ফ্লয়েডের শেষ সাড়ে নয় মিনিট

ফ্লয়েডের শেষ সাড়ে নয় মিনিট

দিলরুবা শাহানা: জর্জ ফ্লয়েড আমেরিকার মিনেসোটা অঙ্গরাজ্য মিনিয়াপোলিসের একজন মানুষ। করোনার কারনে লক্ষ লক্ষ মানুষ আমেরিকাতে যখন বেকার ফ্লয়েডও বাউন্সারের চাকরীটা হারালো। সময়টা ২০২০এর মে মাসের এক সকাল। সিগারেট কিনতে পরিচিত দোকানে গিয়েছিল। ওইদিন মালিক ছিল না দোকানে। কমবয়সী কর্মি ফ্লয়েডের দেওয়া বিশ ডলার হাতে পেয়ে তা নকল বলে দাবী করলো। ফ্লয়েড কথাটা পাত্তা দিল না। ওই দোকান কর্মি তখন পুলিশে ফোন করে নকল ডলারের বিষয়টি অবিহিত করে। তিনজন পুলিশ তৎক্ষণাত চলে আসে। গাড়ির পার্কিংএ পুলিশের সাথে ফ্লয়েডের তেমন কোন মারাত্মক ধ্বস্তাধ্বস্তি হয়নি তারপরও পুলিশ অফিসার হাতকড়া পরায় ফ্লয়েডকে। ডেরেক চোবিন নামে অন্য অফিসার হাতকড়া বাঁধা ফ্লয়েডকে উপুর করে মাটিতে ফেলে এক হাঁটু দিয়ে তার ঘাড় চেপে ধরে। সাড়ে নয় মিনিট ধরে হাঁটুর চাপের নীচে থেকে বিশবার ফ্লয়েড কাতর আর্তি জানাচ্ছিল যে সে শ্বাস নিতে পারছে না তবুও চোবিন না মরা পর্যন্ত তার হাঁটুর চাপ থেকে ফ্লয়েডকে মুক্তি দেয় নি। বিশ্ব জুড়ে এই নৃশংসতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ ফেটে পড়ে। ব্ল্যাক লাইভ ম্যাটারস(BLACK LIVE MATTERS) গর্জনে মানুষ ফুঁসে উঠে। করোনার কোয়ারেন্টাইন আইন তুচ্ছ করে দলে দলে মানুষ রাস্তায় নামে। মেলবোর্নে ক্ষুব্ধ প্রতিবাদী মানুষের সাথে পুলিশের দাঙ্গাহাঙ্গামা হয়।

অন্যদিকে মিনায়াপোলিসের পুলিশরাও দল বেঁধে এক হাঁটু গেড়ে বসে ফ্লয়েডকে স্মরণ করে, বিভিন্ন দেশে, নানা জায়গায় এক হাঁটু গেড়ে বসে জর্জ ফ্লয়েডকে স্মরণ করা হয়। ঢাকার মিরপুর স্টেডিয়ামে সাকিব আল হাসানরা ক্রিকেট খেলা শুরুর আগেও তাই করেন। জাপানী টেনিস খেলোয়ার নাওমী ওসাকা গ্রান্ডস্লাম খেলতে নামে ব্ল্যাক লাইভ ম্যাটারস লিখিত ক্যাপ মাথায় দিয়ে।

আদালত ফ্লয়েডের শেষ সাড়ে নয় মিনিট বিবেচনায় নিয়ে পুলিশ ডেরেক চোবিনকে ২০২১ সালের জুনে ২২বছরের জেল দেয়।

ফ্লয়েডের শেষ নিঃশ্বাস
ক্ষমতা যার, যা ইচ্ছে তাই তারা করে
পরোয়া করে না কিছুর, ধারও ধারে না কারোর;
মানুষকে নাকি মানবিকতা পিষে পিষে মারে?
তাইতো সহজে অসহায়কে উপুর করে,
হাঁটু চেপে তার ঘাড়ে
বুকের খাঁচা শূণ্য করে
শেষ নিঃশ্বাস আনে বের করে
কত সহজে খেলার ছলে!
সে নিঃশ্বাস ছড়িয়ে গেল
মহাদেশ থেকে মহাদেশে।
সে নিঃশ্বাসের হাহাকার শুনে
‘করোনা’র ভয় তুচ্ছ করে
দলে দলে মানুষ নেমে আসে পথে
আমিও ছিলাম তাদের সাথে
তাহাদের সাথে
পৃথিবীর সব গলি
সব সব রাস্তাতে;
আছি আমেরিকা, আছি লন্ডনে
আছি অকল্যান্ডে, আছি মেলবোর্নে,
মানুষের মান, মানুষের প্রাণ
লুণ্ঠিত পথে পথে
সে বারতা আজ হবে পৌঁছাতে
সবে মিলে একসাথে!


Place your ads here!

Related Articles

উনিশ শতকে বাংলায় নারী পুরুষ সম্পর্ক

উনিশ শতকে বাংলায় নারী পুরুষ সম্পর্ক , বিলকিস রহমান রচিত প্রথম গ্রন্থ, তাঁর গবেষণার আলোকে লেখা। পড়ে শেষ করলাম বইটি,

Sunil’s passing; the legend will live on

These are sad days for Bangla literature, barely two months after the death of Humayun Ahmed we have to now

এরশাদের জাতীয় পার্টি – নাচে গানে ভরপুর এক সম্পূর্ন রঙ্গিন দল

ফজলুল বারী: চলমান নানা ইস্যুর ব্যস্ততা অনেক দিন জাতীয় পার্টিকে নিয়ে লেখার সময় করতে পারিনা। দেশে থাকতে আমার যে সব

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment