জীবন ভ্রমন ৩ , ৪ :
জীবন ভ্রমন ৩ : পাড়ার সকল ছেলে মোরা ভাই ভাই , এক সাথে খেলি আর পাঠশালায যাই । শহরে এই দৃশ্য কম দেখা গেলেও গ্রামীন পরিবেশে দৃশ্য মান ছিল বেশ । টেকনোলজিকাল সভ্যতার ক্রমবিকাশের সাথে সাথে কবির কবিতার পংতি ম্লান হয়ে যাচ্ছে । টেকনোলজির সাথে তাল মিলিয়ে কবিতা ও ছড়ার উন্নতি হচ্ছে । আর পাঠ্য সূচী থেকে বাদ পড়ে যাচ্ছে সরল প্রানের কবিতা গুলো । নতুন কবিদের বাচিযে রাখতে হবে ।
কাক যে উপকারী পাখি তা দেখেছি স্বাধীনতা উত্তর ঢাকায় । গৃহস্থালীর বর্জ্য পিক আপের তেমন কোনো সুব্যবস্থা পাকিস্তানিরা রেখে যায় নি । কাক ডাকা ভোরে কাকরা আনন্দ করে পরিষ্কার করত । আর মাঝে মাঝে তিন তালা থেকে আটার রুটি ছুড়ে দিতাম । আর কাকরা ইলেকট্রিক ক্যাবল থেকে উড়ে গিয়ে ধরত । কাকদের রুটি খাওয়ার কম্পিটিশন দেখতাম আর ভাবতাম কাকেরা ইলেকট্রিক সক হয় না কেন । অথচ একদিন আমি চামচ দিয়ে পাওয়ার পয়েন্ট স্পর্শ করতেই ধাক্কা ।
আমাদের সরকারী কলোনি কবির সেই পাড়ার মতই ছিল । কার বাবা কি চাকরি করতেন তা কখনো বিবেচনা না করে এক সাথেই খেলতাম , স্কুলে যেতাম , ভোরে পুলিশ হাসপাতালের বাগানের ফুল কুড়াতাম , শহিদ মিনার বানাতাম , রাতে অপোজিশনের ছেলেরা ভেঙে দিয়ে মজা পেত, আর আমারা প্রতিশোধের জন্য এক বছরঅপেক্ষা করতাম ।
একবার ২১ ফেব্রুয়ারীতে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে স্কুলের কয়েক জন বন্ধু যাচ্ছিলাম । সপ্তম কি ৮ম শ্রেনীর ছাত্র ছিলাম l ভোরে পায়ে হেটে কাকরাইল -রমনা পার্ক -রেস কোর্স ময়্দান হয়ে । একজন বলল ফুল নিতে হবে । রমনা পার্কের সেই গাধা ফুল চিড়তে গিযে বেরসিক আনসার/ গাডের নির্দেশ মত আমাদেরকে কান ধরতে হয়েছিল । অতীত অভিজ্ঞতা থেকে তারা ভোর থেকে গার্ড দিচ্ছিল রমনা রেস্টুরেন্ট সংলগ্ন এক্সিট পয়েন্টে । অপমানে সেইবার আর শহীদ মিনারে যাওয়া হয়নি ।(অসমাপ্ত )
জীবন ভ্রমন ৪ : রিক্সা , বেবি ট্যাক্সি, মুড়ির টিন , প্রগতির তৈরী ৬ নং বাস পিছনে ফেলে আজ ঢাকার বুকে চলছে মডার্ন যান বাহন । ১৯৭২ সাল । ঢাকা ছিল রিক্সার শহর । আর রিক্সায় চড়ে ঘুরে বেড়ানো একটা বিনোদন ছিল ।
ভৈরব ব্রিজ এর একটি spanner সম্ভবত মুক্তি যদ্দারা নস্ট করেছিল পাক হানাদের গতিবিদী সিমাবদ্দা করার জন্য । তাই তখন চাদপুর- সদর ঘাট লন্চ -স্টীমার সার্ভিস একটি প্রধান পাবলিক পরিবহন ছিল । ১৯৭২ সালের সেই প্রথম দিনের সদর ঘাট থেকে মতিঝিল রিক্সা ভ্রমন আজ ও অনেক কিছু মনে করিয়ে দেয় । ফকিরাপুল থেকে কাকরাইল মোর (রমনা পার্ক )আট আনা রিক্সা ভাড়া । দুই বার চিন্তা করতাম রিক্সায় যাব, না হেটে গিয়ে পার্কে বাদাম খাব ।
সেইদিন ফেস বুকে একজন একটি বাসের ছবি দিয়ে বলেছিল – চিনতে পারেন কিনা । সাথে সাথে মনে পড়ে গেল রামপুরা টূ সদরঘাট ভায়া গুলিস্তান -মালিবাগ । আমাদের সুপরিচিত মুড়ির টিন । গুলিস্তান টু সদর ঘাট ৩০ পয়সা ভাড়া ছিল । বহু বার উঠেছি এই বাসে । বাসের বডিতে হেল্পার হাত দিয়ে পথ ক্লিয়ার এর জন্য থাপ্পড় দিলে খালি মুড়ির তিনের মোট মচমচ আওয়াজ হত । তখন বাসে একজন টিকেট কালেক্টর থাকত । কালেক্টর সামনে থেকে পিছনে যাওয়ার আগেই অনেকে নেমে পড়ত । এতে হেল্পার এর পাচ দশ পয়সা লাভ হত ।
স্বাধীনতার পর প্রগতির তৈরী নতুন বাস গুলো (৬ নং বাস ) মতিঝিল পীর জঙ্গি মাজার হতে গুলশান -বনানী রুটে চলত । এদের দাপট ছিল ভিন্ন রকম । লাল বাস ও মুড়ির টিনের পথ আটকে রেখে কাস্টমার তুলত । পরিবহন খাতে মোড়ল গিরী শুরু তখন থেকে । আর লাল বাসের অধপতন শুরু । আজ পর্যন্ত লাভের মুখ দেখতে পারে নাই । এইত সেইদিন কেনা লাল দোতলা বাস গুলো সারিবদ্দ ভাবে অকেজো হয়ে দাড়িয়ে আছে । (অসমাপ্ত )
Related Articles
অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট সফরকে অসম্ভব করে তুলবেন না
বাংলাদেশে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট দলের শিডিউলড সফরটি পিছিয়ে গেছে। এটি আর এখন হবে কিনা বা হলে কবে হবে সেটিই এখন ভাবনা
ঐশী খুনি, কিন্তু সুমির দোষ কি?
পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের পরির্দশক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান জোড়াখুনের প্রধান আসামি, তাদের একমাত্র মেয়ে ঐশী রহমান সম্প্রতি