কাজী জাফরের পরিণতি যেন আর কারো না হয়

কাজী জাফরের পরিণতি যেন আর কারো না হয়

কাজী জাফরকে স্কুল জীবন থেকে অন্য একভাবে চিনি। আমার দুই মামা তার দল ইউপিপি করতেন। ওই সময় দেখতাম তাদের একজন একটি পত্রিকার বান্ডিল নিয়ে বাসায় বাসায় বিলি করতেন প্রতি সপ্তাহে। পত্রিকার নাম সাপ্তাহিক নয়াযুগ। মাষ্টহেডের নিচে লেখা থাকতো ‘টঙ্গির শ্রমিকদের অর্থ সাহায্যে প্রতিষ্ঠিত’। তখন শুনি টঙ্গি এলাকার একজন শ্রমিক নেতা কাজী জাফর। পত্রিকাটি তিনি বের করেছেন।

এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময় আমি ফেনীতে পড়ি। ইউপিপির নেতা কাজী জাফর ফেনীতে এক জনসভায় বক্তৃতা দিতে এসেছেন। তিনি আমার মামাদের নেতা। তাই তার বক্তৃতা শুনতে যাই। সেখানে তিনি এরশাদকে ব্যঙ্গ করে বলেন, ‘এরশাদ সাহেব বলেছেন তিনি এই করে ফেলবেন, সেই করে ফেলবেন! আমরা রাজনীতিবিদরা কী তাহলে বাদাম খাবো?’ এর এক বা দু’দিন পর কাজী জাফর এরশাদের দলে যোগ দেন! অথচ এর আগে ক্যাপ্টেন (অব:) আব্দুল হালিম চৌধুরী নামের একজন এরশাদের দলে যোগ দিলে তিনি তাকে কটাক্ষ করে বলেছিলেন, ‘আরেকটা রামছাগল এরশাদের খোয়াড়ে যোগ দিয়েছে’! সেই কাজী জাফরও পরে আরেকটা রামছাগল হয়ে গেলেন!

অবশ্য সামরিক শাসকদের সঙ্গে তার যাতায়াত সেটিই প্রথম না। এর আগে তিনি একবার সামরিক শাসক জিয়ার সঙ্গে যোগ দিয়ে তার শিক্ষামন্ত্রী হয়েছিলেন!

এরপর সাংবাদিকতায় এসে অনেকবার তার কাছে রিপোর্টের কারণে যাওয়া হয়েছে। এরশাদের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান শুরুর পরের ঘটনা। কার্ফুর মধ্যে অগ্রজ সাংবাদিক নাজিম উদ্দিন মোস্তান ভাই‘র সঙ্গে গেছি তার সচিবালয়ের অফিসে। ওই অবস্থায় তিনি আমাদের সঙ্গে কাব্য করছিলেন! আমাদের তিনি বলেন, ‘আমি রাজপথের গন্ধ শুঁকে পরিস্থিতি বুঝতে পারি। এ অবস্থা বেশিক্ষণ থাকবে না। মেঘ দূর হয়ে যাবে। আবার সূর্য হাসবে।’

কাজী জাফরের সেই মেঘ আর দূর হয়নি। সে রাতেই পদত্যাগের ঘোষণা দেন এরশাদ। হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। মানুষের আক্রোশ থেকে বাঁচতে কাজী জাফরসহ জাতীয় পার্টির সব মন্ত্রী-নেতা সে রাতেই পালিয়ে যান। গণঅভ্যুত্থানে বিজয়ী মানুষেরা কাজী জাফরদের খুঁজতে সে রাতে মন্ত্রিপাড়ার বাড়ি বাড়ি হানা দিয়েছে। কিন্তু কোথাও তাদের টিকিটিরও সন্ধান পায়নি।

দৈনিক জনকন্ঠে আমার রাজনৈতিক বিটটি ছিল জাতীয় পার্টির। এরজন্যে কাজী জাফরসহ ওই দলের নেতাদের খুব ঘনিষ্ঠভাবে দেখার জানার সুযোগ হয়েছে। তাদের আমি মাঝে মাঝে মজা করে বলতাম, আপনাদের পার্টির নানা তথ্য শুনতে লিখতে এবং পড়তে মজা লাগে। কারণ এখানে দুর্নীতি, সেক্স, পলিটিক্যাল গিরিঙ্গি সব আছে। এমন নাচেগানে ভরপুর সম্পূর্ণ রঙ্গিন পার্টি আর দ্বিতীয়টি নেই।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরার পর জামায়াত- জাতীয় পার্টিকে নিয়ে চারদলীয় জোট গঠন করা হয়। কাজী জাফর আমাকে তখন একবার বলেছিলেন, চারদলীয় জোটে জামায়াতকে নিতে বেগম খালেদা জিয়া প্রথমে রাজি ছিলেন না। খালেদার ভয় ছিল জামায়াতকে সঙ্গে নিলে তিনি পশ্চিমা ব্লকের সমর্থন হারাবেন। কিন্তু তারা খালেদা জিয়াকে এ কথা বলে বোঝান যে জামায়াতকে সঙ্গে রাখলে তারা চোখে চোখে থাকবে। তাদের অগোচোরে কিছু করতে পারবে না।

পরের কাহিনীটি হলো, জামায়াত খালেদা জিয়ার শুধু চোখে চোখে থাকা না, একান্ত হয়ে গেলো! আর সেখান থেকে আউট হয়ে গেলো জাতীয় পার্ট! ওই সময়ে আবার নাজিউর রহমান মঞ্জুর নেতৃত্বে একটি গ্রুপ খালেদা জিয়ার সঙ্গে থেকে গিয়ে চারদলীয় জোটের নাম রক্ষা করে।

গত কয়েক বছরে সিডনিতে কয়েক দফায় দেখা হয়েছে কাজী জাফরের সঙ্গে। এখানে তার দুই মেয়ে থাকেন। তাদের একজন লেবানিজ বংশোদ্ভূত একজনকে বিয়ে করেছেন। আরেকজন বিয়ে করেছেন এক সময়কার চট্টগ্রামের সাড়া জাগানো এক ছাত্রলীগ নেতাকে। কাজী জাফরের অস্ট্রেলিয়া আসা থাকা নিয়ে অনেক সত্যমিথ্যা তথ্য প্রচার হয়। দেশে দুর্নীতি মামলা থাকায় তিনি এখানে এসে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন। কিন্তু রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদনে দুর্নীতির মামলার তথ্য চেপে যান। এখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিদের এক নেতা সে তথ্য ফাঁস করে দেন অস্ট্রেলিয়ার মিডিয়ায়। দ্য সিডনি মর্নিং হেরাল্ড তখন চাঞ্চল্যকর একটি লিড রিপোর্ট করে ‘করাপ্ট পিএম ওয়েলকাম অস্ট্রেলিয়া’ শিরোনামে। ওই রিপোর্টের পর হৈচৈ পড়ে গেলে কাজী জাফর কী করে অস্ট্রেলিয়ায় রাজনৈতিক আশ্রয় পেলেন তা তদন্তের নির্দেশ দেন দেশটির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জন হাওয়ার্ড।

কিন্তু এরপরও তার আশ্রয় বাতিল হয়নি। অস্ট্রেলিয়া একবার কাউকে আশ্রয় দিলে সে আশ্রয় সাধারণতঃ বাতিল করে না। সে আশ্রয়ের কারণে অস্ট্রেলিয়ার পারমানেন্ট রেসিডেন্ট হওয়াতে এদেশে থাকার সময় তিনি একটি ভাতা পেতেন। তার চিকিৎসাও ফ্রি ছিল দেশটায়। এ কারণে দেশে যখনই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়তেন, তখনই তিনি চলে আসতেন অস্ট্রেলিয়ায়। এদেশটায় তার কিডনি প্রতিস্থাপনের কাজও হয়েছে।

সিডনি মর্নিং হেরাল্ডের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছিলেন কাজী জাফর। পরে পত্রিকাটি তার সঙ্গে একটি আপোসে আসে। কারণ দূর্নীতির অভিযোগে দেশে তার সাজার বিষয়টি যে হাইকোর্টে আপিল অবস্থায় ছিলো, সে তথ্য পত্রিকার রিপোর্টে ছিলো না।

সিডনিতে ২০০৭ সালে প্রথমবার দেখা হবার পর তাকে নিয়ে আমি জনকন্ঠে লিখেছিলাম। বাংলাদেশ থেকে আমদানি হয়ে আসা আইড় মাছ আর লাউ দিয়ে আমার জন্যে সুস্বাদু রান্না করেছিলেন কাজী জাফর ভাবী। আমার লেখায় সে তথ্যটি থাকাতে অনেকে আক্রমণ করে আমার বিরুদ্ধে লিখেন! ‘আপনি একজন চিনি জাফরের সঙ্গে খেয়েছেন, একজন মাটি জাফরের সঙ্গে খেয়েছেন! এরশাদের সঙ্গে থাকার সময়ে চিনি কেলেংকারি, ঢাকা শহর রক্ষা বাঁধে দুর্নীতির কারণে তখন তার নামের সঙ্গে এসব বিশেষণ যোগ হয়েছিলো!

তখন মনে মনে একটা মানসিক প্রতিক্রিয়াও হয়েছিলো! দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন এরশাদ কেমন করে দেশে জায়েজ হয়ে গেলেন! আর মাফ নেই কাজী জাফরের! আসলে কাজী জাফররা একসময় মানুষকে বিপ্লবের স্বপ্ন দেখাতেন বলে তাদের স্খলন মানুষ মেনে নিতে পারেননি। এরশাদেরতো চরিত্র বলেই কিছু নেই। তার আবার কিসের স্খলন!

২.
শেষবার ২০১০ সালে সিডনিতে তার সঙ্গে দেখা হয়। এরপরও তিনি এসেছেন। কিন্তু দেখা হয়নি। সর্বশেষ দেখার আগে তিনি বারবার তার মেয়ের বাসায় যাবার জন্যে ফোন করছিলেন। আমি যেতে সময় বের করতে পারছিলাম না দেখে তিনি বলেছিলেন, ঠিক আছে, আমি তোমার বাসায় আসবো। তখন তাকে শর্ত দিয়ে বলি, তাহলে আমার বাসায় খাবেন।

তিনি তার সিডনিবাসী স্বজন একজন আলমগীর ইসলাম বাবুকে নিয়ে আসেন এক দুপুরে। তখন বিধবস্ত এক চেহারা কাজী জাফরের! আলাপে আলাপে টের পাই, তিনি চাইছেন তাকে নিয়ে একটা রিপোর্ট লিখি। এর আগে তাকে নিয়ে লিখে অনেক গালমন্দ শুনেছি। এরজন্যে আমি আর লিখতে চাইছিলাম না। তিনি একরকম অনুনয় বিনয় করছিলেন, তিনি খুব অসুস্থ, মৃত্যুশয্যায় এমন একটি লেখা যেন লিখি!

পরে এর কারণও বুঝতে পারি। অস্ট্রেলিয়ায় হার্টের অপারেশন হবে বলে তিনি দেশ থেকে বিদায় নিয়ে এসেছেন! এ নিয়ে দেশে তার জন্যে মিলাদও হয়েছে। কিন্তু এখানে সেটি হচ্ছে না দেখে দেশে তাকে নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। মুখরক্ষার কারণে তিনি একটা লেখা চান যে তিনি মৃত্যুশয্যায়! তখন ভাবি একজন লোক বিশ্বাস হারিয়ে ফেললে তাকে নিয়ে এভাবে কত রকম কথা হয়!

কাজী জাফর আমাকে বলেছিলেন, তার শারীরিক অবস্থার জন্যে ডাক্তাররা অপারেশনের সাহস করছেন না। তার পীড়াপীড়িতে আমি সেদিন লিখেছিলাম। আমার লেখার রুমটি আমার টাউন হাউস বাসার দোতলায়। ‘মৃত্যশয্যায় থাকা কাজী জাফর’ দোতলার সিঁড়ি ভেঙ্গে ওঠে আমার লেখার টেবিলের পাশে বসে থাকেন! কম্পিউটারের স্ক্রিনে চোখ রেখে দেখেন প্রতিটা শব্দ আমি কী লিখছি! পত্রিকায় আমরা যারা কাজ করেছি তাদের চাকরি বাঁচাতে অফিসের অনেক ফরমায়েশি লেখাও লিখতে হয়। কিন্তু আমিতো কাজী জাফরের চাকরি করি না। এরপরও সেদিন তার ফরমায়েসে এমন একটি লেখা মনের বিরুদ্ধে লিখেছি। আমার সামনে তিনি তখন একজন অসহায় অসুস্থ বৃদ্ধ মানুষ! একজন সাংবাদিকের কৃপা প্রার্থী!

লেখা শেষে বাংলাদেশ প্রতিদিনের নঈম নিজামকে ফোন করে লেখাটি তার কাছে পাঠাই। বাংলাদেশ প্রতিদিনে সে লেখাটি ছাপাও হয়েছিলো। এর কিছুদিন পর দেশে ফিরে যান কাজী জাফর। এরপরও তিনি একাধিকবার সিডনি এসেছেন। কিন্তু আমাকে ডাকেননি। আমিও যেচে তার সঙ্গে দেখা করতে যাইনি।

তার রাজনীতি নিয়ে তার সঙ্গে অনেক তর্ক হতো। সামরিক শাসকদের সঙ্গে তার ঢ্লাঢলির প্রসঙ্গ তুললে ক্ষেপে গিয়ে বলতেন, এতে অসুবিধা কী! দক্ষিণ আমেরিকার অনেক দেশেও সামরিক শাসকদের নেতৃত্বে অনেক কল্যাণ হয়েছে।

আমাকে একবার বলেছিলেন, তার জীবনের সবচেয়ে ভুল সিদ্ধান্ত ছিলো জিয়ার সঙ্গত্যাগ। এরশাদের সঙ্গে যোগ দেয়া। কিন্তু এ কথাগুলো তিনি তখন লিখতে দেননি! কারন ওই সময়ে অসুস্থ কাজী জাফরকে চিকিৎসার জন্যে এয়ার এম্বুলেন্সে করে ব্যাংকক পাঠিয়েছিলেন এরশাদ। সেখান থেকে তিনি সিডনি আসেন। তার রাজনৈতিক সুবিধার জন্যে তিনি এরশাদকে নিয়ে বিএনপি জোটে গিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের জোটে এরশাদের আগমন তিনি পছন্দ করেননি। এক সময়কার চীনপন্থী রাজনীতিকদের কাছে প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ছিলো আওয়ামী লীগ। বিএনপি-জামায়াত তাদের কাছে ভালো। কিন্তু আওয়ামী লীগ না।

তাকে একবার মজা করে বলেছিলাম, আপনি যে বিএনপির সঙ্গে গেলেন, বিএনপিতো আপনার চৌদ্দগ্রামে জামায়াতের আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরকে বাদ দিয়ে আপনাকে মনোনয়ন দেবে না। জবাবে তিনি বলেছিলেন, মনোনয়ন না দিক টেকনোক্রেট মন্ত্রীতো করবে।

তিনি এখন সবকিছুর উর্ধে। তার জন্য খালেদা জিয়াকে আর কিছু করতে হবে না। মাঝে জাতীয় পার্টির কিছু লোকজনকে তিনি বিপদে ফেলে গেলেন! খালেদা জিয়া ক্ষমতায় গেলে অন্তত একজন টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী হবেন এই আশায় এই লোকগুলোকে নিয়ে তিনি বিএনপি জোটে গিয়েছিলেন। তাকে বিশ্বাস করে তার সঙ্গে যাওয়া লোকগুলো এখন ‘না ঘরকা না ঘাটকা’ হয়ে গেলো! কারণ শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ, খালেদা জিয়ার বিএনপির মতো এরশাদকে বাদ দিয়ে জাতীয় পার্টির মূলধারা হয়না।

কাজী জাফরের মৃত্যু সংবাদ প্রচারের পর আমাকে একজনের পাঠানো ক্ষুদে বার্তাটি খুবই নিষ্ঠুর এবং করুণ মনে হয়েছে! আমাকে তিনি লিখেছেন, আর যাতে কারো পরিণতি কাজী জাফরের মতো না হয়! একসময় ছিলেন মাওলানা ভাসানীর ভাবশিষ্য ডাকসাঁইটে তরুণ ছাত্রনেতা। এরপর টঙ্গির শ্রমিক নেতা। সেই লোকটি অত:পর সামরিক শাসকদের পদলেহী হয়ে একবার জিয়া, একবার এরশাদ; এমন করে করে হয়ে গেলো রাজনৈতিক এতিমদের মতো একজন! কী নিষ্ঠুর পরিণতি একদার ডাকসাঁইটে একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের! নানা বদনাম ছিলো তার শেষ সঙ্গী। কিন্তু আমার কাছে তাকে একজন অভাবী মানুষ মনে হয়েছে। অভাবী না হলে কী বাংলাদেশের একজন রাজনীতিক অসুখে পড়লে ফ্রি চিকিৎসার আশায় অস্ট্রেলিয়া আসেন!


Place your ads here!

Related Articles

১৯৭১ ভেতরে বাইরে – একটি নিরপেক্ষ এবং নির্মোহ বিশ্লেষন – পর্ব ২

এই অধ্যায়ে জনাব এ, কে খন্দকার ১৯৭১ জানুয়ারী থেকে ২৬ মার্চ’ পর্‍যন্ত ঘটনাবলির উপর নিন্মোক্ত কয়েকটি বিষয়ে/ব্যাপারে মন্তব্য করেছেন্, যা

Whether or How Far the Management Tools are Applicable in Education?

(Part One) Preamble : In the recent decades revolutionary changes have taken place in industries and business houses due to

গাছ, প্রকৃতি ও আমরা

প্রতিদিন কাজে যাবার আর বাসায় ফেরবার সময় রাস্তার পার্শ্বে এই অসাধারন সুন্দর গাছগুলিকে দেখি। আমার বাসার পার্শ্বে রাস্তায়, উল্টা দিকের

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment