ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুল নিয়ে “প্রতিবাদ বিজ্ঞপ্তির” প্রতিবাদ

ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুলের প্রেসনোট সম্পর্কে নিয়ে বাংলাকথার বিবৃতি
প্রথমত গত ১৯ আগষ্ট প্রকাশিত সংবাদে ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুল নিয়ে প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল “ ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির কতিপয় সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়”। যেখানে স্কুলটির সাবেক এবং বর্তমান শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে ম্যানেজিং কমিটির কতিপয় সদস্যের (ম্যানেজিং কমিটির সব সদস্য নয়) বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়(ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুলকে নিয়ে নয়)। যার উদ্দেশ্য ছিল ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুল ম্যানেজিং কমিটির কাছে অভিভাবকদের অভিযোগ গুলো তুলে ধরা যাতে তারা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্হা গ্রহন করেন। কিন্তু আমরা এখানে গভীর দূঃখের সাথে লক্ষ্য করলাম স্কুলটির ম্যানেজিং কমিটি একজন সম্পাদক ও তার কিছু অনুসারিদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ার অভিযোগের (অভিভাবকদের ) সত্যতা লক্ষ্য করলাম। যার ফলে ঐ গোষ্ঠী সংবাদ বিজ্ঞপ্তিটিতে যে ভাষায় প্রতিবাদ করেছে তাতে মনে হয় মুখের আড়ম্বর যেন তাদের পুঁজি । সত্যকে মিথ্যা এবং মিথ্যাকে সত্য বানাতে জোসেফ গোয়েবলসের নীতির অনুসরন করছে।একটি বস্তুনিষ্ঠ প্রতিবেদনে হলুদ সাংবাদিকতার সস্তা ট্যাগ দিয়ে নিজেদের অপকর্ম আড়াল করার ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়েছেন।
প্রতিবাদ লিপির প্রথমেই তারা গত বাধা ভাবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে অভিভাবকদের উপর দোষ চাপিয়ে নিজেদের দায় সারলে ও গান শেখানোর একটি ক্লাসে অভিযুক্ত সম্পাদক কর্তৃক রেগে গিয়ে টেবিলের উপর জোরে আঘাত এবং প্রায় সব শিক্ষার্থী কেঁদে দেওয়া এবং এর পর পরই স্কুল থেকে একযোগে কয়েকজন শিক্ষার্থী চলে যাওয়ার সুনির্দিষ্ঠ অভিযোগের ব্যাপারে কোন কিছুই বলা হয়নি। প্রতিবাদ লিপিতে বলা হয়েছে রিহার্সাল ব্যতীত কেহই চূড়ান্ত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পারবে না তা অভিবাকদের জানিয়ে দেওয়া হয়। এক্ষেত্র আমাদের প্রশ্ন তাহলে নিয়ম ভংগ করে স্কুল কমিটির সভাপতি কেন আবার ঐ শিক্ষার্থীকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আলাদাভাবে অংশ গ্রহনের আশ্বাস দিয়ে প্রবঞ্চনা করলেন।
হুক্কা ব্যবহার সম্পর্কে বলা হয়েছে “ বাংলার কৃষ্টি ও ঐতিহ্যকে সাজ সজ্জার মাধ্যমে তুলে ধরা অংশ হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছিল। অথচ হুক্কা সম্পর্কে উইকিপিডিয়া বলা হয়ছে “হুক্কা আরবি: أرجيلة, ফার্সি: قلیان, উর্দু حقّہ ধূমপান করার মাধ্যম। যা মাদকের চেয়েও ক্ষতিকর। অনেকে নল জল, হুকি নামেও ডেকে থাকে। আবার অনেকে ভারতীয় ধুমপান পাইপ বলেও ডেকে থাকেন। হুক্কার মাধ্যমে ধুমপান স্বাস্থের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। আর এই জল কখনোই পরিশুদ্ধ নয়।বরং শরীরের জন্য সংক্রামক রোগ সৃষ্টি করতে পারে। ধারণা করা হয় মুঘল সম্রাটের ইরফান শাইখ বা পারস্যের সাফাভি রাজবংশ এই হুক্কার আবিস্কারক।আর সেখান থেকেই গোটা ভারতবর্ষে হুক্কা ছড়িয়ে পড়ে কিছু দিনের মধ্যই ওসমানি সম্রজ্যের সময়ে হুক্কা পার্শবর্তী সাফাভি রাজবংশ থেকে মিসর ও লেভ্যান্ট ছড়িয়ে পরে।
এখানে দেখা যাচ্ছে হুক্কা হচ্ছে ধূমপান করার মাধ্যম যা মাদকের চেয়েও ক্ষতিকর এবং সাফাভি রাজবংশ এই হুক্কার আবিস্কারক। এরকম একটি বিষয়কে প্রতিবাদ লিপিতে বাংলার কৃষ্টি ও ঐতিহ্য হিসাবে তুলে ধরার চেষ্টা করছে যার মাধ্যমে ঐ গোষ্ঠী বাংলার কৃষ্টি ও ঐতিহ্য সম্পর্কে তাদের জ্ঞানের দৈনতা আরেকবার কমিউনিটির সামনে প্রকাশ করলো। এছাড়া বাংলাকথার প্রতিবেদন হুক্কা পানের কোন কথা বলা হয়নি, কিন্তু তাদের এই বক্তব্য যেন গ্রামীন শ্লোক “ ঠাকুর ঘরে কে রে ? আমি কলা খাইনি” কে মনে করিয়ে দেয়।
অভিভাবকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে, ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুলের ব্যানারে হুক্কা ব্যবহারের ছবি, তাদের ভুল ধরিয়ে দেওয়ার জন্য ছবি গুলো ব্যবহার করা হয়েছে। ছবি ব্যবহারের ক্ষেত্রে এখানে অস্ট্রেলিয়ান জাতীয় গনমাধ্যম গুলোর নীতিমালা অনুসরন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ান প্রাইভেসী এ্যাক্টের কোন ব্যতয় ঘটেনি। কিন্তু কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সামনে হুক্কার মত ধুমপানের বস্তুর প্রদর্শনীর লজ্জা এড়াতে এখান তারা “ উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে”চাপিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
সাংবাদিকরা দেশ ও জাতির শেষ ভরসা। সৎ সাংবাদিকের কোনো বন্ধু নেই এবং দেশ-কাল-পাত্র নেই। সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের উপর হুমকি, নির্যাতন, মামলা এবং হামলা চরম অসহিষ্ণ এবং অগণতান্ত্রিক আচরণেরই বহিপ্রকাশ।আমরা এর তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
এই অসুখ সব দেশ সব সমাজের সর্বস্তরে কমবেশি প্রকাশিত। তবে আমরা এই ধরনের সামাজিক অনাচার ও বৈপরিত্যের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে আমাদের লেখনী অব্যাহত রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। বিক্ষুদ্ধ অভিভাবকদের সাথে আমরা এখন বিশ্বাস করি ম্যানেজিং কমিটির ব্যানারে ঘাপটি মেরে থাকা কিছু অযোগ্য এবং অদক্ষলোক স্কুলটিকে ভুলভাবে পরিচালিত করছে এবং প্রতিবাদ লিপির শিষ্টাচার বহির্ভূত ভাষা ঐ স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর হীমমন্যতা ও নীচুতার পরিচয় বহন করে।
আমরা ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুল কমিটির মুক্তমনা দায়িত্বশীলদের দৃষ্টি আকর্ষন করে, স্মরন করিয়ে দিতে চাই যে, আমরা আপনাদের বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান সহ বিভিন্ন স্পর্শকাতর বিষয়ে ( মিনিস্টার্স এওয়ার্ড নিয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তি) সংবাদ প্রকাশ করে আপনাদের পাশে থেকেছি। বাংলাভাষা প্রসারে আপনাদের মহতি উদ্যোগের আমরা একজন সহযোদ্ধা। তাই নিজেদের ভুল ত্রুটি এবং সিডনির বিভিন্ন সাবারবের বন্ধ হয়ে যাওয়া বাংলা স্কুল থেকে শিক্ষা গ্রহন করুন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাকথা ও সম্পাদনা পরিষদের সদস্যদের নামে অপ্রচার ও কুৎসা রটনা বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা করুন, প্রতিবাদলিপির নামে বিভিন্ন স্থানে প্রকাশিত মানহানিকর বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিন। অন্যথায় বাংলাকথা, অস্ট্রেলিয়ার প্রচলিত আইন অনুযায়ী সম্ভাবপর সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করতে বাধ্য হবে।
Related Articles
বাংলাদেশ হাইকমিশন, ক্যানবেরা-তে “গণহত্যা দিবস” ২০১৮ পালন
(সংবাদ বিজ্ঞপ্তি): ক্যানবেরা, ২৫ মার্চ ২০১৮ – বাংলাদেশ হাইকমিশন, ক্যানবেরাতে “ গণহত্যা দিবস ”-২০১৮ পালিত হয়। শুরুতেই একাত্তর সালে পাকিস্তানি
সিডনিতে জাতীয় শোক দিবসে বৃহৎ শোকসভা
গতকাল ৩১শে আগস্ট, সিডনিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে জাতীয় শোক দিবস। বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অস্ট্রেলিয়া কর্তৃক আয়োজিত