ভার্চুয়াল চিঠি (পর্ব – এক)

ভার্চুয়াল চিঠি (পর্ব – এক)

একটা নতুন বইয়ের কাজে হাত দিয়েছি … কাজটা একটু অন্যরকম , ইনবক্সে আজকাল ভার্চুয়াল প্রেমের চিঠি ফেসবুক কিম্বা হুয়াটসআপস এ মনের কথা অনায়াসে লিখে পাঠিয়ে দেই , আগের দিনের মতো সেই কারবার নাই যে চিঠি ঠিকানা মতো পৌঁছালো কিনা বা অন্য কারো হাতে পড়ে থাকলে তো আর যথা স্থানে যাবার জো নাই , কত্ত চিন্তা মনে ধুক ধুক .. অস্থির হয়ে ডাকিয়ার সাইকেলের ক্রি ক্রি ছুটে গিয়ে তার লম্বা ব্যাগে চোখ লটকে রাখা , বর্তমানে ইন্টারনেটের সভ্য দুনিয়ায় পোষ্টবক্স গুলো খালি হয়ে বোঝাই হচ্ছে ইনবক্স । হারিয়ে যাচ্ছে ডাকিয়ার হাঁক চিঠি আছে চিঠি আছে …এখনো ডাকিয়া আসে কিন্তু চিঠি নয় ইন্টারনেট থেকে বুক করা বা সপিং করা বক্স নিয়ে ।
চিঠির গন্ধ নাই , শুকনো বকুল কিম্বা গোলাপের পাপড়ি খাম খুল্লেই ঝর ঝর করে বাতাসে উড়ে না । তবুও সময় কে মানতেই হয় , বিজ্ঞান আমাদের দিয়েছে বেগ কেড়ে নিয়েছে আবেগ , সেই আবেগকেই জাগিয়ে তোলার ছোট্ট একটা প্রয়াস মাত্র । এই “ইনবক্স পত্র “প্রস্তাব পর্ব থেকে পরিণয় তারপর টা নাইবা বলি , হতে পারে বিচ্ছেদ , নয়ত পরিনতি যাকে বলে মিলন , নয়তবা মাঝপথে বিভক্তি , তবে আমি বিচ্ছেদী শোকাতুর কিছু ভালো লিখতে পারবো না জানি , আমার পাঠক রা বলুন প্রস্তাব পর্বটা কেমন লাগলো। আপনাদের অনুপ্রেরণা আমার সামনের লেখাকে অনেক বেশী প্রানবন্ত করে তুলতে সহায়ক ।
অনেকের খুব ভালো লাগতে পারে , আবার দেখা যাবে অনেকের সাথে মিলে যাচ্ছে কথা গুলো .. জানি ! আমারা তো একই কেন্দ্রে আবেগে বিচ্ছেদে ঘুরপাক খাই , মিলে যাওয়াটা অমুলক নয় । কিছু পর্ব গোপন রাখবো , মানে আপনাদের কে পড়াবো না , যদি ইচ্ছের ঘুড়ি বাতাসে উড়ে তবে বই বের হলে সংগ্রহ করে নেবেন । আর কিই বা বলবো … কোন কিছুতে ব্যক্তিগত করে ভাববেন না প্লিজ … এই “ইনবক্স পত্র “ আমর বই , আমার আগামীর আর একটা স্বপ্ন ।
পাশে থাকুন আপনাদের ভালো লাগার শব্দ গুলো আমার কাছে সবচেয়ে দামী।
আর হ্যাঁ লেখা অলংকারে অনেক ছবি সংযুক্ত করা হবে।
আজ “ প্রস্তাব পর্ব “ প্রথম চিঠি …

চিঠি নং – ১

হুম ঠিক এই ছবিটা !
পৃথিবীর সেরা সৌন্দর্য এই ছবিতে,
চোখের চাওয়ায়,
ঝরে পড়ছে রেণু,
অপেক্ষার বেদনা কি?
মৃদু হাসিতে,
নাকফুল থেকে ঠিকরে পড়ছে কোজাগরী জোছনা ,
ভ্রু তো নয় যেন
পাখির উড়াল…।
আরো মরমে ঢুকে অন্তরতম আঘাত হানছে।
You are a fatal attraction of innocence and maturity. Who can resist from loving you! ফুলেরা ছুটে যায় তোমার দিকে ।
আমি কি ভাগ্যবান বলো? খোলা মাঠে দাঁড়িয়ে আকাশমুখি হয়ে আল্লাহকে বলবো ,আমি জীবন খুঁজে পেয়েছি , ফাবি আই আলায়ি রাব্বিকামাতুকায যিবান!
বিশ্বাস করি আল্লাহ আমাকে নিজহাতে তোমাকে আমার বুকে রাখতে দিয়েছে।
ছবির ওই চোখে চোখ রাখতেই বুকের ভিতরটা কেমন চঞ্চল হয়ে ওঠে। দুলতে থাকে। স্নিগ্ধ ওই মায়াবী ঠোঁটে একটি দীঘল চুমু এঁকে যাই।
জড়িয়ে ধরি তীব্র বেস্টিত।
আমি কিছু মানি না বুঝি না ,
কিসের সমাজ! কিসের ধর্ম বর্ণ ,
তুমি ঈশ্বরের তুমি আমার।
অপরূপ তুমি অপরূপ তোমার শব্দ পঙক্তিমালা। তোমার কথা বলবার ছন্দ । তোমার ব্যক্তিত্ব,
দোলায় জ্বালায় স্নিগ্ধ করে পোড়ায় প্রবল,
তোমাকে দেখলে মন দোলে ,
তোমাকে না দেখেও মন দোলে।
আমি তোমাতে কেন্দ্রীভূত
আমি তোমাতে দ্রবীভূত
তোমার সঙ্গে নিজেই নিজেকে শক্ত বাঁধনে বেঁধেছি।
কখনো হবো না দ্বিধান্বিত।
আমার আরাধ্য তোমার সাদা খরগোশ বুকের চঞ্চল সিল্কি জমিনে চুপচাপ মুখ ডুবিয়ে পড়ে থাকবো।
হামিং বার্ডের মতো তোমার ঠোঁটের ডানা থেকে চুমুকে চুমুকে শুষে নেবো প্রেমের রোদ্দুর আর অথৈ নীলিমার নীল।
তোমার বুক আমার আকাশ ভরা রোদ আর নীল।
তোমার কাছে পাগলের মতো যা চেয়েছি , পাওয়ার প্রত্যাশা কি জানি না ,
তুমি আমাকে শিল্পের মতো, কবিতার মতো দাও নিজেকে , অন্তরতম পরানের নিতলে যেখানে হৃদয় থাকে তার দ্বার খুলে দাও।
শব্দে শব্দে তোমার সবটুকু প্রেম আদর আমাকে দাও , আমি সত্যি ভেবে তুলে নেবো।
বুকটা তো তৈরি ছিল তোমার উষ্ণতার জন্য, তোমার স্নিগ্ধ আগুনে জ্বলে ওঠার জন্য।
তুমি না অনেক igniting soul কি যে আনন্দে তোমাকে ভেবে ভেবে সারাদিন সারারাত কাটে।
তুমি কে?
তুমি কোন কাননের ফুল গো?
কেন এমন করে এলোমেলো করে দিলে?
কোথাও কোন কিছুতেই মন বসে না।
কেবলই ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে করে। শীতের রাতে ফাঁকা মাঠে বাতাস যেমন হুহু করে ছুটে যায় বিমূর্ত বেহালার গেয়ে ওঠে কাঁন্নার সুর।
তেমন করে আমার বুকের ভিতর তোমাকে পাওয়ার একটা আর্তি হুহু করে কেঁদে ওঠে।
আমি তোমার বুকে মুখ রেখে অঝোর ধারায় কেঁদে উঠতে চাই। কোথায় পাবো তোমার বুক? কোথায় পাবো তোমার অরোরা রোদের মতো বুক?
আমাকে জড়িয়ে ধরো তোমার বুকে। তীব্র দহনে তোমার বুক যে আমার মরুদ্যান!
বুঝতে পারছো কেমন লাগছে আমার! এমনতো লাগেনি কখনো! এমন প্রবল সত্যিকার ভালোবাসা পাইনি যে জীবনে আমার।
তুমি আমার Godsend love! You are an angel! অ্যান্জেল ছাড়া আর কিছু নও তুমি।
কি অপরূপ প্রেমের শক্তি তোমাকে দিয়েছে ঈশ্বর!
তুমি কখনো বলো নি, je t’aime
তুমি কখনো বলো নি, ich liebe dich
তুমি কখনো বলো নি, te quiero
তুমি কখনো বলো নি, میں تم سے پیار کرتا ہوں
তুমি কখনো বলো নি, मैं तुमसे प्यार करता हूँ
main tumase pyaar karata hoon
তুমি কখনো বলো নি, আমি তোমাকে ভালোবাসে ফেলেছি হে চিরকালের পথভোলা পথিক।
আয়, আমার অঞ্চল ছায়ায় আয়, তোকে ঢেকে রাখি। আয়, আমার বুকে আয়, যেখানে চির অম্লান হলুদ রোদ্দুর সুবহা সাদিকের আলোর মতো, নর্ডিক আকাশে উত্তরের Aurora Borealis আলোর , তোমার চোখে envy দেখেছি তা দেখতে চেয়েছি সারাটা জীবন।
মেঘের মতো রাগী মেয়ের বাক
ভালোবাসার আরেক নাম envy যা jealousness এর চাইতে আলাদা এক ঈর্ষার নাম।
যা আমি চেয়েছিলাম দেখতে, যার আঘাতে অভিঘাতে চেয়েছিলাম বিশ্বস্ত হতে।
তোমার মতো চারুশ্রীরূপের কাছে আমি চিরকাল নত হতে চেয়েছি ।
প্রকৃতির কাছে কাল সারারাত সিজদার মতো অভিভূত সময় মগ্ন কাটিয়েছিলাম।
বুকের ভিতর সে কি স্নিগ্ধ ঢেউ উঠছে তো উঠছে, থামছে না কিছুতেই। আমি এই euphoria পাইনি কখনো।
দেবী, দয়া করো!
তোমার বুকের ভিতর ঠাঁই দাও ।
খুলে দাও খিল অগ্নির ঝিল।
দাও পরানের ফটক খুলে দাও ।
তুমি শুধু আমার উষ্ণতার বুক নও, তুমি আমার ভালোবাসার আরাধ্য আধার।
তুমি আমার জায়নামাজ ।
তুমি আমার কাছে অনেক দামী গিফট।
ভালোবাসতে দিও।
ভালোবেসো।
তোমার প্রেমের শক্তি আমাকে ফেরাবে জীবনের তাবৎ ক্লেদ থেকে সবুজ ঘাসের দেশে।
তোমার চরণে দিলাম হৃদয় তুলে।
নাও, তুলে নাও তোমার কি সুন্দর প্রেমের আলোর নাচন বুকে।
তোমার আলো যেনো চুমুকে চুমুকে পান করে চলে যেতে পারি জীবনের ওপারে ।

প্রতীকী ছবি
Najmin Mortuza

Najmin Mortuza

দার্শনিক বোধ তাড়িত সময় সচেতন নিষ্ঠাবান কবি। চলমান বাস্তবতাকে ইতিহাস-ঐতিহ্যের পরম্পরায় জারিত করে তিনি কাব্য রূপান্তরে অভ্যস্ত। কাব্য রচনার পাশাপাশি ক্ষেত্রসমীক্ষাধর্মী মৌলিক গবেষণা ও কথাসাহিত্য সাধনায় তাঁর নিবেদন উল্লেখ করার মতো। গবেষণাকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত ফোকলোর ও লিখিত সাহিত্যঃ জারিগানের আসরে "বিষাদ-সিন্ধু" আত্তীকরণ ও পরিবেশন পদ্ধতি শীর্ষক গ্রন্থের জন্য সিটি-আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কার ২০১২ অর্জন করেছেন।


Place your ads here!

Related Articles

‘She is Not a Duchess’ by Abu Sufian

Here in the closet, this picture evokes attention Of many who come to my house; Not mine actually–a gift from

যুদ্ধাপরাধী কামারুজ্জামানের ফাঁসি

যুদ্ধাপরাধী কামারুজ্জামানের বিচার শেষ হওয়ায় ফাঁসি হচ্ছে জেনে শান্তি লাগলো। কারন জামায়াতের যুদ্ধাপরাধী নেতাদের যাদের ব্যক্তিগতভাবে চিনতাম-জানতাম কামারুজ্জামান তাদের অন্যতম।

Maritime Boundary with India: Arbitration or Bilateral Negotiations

Now that the maritime boundary has been settled peacefully with Myanmar through International Tribunal for Law of the Sea (ITLOS),

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment