জনাব নির্মল পাল, প্রতিষ্ঠাতা এমএলসি মুভমেন্ট বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক আয়োজিত আন্তর্জাতিক সেমিনারের’ মুখ্য বিশিষ্ট বক্তা হিসেবে সম্মানিত

জনাব নির্মল পাল, প্রতিষ্ঠাতা এমএলসি মুভমেন্ট বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক আয়োজিত আন্তর্জাতিক সেমিনারের’ মুখ্য বিশিষ্ট বক্তা হিসেবে সম্মানিত

মাদার ল্যাংগুয়েজেশ কন্সারভেশন (এমএলসি)মুভমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল ইনক এর প্রতিষ্ঠাতা এবং    চেয়ারপার্সন জনাব নির্মল পাল মিশুক প্রকাশনার ব্যানারে শুরু হওয়া সিডনীর একুশে বইমেলা, একুশে বইমেলা পরিষদ ইনক, একুশে একাডেমী অস্ট্রেলিয়া ইনক এর পর্যায়ক্রমিক ক্রমোত্থানের সিঁড়ি এবং অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন পার্লামেন্ট অতিক্রম পেড়িয়ে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ইউনেস্কোর দ্বিতীয় ক্যাটাগরি সংস্থা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সিটিটিউট আয়োজিত, “Mother Languages: Promotion and Preservation” নামক আন্তর্জাতিক সেমিনারের মুখ্য বিশিষ্টবক্তা হিসেবে সম্মানিত হয়েছেন। তিনদিনব্যাপী আয়োজিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা  দিবস ২০১৯ উদযাপন উপলক্ষ্যে দ্বিতীয় দিনে(২২শে ফেব্রুয়ারি) ঢাকায় অনুষ্ঠিত এই আন্তর্জাতিক সেমিনারের উদ্বোধনী অধিবেশনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সিটিটিউট এর সম্মানিত মহাপরিচালক, অধ্যাপক জীনাত ইমতিয়াজ আলী। স্বাগত বক্তব্যে মহাপরিচালক মহোদয় জনাব নির্মল পাল কর্তৃক প্রণীত পৃথিবীর সকল মাতৃভাষা সংরক্ষণে একুশের বৈশ্বিক প্রাতিষ্ঠানিকতা অর্জনের কৌশলসমূহ, বিশেষ করে তাঁকে “একুশে কর্নার” এর প্রবক্তা হিসেবে উল্লেখপূর্বক পরিচয় করিয়ে দেন, এবং জনাব নির্মল পালকে তাঁর বক্তব্য উপস্থাপনের অনুরোধ জানান। মুখ্য বিশিষ্টবক্তা হিসেবে জনাব নির্মল পাল এমএলসি মুভমেন্টের কৌশলের ভিত্তিতে দেশে-বিদেশে অর্জিত ঐতিহাসিক সাফল্যসমূহের প্রমানিক ছবি ও তথ্যাদি ৫০টি স্লাইডের মাধ্যমে উপস্থাপনার পর ইউনেস্কো ঢাকা’র প্রধানের দায়িত্বপ্রাপ্ত মিসেস সুন লি, এবং পিপলস ল্যাংগুইসটিক সার্ভে অফ ইনডিয়া’র সভাপতি অধাপক ডঃ গণেশ এন দেবি উদ্বোধনী অধিবেশনে বিশিষ্ট বক্তা হিসেবে বক্তব্য উপস্থাপন করেন। উদ্বোধনী অধিবেশনের প্রধান অতিথি হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জনাব মোঃ সোহরাব হোসেন জনাব নির্মল পালের উপস্থাপিত কৌশলগুলি আন্তর্জাতিক পরিসরে বাস্তবসম্মত বলে মন্তব্য করেন, এবং এবিষয়ে আন্তঃমন্ত্রনালয় পর্যায়ে আলোচনা করে ইউনেস্কো বরাবরে উপস্থাপনের প্রয়োজনীয়তার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন। সভাপতির বক্তব্যে সর্বজন শ্রদ্ধেয় জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম উপস্থাপিত বিষয় এবং কৌশলগুলি অত্যন্ত উৎসাহব্যাঞ্জক এবং সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য নতুন করে ভাববার উপাদান হিসেবে শুভসূচনা বলে মন্তব্য করেন।  তিনি অভিবাসী জীবন-যাপনের মধ্যেও জনাব নির্মল পালের দেশ, মাতৃভূমি এবং বিশ্বের সকল মাতৃভাষা সুরক্ষা, চর্চা এবং গণসচেতনতা সৃষ্টি নিয়ে গঠনমূলক বাস্তবধর্মী কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেন। সেমিনারের বিরতির সময় ইন্সিটিটিউটের উপপরিচালক মিসেস নাহার নাজ নির্মল পালকে ইন্সিটিটিউটের লাইব্রেরীতে প্রতিষ্ঠিত “একুশে কর্নার”(সম্প্রসারিত)এর বিভিন্ন কক্ষ পরিদর্শনে নিয়ে যান, এবং নির্ধারিত রেজিস্টারে তাঁর মন্তব্য লিপিবদ্ধ করার ব্যাবস্থা গ্রহন করেন।  সেমিনার শেষে জনাব নির্মল পাল’কে ক্রেস্ট প্রদানের মাধ্যমে সম্মানিত করেন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সিটিটিউট এর সম্মানিত  মহাপরিচালক, অধ্যাপক জীনাত ইমতিয়াজ আলী।                  

উদ্বোধনী সেশনের পর দুই দফা কারিগরি সেশনে মোট ৫টি পেপার উপস্থাপন করেন যথাক্রমেঃ প্রাক্তন অধ্যাপক কৃষ্ণা ভট্টাচার্য(কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, ভারত); অধ্যাপক দুবি নন্দ ধাকাল(ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয়, নেপাল); অধ্যাপক দান রাজ রেগমি(ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয়, নেপাল); অধ্যাপক সিকদার মনোয়ার মোরসেদ(ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়); এবং অধ্যাপক সৈয়দ শাহরিয়ার রহমান(ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)।  কারিগরি সেশনদ্বয়ে সভাপতিত্ব করেন যথাক্রমে আতিথি অধ্যাপক আ ফ ম দানিউল হক(ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), এবং অধ্যাপক কৃষ্ণা ভট্টাচার্য(কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, ভারত)। সবকয়টি কারিগরি প্রবন্ধই ছিল স্থানীয় মাতৃভাষা গুলির গ্রন্থনা, প্রামান্য দলিল এবং সংরক্ষণের বিষয়ে বিভিল্ল কলা কৌশলের উপর গবেষণা এবং অভিজ্ঞতাভিত্তিক উপস্থাপনার বৈশিষ্টমণ্ডিত। প্রবন্ধগুলির মধ্যে অধ্যাপক কৃষ্ণা ভট্টাচার্য কর্তৃক প্রণীত বাংলাভাষায় অবলুপ্তিমুখী আঞ্চলিক শব্দসমূহের গ্রন্থনা এবং অভিধান রচনা বিষয়ক প্রবন্ধ সকলকে বিশেষভাবে উৎসাহিত করে। দ্বিতীয় দিবসের সেমিনারের সর্বশেষ সুপারিশ হিসেবে বাংলাদেশের সকল শিক্ষালয়ের লাইব্রেরীতে “একুশে কর্নার” বাস্তবায়নের প্রস্তাবকে বিবেচনার জন্য শিক্ষামন্ত্রণালয়ে প্রেরণের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত সেমিনারকে এমএলসি মুভমেন্টের প্রণীত কলাকৌশল কেন্দ্রিক কারিগরি সেমিনারের মানে উন্নীত করে। সেমিনার শেষে ইউনেস্কো’র প্রধানের দায়িত্বপ্রাপ্ত মিসেস সুন লি’র অনুরোধে জনাব নির্মল পাল ইউনেস্কোর বনানীস্থ কার্যালয়ে ২৭-২-১৯ তারিখে আরও বিস্তারিত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। উল্লেখ্য, মহান একুশের অপরাহ্নে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী মাননীয় শেখ হাসিনা ওয়াজেদ এমপি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০১৯ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এই তিনদিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সেমিনারের শুভ উদ্বোধন করেন।       

বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক আয়োজিত এই আন্তর্জাতিক সেমিনারের’ মুখ্য বিশিষ্ট বক্তা হিসেবে জনাব নির্মল পাল এর আমন্ত্রণের মধ্য দিয়ে এমএলসি মুভমেন্টের সাথে ০৭-০৭-১৭ তারিখে অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর স্কাইপ মিটিং এর সুপারিশ মোতাবেক আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সিটিটিউট(ইউনেস্কোর দ্বিতীয় ক্যাটাগরি সংস্থা, তথা বাংলাদেশ সরকার)এবং এমএলসি মুভমেন্টের সাথে একযোগে কাজ করার স্থায়ী সেতুবন্ধন সৃষ্টির সূচনা হয়েছে বলে ধরে নেয়া যেতে পারে। ইউনেস্কো কর্তৃক একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণার সুবাদে পৃথিবীর সকল মাতৃভাষা সুরক্ষার জন্য মহান ‘একুশে চেতনা’ মুখ্য ভূমিকা পালন করার বিশ্বাস নিয়ে জনাব নির্মল পালের উদ্ভাবিত বহু উদ্যোগ, কৌশল এবং কার্যক্রম ইতিমধ্যেই জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ঐতিহাসিক কার্যক্রম হিসেবে প্রশংসিত হয়ে বিবেচিত হয়েছে এবং বিভিন্ন পর্যায়ে বাস্তবায়িত হতে চলেছে।  যার মধ্যে সিডনিতে প্রথম অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ (২০০১); বৈশ্বিক আবেদন “Conserve Your Mother Language” সংকলন; আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতিসৌধ এর দার্শনিক ধারনার প্রবর্তন; পৃথিবীর প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতিসৌধ এর দার্শনিক নকশার মৌলিক ভিত্তি প্রণয়ন এবং স্মৃতিসৌধ বাস্তবায়নে নেতৃত্ব প্রদান; লাইব্রেরীতে “একুশে কর্নার” দর্শনের সংকলন; বিশ্বের সকল মাতৃভাষা সংরক্ষণের লক্ষ্যে এমএলসি মুভমেন্টের প্রতিষ্ঠা; ‘বিশ্বায়নে শহীদ মিনার’ গ্রন্থের প্রকাশ; এসিটি পার্লামেন্ট, ফেডারেল পার্লামেন্ট এবং নিউসাউথওয়েলস পার্লামেন্টে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনে মোশন মুভের ব্যাবস্থাগ্রহনের উদ্যোগ এবং পার্লামেন্টে সর্ববস্মমত সিদ্ধান্ত গ্রহণের মত ব্যতিক্রমী কার্যক্রমসমূহ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।      

পৃথিবীর সকল মাতৃভাষা সুরক্ষার লক্ষ্যে তাঁর একুশে চেতনার বৈশ্বিক প্রাতিষ্ঠানিকতা অর্জনে সংকলিত উল্লেখিত কার্যক্রমের ভিত্তিতে অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল পার্লামেন্টে ২৮শে নভেম্বর ২০০৫ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিষয়ে নোটিশ অফ মোশন মুভ; ২৭শে ফেব্রুয়ারি ২০০৬ পৃথিবীর প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতিসৌধ প্রতিষ্ঠার বিষয়ে দুইটি মেম্বারস’ স্টেটমেনট উত্থাপন; বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে পৃথিবীর প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতিসৌধ প্রতিষ্ঠার ব্যায় সংকুলানে দশ হাজার ইউএস ডলার অনুদান প্রাপ্তি; ২০০৯ সনে নিউ সাউথ ওয়েলস সরকার কর্তৃক ভলান্টিয়ার অফ দা ইয়ার নির্বাচিত হওয়া; ২০১৩ সনে মান্যবর বাংলাদেশ হাই কমিশনার ক্যানবেরা কর্তৃক আয়োজিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে সম্মানিত হওয়া; অস্ট্রেলিয়া লাইব্রেরী এন্ড ইনফরমেশন এসোসিয়েশন কর্তৃক “একুশে কর্নার” দর্শনকে, “One Small Shelf, One Giant Step Forward” নামাকরনে প্রবন্ধ প্রকাশ(INCITE মে ২০১৫ সংখ্যা); বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক “বিশ্বায়নে শহীদ মিনার” গ্রন্থকে “টেক্সট এন্ড রেফারেন্স” ক্যাটাগরিতে নির্বাচন এবং গ্রন্থটি প্রতিটি জেলাস্থ গনগ্রন্থাগারে এবং বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিটি শাখায় সংগ্রহের ব্যবস্থা; এসফিল্ড লাইব্রেরীতে ২০-২-১৬ তারিখে পৃথিবীর প্রথম “একুশে কর্নার” এর শুভ উদ্বোধন; বাংলাদেশ লাইব্রেরী এসোসিয়েশন কর্তৃক ৩৫০০ লাইব্রেরীতে “একুশে কর্নার” প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত, এবং ২৮-২-১৭ তারিখে ঢাকায় “লাইব্রেরীতে একুশে কর্নার স্থাপনা” বিষয়ক আন্তর্জাতিক সেমিনারের আয়োজন; ইউনেস্কোর উদ্যোগে এমএলসি মুভমেন্টের সাথে ৭০ মিনিটের স্কাইপ মিটিং; আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনের পক্ষে বিভিন্ন পার্লামেন্টে মোশন মুভ এবং সর্বসম্মতভাবে পাশ; এবং কাম্বারল্যান্ড কাউন্সিল কর্তৃক ২১-২-১৯ তারিখে কাউন্সিলস্থ সবকয়টি (৮টি)লাইব্রেরীতে “একুশে  কর্নার” এর প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি সংশ্লিষ্ট স্থানীয়, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে গ্রহনযোগ্যতা এবং আগ্রহ অর্জনে সমর্থ হয়েছে।      

পাদটীকাঃ সিডনী’র একুশে বইমেলার গোড়াপত্তন ১৯৯৯ সনের একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপনের মধ্য দিয়ে, এখন যেখানে, “Conserve Your Mother Language” বৈশ্বিক আবেদন নিয়ে পৃথিবীর প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতিসৌধ স্বগর্ভে দাঁড়িয়ে আছে বাংলা আর বাঙালির বিশ্বনন্দিত অহংকারকে সকল ভাষাভাষীর অহংকারে পরিনত করে মিশুক প্রকাশনার ব্যানারে জনাব নেহাল নিয়ামুল বারীর উদ্যোগে এসফিল্ড বসবাসকারী কয়েকজনকে নিয়ে এই বইমেলার গোড়াপত্তন। এসফিল্ডের এ’ব্যাকেট এভিনিউ’র পাশাপাশি ফ্লাটে বসবাসকারী হিসেবে জনাব বারীর সাথে সিডনীতে নতুন অভিবাসী জনাব নির্মল পালের পরিচয়, এবং ব্যাক্তিগত ও পারিবারিক বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। প্রায় দুই বছরকাল ক্যাম্বোডিয়ার ক্যাম্পট প্রাদেশিক সরকারের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন শেষে ১৯৯৮ এর মাঝামাঝি সিডনী ফিরে আসার পর পূর্ব বন্ধুত্বের রেশ ধরেই তাঁদের পারিবারিক সম্পর্ক আরও নিবিড় হয়, এবং জনাব নেহাল নিয়ামুল বারীর বইমেলার উদ্যোগের সাথে জনাব নির্মল পালের একাত্বতা এবং সম্পৃক্ততা গড়ে উঠে কাকতালীয় ভাবে ১৭ই নভেম্বর ১৯৯৯ ইউনেস্কো কর্তৃক একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণার সুত্র ধরে জনাব বারী মিশুক প্রকাশনার বলয় থেকে কমিউনিটির বৃহত্তর পরিসরে বইমেলা সম্প্রসারণে আগ্রহ প্রকাশ করলে ২০০০ সনের শেষের দিকে জনাব নেহাল নিয়ামুল বারীকে সভাপতি এবং জনাব নির্মল পালকে সহসভাপতি এবং জনাব ওমর ফারুককে সাধারণ সম্পাদক করে একুশে বইমেলা পরিষদ ইনক এর প্রাতিষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় একুশে বইমেলা ২০০১ উদযাপন উপলক্ষে জনাব নির্মল পালের নিজ হাতে নির্মিত অস্থায়ী শহীদ মিনার এর প্রতি সকলের উৎসাহ এবং আগ্রহের উপর শ্রদ্ধা রেখেই  ২০০২ সনে অনুষ্ঠিত সাধারণ সভায় এসফিল্ড পার্কে একটি শহীদ মিনার প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, এবং জনাব নেহাল নিয়ামুল বারীকে সভাপতি এবং জনাব নির্মল পালকে সহসভাপতি পদে বহাল রেখে সাধারণ সম্পাদক পদে ডঃ সুলতান মাহমুদকে নির্বাচিত করে নতুন কমিটি গঠন করে         বাংলার মহান একুশ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃত হওয়া এবং অভিবাসী জীবন ব্যাবস্থায় সকল ভাষাভাষীর কাছেই মাতৃভাষা চর্চার অনিবার্য গুরুত্বের বাস্তবতা বিবেচনা করে সকল ভাষাভাষীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার পাশাপাশি একুশের চেতনাকে বৈশ্বিক প্রাতিষ্ঠানিকতায় উত্তরণের লক্ষ্যে জনাব ওমর ফারুকের নেতৃত্বে গঠিত সাবকমিটি কর্তৃক একুশে বইমেলা পরিষদ ইনক নাম পরিবর্তন করে একুশে একাডেমী অস্ট্রেলিয়া ইনক নামাকরন করনের প্রস্তাব চূড়ান্ত করে। একুশে বইমেলা পরিষদ ইনকের ৩০শে অক্টোবর’ ২০০৪ তারিখে অনুষ্ঠিত সাধারণ সভা আনুসাঙ্গিক প্রয়োজনীয় সংশোধনীসহ নতুন নামাকরনের পক্ষে সর্বসম্মতি প্রকাশ করলে শুধুমাত্র বাঙালিদের বেষ্টিত গণ্ডি পেড়িয়ে মহান একুশ সকল ভাষাভাষী ভিত্তিক একুশে একাডেমী অস্ট্রেলিয়া ইনক নামক সংগঠনের অভ্যুদয় ঘটে। সকল ভাষাভাষীর সমন্বিত অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিতকরণের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের আলোকে সাধারণ সভা জনাব নির্মল পালকে সভাপতি, জনাব ওমর ফারুক’কে সহসভাপতি এবং ডঃ সুলতান মাহমুদ’কে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মনোনীত করে একুশে একাডেমী অস্ট্রেলিয়া ইনক এর কমিটি গঠন করে। সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের রূপরেখা হিসেবে জনাব নির্মল পাম এর গ্রন্থনায় এবং নেতৃত্বে একুশে একাডেমী অস্ট্রেলিয়া  ইনক ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতিসৌধ’, ‘ লাইব্রেরীতে একুশে কর্নার’ এবং ‘সিডনীতে একুশে ভবন’ নির্মাণের কৌশলসহ পাঁচ বছরের সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা অনুমোদন করে। সামগ্রিক পরিস্থিতির বিবেচনায় এবং একুশে  চেতনার বৈশ্বিক প্রাতিষ্ঠানিকতা অর্জনের স্বপ্নের প্রতি সুদৃঢ় বিশ্বাস অর্জনের  কারনে বহু বাধা, বিপত্তি,  সমস্যা এবং অসহযোগিতা উত্তরণ করেও এসফিল্ড হেরিটেজ পার্কে পৃথিবীর প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতিসৌধ প্রতিষ্ঠার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষের পরমুহূর্তেই জনাব নির্মল পাল অত্যন্ত বেদনার সাথে তাঁর স্বপ্নঘেরা একুশে একাডেমী অস্ট্রেলিয়া ইনক থেকে অব্যাহতি নেয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। পরবর্তীতে ০৭-০৬-০৭ তারিখে ক্যানবেরাস্থ ন্যাশনাল প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত “ল্যাংগুয়েজেশ ইন ক্রাইসিস” নামীয় ‘ন্যাশনাল সামিটে’ উপস্থিত ৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক ভাষা গবেষক, শিক্ষাবিদ পেশাজীবীদের উপস্থিতিতে তাঁর উপস্থাপনার প্রেক্ষিতে উদ্ভুত পরামর্শের আলোকে ৩০শে অক্টোবর ২০০৭ মাদার ল্যাংগুয়েজেশ কন্সারভেসন(এমএলসি)মুভমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল ইনক নামক সংগঠনের নিবন্ধন চূড়ান্তপূর্বক প্রাতিষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। বিরামহীন গবেষণা, শত শত ভাষাভাষী ও সম্ভাব্য সকল কমিউনিটির মতামত গ্রহন পূর্বক কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও উপর্যুপরি সফলতার ফলশ্রুতিতে জনাব নির্মল পাল রাষ্ট্রীয়পর্যায়ে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সেমিনারে মুখ্য বিশিষ্ট বক্তা হিসেবে সম্মানিত  হওয়ার এই গৌরব অর্জন করেছেন। উল্লেখ্য গত বছরের এপ্রিল মাসে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদ এমপি’র সিডনী সফরকালে পৃথিবীর প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতিসৌধ পরিদর্শনের পূর্বনির্ধারিত পরিদর্শন বাতিল হওয়ার পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁর প্রচণ্ড ব্যস্ততার মধ্যেও জনাব নির্মল পাল’কে সদয় সৌজন্য সাক্ষাৎ প্রদান করে তাঁর ব্যতিক্রমী কাজের প্রশংসা করে তাঁকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।


Place your ads here!

Related Articles

আইসিসির সভাপতি হিসাবে আমি হ্যাপি – মোস্তফা কামাল

অস্ট্রেলিয়া-ভারতের ম্যাচ শেষে আইসিসি সভাপতি মোস্তফা কামালের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়েছিল। মোস্তফা কামাল বললেন, যারা ভালো খেলেছে তারা জিতেছে। আইসিসি

Writing for 12th edition Matrivasha

Dear respected writers, artists and columnists, Happy new year. It is the time of Boi Mela again. This year it

সিডনিবাসী বাংলাদেশীদের সাথে শিকড়ের সেতুবন্ধন

“বিশ্বায়নে শহীদ মিনার” গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর সুফিয়া কামাল জাতীয় গ্রন্থাগারসহ প্রত্যেকটি জেলার সরকারী লাইব্রেরীসমূহে সিডনিতে

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment