আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবসে বাংলাদেশের আদিবাসী ভাইবোনকে শুভেচ্ছা

আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবসে বাংলাদেশের আদিবাসী ভাইবোনকে শুভেচ্ছা

আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবসে বাংলাদেশের আদিবাসী ভাইবোনকে শুভেচ্ছা। আমার মনে আছে ১৯৯১ সালে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসার পর প্রথমবারের মতো সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশেও আদিবাসী দিবস পালনের উদ্যোগ নেয়া হয়। খালেদা জিয়া তখন দাবি করে বসেন বাংলাদেশে কোন আদিবাসী নেই! শেখ হাসিনা এর প্রতিবাদ করে আদিবাসীদের নানা কর্মসূচিতে অংশ নেন। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে শেখ হাসিনা ঐতিহাসিক পার্বত্য শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। সেই চুক্তি ছিল পার্বত্য চট্টগ্রামের বঞ্চিত নিগৃহীত আদিবাসীদের প্রতি একধরনের স্বীকৃতি। আজ পর্যন্ত সেই চুক্তি বাস্তবায়িত হয়নি। ২০০৮ সালে ক্ষমতায় এসে শেখ হাসিনার সরকারও দাবি করে বসে বাংলাদেশে কোন আদিবাসী নেই! এরপর থেকে বাংলাদেশে আদিবাসী নিগৃহ আরও বেড়েছে! যে দেশে সামাজিক রাজনৈতিক অর্থনৈতিকভাবে তুলনামূলক শক্তিশালী অবস্থা স্বত্ত্বেও হিন্দু সহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায় মারাত্মক হুমকির মুখে সেখানে সরকার রাষ্ট্রের এ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গির কারনে আদিবাসী জীবন কি পরিমান ঝুঁকির মধ্যে তা সহজে অনুমেয়। এ পরিস্থিতি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী।

আমাদের ভাষা জাতিস্বত্ত্বার স্বতন্ত্র অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থেই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। বাংলাদেশে আদিবাসী আছে কি নাই এ নিয়ে অনেকে শিশুসুলভ অথবা সুবিধাবাদী বিতর্ক করেন! এ নিয়ে আমার একটি সরল উত্তর হচ্ছে আমি বাঙ্গালি না বাংলাদেশে সে পরিচয় আমি ঠিক করি অথবা করবো। অনেক কিছু পর আমরা এক জায়গায় স্থির হয়েছি যে আমরা বাংলাদেশি বাঙ্গালি। তাই যদি কেউ চাকমা, মারমা, গারো বা আদিবাসী বাংলাদেশি হিসাবে নিজেদের পরিচয় দিতে পছন্দ করে, স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে তাতে আমার অসুবিধা কোথায়? পাকিস্তানিরা অনেককিছু আমাদের ওপর চাপিয়ে দিতে গিয়ে তাদের হাত পুড়েছে। আমাদের কারো কারো সেই চাপিয়ে দেবার মানসিকতা এখনো যায়নি। এই প্রবনতা আমরা যতো কাটিয়ে উঠতে পারবো, আমাদের সামাজিক সৌহার্দ্য তত বাড়বে। অনেকে নানা সময়ে অস্ট্রেলিয়ায় আদিবাসী নির্যাতনের কথা বলেন। কথা সত্য। এক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের পার্থক্য হলো অস্ট্রেলিয়া তার অপরাধ স্বীকার করে বাংলাদেশ করেনা! পূর্বপুরুষদের আদিবাসী নির্যাতনের কথা স্বীকার করে ক্ষমা চাইতে ২০০৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টের বিশেষ একটি অধিবেশন হয়। সেখানে সরকারি দল বিরোধীদল মিলে করোজোরে দেশের আদিবাসীদের উদ্দেশে বলেছে, ‘উই আর সরি’। আদিবাসী পরিবারগুলোকে এদেশে নিয়মিত ভাতা সহ যত সুযোগ সুবিধা দেয়া হয় তা অনেকের কাছে

অবিশ্বাস্য মনে হবে। বাংলাদেশে অস্ট্রেলিয়ার যত সাহায্য যায় এর বেশিরভাগ আদিবাসী এলাকার জন্যে। বাংলাদেশের সবাই মিলে তার বড় অংশ লুটেপাটে খায়। আজকের দিনটিতে সে বিষয়ে বিস্তারিত যাচ্ছিনা। সবার প্রতি অনুরোধ আদিবাসী ভাইবোনদের আরও ভালোবাসুন। নিজের জন্মভূমিতে তারা যেন অনিরাপদ বঞ্চিত না ভাবে। সব জাতিগোষ্ঠীকে যথাযথ সম্মান দিয়ে আমরা যতো মিলেমিশে থাকতে পারবো, বাংলাদেশ আরও সৌহার্দ্যপূর্ণ বৈচিত্রপূর্ণ দেশ হবে। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

adibashi


Place your ads here!

Related Articles

Hiroshima and Nuclear Weapons Disarmament

August 6th reminds us the horrors of atomic bombs or nuclear weapons. The annual 6th August Peace Memorial Ceremony, which

বেঈমান সুলতান মনসুর

ফজলুল বারী: প্রতারনামূলক মুজিব কোট পরে ধানের শীষের পক্ষে ভোটে নেমেছেন সাবেক আওয়ামী লীগার সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ! মনোনয়ন পত্র

Bangladesh: Release Factory Inspection Reports

Bangladesh government and retailers have largely failed to make public the findings of factory safety inspections ordered after the April

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment