অষ্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে জাতীয় শোক দিবস পালন
গত ১৮ই আগস্ট (২০১৮) শনিবার মেলবোর্ন আওয়ামী লীগ, অষ্ট্রেলিয়া শাখার উদ্যোগে মেলবোর্নে জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয়। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে প্রথম বারের মতো অষ্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে রক্তদান কর্মসূচী পালন করে মেলবোর্ন আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনগুলি। এবারের শোক দিবসের অনুষ্ঠান তিন ভাগে ভাগ করা হয় (১) আর্তের সেবায় স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচী, (২) বঙ্গবন্ধুর জীবনের উপর এক চিত্র প্রদর্শনী, ও (৩) আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল।
গত ১৫ই আগস্ট শুরু হওয়া স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচীতে অনেকে রক্তদান করেন ও এই রক্তদান কর্মসূচী আগামী ২৫ তারিখ পর্যন্ত চলবে। এছাড়া গত ১৮ই আগস্ট আলোচনা ও দোয়া মাহফিলের আগে শুরু হয় বঙ্গবন্ধুর জীবনের উপর এক চিত্র প্রদর্শনী। তা ঘুরে দেখেন অনুষ্ঠানে আগত নেতা কর্মী ও অতিথি গন। এতে উপস্থিত বাংলাদেশীদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা যায়। এ সময় এক আবেগ ঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
এরপর মেলবোর্ন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডঃ মাহবুব আলমের সভাপতিত্বে দলের সাধারন সম্পাদক মোল্লা মোঃ রাশিদুল হক সবাইকে স্বাগত জানিয়ে কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু করেন। অতঃপর অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুসহ উনার পরিবারের সকল শহীদ, ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত দেশের জন্যে প্রান দেয়া সকল শহীদের জন্যে দোয়া করা হয়। অতঃপর সকল শহীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
এরপর এক তথ্য ও গবেষণামূলক আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন মোল্লা মোঃ রাশিদুল হক (সাধারন সম্পাদক, মেলবোর্ন আওয়ামী লীগ)। তিনি বঙ্গবন্ধুর জীবনী নিয়ে আলোচনা করা ছাড়াও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু ভিডিও ডকুমেন্টারী প্রদর্শন করেন। তিনি বলেন যে বঙ্গবন্ধুকে খুন করায় দেশের যে ২৮৮ লক্ষ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে তাই নয়, বাংলাদেশ আজকে মালয়েশিয়া বা সিঙ্গাপুরের মতো উন্নত নয় তার কারন বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের কারণে জাতি আজ মাথা তুলে পরিচয় দিতে অপারগ কেননা অল্প কিছু মানুষের ঘ্রন্য কাজের জন্যে পুরো জাতিকে আজ এই অপবাদ মাথায় নিয়ে চলতে হচ্ছে। তিনি বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের বিচার দাবী করেন।
অতঃপর বক্তব্য রাখেন আর এম আইটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও মেলবোর্ন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ড. সানিয়াত ইসলাম বলেন বিদেশে অনেকে বাংলাদেশীদের সাথে কথা বলতে ঘৃণা বোধ করতো জাতির পিতাকে হত্যা করার জন্যে। এটা আমাদের জাতির জন্যে কতো দুর্ভাগ্য যে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিভিন্ন সময় জাতীয় ভাবে পুনর্বাসন করা হয় – এম পি নির্বাচিত করা হয়, বিদেশে দূতাবাসে চাকরী দেয়া হয়। অস্ট্রেলিয়া আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এ রহমান অরুপ বলেন দলের দুর্দিনে বোঝা যায় কারা প্রকৃত কর্মী। সামনে নির্বাচনে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা দরকার। মেলবোর্ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জেমস খান বর্তমান আওয়ামী সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড সবার সামনে তুলে ধরেন। আগামী নির্বাচনে আবারও আওয়ামী সরকারকে নির্বাচিত করার আহবান জানান।
মেলবোর্ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক নাফিউল ইসলাম তাঁর স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্যে বলেন ছোটবেলায় আমরা দেখেছি বঙ্গবন্ধুকে ইতিহাসে বিকৃত করার চেস্টা করা হয়েছে, তাঁর হত্যাকারীদের পুনর্বাসন করা হয়েছে। তাদের ভয় ছিল বঙ্গবন্ধুর তর্জনী। যেই তর্জনীর নির্দেশে সারা বাংলাদেশের মানুষ যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল, অনেকে বলে উনাকে হত্যা করার সময় উনার তর্জনীতেও গুলি করা হয়।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি হাসনাইন রুবেল বলেন বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর দেশ পিছিয়ে পড়ে, এখন জননেত্রী শেখ হাসিনার কল্যানে দেশের প্রভূত উন্নতি হচ্ছে।
প্রকৌশলী ওয়াহিদুর রহমান (সাবেক চীফ ইঞ্জিনিয়ার, এলজিআরডি, সহ সভাপতি, কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগ, সহ সভাপতি, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটি) বলেন ১৯৭৫ থেকে ৯৬ পর্যন্ত নিজেদের আওয়ামী লীগের কর্মী বা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পরিচয় দেয়া যায়নি। তিনি আরও বলেন জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার ন আসলে দেশ থেকে বঙ্গবন্ধুর নামই হয়তো মুছে ফেলা হতো। মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার সালেক সূফি (উপদেস্টা, মেলবোর্ন আওয়ামী লীগ ও জ্বালানী বিশেষজ্ঞ ও সেন্ট্রাল কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক) বলেন পদ্মা মেঘনা যমুনা হয়তো শুকিয়ে যাবে, কিন্তু বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলা যাবে না।
অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন মোল্লা মোঃ রাশিদুল হক, মানহা মাহবুব ও হাসিনা চৌধুরী মিতা।
এছাড়া অনুষ্ঠানে টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী (নউফেল) (সাংগঠনিক সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটি) ও অ্যাডভোকেট সিরাজুল হক (সভাপতি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, অস্ট্রেলিয়া)। তারা বি এন পি – জামায়াতের প্রোপাগান্ডার বিরুদ্ধে সক্রিয় হওয়ার ও ভেদাভেদ ভুলে আওয়ামী লীগের জন্যে সবাইকে একসাথে কাজ করার আহবান জানান।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন জনাব আযহারুল ইসলাম সোহাগ (সহ সভাপতি, মেলবোর্ন আওয়ামী লীগ), এসরার উসমান, সুফিয়া রহমান, মোঃ এম সালেহিন, আবু সাদেক ও আইভী সুলতানাসহ আরও অনেকে।
সমাপনী বক্তব্যে ড. মাহবুব আলম বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বের জন্যই আজ আমরা একটি গর্বিত স্বাধীন দেশের নাগরিক হতে পেরেছি। আজ যদি দেশ স্বাধীন না হত তাহলে হয়ত আমরা আর আমাদের সন্তানেরা ফিলিস্তিনি শিশুদের মত রাস্তায় গুলি খেয়ে মারা যেতাম। আমাদের কোন ভবিষ্যত থাকত না। তিনি বঙ্গবন্ধুর এত বড় নেতা হওয়ার পিছনে অনেকের অবদানের মধ্যে বেগম মুজিবের বিশাল অবদানের কথা উল্লেখ করে বলেন তাঁদের ৩৪-৩৫ বছর দাম্পত্য জীবনে ১৩ বছরের অধিক সময় বঙ্গবন্ধু জেলে কাটিয়েছেন, সেই সময় বেগম মুজিব তাঁদের সংসার আগলে রেখেছেন আর বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকে উৎসাহ যুগিয়েছেন।
অনুষ্ঠান শেষে সভার জন্যে এক নৈশভোজের আয়োজন করা হয়।
Related Articles
Revised Fee for Some Consular Services From 01 December 2008
Bangladesh High Commission, Canberra Important Notice 19 November 2008 Revised Fee for Some Consular Services From 01 December 2008 This
“Ke Hotey Chay Kotipoti”: “Who Wants to be a Millionaire” comes to Bangladesh
Reality show “Ke Hotey Chay Kotipoti” will soon go on air on Desh TV. A press conference was held yesterday
Invitation for article contribution
World Environment Day Special Issue 2012 by BEN Invitation for article contribution Dear Friends, On behalf of the Bangladesh Environment