by Anamul Bhuiyan Mukul | July 20, 2015 9:37 am
জীবন ভ্রমন ৩ : পাড়ার সকল ছেলে মোরা ভাই ভাই , এক সাথে খেলি আর পাঠশালায যাই । শহরে এই দৃশ্য কম দেখা গেলেও গ্রামীন পরিবেশে দৃশ্য মান ছিল বেশ । টেকনোলজিকাল সভ্যতার ক্রমবিকাশের সাথে সাথে কবির কবিতার পংতি ম্লান হয়ে যাচ্ছে । টেকনোলজির সাথে তাল মিলিয়ে কবিতা ও ছড়ার উন্নতি হচ্ছে । আর পাঠ্য সূচী থেকে বাদ পড়ে যাচ্ছে সরল প্রানের কবিতা গুলো । নতুন কবিদের বাচিযে রাখতে হবে ।
কাক যে উপকারী পাখি তা দেখেছি স্বাধীনতা উত্তর ঢাকায় । গৃহস্থালীর বর্জ্য পিক আপের তেমন কোনো সুব্যবস্থা পাকিস্তানিরা রেখে যায় নি । কাক ডাকা ভোরে কাকরা আনন্দ করে পরিষ্কার করত । আর মাঝে মাঝে তিন তালা থেকে আটার রুটি ছুড়ে দিতাম । আর কাকরা ইলেকট্রিক ক্যাবল থেকে উড়ে গিয়ে ধরত । কাকদের রুটি খাওয়ার কম্পিটিশন দেখতাম আর ভাবতাম কাকেরা ইলেকট্রিক সক হয় না কেন । অথচ একদিন আমি চামচ দিয়ে পাওয়ার পয়েন্ট স্পর্শ করতেই ধাক্কা ।
আমাদের সরকারী কলোনি কবির সেই পাড়ার মতই ছিল । কার বাবা কি চাকরি করতেন তা কখনো বিবেচনা না করে এক সাথেই খেলতাম , স্কুলে যেতাম , ভোরে পুলিশ হাসপাতালের বাগানের ফুল কুড়াতাম , শহিদ মিনার বানাতাম , রাতে অপোজিশনের ছেলেরা ভেঙে দিয়ে মজা পেত, আর আমারা প্রতিশোধের জন্য এক বছরঅপেক্ষা করতাম ।
একবার ২১ ফেব্রুয়ারীতে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে স্কুলের কয়েক জন বন্ধু যাচ্ছিলাম । সপ্তম কি ৮ম শ্রেনীর ছাত্র ছিলাম l ভোরে পায়ে হেটে কাকরাইল -রমনা পার্ক -রেস কোর্স ময়্দান হয়ে । একজন বলল ফুল নিতে হবে । রমনা পার্কের সেই গাধা ফুল চিড়তে গিযে বেরসিক আনসার/ গাডের নির্দেশ মত আমাদেরকে কান ধরতে হয়েছিল । অতীত অভিজ্ঞতা থেকে তারা ভোর থেকে গার্ড দিচ্ছিল রমনা রেস্টুরেন্ট সংলগ্ন এক্সিট পয়েন্টে । অপমানে সেইবার আর শহীদ মিনারে যাওয়া হয়নি ।(অসমাপ্ত )
জীবন ভ্রমন ৪ : রিক্সা , বেবি ট্যাক্সি, মুড়ির টিন , প্রগতির তৈরী ৬ নং বাস পিছনে ফেলে আজ ঢাকার বুকে চলছে মডার্ন যান বাহন । ১৯৭২ সাল । ঢাকা ছিল রিক্সার শহর । আর রিক্সায় চড়ে ঘুরে বেড়ানো একটা বিনোদন ছিল ।
ভৈরব ব্রিজ এর একটি spanner সম্ভবত মুক্তি যদ্দারা নস্ট করেছিল পাক হানাদের গতিবিদী সিমাবদ্দা করার জন্য । তাই তখন চাদপুর- সদর ঘাট লন্চ -স্টীমার সার্ভিস একটি প্রধান পাবলিক পরিবহন ছিল । ১৯৭২ সালের সেই প্রথম দিনের সদর ঘাট থেকে মতিঝিল রিক্সা ভ্রমন আজ ও অনেক কিছু মনে করিয়ে দেয় । ফকিরাপুল থেকে কাকরাইল মোর (রমনা পার্ক )আট আনা রিক্সা ভাড়া । দুই বার চিন্তা করতাম রিক্সায় যাব, না হেটে গিয়ে পার্কে বাদাম খাব ।
সেইদিন ফেস বুকে একজন একটি বাসের ছবি দিয়ে বলেছিল – চিনতে পারেন কিনা । সাথে সাথে মনে পড়ে গেল রামপুরা টূ সদরঘাট ভায়া গুলিস্তান -মালিবাগ । আমাদের সুপরিচিত মুড়ির টিন । গুলিস্তান টু সদর ঘাট ৩০ পয়সা ভাড়া ছিল । বহু বার উঠেছি এই বাসে । বাসের বডিতে হেল্পার হাত দিয়ে পথ ক্লিয়ার এর জন্য থাপ্পড় দিলে খালি মুড়ির তিনের মোট মচমচ আওয়াজ হত । তখন বাসে একজন টিকেট কালেক্টর থাকত । কালেক্টর সামনে থেকে পিছনে যাওয়ার আগেই অনেকে নেমে পড়ত । এতে হেল্পার এর পাচ দশ পয়সা লাভ হত ।
স্বাধীনতার পর প্রগতির তৈরী নতুন বাস গুলো (৬ নং বাস ) মতিঝিল পীর জঙ্গি মাজার হতে গুলশান -বনানী রুটে চলত । এদের দাপট ছিল ভিন্ন রকম । লাল বাস ও মুড়ির টিনের পথ আটকে রেখে কাস্টমার তুলত । পরিবহন খাতে মোড়ল গিরী শুরু তখন থেকে । আর লাল বাসের অধপতন শুরু । আজ পর্যন্ত লাভের মুখ দেখতে পারে নাই । এইত সেইদিন কেনা লাল দোতলা বাস গুলো সারিবদ্দ ভাবে অকেজো হয়ে দাড়িয়ে আছে । (অসমাপ্ত )
Source URL: https://priyoaustralia.com.au/articles/2015/%e0%a6%9c%e0%a7%80%e0%a6%ac%e0%a6%a8-%e0%a6%ad%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%ae%e0%a6%a8-%e0%a7%a9-%e0%a7%aa/
Copyright ©2025 PriyoAustralia.com.au unless otherwise noted.