প্রশ্ন করোনা – ৯

প্রশ্ন করোনা – ৯

প্রশ্ন করোনা
কেন আমার কবিতার শব্দে এখন আর নিজেকে খুঁজে পাওনা তুমি
আমি কেন ভাবি – আমিতো আছি! তুমি কোথায় ? ওখানে কেন?
জানি – খাঁচার দরজা খুলে – পায়ের বেড়ি খুলে – মজা দেখছো তুমি
কেন আমি আর মনে থাকতে চাই না – অথচ ঐ মনেই বেঁচে আছি
কেন কান পেতে রাখি ইথারে ইথারে – কার, কোন শব্দ তরঙ্গের আশায়
প্রশ্ন করোনা।

প্রশ্ন করোনা
কেন আমার মন আর কুমার পাড়ার অতি পোড়ানো মাটির থালা
অদ্ভুত এক দোটানায় – না ফেলা যায়, না হয় কোনো কাজের!
আমি কেন ঐ থালা বাড়িয়ে তোমার সামনে, হাটু গেড়ে বসে?
বৃষ্টি হয়, জল ধুয়ে দিতে পারে না – না পোড়া দাগ আমার, না থালার
কেন আমি ভালোবাসায় – ভালোবাসি – অপেক্ষায় – বিশ্বাস রাখি বৃষ্টিতে
কেন হাটু মাটিতে ঠেকানো – বৃষ্টি জল কাদায় হাটুতক, ডুবে যাচ্ছে ধীরে ধীরে
প্রশ্ন করোনা।

প্রশ্ন করোনা
কেন জানি, আমি নিজের ছায়া নিজেই খুঁজে পাইনা এখন আর আগের মতো
কোনো কোনো সময় নিজের ছায়ায় নিজে দেখেই আঁতকে উঠি এই আমি?
তবে কি আমার ছায়ায় আমার প্রতিফলন নেই আর? সবই অতীত?
শুনেছি কাদের যেন আয়নাতেও প্রতিচ্ছবি হয় না – তুমি কি শুনেছ এসব?
আমি এ সবে বিশ্বাসী নই – তার পরও কত যুগ আয়নাতে নিজের মুখ দেখি না
তোমার কি ছায়া হয়? আয়নাতে প্রতিচ্ছবি? সেই আগের মতো করে?
কেন যে তোমার আলো আঁধারের আদুরী আদুরী ছায়াটা দেখতে ইচ্ছা করে
প্রশ্ন করোনা।

প্রশ্ন করোনা
কেন আমি খেয়া পারাপারের মাঝি হতে চাই! হতে চাই সেই
নৌকার গুলী’তে দাঁড়ানো ছোট্ট ছেলেটি – যার দৃষ্টি জল পেরিয়ে ওপারে
কেন রাসায়নিক ময়লা জলেও হাতটা ছোয়াতে চাই, নরম নরম উষ্ণতায়
যাত্রী হতে চাই – হতে চাই ছোট্ট পাল তোলা ইঞ্জিন বিহীন নৌকাটা!
যে শব্দহীন, বার বার ছুঁয়ে যেতে চায় তোমার – তোমার পদ চিহ্ন, কাদা মাটি
হয়ত নদী পাড়ের সেই মন্দিরটা আমিই ছিলাম, যাকে বাড়ি নিতে চেয়েছিলে
অথবা সেই সিঁদুর, তোমার কপালে লেপ্টে দিলো যে কৃষ্ণ অঙ্গুলি – অথবা
সেই ভয়ংকর ডাকাত, যার ভয়ে দুজনেই ছিলাম – আতংকিত – ভালোবাসায়
কেন ওই দূরের সবুজ গ্রামগুলো হতে চাই – বারান্দায় দাঁড়িয়ে দেখি নিজেকে
প্রশ্ন করোনা।

প্রশ্ন করোনা
এ কোন সাহারায় পদচারণা আমার, জল, সবুজ, কুহক আলেয়ার পিছনে ছুটি
কেন, স্বপ্নের জলপ্রপাত বয়ে যায় যে দিকে তাকাই; দেখাতে চাই সবাইকে
ওই যে দূরে যে তাঁবুতে – তুমি আমি থাকি – থাকতাম অথবা থাকবো অনন্তকাল
আমার মতো শুধু মাত্র পথিক সাধুই জানে – তার প্রকৃত দূরত্ব – তার বিশালতা
হা বলেছি, ক্ষমা করতে বলেছি – তবে কেন ক্ষমা করবে আমায়? তা তো বলিনি
করোনা – আর ক্ষমা করোনা – খাঁটি একটু ব্যথা – ক্ষমাতে তাও হারাবো আমি
তোমাকে ভাবলেই, আসে অন্য সব অপূর্ণতা, না পাওয়ার কথা; বেঁচে থাকি, কেন?
প্রশ্ন করোনা

ক্যানবেরা
১৮/০৯/২০১৭

Shahadat Manik

Shahadat Manik

Writer, poet, lyricist and social activist.


Place your ads here!

Related Articles

‘She is Not a Duchess’ by Abu Sufian

Here in the closet, this picture evokes attention Of many who come to my house; Not mine actually–a gift from

শরতের নতুন প্রভাতে

­­­­­শরতের নতুন প্রভাতে লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী   শরতের নতুন প্রভাতে আমার ঘরের আঙিনাতে সকাল হলে সোনালী রোদ হাসে,   কচি সবুজ

মহাকালের অস্থি

হঠাৎ একদিন মনসামঙ্গলের দেবীর দেখা পেলে নিবিড় বন্ধুতায় জড়াতাম । তারপর পৃথিবী অঘোর ঘুমে অচেতন হলে  যা কিছু খারাপ ,

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment