শুভ জন্মদিন খোকন
শুভ জন্মদিন খোকন। আশরাফুল আলম খোকন। প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেস সচিব। ফেসবুকের নিউজ ফিড ভেসে যাচ্ছে তাঁর জন্মদিনের শুভেচ্ছায়। এতে এই প্রজন্মের আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগ করা ছেলেপুলের মধ্যে তাঁর বিপুল জনপ্রিয়তা প্রমাণ করে। দেশের মিডিয়া তথা সাংবাদিকদের সিংহভাগের সঙ্গেও তাঁর শ্রদ্ধা-ভালোবাসার সম্পর্কটি বিশেষ মজবুত। সে কারনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে নিউইয়র্ক থেকে ফিরিয়ে এনে তাঁর প্রেস টিমের অন্তর্ভূক্ত করেছিলেন। প্রতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন মেয়াদে শপথ নেবার পর খোকনের নিয়োগটিরও নবায়ন হয়। এতে মেয়াদের ঘরটিতে উল্লেখ থাকে ‘যতদিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ইচ্ছাপোষন করবেন’! এটিই তাঁর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আস্থা-নির্ভরশীলতা প্রতিফলিত।
খোকনের সঙ্গে দেখা হয়নি পনের বছরের বেশি। তাই এখনকার ভরাট চেহারার দুই বাচ্চার বাপ খোকনকে আমি চিনিনা। আমি যে খোকনকে চিনতাম সে এই ছবির মতো লিকলিকে গড়নের সৃষ্টি সুখের উল্লাসী এক যুবক। প্রায় প্রতিদিন জনকন্ঠ অফিসে আমাদের মামুনের কাছে আসতো। আমাদের সেই সময়ের জনকন্ঠ টিমের মামুন তখনও বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতা। অফিসের সবার আদরের কনিষ্ঠতম সদস্য। মামুনের বন্ধু খোকনও তখন আমাদের অনেক আদরের। আমাদের লেভেল সেভেনের রিপোর্টিং ফ্লোরের গেষ্টরূমে অথবা স্মোকিং কর্নারে আড্ডা হতো। জনকন্ঠের অফিস সহকারীরা অনেক ভালো চা বানাতো। তখন মুক্তকন্ঠে কাজ করতো খোকন। নানা ইস্যুতে কথা বলতো অনর্গল। গাজীপুরের জন্ম এলাকাটি নিয়ে বরাবর অনেক গর্ব ঝরতো তার কথাবার্তায়।
বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতেও হরিহর আত্মা ছিল মামুন-খোকন। তখনকার উপাচার্য আজাদ চৌধুরীর বিশেষ ঘনিষ্ঠ। খোকন যখন চ্যানেল আইতে যোগ দেয় তাঁর জনকন্ঠে নিয়মিত আসার সময় কমে আসে। ২১ আগষ্টের গ্রেনেড হামলায় খোকন আহত হলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়া মামুনের কাছেই খবরটি প্রথম শুনি।হলিফ্যামিলি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় খোকনকে। হাসপাতালটি জনকন্ঠ অফিসের কাছে হওয়াতে প্রায় তাকে দেখতে যেতাম। সারা শরীরের নানা জায়গায় তার ব্যান্ডেজ। ওই অবস্থায় চেনা চেহারার ভয়ডরহীন খোকন ঘটনার বর্ননা দিচ্ছিল আমাকে। সব শুনে সেখানে উপস্থিত তাঁর শাশুড়ির চোখ ছলছল করছিল। আমি তখন গ্রেনেড হামলা নিয়ে প্রতিদিন ফলোআপ রিপোর্ট করতাম। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এবং আহত খোকনের তথ্যগুলো আমার রিপোর্টে বিশেষ কাজে দিয়েছিল।
এরপর এক পর্যায়ে খোকন চলে গেলো নিউইয়র্কে। ফেসবুকে নতুন যোগাযোগ গড়ে ওঠার পর আমরা ফোনে কথা বলতাম। নিউইয়র্কে যাবার পরও চ্যানেল আই’র সঙ্গে কাজ করতে থাকে খোকন। তখন একবার বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র সজিব ওয়াজেদ জয়’র একটি বড়সড় সাক্ষাৎকার ভিত্তিক রিপোর্ট করে সে। সবুজ একটি বাগানের ভেতর দিয়ে হেঁটে হেঁটে তাদের কথোপকথনটি আমার বিশেষ পছন্দ হয়েছিল। সম্ভবত সেটিই সজিব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে দেশের মিডিয়ায় প্রথম কোন পূর্নাঙ্গ রিপোর্ট।
খোকনের সঙ্গে আমার কথাবার্তা এখন খুব কম হয়। আমি আমার জীবনসংগ্রাম নিয়ে ব্যস্ত। সেও ব্যস্ত। তবে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগটি এমন আমরা প্রায় প্রতিদিন সবাই সবাইকে দেখি। আলাদা করে কথাবার্তার দরকার পড়েনা। আমাকে প্রায় অনেকে অনুরোধ করে বলেন খোকনের সঙ্গেতো আপনার সম্পর্ক ভালো, আমার জন্যে এই অনুরোধটা একটু করেননা। সবাইকে একটাই জবাব দেই, তাহলো এমন অনুরোধ-তদবির আমি কাউকেই করিনা। কারও সঙ্গে চাওয়াপাওয়ার সম্পর্কটি নেই বলে সবার সঙ্গে আমার সম্পর্কটি ভালো। এরপর আর দ্বিতীয়বার কেউ অনুরোধ করেননা। আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকের প্রায় প্রতিদিনের কাজ হলো অমুককে অমুককে ভালোমন্দের সার্টিফিকেট দেয়া! এই বদগুণটি খোকনের মধ্যে নেই। কারন সেতো ভূইফোঁড় কেউ নয়। তৃণমূল থেকে সংগ্রাম করে আসা নিজস্ব গুণে-দক্ষতায় স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত। সে কারনে মিডিয়ার সবার সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক। এটিই প্রধানমন্ত্রীর প্রেসটিমের মূল কাজ। অনেক ভালো থাকিসরে ভাই।
Related Articles
তালপট্টি কাহিনী
সমুদ্র জয়ের ঘটনা না ঘটলে দক্ষিণ তালপট্টি কাহিনী অথবা কেলেংকারি এভাবে খোলাসা করে জানা যেতোনা! বঙ্গোপসাগরের ভারত-বাংলাদেশের বিরোধপূর্ণ এলাকায় জেগে
মরে যাব (অনুগল্প )
প্রথম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন মা সবসময় বলেন একটু স্থির হও। কিন্তু রোদেলা স্থির হওয়ার জন্য জন্মায়নি। সবসময় একটা
Saudi Arabia to celebrate Eid Al-Fitr on Tuesday before Canberra
The UAE, Kuwait, and other Gulf countries will all celebrate Eid on Tuesday The Shawwal crescent moon was visible from