ফাহিমা নাসরিন লিপির একক সংগীত সন্ধ্যা ২১শে অক্টোবর ২০১৮

ফাহিমা নাসরিন লিপির একক সংগীত সন্ধ্যা ২১শে অক্টোবর ২০১৮

পৃথিবীতে কিছু কিছু মানুষ আছেন যারা প্রচন্ডভাবে অন্তর্মুখী হন। নিজের প্রতিভা প্রতিপত্তির কোন প্রকার প্রচার তাঁরা চান না। নীরবে নিভৃতে তারা মানুষের কল্যাণে কাজ করে যান। ফাহিমা নাসরিন লিপি ঠিক তেমনই একজন ব্যক্তিত্ব। উনার সাথে অনেক ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে আমার পরিচয়। কোনভাবেই উনার মুখ থেকে একটাও নিজের জন্য বা নিজের কাজের প্রসংশাসূচক কথা শুনতে পেলাম না কিন্তু আমিও নাছোড় বান্দা। তখন বললাম তাহলে আপনার জীবনের কাহিনী বলেন। সেটার উত্তরেও উনি বললেন সাদামাটা বাঙালি মেয়ের জীবন কিন্তু আমি লেগে রইলাম। সেখান থেকে যতটুকু উদ্ধার করতে পেরেছি সেটা আপনাদের সাথে ভাগাভাগি করার চেষ্টা করবো।

সংগীত পরিবেশন করছেন ফাহিমা নাসরিন লিপি

ফাহিমা নাসরিনের জন্ম নারায়ণগঞ্জের। বাবা-মায়ের সর্বশেষ সন্তান। মা কবিতা লিখতেন। উনার মা গান ভালোবাসতেন তাই উনার বোনদেরকে ওস্তাদ রেখে  গানের তালিম দেয়াতে না পারলেও ব্যাত্যয় ঘটে উনার ক্ষেত্রে। উনি বোনদের সান্নিধ্যে নিজে নিজেই গান শিখতে থাকেন এবং পাঁচ বছর বয়সেই নিজে নিজে একটা গান তুলে ফেলার দক্ষতা দেখান। এইভাবেই চলছিল অপ্রাতিষ্ঠানিক সংগিত শিক্ষা। অবশেষে সপ্তম শ্রেণীতে পড়া কালীন উনার বড় বোন উনাকে সেগুন বাগিচার ঢাকা সংগীত একাডেমীতে ভর্তি করে দেন। সেখানে দুই বছর রবীন্দ্র সংগীত আর ক্ল্যাসিকাল শিখেন। দশম শ্রেণীতে পড়ার সময় উনি গানের পাঠ নেয়া শুরু করেন সংগীত শিক্ষক নিত্য সাহার কাছে ক্লাসিক্যাল আর রবীন্দ্র সংগীতের উপর সেটা চলে প্রায় তিন বছর। পরবর্তিতে ওস্তাদ বারীন মজুমদার এর কাছে ক্লাসিক্যাল শেখা, তাও প্রায় ৩ বছর।

একটি ঘরোয়া পরিবেশনাতে আয়ুব বাচ্চুর সাথে ফাহিমা নাসরিন লিপি

এরপর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে বাম রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পরেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূগোলে পড়াশোনার পাশাপাশি বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল বাসদের সাংস্কৃতিক সংগঠন “চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের” সাথে জড়িয়ে পড়েন ওতপ্রোতভাবে। চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ছিল মূলত একটি গণসঙ্গীতের দল। চারণের হয়ে গণসংগীত পরিবেশন করে বেড়িয়েছেন সারা বাংলাদেশ জুড়ে হোক সেটা ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আন্দোলন বা ৯০ এর গন অভ্যুত্থান। সবখানেই ছিল উনার গলার সরব উপস্থিতি। গণসংগীত করতে যেয়েই উনার গলার প্রকৃত মাধুর্য নষ্ট হয়ে যায়। যারফলে আর পরবর্তিতে সেইভাবে নিজেকে সংগীতের সাথে সংযুক্ত রাখতে পারেননি।

গহীন বালুচর চলচ্চিত্রের অরিজিনাল সাউন্ড ট্র্যাকের প্রকাশনা পত্র

জীবনের প্রবহমানতায় একসময় হয়েছেন দেশান্তরী। এখন স্থায়ীভাবেই বসবাস করছেন সিডনির পশ্চিমের সাব-আর্ব ম্যাকুয়ারি লিংকসে। স্বামী সন্তান নিয়ে সুখের সংসার উনার কিন্তু একবার যে সংগীতের সুরের ছায়াতলে গেছে সে বেশিদিন তার থেকে দূরে থাকতে পারেন না আর গান চালিয়ে নেয়ার ব্যাপারে উনার স্বামী উনার সবচেয়ে বড় উৎসাহদাতা। তাই বিশ বছর পরে উনি অবশেষে সংগীত চর্চা পুনরায় শুরু করেছেন। ইতোমধ্যেই গহীন বালুচর চলচ্চিত্রে চন্দন সিনহার সাথে গেয়েছেন “ঝড়ের মধ্যে পইড়া গেছে নাও।” গানটি ইতোমধ্যেই দর্শক শ্রোতাদের প্রশংসা কুড়িয়েছে।

সংগীত সন্ধ্যার টিকিট মূল্য মাত্র ১০ ডলার

উনার গান যারা সামনাসামনি শুনেছেন তারাই উনার গানের ভক্ত হয়ে পড়েছেন। এমনই কিছু মানুষের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে উনার একক সংগীত সন্ধ্যা। শুরুতে উনাকে রাজি করানোয় মুশকিল হয়ে পড়েছিল। পরে এই শর্তে রাজি হলেন যে যে অনুষ্ঠান থেকে যতটুকুই আয় হোক না কেন সেটা দান করা হবে আপন নিবাস বৃদ্ধাশ্রমে। উনার অনেকদিনের ইচ্ছা নিজের ব্যক্তিগত অল্প সাহায্যের পাশাপাশি আপন নিবাসের জন্য যদি গন সহযোগিতা নেয়া যায় সেই চেষ্টা থেকেই মূলত এই আয়োজন।

সংগীত সন্ধ্যার পোস্টার

আমি নিজে উনার রিহার্সেলের বেশ কিছু অডিও শুনেছি। সৃষ্টিকর্তা সবাইকে সবকিছু দেন না কিন্তু উনাকে একটা সুমধুর গলা দিয়ে পাঠিয়েছেন উনি যেটা এতদিন আমাদের কাছ থেকে আড়াল করে রেখেছিলেন। অবশেষে সেটা সকলের কাছে উন্মুক্ত হতে যাচ্ছে ২১শে অক্টোবর ২০১৮ গ্লেনফিল্ড কমিউনিটি হলে সন্ধ্যা ছয় টায়। আশাকরি আপনারা সবান্ধব হয়ে উপস্থিত উনাকে উৎসাহিত করবেন।

Md Yaqub Ali

Md Yaqub Ali

আমি মোঃ ইয়াকুব আলী। দাদি নামটা রেখেছিলেন। দাদির প্রজ্ঞা দেখে আমি মুগ্ধ। উনি ঠিকই বুঝেছিলেন যে, এই ছেলে বড় হয়ে বেকুবি করবে তাই এমন নাম রেখেছিলেন হয়তোবা। যাইহোক, আমি একজন ডিগ্রিধারী রাজমিস্ত্রি। উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করতে অস্ট্রেলিয়াতে আমার আগমন ২০১৫ সালের মার্চে। আগে থেকেই ফেসবুকে আঁকিবুকি করতাম। ব্যক্তিজীবনে আমি দুইটা জীবের জনক। একটা হচ্ছে পাখি প্রকৃতির, নাম তার টুনটুনি, বয়স আট বছর। আর একজন হচ্ছে বিচ্ছু শ্রেণীর, নাম হচ্ছে কুদ্দুস, বয়স দুই বছর। গিন্নী ডিগ্রিধারী কবিরাজ। এই নিয়ে আমাদের সংসার। আমি বলি টম এন্ড জেরির সংসার যেখানে একজন মাত্র টম (আমার গিন্নী) আর তিনজন আছে জেরি।


Place your ads here!

Related Articles

বঙ্গবন্ধু পরিষদ অস্ট্রেলিয়া – নতুন কমিটি নির্বাচিত

নতুন কার্যনির্বাহী কমিটি (২০০৯ – ২০১০) সভাপতি: আব্দুল জলিলসহ-সভাপতি: মোঃ সিরাজুল হক, গাজী কামরুল হোসেন নিলু, মোস্তাফা আনোয়ার পাশাসাধারন সমপাদক:

কবিতা’র বিকেল এর আয়োজনে শিমুল মুস্তাফা

স্বাধীনতা উৎসব ২০১৮ রবিবার, ২৫শে মার্চ্চ বিকেল ৬ টা থেকে রাত ১০টা Quakers Hill Neighbourhood Centre 51 Goddard Crescent Quakers

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment