মাশরাফির বাবা গোলাম মর্তুজা
নিউজিল্যান্ডের নেলসনে স্কটল্যান্ড দলের সঙ্গে খেলার সময় ডান পায়ের ক্যাপকাসলে আঘাত পান বাংলাদেশ দলের ক্যাপ্টেন মাশরাফি বিন মর্তুজা! এরপর থেকে তিনি বেদনানাশক ওষুধ খেয়ে খেয়ে খেলে যাচ্ছেন! সাধারনত এ ধরনের সমস্যায় সপ্তাহ খানেক বিশ্রামে থাকলে ব্যথার উপশম হয়। কিন্তু খেলার কারনে দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেবার কারনে তিনি বিশ্রামে যেতে পারছেন না। তথ্যটি মাশরাফির বাবা গোলাম মর্তুজার। সোমবার এডিলেড ওভালে খেলা দেখার ফাঁকে তিনি তথ্যটি দেন।
এডিলেড ওভালে খেলা দেখার সময় আমরা উদ্বিগ্ন একজন পিতাকে দেখেছি। সে উদ্বেগ ছেলের ইনজুরির চাইতে দলের জয় নিয়ে সক্রিয় ছিল বেশি। খেলার শেষের দিকে বাংলাদেশ দলের হারের শংকা তৈরি হচ্ছিল! উদ্বিগ্ন ধুমপায়ী গোলাম মর্তুজা তখন ঘন ঘন ওভালের বাইরে যাচ্ছিলেন! রুবেলের শেষ ওভারে পাওয়া দুটি উইকেটেই জয় নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের। গোলাম মর্তুজা তখন হাত উচিয়ে উল্লাস প্রকাশ করছিলেন। এরপর বলেন, আমার মতো সুখি পিতা কী দুনিয়াতে দ্বিতীয় কেউ হতে পারে?
এর আগে গোলাম মর্তুজা বলেছিলেন, এডিলেডের খেলার ফলাফল দেখে তিনি ঠিক করবেন, আরও খেলা দেখতে তিনি যাবেন, না ফিরে যাবেন দেশে। সোমবারে এ নিয়ে জিজ্ঞেস করলে মনে হয় তিনি বাংলাদেশ দলের পরবর্তি খেলাগুলো দেখেই এরপর যাবেন। দেশে তার একটি দায়িত্বের বিষয়েও তাকে উদ্বিগ্ন মনে হয়। নড়াইলে তার এলাকার তিনটি স্কুলের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি তিনি। সেগুলোর এমপিওভূক্তির শিক্ষকদের বেতনের বিল তাকে স্বাক্ষর করে পাঠাতে হয়। সময়মতো বিল না পাঠালে শিক্ষকদের বেতনের দেরি হবে। এখন সেই বিলগুলোর স্ক্যানকৃত কপি আনিয়ে সেগুলো স্বাক্ষর করে পাঠানো যায় কিনা তা নিয়ে তিনি ভাবছেন।
সোমবার এডিলেড ওভালে দর্শকদের যারা তাকে মাশরাফির বাবা হিসাবে চিনতে পেরেছেন, তারাই তার সঙ্গে ছবি তুলেছেন। দল জয়ী হবার পর তারা তার সঙ্গে কোলাকুলি করে অভিনন্দিত করেন। খেলার শেষে মাঠের বড় পর্দায় ভাষ্যকারদের সঙ্গে ছেলের কথা শোনার জন্যে গ্যালারির আসনে আসনে তিনি অপেক্ষায় বসে থাকেন। ছেলের কথা শুনতে শুনতে বলেন, ভালোই বলে তাইনা? তখনও তার চোখে-মুখে ফুটে ওঠে একজন গর্বিত পিতার প্রতিচ্ছবি।