অস্ট্রেলিয়ায় রোহিঙ্গা এবং মানুষের মর্যাদা

অস্ট্রেলিয়ায় রোহিঙ্গা আছেন অনেক। সিডনির লাকেম্বা এলাকায় গেলে তাদের অনেকের দেখা মিলবে। এরা ইন্দোনেশিয়া থেকে মাছ ধরার নৌকায় করে অস্ট্রেলিয়া ঢোকার পথে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে ছিলেন দীর্ঘ সময়। এদেশের সরকার আবার এসব লোকজনকে কারাগারে দীর্ঘদিন রাখাকে ব্যয়বহুল মনে করে। সে কারনে এক পর্যায়ে তাদেরকে কম্যুনিটি রিলিজ কর্মসূচির আওতায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে, কাজ করে খাও।
এমন রোহিঙ্গা মুসলিম অনেকের সঙ্গে কথা বলে দেখেছি এরা এদেশে শরণার্থীর মর্যাদার জন্যে আবেদন করলেও তাদেরকে তা দেয়া হয়নি। কারন অস্ট্রেলিয়া সরকারের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত হচ্ছে নৌকায় করে অবৈধভাবে যারা আসবে তাদেরকে এখানে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়া হবেনা। এই রোহিঙ্গাদের একটি নির্দিষ্ট সময়ের ভিসা দিয়ে বলা হয়েছে এই সময়ের মধ্যে কাজ কর্ম করে টাকা জমিয়ে দেশে ফেরত চলে যেতে হবে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার যে আইন তাতে সরকার এদেরকে এখান থেকে বের করতেও পারবেনা। কারন এরা কোথায় যাবে? তাদের দেশতো তাদের স্বীকার করেনা। দেশহারা এই মানুষগুলো সত্যিকারের শরণার্থী।
অষ্ট্রেলিয়ায় এই মানুষগুলোর সবাইকে অফিসিয়েল শরণার্থীর মর্যাদা দেয়া না হলেও শরণার্থীদের যে সব সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয় এর সবই দেয়া হচ্ছে। যেমন বেকারভাতা, ফ্রি চিকিৎসা সুবিধা, ইংরেজি শিক্ষার ব্যবস্থা সহ ভোটিং রাইট-পাসপোর্ট ছাড়া একজন নাগরিককে যে সব সুযোগ সুবিধা দেয়া হয় এর সবকিছু। এর প্রমান আমি এখানে তাদের চোখেমুখে দেখি।
লাকেম্বায় যে সব রোহিঙ্গা যুবককে দু’বছর আগেও ভাঙ্গাচোরা বিধবস্ত চেহারার দেখতাম তাদের এখন দেখে চেনাই যায় না! স্বাস্থ্য তাদের অনেক ভালো-উন্নত হয়েছে। পোশাকে-চলনেও তারা অনেক স্মার্ট। আসলে মানুষ ভালো থাকলে তাদের সবই বদলে যায়। রোহিঙ্গারা এখানে শুধু সরকারি ভাতা নয়, কাজ করেও একেকজন বিস্তর কামাচ্ছে। এরা যেহেতু সপ্তাহে সাতদিনই কাজের অনুমতিপ্রাপ্ত, এরা পরিশ্রমী, তাই অনেকে তাদের কাজ দিতে চায়। লাকেম্বায় এদের এরমাঝে একাধিক গ্রোসারিশপ, সোনার দোকানের মালিকানাও হয়ে গেছে। রোহিঙ্গাদের একাধিক এনজিও’ও আছে এখন অস্ট্রেলিয়ায়।
লাকেম্বায় আগে টাকা পাঠাতে গেলে রোহিঙ্গা যুবকদের টাকা পাঠানোর কায়দা দেখতাম। এরা ফোন করে পরিবারের কোন এক সদস্যকে টেকনাফ বা বাংলাদেশের কোথাও নিয়ে আসতো। এখন আর তাদেরকে সেভাবে টাকা পাঠাতে দেখা যায়না। এ ব্যাপারে আমাকে একজন বলেছেন, কোথায় পাঠাবো কার কাছে পাঠাবো? দেশেতো কেউ নেই। হয় তারা মারা গেছেন অথবা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। আমাকে একজন বলেছেন তারা সাত ভাই, তিনি অস্ট্রেলিয়ায়। অপর ছয় ভাই এখন আছেন আমেরিকা-ইউরোপের ছয় দেশে। অস্ট্রেলিয়ার প্রতি এদের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। এই যুবক আগে মালয়েশিয়ায় ছিলেন। আমাকে তিনি বলেন ওখানে চারপাশে মুসলমানদের মধ্যে ছিলাম। কিন্তু কোনদিন মানুষের মর্যাদা পাইনি। অস্ট্রেলিয়া দেশটি মুসলমানদের দেশ নয়। কিন্তু এখানে অবৈধ-বেআইনিভাবে এলেও এদের কাছে মানুষের মর্যাদা-সম্মান পেয়েছি এবং এখনও পাচ্ছি। এখন আর নিজেকে অসহায় লাগেনা।
Related Articles
হে ঈশ্বর তুমি ওদের বাংরেজ না করে বাঙ্গালী কর!
আমাদের সময়টা কি হারিয়ে গেল কালের গর্ভে। বিলীন হয়ে গেল রুপকথার মোড়কে মুড়ানোর মত আবেশ করা অনুভুতি গুলি। নুতন বইয়ের
Luxurious Apartment for Sale in Dhaka Cantonment
YOU CAN DOWNLOAD THE PDF WITH MORE DETAILED INFORMATION 2013/BROCHURE_CURVE_2012.10_968566764.pdf ( B)