেরই বোর্ডিং কার্ড নিয়েছি। তাই কলকাতার নেতাজি সুভাস বোস বিমান বন্দরে এসে বোর্ডিং কার্ড নেবার তাড়া ছিলোনা। বিমানেও চড়েছি ধীরেসুস্থে দেরিতে। প্রথম দিকে তিন নাম্বার সারির থ্রি-এ আসনটি আমার। আসন নিয়ে বসতেই পাশের যাত্রী বলে ওঠে, জানো কোথায় বসেছো? কেনো, কোথায়? সে এক নাম্বার সারির আসনগুলোর দিকে দৃষ্টি আকর্ষনের চেষ্টা করে! ওদিকে তাকিয়ে মন হয়ে যায়। কারন সেখানে বসা বর্তমান ক্রিকেট বিশ্বের কয়েক বিস্ময়! মহেন্দ্র সিং ধোনি, বিরাট কোহলি, যুবরাজ সিংহ, আশিষ নেহরা এবং শিখর ধাওয়ান! এদের দেখে আরেক কারনে মন ভালো হয়। মনে মনে বলি, যদি একটা চান্স পাই!
এ ফ্লাইটটায় কোন বিজনেস ক্লাস অথবা বিশেষ শ্রেনী নেই। সব ইকোনমি ক্লাস। এমন একটি সাধারন বানিজ্যিক ফ্লাইটেই ভারতীয় ক্রিকেটাররা বাঙ্গালোর যাচ্ছেন দেখে ভালো লাগে। শনিবার কলকাতার ইডেন গার্ডেনসে পাকিস্তান দলকে হারিয়ে হাওয়ায় ভাসছে ভারতীয় দল! কুড়ি বছর পর ইডেনে পাকিস্তানকে হারিয়েছে ভারত। কলকাতার এক পত্রিকা তাদের শিরোনামে লিখেছে, বিরাটের ব্যাটে কুড়ি বছর পর ইডেনে শাপমুক্তি ভারতের। সেই ভারতীয় দল বাংলাদেশের সঙ্গে পরবর্তি খেলায় অংশ নিতে বাঙ্গালোর যাচ্ছে ইকোনমি ক্লাসে! এটাই বুঝি ভারতীয় দল। এটাই বুঝি ভারতীয় ক্রিকেট!
বিমান কলকাতা ছাড়তেই ঘুম দেন আশিষ নেহরা-শেখর ধাওয়ান। গল্পে মাতেন ধোনি আর বিরাট। যুবরাজ একবার আসন ছেড়ে উঠে লাগেজবক্স থেকে তার কিছু একটা নামাচ্ছিলেন। এক যাত্রী মোবাইল ফোনের ক্যমেরায় তাকে তুলছেন টের পেয়ে ক্ষেপে যান যুবরাজ। এক ক্রু এসে যাত্রীদের সতর্ক করে বলেন কেউ যাতে প্লেয়ারদের ছবি তা তোলেন। যুবরাজের মনোভাব আর এয়ারলাইন স্টাফের সতর্কতা শুনে মন খারাপ হয়। তবে কি প্লেয়ারদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাবোনা? যদিও আমার টার্গেট মহেন্দ্র সিং ধোনি অথবা বিরাট কোহলি। অন্য কেউনা।
একবার ধোনি আসন থেকে ওঠে আশীষ-ধাওয়ানের সঙ্গে গল্প জুড়ে দেন। তাকে আমরা ঠান্ডামাথার লোক জানি। মিঃ কুল। এই সুযোগে আমি ইচ্ছা করেই তাকে দেখিয়ে আমার টেবলেটে তার ছবি তুলতে থাকি। ধোনি আমার দিকে এগিয়ে এসে হাসিমুখে হিন্দিতে জিজ্ঞেস করেন, এই তুমি আমার ছবি তুলছো কেনো? আমি এই সুযোগটার অপেক্ষায় ছিলাম। আমি হিন্দি জানিনা। তাই তার জবাব দেই ইংরেজিতে। ছবি তুলতে তুলতে তাকে একটু আক্রমনের সুরে বলি, নেক্সট ম্যাচে তোমরা বাংলাদেশের সঙ্গে হারবেতো। তাই ছবি তুলে রাখছি। এই খেলাটা দেখার জন্যে আমি অস্ট্রেলিয়া থেকে উড়ে এসেছি। ধোনি জিজ্ঞেস করেন, কি বললে? এরপর নিজেকে সামলে নিয়ে বলেন, বাংলাদেশ ভালো একটা দল। ওরা হয়তো আবার আমাদের হারাতে চাইবে। কিন্তু আমার দল তাদের হারাতেই চাইবে। বাংলাদেশের তাসকিন-সানির বোলিং একশন নিয়ে হঠাৎ করে আইসিসির প্রশ্ন তোলা নিয়ে বাংলাদেশে এখন তুমুল প্রশ্ন চলছে জানো? ধোনি যেন আর কথা বাড়াতে চাইলেন না। এটা আইসিসি জানে বলে বসে গেলেন তার আসনে।
বাঙ্গালোর বিমান বন্দরে বিমান থামার পর বিশেষ এক অবস্থার সৃষ্টি হয়। যাত্রী আর খেলোয়াড়দের পৃথক দুটি বাসে করে নিয়ে যাওয়া হয় টার্মিনাল ভবনে। খেলোয়াড়দের বাস ঘিরে ছবি তুলতে থাকেন গ্রাউন্ড স্টাফরা। টারমিনাল ভবনে গিয়ে দেখি শতশত লোক লাইনে দাঁড়িয়ে খেলোয়াড়দের এক নজর দেখার অপেক্ষায়। এদের বেশিরভাগ এয়ারপোর্ট স্টাফ। নিজের দেশে ধোনিরা এমনই নায়ক। আমরা যাত্রীরা গেলাম লাগেজ বেল্টের দিকে। ধোনিরা গেলেন না। তারা টারমিনাল ভবন থেকে বেরিয়ে চলে গেলেন অপেক্ষমান বাসে। তাদের লাগেজ সংগ্রহ করছিলেন এয়ারপোর্টের স্টাফরা। নায়কদের লাগেজ সংগ্রহের এমন লোক থকেন।
Related Articles
Time to rethink the direction of Bangladesh foreign policy
Foreign policy is not formulated in a vacuum. It is based on certain ingredients that cannot be changed, such as,
যে রাধেঁ সে চূলও বাধেঃ একজন অদম্য এলিজাবেথ
Australia জাতীয় বহুসাংকৃতিক মেলাতে একজন নবীন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সাথে কথা হল। ওনি এলিজাবেথ কিকেরত। ACT প্রদেশীয় সংসদের নবীন সংসদ সদস্য
Why did Mamata Didi’s visit to Dhaka?
The West Bengal chief minister Mamata Banerjee (Didi) arrived in Dhaka on 19th February for a three day visit and