সিডনিতে জাতীয় শোক দিবসে বৃহৎ শোকসভা

সিডনিতে জাতীয় শোক দিবসে বৃহৎ শোকসভা

গতকাল ৩১শে আগস্ট, সিডনিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে জাতীয় শোক দিবস। বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অস্ট্রেলিয়া কর্তৃক আয়োজিত এই শোক সভায় যোগ দিয়েছেন সিডনির ব্যাপক সংখ্যক প্রবাসী বাঙ্গালীরা। সিডনির বাঙ্গালীদের রাজধানী খ্যাত লাকেম্বার সন্নিকটে “বেলমোর পুলিশ সিটিজেন ক্লাবের অডিটোরিয়ামে” আয়োজিত শোকসভায় প্রবাসীরা বিনম্র স্রদ্ধায় স্মরন করেছেন সর্বকালের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।

এবারের শোক সভায় বঙ্গবন্ধুর চেতনায় বিশ্বাসী বিভিন্ন বিভক্ত সংগঠনগুলি ঐক্যবদ্ধভাবে নিজেদের নেতৃত্বে একই প্লাটফর্মে এসে দাঁড়িয়েছেন। বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক ও স্বাধীনতাবিরোধী অন্ধযুগের অসৎ শক্তির চাপিয়ে দেয়া দেশ-বিনাশী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সাধারন বাঙ্গালীর এই ঐক্যবদ্ধ জমায়েত সিডনিতে নতুন প্রানের সঞ্চার করেছে, প্রমান করেছে, জাতীয় সঙ্কটে প্রবাসী বাঙ্গালীরা ঘুরে দাঁড়ায়, ঐক্যবদ্ধ হয় বাঙ্গালীর প্রানের আদর্শ মুজিব চেতনায়।

১৯৭৫-এর ১৫ই আগস্টে স্বাধীনতাবিরোধী কাপুরুষদের নারকীয় হত্যায় নিহত হোন বাঙ্গালী জাতির প্রাণপুরুষ, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। নির্মমভাবে হত্যা করা হয় বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সহ বঙ্গবন্ধুর পরিবারের বেশীর ভাগ সদস্যদের, এমনকি ছোট্র শিশু শেখ রাসেল পর্যন্ত। সেই সাথে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, তারুন্যের প্রতিনিধি শেখ মনিকেও সপরিবারে হত্যা করা হয়।

“বাঙ্গালীর চিরন্তর শোকের ১৫-ই আগস্ট” ব্যানারে শোক সভায় নিহতদের রুহের মাগফেরাত কামনা করা হয় এবং বিদেহী আত্নার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পবিত্র কোরান থেকে তেলওয়াত করা হয়।

শোকসভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ অস্ট্রেলিয়ার সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান তরুণ এবং সভা পরিচালনা করেন যুবলীগ অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রামী সাধারন সম্পাদক নোমান শামীম। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু কাউন্সিলের প্রাক্তন সভাপতি সর্বজনাব প্রফেসর আব্দুর রাজ্জাক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ অস্ট্রেলিয়ার সাধারন সম্পাদক আনিসুর রহমান রিতু, বঙ্গবন্ধু কাউন্সিলের সভাপতি শেখ শামীম, একুশে একাডেমীর সভাপতি অভিজিৎ বড়ুয়া ।

সভায় উপস্থিত হয়ে বক্তব্য রাখেন অস্ট্রেলিয়ার আসন্ন ফেডারেল নির্বাচনে লোকাল লিবারেল প্রার্থী রন ডেলেজিও । জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর মতো নেতা কালের সম্পদ, যাদের হাত ধরে একটি জাতি আর একটি দেশের জন্ম হয়।

শোককে শক্তি আর আদর্শিক চেতনায় ধারন করে সম্মিলিতভাবে অসাম্প্রদায়িক ও অর্থনৈতিক মুক্তির আধুনিক বাংলাদেশে রূপান্তরে মুজিবাদর্শের বিকল্প নেই বলে অভিমত ব্যক্ত করেন বক্তারা। বঙ্গবন্ধুর জীবনের উপর গভীর আলোকপাতে আলোচনায় উঠে আসেন এমন একজন নেতা, যিনি বাংলা, বাঙ্গালী, বাংলাদেশের জন্য উৎসর্গ করেছেন নিজের জীবনের সবকিছু, এমনকি নিজের প্রিয় পরিবারকেও। আলোচনায় উঠে আসে এমন একটি পরিবার, যাদের আত্নত্যাগে আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ এবং যে স্বাধীন বাংলাদেশের পথ ধরে আমাদের প্রবাসীদের অহঙ্কারী জীবন যাপন। যে নেতার আর যে পরিবারের সর্বোচ্চ পরিশ্রমে আজকের অর্থনৈতিক আত্ননিরভশীলতার পথে বাংলাদেশ, তাঁর এবং তাঁদের প্রতি অস্ট্রেলিয়া প্রবাসীরা জানিয়েছেন বিনম্র শ্রদ্ধা এবং আনুগত্য। কেবলমাত্র বঙ্গবন্ধুর চেতনায় দেশপ্রেমিক পথচারনাই আমাদের আত্ত্বিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক সুস্থতা ও স্বাধীনতা নিহিত বলে মতামত উঠে আসে শোক সভায়।

শোকসভায় উপস্থিত থেকে আরো বক্তব্য রাখেন প্রাক্তন ছাত্রলীগ নেতা আব্দুর রউফ, আওয়ামী লীগ নেতা এমদাদ হক, জনপ্রিয় কথা সাহিত্যিক শাখাওয়াত নয়ন, গনজাগরন মঞ্চের নেতা পাভেল। আরো বক্তব্য রাখেন যুবলীগ অস্ট্রেলিয়ায় সহ-সভাপতি স্কাঊট আলাউদ্দিন অলোক, লাকেম্বা যুবলীগের সভাপতি আরাফাত মজুমদার, সাধারন সম্পাদক শহীদ শাহীন, রকড্যাল যুবলীগ সভাপতি খালেদ হোসেইন। উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় লিবারেল নেতা টিটো, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা বেলাল হোসেইন, বঙ্গবন্ধু কাউন্সিলের ডঃ সুধীর, বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতা আহসান হাবিব।

অস্ট্রেলিয়া যুবলীগের উদার সাংগঠনিক কর্মতৎপরতায় ও আওয়ামী রাজনৈতিক ভাবধারায় বিপুল সংখ্যক তরুনের উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো।


Place your ads here!

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment