প্রবাসী বাঙালিদের মানসিক স্বাস্থ্য ! ভেবে দেখেছেন কি ?
আজকাল, সোশ্যাল মিডিয়াতে, বিশেষ করে ফেসবুকে এবং প্রধানত কম বয়সীদের মাঝে “দুঃখবিলাস” নামে একধরনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
এসব ক্ষেত্রে, কেউ মানসিকভাবে কষ্টে থাকলে, বা দীর্ঘদিন যাবৎ কোনো বিষয়ে মানসিকভাবে যন্ত্রণার শিকার হলে সেই যন্ত্রণাগুলোর ব্যাপারে লেখালেখি করতে থাকেন, অপরিচিত মানুষকে ইনবক্সে দুঃখের কথা জানান, নতুন বন্ধুকে নিজের দুঃখের ইতিহাস জানিয়ে কিছুটা হালকা বোধ করেন।
দুঃখ তাতে কমেনা, কমছে না। কমবেও না। কেন কমবে না?
দেখুন, আপনার শরীর খারাপ হলে, অসুখ-বিসুখ হলে আপনি কী করেন ?
আর যাই করেন, নিশ্চয়ই কোনো ফেসবুক বন্ধুর কাছে সমাধান চান না, তাই না ? নিশ্চয়ই আপনি ডাক্তারের কাছে যান, ওষুধ খান। এক পর্যায়ে ঠিক হয়ে যায় আপনার শরীর।
তাহলে, প্রশ্নটা হচ্ছেঃ
মনের সমস্যা হলে ফেসবুক বন্ধুর ইনবক্সে নক করার মানেটা কী ? ভেবে দেখেছেন বিষয়টা কখনো ?
আমরা একটা অদ্ভুত পৃথিবীতে বাস করি।
এখানে কারো হাত বা পা ভেঙ্গে গেলে সেটার কেয়ার নেয়ার জন্য বহু মানুষ দৌড়িয়ে আসবে। কিন্তু কারও মন ভেঙ্গে গেলে সেটার কেয়ার নেয়ার জন্য কেউ আসবে না। সবাই সেটাকে ইগনোর করে যাবে।
আপনার দুঃখের আলাপ শোনার মতো সময়, প্রকৃতপক্ষে কারোই নেই। মেডিক্যাল সায়েন্সে বেশ কিছু আচরণকে মানসিক সমস্যা হিসাবে প্রোপারলি আইডেন্টিফাই করা হয়েছে, এবং এগুলোর চিকিৎসার জন্য সাইকোলজিস্ট এবং সাইকাট্রিস্টেরা আছেন।
যেহেতু দেশে থাকতে আপনি শুনেছিলেন যে, মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ মানেই পাগলের ডাক্তার, এবং তাদের কাছে গেলেই তারা আপনাকে হয় ঘুমের ওষুধ দেবে, অথবা পাগলাগারদে নিয়ে আটকে রাখবে, সেজন্য মুখ ফুটে বলতেও পারছেন না এই ব্যাপারে কাউকে।
হয়তো পাশে মানসিক শক্তি দেয়ার মতো কিছু বন্ধু-বান্ধব পাবেন। তবে সেটা কোনো সলিউশন না। শুধু মোটিভেশনাল কথাবার্তা দিয়ে, স্বান্তনা দিয়ে বা আনন্দ-উল্লাস করে, নতুন জায়গায় ঘুরতে গিয়ে মনের ক্রিটিক্যাল সমস্যা ঠিক করা অসম্ভবের কাছাকাছি একটা কাজ।
এইভাবে যখন আপনি দিনের পর দিন – আপনার যেখানে এক্সপার্ট হেল্প নেয়ার কথা, সেটা না নিয়ে অন্যান্য অল্টারনেটিভ কাজ করার মাধ্যমে মনকে ইগনোর করতে থাকবেন, তখনই মনের মধ্যে স্থায়ীভাবে রোগ বাসা বাঁধা শুরু করবে।
প্রতি তিরিশ সেকেন্ডে এই পৃথিবীতে একজন করে মানুষ মানসিক রোগের শিকার হয়ে মারা যাচ্ছে। নিজেরাই নিজেকে মারছে তারা, সুইসাইড করছে। বহু বিখ্যাত মানুষ সুইসাইড করেছেন। এই অনলাইন দুনিয়ায় মাঝেমাঝেই নিশ্চয়ই আপনার পরিচিত কারো না কারো সুইসাইডের খবর পান, অথবা কারো আচরণ দেখে মনে হয় মানুষটা খুব বদলে গেছে, বা আগের মতো নেই। অনেক মানুষ, সেই অর্থে বেঁচে আছেন ঠিকই, কিন্তু শরীরের ভেতরে প্রাণটা নেই, সেটা কোথায় যেন হারিয়ে গেছে।
দেশ ছেড়ে আমরা যারা পাড়ি জমিয়েছি প্রবাসে, অন্যান্য চ্যালেঞ্জের সাথে আমাদেরকে প্রতিনিয়ত মোকাবেলা করতে হয় এই মানসিক চ্যালেঞ্জটার।
বিপদ একেবারে দরজায় দাঁড়িয়ে আছে। এর আগেই আমাদের সমাধানটা খুঁজে বের করতে হবে। প্রবাস জীবনের মানসিক সমস্যার চিত্রটা কেমন, সেটা একটু বুঝতে হবে আগে আমাদেরকে।
Related Articles
নতুন রিয়েল ষ্টেট মাই রিয়েলিটি অনাড়ম্বরের মাধ্যমে উদ্বোধন
আতিকুর রহমান ॥ অত্যন্ত জাকজমক ও অনাড়ম্বরের মধ্যে দিয়ে উদ্বোধন করা হল সিডনীর সাউথ ওয়েষ্ট ক্যাম্বলটাউন এলাকার ইঈেলবার্নে নতুন রিয়েল
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের পতাকা যে নায়িকা প্রথম উড়িয়েছিলেন তিনি ববিতা
যে কোন ছুঁতোয় একটা সিনেমা দেখা ফেলার ফন্ধি আমার অভ্যাসে দাঁড়িয়েছে। সুযোগ পেলেই ধুমাইয়া সিনেমা দেখি। তা ও বাংলা সিনেমা।