নিউইয়র্কের ঘটনা এবং আমার ‘বন্ধুদের’ রটনা

আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী
চলতি মাসের গোড়ায় নিউইয়র্কে গিয়েছিলাম। বাংলাদেশের ওপর একটা ডকুমেন্টারি ছবি করছি। তাতে কয়েকজন মার্কিন নেতার ইন্টারভিউ রেকর্ড করার ইচ্ছা নিয়েই আমার এই আটলান্টিক পাড়ি দেয়া। আমি নিউইয়র্কে যাচ্ছি জেনে সেখানে বাংলাদেশ মিশনের প্রধান আবুল মোমেন আমাকে অনুরোধ জানালেন, আমি যেন তাদের মিশনে আয়োজিত এক সভায় একটি বক্তৃতা দেই। এটি একাডেমিক আলোচনা সভা। প্রতিবছরই একটি বক্তৃতা দেয়া হয়। বিষয় ‘বাংলাদেশের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত।’ আমি সানন্দে তার অনুরোধে রাজি হয়েছি।
তেসরা জুলাই শুক্রবার সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। সভায় গিয়ে দেখি এটি সাধারণ জনসভা নয়। নিউইয়র্কের শিক্ষিত ও বিশিষ্ট বাংলাদেশীদের উপস্থিতিতে একটি আলোচনা সভা। সেখানে মন খুলে কথা বলতে পারব ভেবে আনন্দিত হই। আমার এক ঘণ্টার বক্তৃতায় বাংলাদেশের অতীত নিয়ে আলোচনা করেছি। বাঙালী জাতীয়তা, তার সভ্যতা ও সংস্কৃতির ভিত্তি হিসেবে বাংলা ভাষার ঐতিহাসিক ভূমিকা বিশ্লেষণ করেছি। প্রাচীনকালে উচ্চবর্ণের হিন্দু শাসকেরা বাংলা ভাষাকে ধ্বংস করার জন্য একে ‘রৌরব নরকের ভাষা’ আখ্যা দিয়েছিলেন। বেদ বা কোন ধর্মগ্রন্থ বাংলায় পড়া হলে পাঠককে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার বিধান দেয়া হয়েছিল। বাংলা ভাষাকে রক্ষার জন্য বাংলায় রচিত গ্রন্থ নিয়ে তখনকার বাংলাভাষী বৌদ্ধরা নেপালে পালিয়ে গিয়েছিলেন। তারই একটি গ্রন্থ চর্য্যাচর্য্য বিনিশ্চয়।
হোসেন শাহী আমলে বাংলা ভাষা সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পায়। ফার্সি সাহিত্যের প্রভাবে বাংলা সাহিত্যেও প্রেম-প্রণয়মূলক পুঁথি রচিত হয়। বাংলায় রামায়ণ-মহাভারত অনূদিত হয়। ইংরেজ আমলে খ্রিস্টান মিশনারিরা ক্রিশ্চান ধর্ম প্রচারের জন্য বাংলা ভাষাকে ব্যবহার করে ভাষার উন্নতি ঘটায়। পাকিস্তান আমলে আবার বাংলা ভাষার ওপর হামলা শুরু হয়। বাংলা ভাষাকে হিঁদুয়ানি ভাষা এবং বাংলা সংস্কৃতিকে ইসলামবিরোধী আখ্যা দিয়ে ধ্বংস করার চেষ্টা করা হয়। এরই প্রতিবাদে লোকায়ত বাঙালী জাতীয়তার নবজাগরণ। এই জাগরণের ভিত্তিতে বাঙালীর মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা অর্জন।
ভাষা-জাতীয়তা সম্পর্কে আলোচনা প্রসঙ্গে আমি বলেছি, ভাষার কোন ধর্মীয় পরিচয় নেই। ইসলাম-পূর্ব যুগে আরবী ভাষা অমুসলিমদের ভাষা ছিল। সেই ভাষাতেই কোরান নাজেল হয়েছে এবং ইসলাম প্রচারিত হয়েছে। আল্লাহর বহু গুণবাচক নাম আরবী ভাষা থেকেই সংগৃহীত এবং আগে তা কাবার দেবতাদের নাম হিসেবে ব্যবহৃত হতো। দেবতাদের মূর্তিগুলো ভেঙে ফেলার পর এই নাম শুধু আল্লাহর গুণবাচক নাম হয়ে দাঁড়ায়। ধর্মের অবমাননা করার জন্য আমি একথা বলিনি। ভাষার বিবর্তন বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বলেছি। আমার এই বক্তব্যের কোন প্রতিবাদ নিউইয়র্কের সভাগৃহে হয়নি। আমি যদি ভুল বলে থাকি, তাহলে নিশ্চয়ই আমার বক্তব্য কেউ খ-ন করতে পারেন এবং আমিও ভুল শোধরাতে পারি। কিন্তু এই বক্তব্য দ্বারা আমি কি করে মুরতাদ, কাফের হয়ে গেলাম, তা এখনও বুঝে উঠতে পারিনি।
যাহোক, আমার নিউইয়র্কের বক্তব্য নিয়ে নতুন করে আলোচনার সূত্রপাত করতে চাই না। আমার শুভাকাক্সক্ষীরা বলেছেন, আপনি নিউইয়র্কের বক্তব্যের যে ব্যাখ্যা দু’দিন পরেই দিয়েছেন, সেটাই যথেষ্ট। তার পুনরুক্তি নিষ্প্রয়োজন। আমারও তাই মনে হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে অসত্য প্রচারণার প্রতিবাদে নিউইয়র্কের ড. নুরুন্নবী, সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লা, ফাহিম রেজা নূর, হাসান আবদুল্লাহ, শহীদ কাদরি প্রমুখ ৩৮ জন বুদ্ধিজীবী একটি যুক্ত বিবৃতি দিয়েছেন। ঢাকায় ড. মুনতাসীর মামুন ‘জনকণ্ঠে’ সিরিজ আর্টিকেল লিখে মৌলবাদীদের মিথ্যা প্রচারের দাঁতভাঙা জবাব দিয়েছেন। শাহরিয়ার কবির তথ্যসমৃদ্ধ নিবন্ধ লিখেছেন। কানাডা থেকে ইসলামী শাস্ত্রবিশেষজ্ঞ হাসান মাহমুদ তার নিবন্ধে আমার বক্তব্য যে অসত্য ও ধর্মবিরোধী নয়, তা জোরাল তথ্যপ্রমাণ দিয়ে উত্থাপন করেছেন। আরও অনেকে আমাকে সমর্থন জানিয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় লিখেছেন। লন্ডনে সুজাত মাহমুদসহ বিশিষ্ট তরুণ বুদ্ধিজীবীরা আমার সমর্থনে কলম ধরেছেন। ঢাকায় গণজাগরণ মঞ্চ আমার পক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়েছে। এদের সাহসী ভূমিকাকে আমি অভিনন্দন জানাই। তাই নিউইয়র্ক-বক্তব্যের নিজে আর কোন বিশ্লেষণ দিতে চাই না।
তবে নিউইয়র্কে কি ঘটেছে তার একটা বিবরণ আমার কাছে অনেকেই জানতে চেয়েছেন। নিউইয়র্ক, ঢাকা এবং লন্ডনের বিএনপি ও জামায়াতপন্থী কয়েকটি কাগজ এ সম্পর্কে যে অসত্য ও বানোয়াট কাহিনী অতিরঞ্জিত করে প্রচার করেছে, তাতে এদের রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বুঝতে আমার দেরি হয়নি। নিউইয়র্কের অধিকাংশ বাংলা মিডিয়াই জামায়াতিদের কব্জায়। একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী মীর কাশিমের অর্থে একটি টেলিভিশন ও বাংলা সাপ্তাহিক পরিচালিত হয়।
নিউইয়র্কের একটি বাংলা সাপ্তাহিকের ভূমিকা রাষ্ট্রদ্রোহিতামূলক। বিদেশে বাস করে অনবরত দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে অবমাননামূলক প্রচারণা চালাচ্ছে। বাংলাদেশ সরকারের উচিত এই ধরনের পত্রিকার অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণা যাতে জনগণের মন বিষাক্ত না করে সেজন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা। নিউইয়র্কের এই সাপ্তাহিক পত্রিকাটি একবার প্রথম পৃষ্ঠায় ব্যানার হেডিংয়ে খবর ছেপেছে, ‘ঢাকার রাজপথে ভারতের সেনাবাহিনী টহল দিচ্ছে।’ ঢাকায় একাত্তরের এক যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদ- কার্যকর হওয়ার সময় খবরের হেডিং দিয়েছে ‘ঢাকায় ফাঁসির মহোৎসব।’ আমার নিউইয়র্ক বক্তব্যের শুধু বিকৃতি সাধন করেই এই পত্রিকাটি ক্ষান্ত হয়নি। আমি রাষ্ট্রীয় অর্থে মার্কিন মুল্লুকে গিয়েছি, আমার বক্তব্যের জন্য নিউইয়র্কের বাংলাদেশ মিশনের প্রধান আবুল মোমেন সাহেবও দায়ী এবং অবিলম্বে তার অপসারণ দরকার ইত্যাদি অসত্য ও উদ্দেশ্যমূলক প্রচার চালাতেও এই পত্রিকাটি দ্বিধা করেনি।
ঢাকা-নিউইয়র্ক-লন্ডনের জামায়াত ও বিএনপিপন্থী এবং তাদের অর্থে পরিচালিত মিডিয়াগুলোর মধ্যে একটা লিঙ্ক আছে। সব শিয়ালের এক রা’র মতো এরা একই সুরে প্রচারণা চালায়। আমার বিরুদ্ধে প্রচারণার সময় অশ্লীল মন্তব্য জুড়তেও এরা দ্বিধা করেনি। ইসলাম রক্ষার নামে এই পত্র-পত্রিকাগুলো সাংবাদিকতাকে কতটা নিচু স্তরে নামাতে পারে, এবারেও তার প্রমাণ তারা দিয়েছে। আমি নিউইয়র্কে বক্তৃতা দিয়েছি ৩ জুলাই শুক্রবার। শনিবারেই শুনতে পাই ঢাকায় একটি দৈনিকে আমার বক্তব্যকে কাটছাঁট করে এমনভাবে প্রচার করা হয়েছে যাতে মনে হতে পারে আমি আল্লা, রসূল এবং ইসলাম ধর্মের চরম অবমাননা করেছি।
এভাবে এবং ধর্মকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে এরা প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে চায়। সরল ধর্মপ্রাণ মানুষকে এরা মিথ্যা প্রচারণা দ্বারা উত্তেজিত করে এবং তাদের অনেকের মনে খুনের নেশা জাগিয়ে দেয়। আজ একথা প্রমাণিত যে, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর উস্কানিমূলক ফতোয়ার জন্যই হুমায়ুন আজাদের প্রাণনাশের জন্য নৃশংস চাপাতি হামলা চালানো হয়েছিল। কবি শামসুর রাহমানকেও মুরতাদ আখ্যা দিয়ে তাঁর বাড়িতে ঢুকে হামলা চালানো হয়েছিল। তিনি অল্পের জন্য বেঁচে যান।
আমার ধারণা, আমার নিউইয়র্ক-বক্তৃতার বিকৃতি ঘটিয়ে এবং বিকৃত ব্যাখ্যা প্রচার করে উগ্রপন্থী জামায়াতি মৌলবাদীরা চেয়েছিল কিছু সরলপ্রাণ মুসলমানকে উত্তেজিত করে আমাকেও হত্যা করার প্ররোচনা দিতে। তাদের এই উস্কানি সফল হলে আমার ওপর দৈহিক হামলা হতে পারতো। এখনও হতে পারে না তা নয়। আমার ওপর হামলা চালানোর জন্য নিউইয়র্কের দুটি সাপ্তাহিক, লন্ডনের দুটি এবং ঢাকায় তিনটি জামায়াত ও বিএনপিপন্থী দৈনিক অনবরত ধর্মপ্রাণ মানুষকে উস্কানি দেয়ার মতো রঞ্জিত অতিরঞ্জিত খবর ছেপেছে। মসজিদের ইমাম সাহেবদের কাছে গিয়ে আমার বক্তব্য বিকৃতভাবে শুনিয়ে তাদের কাছ থেকেও আমার বিরুদ্ধে ফতোয়া বের করে তা ফলাও করে প্রচার করেছে। এক শ্রেণীর ইমাম ও খতিবও আমার বক্তব্য সম্পূর্ণভাবে না জেনে এবং অভিযুক্ত হিসেবে আমার কাছ থেকে কোন ব্যাখ্যা দাবি না করেই কাগুজে খবর শুনেই মুরতাদ ও কাফের বলে ফতোয়া দিয়েছেন। তার ফলে যে একজন মুসলমানের জীবন বিপন্ন হতে পারে, সেই বিবেচনা তাদের মাথায় ঢোকেনি। তারা সিরিয়ার আইসিসের মতো মুসলমান হয়ে মুসলমানের কল্লাকাটার অভিযানে মদদ জোগাতে চান কিনা আমি জানি না। আইসিস চালাচ্ছে অস্ত্র দিয়ে হত্যা অভিযান। এদের অনুসারীরা বাংলাদেশে একই হত্যাভিযান চালাতে চায় প্রচারণা ও ফতোয়ার দ্বারা।
আল্লার অপার মহিমা। আমি যে আল্লার অবমাননা করেছি বলে এই ধর্ম-ব্যবসায়ীরা প্রচারণা চালাচ্ছেন, সেই আল্লাই আমাকে তাদের ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করেছেন। ঢাকা-লন্ডন-নিউইয়র্কে একযোগে প্রচারণা চালিয়ে, ফতোয়াবাজি করেও এরা ধর্মপ্রাণ সাধারণ মুসলমানকে আমার বিরুদ্ধে উত্তেজিত করতে পারেনি। আমেরিকায় তারা আমার একটি সভাও প- করতে পারেনি। অথচ জোর প্রচারণা চালিয়েছে, আমার সভা প- করেছে এবং জুতো হাতে বিক্ষোভকারীদের সাজানো ছবি প্রকাশ করেছে। কোন প্রকৃত সাংবাদিক ও সংবাদপত্র এই ধরনের মিথ্যা প্রচার করতে পারে না।
নিউইয়র্কে আমার সভায় এসে জামায়াত ও বিএনপিপন্থীরা কোন প্রশ্ন করতে চাইলে আমি তার উত্তর দানে প্রস্তুত ছিলাম। প্রশ্ন করার মতো জ্ঞানবুদ্ধি তাদের ছিল না। তাই তারা চেয়েছিল সভায় এসে দাঙ্গা-হাঙ্গামা বাধাতে। কিন্তু সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত ও উত্তেজিত করে সভায় আনতে না পেরে তারা সভা যাতে না হতে পারে তার জন্য অন্য কৌশল গ্রহণ করে। নিউইয়র্কের তাজমহল হোটেলে একটি সভা অনুষ্ঠানের কথা ছিল। হোটেলের মালিককে ভয় দেখানো হয়, তার হোটেলে সভা হলে ভাঙচুর হবে। তিনি ভয় পেয়ে হোটেলে সভা করার অনুমতি বাতিল করে দেন।
এরপর সভার উদ্যোক্তারা শহরের জুইস সেন্টারে সভাটি করার আয়োজন করেন। সেখানেও একই কৌশল গ্রহণ করা হয়। টেলিফোনে জুইস সেন্টার ভেঙে ফেলার হুমকি দেয়া হয়। সেন্টার কর্তৃপক্ষও সভা করার অনুমতি বাতিল করেন। এই দুই স্থানের সভাতেই জামায়াত-বিএনপির হুমকি অগ্রাহ্য করে যেতে প্রস্তুত ছিলাম। কিন্তু সভার উদ্যোক্তারা সভা বাতিল করেছেন জানানোর ফলে আর যাইনি। আমি যখন জুইস সেন্টারের ধারে কাছেও নেই, বরং ম্যানহাটনের এক বাড়িতে বসে আড্ডা দিচ্ছি, তখন জুইস সেন্টারের সামনে জনাত্রিশেক জামায়াতিকে হাতে জুতো ধরিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে বলা হয়। সেই সাজানো বিক্ষোভের ছবি একশ্রেণীর পত্র-পত্রিকায় বড় করে ছাপিয়ে তার ক্যাপশন দেয়া হয়েছে, ‘গণবিক্ষোভের মুখে গাফ্ফার চৌধুরীর জনসভা প-।’ মুখে ইসলাম কিন্তু কাজে ক্যামেরার অসৎ কারসাজিÑ এটাই হচ্ছে বিএনপি-জামায়াতপন্থী কাগজগুলোর সাংবাদিকতার স্ট্যান্ডার্ড!
তবে বোস্টনে আয়োজিত আমার সভায় শ্রোতা সেজে কিছু জামায়াতি ঢুকেছিল। মজার কথা, আমার বক্তৃতার সময় তারা কোন গ-গোল করেনি। কেবল বক্তৃতা শেষ হলে আমাকে কিছু প্রশ্ন করতে চেয়েছে। আমি নিউইয়র্কের সভায় কেন বলেছি ‘আমি আগে বাঙালী, তারপর মুসলমান (জামায়াতিরা প্রচার করেছে আমি নাকি বলেছি, আমি মুসলমানত্ব ছাড়তে পারি, বাঙালিত্ব ছাড়তে পারি না) এর জবাবে রসুলুল্লাহ (দ) যে নিজের পরিচয় দিতে গিয়ে বলতেন, ‘মোহাম্মদ বিন আবদুল্লাহ আল আরাবী, আল মাক্কি’ আমি একথা বলতেই তারা নিশ্চুপ হয়ে যায় এবং হঠাৎ প্রশ্ন করার বদলে হাঙ্গামা শুরু করার চেষ্টা চালায়।
মজার কথা এই যে, সভার পুরুষ শ্রোতারা নন, কয়েকজন মহিলা শ্রোতা তাদের প্রতি আঙুল দেখিয়ে তালেবান, তালেবান বলে চিৎকার শুরু করলে তারা পালাতে শুরু করে। উগ্রমূর্তিধারণকারী দু’একজনকে পুলিশ বের করে দেয়। তাদের ভেতরের দু’চারজন সভায় থেকে যান এবং পুলিশকে জানায়, একজন কাফের এখানে সভা করছেন এবং তাকে বাধা দিতে হবে এই কথা বলে জামায়াতিরা তাদের এই সভায় ডেকে নিয়ে এসেছে। কিন্তু তারা এসে দেখছেন, সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা বলে তাদের এখানে ডেকে আনা হয়েছে। তারা এজন্য দুঃখিত।
আমি নিউইয়র্ক ছেড়েছি ১৪ জুলাই। তার আগে তাজমহল হোটেলে ও জুইস সেন্টারে যে সভাটি হতে পারেনি সেটি অনুষ্ঠিত হয় জেএফ কেনেডি এয়ারপোর্ট সংলগ্ন ক্রাউন প্লাজা হোটেলে। মুক্তিযুদ্ধের সমর্থক এবং প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক সংস্থাগুলোর উদ্যোগে এই সভা হয়। নিউইয়র্ক ও নিউজার্সির বহু বিশিষ্ট বাঙালী এই সভায় এসেছিলেন। এই সভাতেও আমি বর্তমান যুগে মুক্তচিন্তার বিরোধী ধর্মান্ধদের দ্বারা ধর্মের দুর্বৃত্তায়নের ইতিহাসটি তুলে ধরেছি। বলেছি, কবি কাজী নজরুল ইসলামকে কাফের আখ্যা দেয়ার পর তিনি লিখেছিলেন, ফতোয়া দিলাম কাফের কাজীও, যদিও শহীদ হইতে রাজিও।’ আমি সে কথা বলি না; আমি শুধু বলি এই অসৎ, ঘাতক ধর্মব্যবসায়ীদের দিন শেষ হয়ে এসেছে। এরা জনগণের শত্রু এবং ধর্মেরও শত্রু। মধ্যপ্রাচ্যে যে আত্মঘাতী বর্বরতা তারা শুরু করেছে, তা-ই তাদের চূড়ান্ত পতন ও পরাজয় ডেকে আনবে।
‘দানবের মূঢ় অপব্যয়
গ্রন্থিতে পারে না কভু ইতিহাসে শাশ্বত অধ্যায়।’
লন্ডন, ২০ জুলাই, সোমবার, ২০১৫
Related Articles
BSF Killings (a video clip)
Largely controlled by Indian intelligence, unfortunately Bangladesh media hardly covers Indian BSF killings as a major report. Recently, UK’s Channel
Bangladesh wrap up first away win against New Zealand
Bangladesh 271 for 5 (Tamim 65, Sabbir 65) beat New Zealand 270 for 8 (Latham 84, Broom 63, Taylor 60*,
Eyes Wide Open
You out their do you hear me? Can you hear me when I speak? Do you hear me when I