বিজয় উৎসবে উদ্বেলিত ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুল

বিজয় উৎসবে উদ্বেলিত ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুল

কাজী আশফাক রহমান: আমাদের জাতীয় জীবনের সবচেয়ে গৌরবজনক অর্জন একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয়। এই বিজয় আমাদের দিয়েছে একটি স্বাধীন এবং সার্বভৌম ভূখণ্ড, দিয়েছে আত্মপরিচয়, দিয়েছে পৃথিবীর বুকে মাথা উচু করে চলার শক্তি।

প্রবাসে বেড়ে ওঠা ছেলেমেয়েদের সাথে আমাদের গৌরবগাথা পরিচিত করার লক্ষ্য নিয়ে প্রতি বছর ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুল বিজয় দিবস পালন করে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে। গত ১৭ই ডিসেম্বর রবিবার মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের ৪৬তম বার্ষিকীতে সিডনির মিন্টোস্থ স্কুল প্রাঙ্গনে আয়োজিত হয় বিজয় উৎসব।

সকাল এগারোটায় সম্মিলিত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মাধ্যমে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পর্বের সূচনা ঘটে। এর পরপরই অস্ট্রেলিয় আদিবাসী এবরোজিনালদের ঐতিহ্য ও কৃষ্টির প্রতি সম্মান জানানো হয়। আবৃত্তি নিয়ে আসা টুনটুনি শাখার সোনামণি দের পরিবেশনা দর্শক শ্রোতাদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি করে। অরুপার সিংহ ও বাঘের গল্প এবং অপলার হৃদয় ছোঁয়া মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বর্ননা উপস্থিত সূধী মন্ডলীকে আবেগতাড়িত করে। অর্নব ও রাবাবের কণ্ঠে ” আমি যে ভাই যাদুওয়ালা”, অবনির কণ্ঠে ” সূর্যোদয়ে তুমি সূর্যাস্তেও তুমি,”নোয়ার গলায় “টুকটুকে লাল রাঙা পুতুল” জেইনার গাওয়া ” তুই আয়রে কাছে আয়” গানগুলির অসাধারণ পরিবেশনা আগত অতিথিদের প্রশংসা কুড়াতে সক্ষম হয়। রুশদা, তাহিয়া, ফাতিমা, জেইনা, সুবাহ, রিশিকা, লামিয়া, রিয়ানা, নুরিন, তাওহিদ, রুশনান, আলিশা এবং দৃপ্ত একক আবৃত্তিতে অংশ নিয়ে সবাইকে বিমোহিত করে। ফাঁকে ফাঁকে সমবেত কণ্ঠে “ওঠ ওঠ রে”, “আমরা সবাই রাজা”, “মেঘের কোলে রোদ হেসেছে, “আজি ধানের ক্ষেতে” এবং “ধন ধান্য পুষ্প ভরা” গানগুলিতে ছাত্রছাত্রীদের শৃঙ্খলতা এবং আত্মবিশ্বাসের ছাপ পরিপূর্ণভাবে পরিলক্ষিত হয়। সম্মিলিত কণ্ঠে অস্ট্রেলিয়ায় জাতীয় সংগীত গেয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পর্বের সমাপ্তি ঘটে।

দ্বিতীয় পর্বে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনায় স্কুলের ব্যবস্থাপনা পর্ষদ সদস্য জনাব আবদুল জলিল,এই প্রবাসে সামগ্রিক সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড প্রসারে ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুলের ভূমিকা ও অবদানের কথা তুলে ধরেন। বাংলা প্রসার কমিটির সভাপতি জনাব রফিকুল ইসলাম বাংলা স্কুলের ছেলেমেয়েদের প্রশংসা করে মাধ্যমিক পর্যায়েও ছাত্রছাত্রীদের বাংলা স্কুল পাঠাতে অনুরোধ করেন।

স্কুলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এবং বর্তমান ব্যবস্থাপনা পর্ষদ সদস্য জনাব নাজমুল আহসান খান উপস্থিত দর্শক এবং বিজয় উৎসব আয়োজনের সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

শেষ পর্বে এই শিক্ষা বর্ষ সমাপনী সনদপত্র ছাত্রছাত্রীদের মাঝে প্রদান করা করা হয়। অধ্যক্ষ মিসেস রোকেয়া আহমেদের পরিচালনায় এই পর্যায়ে নিজ নিজ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের হাতে সনদ তুলে দেন মিসেস মিলি ইসলাম, মিসেস নাসরিন মোফাজ্জল এবং মিসেস রুমানা সিদ্দিকী। মর্যাদাপূর্ণ মিনিস্টারস এডওয়ার্ড স্কুলের মেধাবী শিক্ষার্থী সুমাইরা নুরীন খানের হাতে তুলে দেন জনাব নাজমুল আহসান খান, জনাব আবদুল জলিল এবং জনাব মাসুদ চৌধুরী।

পুরো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সাজ্জাদ চৌধুরী, শব্দ নিয়ন্ত্রণ ছিলেন মাসুদ মিথুন। তবলায় সংগত করেন স্কুলের প্রাক্তণ ছাত্র সজিব খান। উপস্থাপনায় ছিলেন মিসেস রুমানা সিদ্দিকী। জাতীয় সৃতিসৌধের তৃমাত্রিক ব্যাঞ্জনায় নির্মিত মঞ্চের মূল পরিকল্পনায় ছিলেন মাসুদ মিথুন এবং আহমেদ সাগর। সহযোগিতায় ছিলেন ইয়াকুব আলী ও পুলক খান। আপ্যায়নে ছিলেন ইয়াকুব আলী। নাজমুল আহসান খানের সার্বিক তত্বাবধানে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শেষে হালকা খাবার ও পানীয় পরিবেশন করা হয়।

ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুল ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সব বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য প্রতি রবিবার সকাল দশটা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকে।

সোনামণিদের কণ্ঠে সমবেত সংগিত পরিবেশনা।

সোনামণিদের কণ্ঠে সমবেত সংগিত পরিবেশনা।

সোনামণিদের মধ্যে সনদপত্র বিতরণীর একটি মুহূর্ত।

সোনামণিদের মধ্যে সনদপত্র বিতরণীর একটি মুহূর্ত।

আগত অতিথিদের একাংশ।

আগত অতিথিদের একাংশ।

Kazi Ashfaq Rahman

Kazi Ashfaq Rahman

ছেলেবেলা থেকেই শান্তশিষ্ট ছিলাম বলে আমার মায়ের কাছে শুনেছি। দুষ্টুমি করার জন্য যে বুদ্ধিমত্তার প্রয়োজন তা নিশ্চয়ই আমার ছিল না। আমার এই নিবুর্দ্ধিতা একসময় আমার মাকে ভাবিয়ে তুলেছিল। তিনি হয়তো ভেবেছিলেন আমার এই ছেলে জীবনে চলবে কি করে। এখন যেভাবে চলছি তাতে কোনও আক্ষেপ নেই। ভালই তো আছি। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত শিক্ষা, সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যে অনন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারাকে জীবনের বড় অর্জন বলে মনে করি। আমার স্ত্রী একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্রী, আমার শত বোকামী, আলসেমী আর বৈষয়িক না হওয়াকে প্রকারান্তরে প্রশ্রয় দেওয়াতে আমার আর মানুষ হয়ে ওঠা হয়নি। আমার দুই সন্তান, আমি চাই তারা আমার মত বোকাই থেকে যাক কিন্তু আলোকিত মানবিক মানুষ হোক যা আমি হয়তো হতে পারিনি।


Place your ads here!

Related Articles

বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন অষ্ট্রেলিয়া কমিটির চূড়ান্ত অনুমোদন

বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে জনাব ডা: মিল্টন হাসনাত কে সভাপতি এবং মিসেস এলিজা আজাদ কে অষ্ট্রেলিয়ায় “বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন

Welcome back Dr Moyazur Rahman

Dr Moyazur Rahman alias Maroof, a Bangladeshi born Australian recently returned from Canada and joined the Canberra Hospital as Consultant

PriyoAustralia's 5th Birthday Celebration, Awards and Event Photos

Please contribute your video or images (on this event, if you have any) by e-mailing priyo@priyoaustralia.com.au. PriyoAustralia.com.au’s 5th Birthday Celebration,

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment