অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষস্হানীয় বিশ্ববিদ্যালয় “অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি”তে টিপাইমুখ বাঁধের সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত
![অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষস্হানীয় বিশ্ববিদ্যালয় “অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি”তে টিপাইমুখ বাঁধের সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত](https://priyoaustralia.com.au/wp-content/uploads/files/Jamie_Pittock_883197719-890x395_c.jpg)
অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষস্হানীয় বিশ্ববিদ্যালয় “অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি”তে টিপাইমুখ বাঁধের সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে বিশেষজ্ঞরা বলেন যে এই বাঁধ বাংলাদেশের জন্য হবে বিপর্যয়কর। গত শুক্রবার, ৩রা জুলাই, ২০০৯, “ম্যানিং ক্লার্ক সেন্টারে” অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে এ আশংকাও প্রকাশ করা হয় যে, ভারত হয়তো টিপাইমুখকে “Bargaining tool” হিসেবে ব্যবহার করবে
দক্ষিণ এশিয়ার নদী ব্যবস্হাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ এবং ‘World Water Forum’ এর পরিচালক জেমি পিটক বাংলাদেশের সরকারের আন্তর্জাতিক পানিপ্রবাহ কনভেনশনকে (International Watercourse Convention) র্যাটিফাই করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, এই চুক্তিতে বাংলাদেশের হারানোর কিছু নেই। উল্লেখ্য, ভারত ও বাংলাদেশ, দুটো দেশই এ চুক্তিতে সাক্ষর করেনি; যা আন্তর্জাতিক ফোরামে টিপাইমুখকে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি বড় প্রতিবন্ধক। বিভিনè উপাত্ত সহকারে তিনি দাবি করেন যে টিপাইমুখ বাঁধ সিলেট অঞ্চলের জৈববৈচিত্র, বিশেষত মৎস্যস্পদকে ধংস করবে যার প্রভাব হবে চিরস্হায়ী । তাছাড়া এ বাঁধের ফলে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে বড় ধরনের বন্যার শিকার হতে পারে বলে তিনি আশংকা প্রকাশ করেন।
ভারতের বড় বাঁধের কারণে সৃষ্ট সামাজিক ও পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেন অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির রিসার্চ ˉকুল অফ প্যাসিফিক এন্ড এশিয়ান স্টাডিজের ফেলো ডঃ কু›তলা লাহিড়ী দত্ত। তিনি নদীর ওপর বিভিন্ন দেশের সরকার কর্তৃক “অতি নিয়নত্রনের” এর সমালোচনা করেন। টিপাইমুখ বাঁধের বিরোধিতায় দুটো দেশের সরকারের বাইরে “তৃতীয় পক্ষ” উভয় দেশের সিভিল সোসাইটির মিলিত কার্যক্রমের উপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
সিডনী ওয়াটার্সের পরিবেশ বিজ্ঞানী ডঃ নার্গিস আক্তার এই বাঁধের সম্ভাব্য বিপর্যয় নিয়ে বি¯তারিত আলোচনা করেন। টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের ক্ষেত্রে কোন আন্তর্জাতিক আইন না মানা ও স্বচ্ছতার অভাবের জন্য তিনি ভারতীয় সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন।
টিপাইমুখকে ভারত সরকার “Bargaining tool” বা দর কষাকষির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে অন্য কোন ক্ষেত্রে সুবিধা আদায়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করবে বলে আশংকা প্রকাশ করেন মানবাধিকার কর্মী, আইটি স্পেশালিস্ট একরাম চৌধুরী। তিনি মনে করেন আধিপত্যবাদী মনোভাব পরিবর্তন করে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে আঞ্চলিক পরাশক্তির ভুমিকা পালন করলেই ভারত তথা দক্ষিণ এশিয়া প্রকৃতপক্ষে উপকৃত হবে। তিনি আরও বলেন, টিপাইমুখ বাঁধের ফলে বাংলাদেশে “Environmental Refugee” র সংখ্যা আশংকাজনকভাবে বেড়ে যাবে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এ বিষয়টিও তুলে ধরা প্রয়োজন বলে তিনি অভিমত প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানের সকল বক্তা উভয় দেশের সাধারণ জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধি ও অংশগ্রহণ ব্যতিরেকে এই নির্মাণকাজ বন্ধ সম্ভব নয় বলে অভিমত দেন। বিষয়াটি দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান না হলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের সম্পৃক্ততার মাধ্যমে দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন বলে তাঁরা অভিমত প্রকাশ করেন।