আবদুল্লাহ আবু সাইদ আমার শিক্ষক নন তারও বেশী কিছু

আবদুল্লাহ  আবু  সাইদ আমার  শিক্ষক  নন তারও  বেশী  কিছু

আমরা যখন সদ্য কৈশোর ছাড়িয়ে কলেজে গিয়েছি আমাদের এক মুগ্ধকর আকৃষ্ট করলেন। তখন স্যার বিরাট বিশাল আবদুল্লাহ্‌ আবু সাঈদ হয়ে উঠেননি। স্যারও তখন তরুণ। দীর্ঘদেহী সুদর্শন অবয়ব, অপূর্ব কথন শৈলী যাঁর, সে হ্যামেলিনের বাঁশী ওয়ালার পিছনে পিছনে আমরা ছুটেছি।

ঢাকা কলেজে আমি বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলাম। তবে স্যারের শিক্ষা আমাদের অর্থ রোজগারের ফন্দিফিকির শেখায় নি। শিখিয়েছে আত্মার আনন্দ খোঁজার কৌশল আর শৈলী। সহজ সরল জীবন যাপন ও স্বপ্নের পিছনে ছুটে চলার আনন্দ।

বিজ্ঞানের ছাত্র আবদুল্লাহ আবু সাইদের ভক্ত , এই কথা বলে আমি কৃতিত্ব দাবী করছি না। আজ এই হলে অনেকেই আছেন যারা বিজ্ঞানই পড়তেন তারা এখন স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত । তখন সময়ে সময়ে বিজ্ঞানের ক্লাস ফাঁকি দিয়ে তারাও স্যারের ক্লাসে এসে বসতেন।

আমার জীবনে আনন্দের একটি স্মৃতি হচ্ছে স্যারের ক্লাসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘হৈমন্তী’র পাঠ নেওয়া। স্যারের সেই আলোচনা আমাদের কোন ভাবনার ভুবনে ভাসিয়ে নিয়ে যেতো নিজেরাও জানতাম না। ঘণ্টাগুলো মুহূর্ত হয়ে নিমেষে শেষ হয়ে যেতো।

স্যারকে অনেক জ্বালিয়েছি। আমার বন্ধু খান মোহাম্মদ ফারাবী ও সাদীর(আজকের কলামিষ্ট হাসান ফেরদৌস) সাথে সাথে একুশের স্মরণিকার জন্যও নানা আবদারে স্যারকে বিরক্ত করেছি।

মানুষ শিক্ষককে মনে রাখতে পারে বা নাও রাখতে পারে তবে গুরুকে মানুষ ভোলে না। মেধায় ও মননে গুরুকে ধারণ করে, লালন করে। আবদুল্লাহ আবু সাইদ শুধু আমার শিক্ষক নন আমার ও আমার মত আরও অনেকের গুরু।

গুরুদক্ষিণা দেওয়ার মত কোন সম্পদ আজ আমার নাই। তবে গুরুর কাছে চাওয়ার শেষ নাই। আজকেও চাইতে ইচ্ছা করছে

‘যে ধনী হইয়া ধনী

মণিরে মাননা মণি

তাহারই খানিক

মাগি আমি নতশিরে’।

বিঃদ্রঃ এই লেখাটি আবদুল্লাহ আবু সাঈদ আগমনে বাংলা সাহিত্য সংসদ মেলবোর্ন আয়োজিত আবদুল্লাহ আবু সাঈদ সাহিত্য সন্ধ্যায় উপস্থাপিত.


Place your ads here!

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment