বাংলাদেশ কী ভুল আম্পায়ারিং অথবা ক্রিকেট ষড়যন্ত্রের কাছে হেরেছে
মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড, এমসিজি অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় ক্রিকেট ভেন্যু। কিন্তু এই ভেন্যুটি বাংলাদেশের জন্য পয়মন্ত হলোনা! এমসিজিতে প্রথম খেলায় বাংলাদেশ শ্রীলংকার কাছে হেরেছে। বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইন্যালে এমসিজিতে খেলতে নেমে বাংলাদেশ কী ভুল আম্পায়ারিং অথবা ক্রিকেট ষড়যন্ত্রের কাছে হেরেছে? বৃহস্পতিবারের খেলা শেষে এই প্রশ্নটি ফিরেছে বাংলাদেশের ক্রিকেট কর্মকর্তা শুরু করে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী দর্শক সবার মুখে মুখে ।
আইসিসির বর্তমান প্রেসিডেন্ট ও বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রী আ ন হ মোস্তফা কামাল ওরফে লোটাস কামাল বৃহস্পতিবার এমসিজিতে বসে খেলাটি দেখেন। খেলা শেষে তিনি এই প্রতিনিধিকে বলেন খেলাটি দেখে সবার মতো আমারও মন খারাপ হয়েছে। ভুল আম্পায়ারিং’এ জর্জরিত করেছে খেলাটিকে। আইসিসির সভায় আমি বিষয়টি তুলবো। কিন্তু রুবেলকে উইকেট বঞ্চিত করার আম্পায়ারদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন বিসিবিবেই করতে হবে। বৃহস্পতিবারের খেলাটির পর খবর ছড়িয়ে পড়ে ভুল আম্পায়ারিং’এর বিরুদ্ধে রিভিউর আবেদন গ্রহন না করলে আইসিসির সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করবেন মোস্তফা কামাল! এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে বলেন, আমিতো পদত্যাগ করলেই খেলাটি আবার নতুন করে আয়োজনের ব্যবস্থা হবেনা! তাহলে পদত্যাগ কেন করবো। এটি গুজব।
বৃহস্পতিবারের খেলাটি দেশের কোটি মানুষের মতো অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বাংলাদেশিদেরও মন ভেঙ্গে দিয়েছে। দেশের ক্রিকেট দল বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইন্যালে যাওয়ায় সিডনি, ক্যানবেরা, ব্রিসবেন, এডিলেড সহ অস্ট্রেলিয়ার নানা শহর থেকে প্রবাসীরা মেলবোর্ন এসেছিলেন। দশ হাজারের বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি খেলাটি দেখতে এমসিজিতে এসে জড়ো হন। খেলা উপলক্ষে এমসিজিতে এদিন আলাদা করে বাংলাদেশ ফ্যান জোন করা হয়নি। জায়দি সজিব সহ একদল সংস্কৃতি কর্মী নিজেদের গাঁটের ডলারে তিনশর বেশি টিকেট কিনে নিজেদের মতো করে গড়েন একটি ফ্যান জোন। এমসিজিতে ঢোল-করতাল সহ নানান বাদ্যযন্ত্র নিয়ে ঢোকার অনুমতি ছিলোনা। আবেদন করে সেগুলোও তারা সেখানে নিয়ে যাবার ব্যবস্থা করেন। বৃহস্পতিবারের খেলার পুরো সময়টায় বাংলাদেশের লাল সবুজ পতাকা দুলিয়ে ঢোল-করতাল সহ নানান বাদ্যযন্ত্রে যারা ফ্যানজোনটি মাতিয়ে রেখেছিলেন তারা সবাই জায়েদি সজিবের বন্ধুবান্ধব। বৃহস্পতিবারের খেলা শেষে সজিব তার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এটা যেন ছিল একটা ম্যানুপুলেট গেম! ভারতকে বিশ্বকাপে রাখতেই হবে, তাই যেন আম্পায়ারদের কাজে লাগিয়ে তা করা হয়েছে। এরপরও রুবেলকে উইকেট বঞ্চিত করার আগ পর্যন্ত খেলাটি বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু ওই বিতর্কিত আম্পায়ারিং’এর পর আর বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। এই কষ্টটা ভুলতে অনেক দিন সময় লাগবে। বৃহস্পতিবারের খেলা শেষে আরও যত প্রবাসীর সঙ্গে কথা হয়েছে, তাদের প্রায় সবাই একই কথা বলেছেন। স্বপ্নের এমসিজিতে স্বপ্নের কোয়ার্টার ফাইনালটি উৎসবের বদলে এখন তাদের জীবনের ট্র্যাজেডির ঘটনার স্মৃতি হয়ে থাকবে।