রবীন্দ্রনাথ সিলওট আইলা
মনিফুরী নাচ আর মোজতবা আলীরে ফাইলা

রবীন্দ্রনাথ সিলওট আইলা<br>মনিফুরী নাচ আর মোজতবা আলীরে ফাইলা

দিলরুবা শাহানা

রবীন্দ্রনাথ সিলওট আইলা
মনিফুরী নাচ আর মোজতবা আলীরে ফাইলা*

এখবার কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সিলওট আইসলা। হি সময় সিলওট বেঙ্গলে আছিল না, আছিল আসামে। কবি আইসলা শিলং পাড়ো(পাহাড়) পাখানিত । হন পাইলা সিলওট বেড়ানির দায়োত। শিলং ও সিলওট দুইটাউ আসামের মাইজে আছিল। শিলং পাড় তাকি সিলওট যাওয়া সোজা আছিল না। এতে পয়লা কবি নিমরাজী আসলা। সিলওটী মানষের বেচাইন জুড়াজুড়িতে কবি রাজী ওইলা। রাজী অইতাও বা না কেনে কবির আছিল পাকানির খুব সখ। হুনা যায় তাইন একশ ফয়ত্রিশটা দেশ গুরছইন। রাজী না অইয়া জাইবা কই। সিলওট আইয়া হজরত শাহজালাল ইমাটিত রইউ গেলা, ইবনে বতুতাও সিলওট আইসলা, শাহজালালোর সাত দেখা করবার লাগি । রবীন্দ্রনাথও আইলা। কবিরে পাইয়া রইস কুতুব, গরীব গোর্বা, ইন্দু মুসলমান সবে খুব খুশ অইলা । দায়োত-মেমানদারী খুব দুমদামে অইলো। গান, নাচ, কবিতা উবিতা নানানতা অইলো। কবির দেখার চোখ আছিল বড় চিকণ। তাইন খালি দেখতাউ না, কিছু না কিছু খুজিয়া বার করথা পারতা।

সিলওট আইয়া তান ফাইলা মণিপুরী নাচ, আর সৈয়দ মোজতবা আলীরে। কবির সামনে মণিপুরী নাচ নাচচিল মণিপুরী তারা। দিমা তালের মণিপুরী নাচ কবির বরো বালা লাগি গেল। পরে তাইন (রবীন্দ্রনাথ) অন থাকি মণিপুরী নাচর মাস্টর লইয়া গেলা শান্তিনিকেতনে ই নাচ হিকাইবার(শিখানোর) লাগি। মোজতবা আলী ইসকুলো ফরতা তখন তাইন লেখলা চিঠি কবিরে। শুরু অইলো দুইজনর মাইজে চিঠি চালাচালি। কবির ডাখে আলী সাব শান্তিনিকেতন গিয়া পৌঁছলা। কবির কতায় মোজতবা আলী কতা কইলে তান মুখো থাকি তখনও সিলএটী কমলার গন্দ(সিলেটী ডায়লেক্ট) পাওয়া যাইতো । শান্তিনাকেতনো লেখাফরা শেষে বিদেশ গিয়া সৈয়দ মোজতবা আলী আরও লেখাফরা করলা, নানান দেশের মানষর মাতকথা হিকি লাইলা। পরে শান্তিনিকতনো মাস্টরী করতা । পন্ডিত মোজতবা আলী লেখক হইলা আর মানষে আইজ পর্যন্ত তান লেখা বই পড়িয়া বরো মজা পায়। সিলওট তাকি রবীন্দ্রনাথ খুজিয়া ফাইয়া তুলিয়া লইয়া গেলা দুই তোফা জিনিস এক মণিপুরী নাচ আর দুই সৈয়দ মোজতবা আলী।

একদা রবীন্দ্রনাথ সিলেটে এসেছিলেন
শিলং পাহাড়ে বেড়াতে এসে কবি সিলেট যাওয়ার নিমন্ত্রণ পেলেন। সিলেট ও শিলং তখন আসামের অঞ্চল। তবে শিলং থেকে সিলেট যাতায়াত করা দুরহ ছিল। তাই রবীন্দ্রনাথ প্রথমে সিলেট যাওয়া নিয়ে দ্বিধায় ছিলেন। সিলেটী মানুষের উপর্যপুরি আহ্বানে কবি শেষ পর্যন্ত রাজী হন। রাজী হবেন না কেন কবির যে ছিল বেড়ানোর দারুন সখ।
সরাসরি শিলং থেকে পাহাড় ছেচড়ে সিলেট আসা সম্ভব ছিল না। গোয়াহাটি থেকে সড়কপথে কবি সিলেট এসেছিলেন। কবিকে পেয়ে সিলেটের ধনী-গরীব, হিন্দু-মুসলমান দারুন খুশী। অনেক ধুমধাম করে কবিকে ঘিরে একের অধিক অনুষ্ঠাণ হয়েছিল।

কবির দেখার চোখ ছিল খুব সূক্ষ্ম তাই যেখানেই যেতেন কিছু না কিছু খুঁজে বের করতে পারতেন। সিলেটে এসে কবি পেলেন মণিপুরী নাচ আর সৈয়দ মোজতবা আলীকে।

কবির সম্মানে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মণিপুরী গোত্রের সদস্যরা তাদের নৃত্য প্রদর্শন করেন। ঢিমে তালের মণিপুরী নাচ কবির ভাল লাগে। ভাল লাগাই শেষ নয় কবি পরবর্তী সময়ে সিলেটের মৌলভীবাজার এলাকা থেকে একজন মণিপুরী নৃত্য শিক্ষককে শান্তিনিকেতনে নিয়ে যান এই নাচ শেখানোর জন্য। সিলেটের মণিপুরী নাচকে আসামের বাইরে পরিচিত করান কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

একশ’ বছর আগে(১৯২১এ) কবি যখন সিলেট এসেছিলেন সৈয়দ মোজতবা আলী তখন স্কুলে পড়ে। কবিকে সেই ছোট্ট বালক চিঠি লিখেছিলেন। সেই থেকে শুরু হল দু’জনের মাঝে চিঠি লেখালেখি। পরবর্তী সময়ে মোজতবা আলী শান্তিনিকেতনে পড়াশুনা করতে হাজির হলেন। কবি তখন বলেছিলেন সৈয়দ মোজতবা আলী মুখ খুললে অর্থাৎ কথা বললে তা থেকে তখনো সিলেটী কমলালেবুর গন্ধ ছড়ায়। মোজতবা আলীর কথায় সিলেটী উচ্চারণের আভাস পাওয়া যেতো। পরে সৈয়দ মোজতবা আলী বিদেশে বিদ্যা অর্জন করেন, বহু ভাষাবিদ হোন এবং সাহিত্যিক হিসেবে আজও তিনি জনপ্রিয়। মণিপুরী নাচ আর সৈয়দ মোজতবা আলী দুই সম্পদই রবীন্দ্রনাথের আবিষ্কার।
রবীন্দ্রনাথ ছাই উড়িয়ে সোনা খুঁজে পেয়ে যেতেন!

একদা বাংলা একাডেমীর বই মেলাতে আঞ্চলিক ভাষার অভিধান লেখা বোর্ডটি দেখে আকর্যণ অনুভূত হয় তখনই ছবি তোলা হয়েছিল। অভিধান হাতে আসেনি তবে আঞ্চলিক ভাষায় লেখার ইচ্ছাটা মনে গেঁথে গিয়েছিল ।

Rabindranath came to Sylhet
Once poet Rabindranath Tegore came to Sylhet. That time Sylhet was part of Assam not Bengal. He received invitation to visit Sylhet while he was in Shilong, which is not far from Sylhet as it is also in Assam. At the beginning poet was not keen to visit the place as the journey from Shilong to Sylhet is not easy. But people of Sylhet was not give up the idea to have nobel lauriet as their guest. Sylhet is a interesting place as it attracts people like mystic figure Hazrat Shahjalal, renowned travelar Ibn Batuta. Rabindranath loves traveling too. It is said that the poet visited 35countries of the world. Ultimately his wonderlust won and he came to Sylhet. People of Sylhet irrespective of their rich(wealth), and religion was delighted to see the poet. Sylheti people organised more than one gorgeus reception on poet’s honour.
Rabindranath always find interesting things to collect from the places he visited. He has the ability to find invaluable gems in ashes even. As he wrote ‘Jekhane dekhibe chhai uraiya dekho tai peleo paite paro omulya roton’(যেখানে দেখিবে ছাই, উড়াইয়া দেখ তাই পেলেও পাইতে পার অমূল্য রতন) .

His visit to Sylhet took place hundred years back on 1921. People still enjoy the things poet found and collected from Sylhet. The Monipuri dance and the author Sayed Mojtoba Ali are invention of poet. Till today these two keep entertaining people from different places and strata. Monipuri dance is a slow motion dance of tribal people of hilly area of the Sylhet. Monipuri dance performance was presented in front of him during his Visit to Sylhet, he fall in love of this artistic venture. A already mentioned that Monipuri is a traditional tribal dance of Monipuri tribe of Sylhet.

During Rabindranath’s visit in Sylhet Syed Mojtaba Ali was a school going boy. That boy wrote a letter to poet. Exchange of letter starts between them which bring them close to each other. Mojtoba Ali ends up in Shantiniketon and he further studied in foreign university. Learns languages, becomes multilingual and taught in Shantiniketon. In course of time poet’s collection from Sylhet Sayed Mojtoba Ali becomes an renowned author. People love to read his books till today.

To teach Monipuri dance at Shantiniketon poet employ a dance teacher from Moulovi Bazar and since then in different occasions Monipuri dance often becomes part of cultural presentation not only in Sylhet but greater part of this region.

*আমার আঞ্চলিক ভাষায় লিখিত ছোট্ট কাহিনীটি অমর মিত্র ও গীতাঞ্জলি শ্রীকে উৎসর্গিত।
যারা নিজ মাতৃভাষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ । এ বছর মে মাসে ভারতের বাংলাভাষী লেখক অমর মিত্র ৪৫বৎসর আগে নিজের মাতৃভাষা বাংলায় লিখিত ‘গাঁও বুড়ো’ গল্পের জ্ন্য ও’হেনরী পুরস্কার পেয়েছেন, এই প্রথম ইংরেজী ছাড়া অন্য কোন ভাষায় লিখিত পরে ইংরেজীতে অনুদিত গল্পকে ও’হেনরী পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।

ভারতের হিন্দি ভাষায় লিখিত ‘রেত সমাধি’উপন্যাসের জন্য লেখক গীতাঞ্জলি শ্রী বুকার প্রাইজ২০২২ অর্জন করেছেন।


Place your ads here!

Related Articles

Gungahlin মসজ়িদ ও প্রাসঙ্গিক কিছু ভাবনা

বাংলাদেশ প্রসঙ্গ প্রিয় পাঠক আপনারা সবাই হয়তো জানেন Gungahlin মসজিদ কমিটির সাম্প্রতিক নিবাচন নিয়ে বাঙ্গালী কমিউনিটির মধ্যে নানা মেরুকরন হচ্ছে।

মুশফিকের ইনজুরি গুরুতর নয়

ফজলুল বারী, নেলসন থেকে বাংলাদেশ দলের জন্য একটি সুসংবাদ। মুশফিকের ইনজুরি গুরুতর নয়। তার বাম পায়ের হ্যামস্ট্রিং ইনজুরির ধরনটিকে স্থানীয়

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment