জীবন যেমন
সপ্তাহান্তে আর একটু ঘুমানো যেতেই পারতো,মন আর একটু আয়েশি অলসতা চায় কিন্তু শরীর নামক যন্ত্র সময়ের সাথে সেট করা সাথে অভ্যাসের বেড়াজাল, তার কাছে সবদিনই সকাল সেখানে কর্মহীন দিবস বলে কিছু নেই। ছুটে চলা,গতি নিয়ে থাকাই যার কাজ,থেমে গেলেই খেলা শেষ! এই পুরো গতিময় শরীরের জীবন নামক নদীর কতো যে বাঁক, কতো যে স্রোত। সময়ের থরে থরে সাজানো সম্পর্ক আর পিছনে ফেলে আসা কথকতা।

জীবনচক্র থেকে শুরু শৈশব, কৈশোর, তারুণ্য, যুবা,বৃদ্ধকাল আর এই নানান বাঁকে হরেক রকম মানুষ, হরেক রকম সম্পর্ক! প্রকৃতি অনুযায়ী কোনটাই চিরস্থায়ী হবার কথা না কিন্তু কিছু সম্পর্ক একদম ধরে বেঁধে আমৃত্যু চিরস্থায়ী করতে মা বাবা,ভাই বোন, সন্তান, স্বামী স্ত্রী নামকরণ এর বাইরে আত্মীয়, স্বজন, বন্ধু, প্রতিবেশি,সহকর্মী কতো যে বিশেষনে বিশেষিত। মূলতঃ সবই সাময়িক! জন্মগতভাবে ধারাবাহিক কিছু সম্পর্ক আত্মিক করার চেস্টা আর তার সাথে জীবনের থরে থরে নানান জনের আনাগোনা।

শৈশবে যার সাথে চরণ মিলিয়ে হাঁটা শেখা কৈশোরে সেই সাথী নেই, থাকলেও আগের মতো নেই। কৈশোরে যার সাথে জগতের তুচ্ছতম রহস্য আবিষ্কার ছিলো মহাকাশ জয়ের মতো, তারুণ্যে তারা ছিটকে যাওয়া এক একটা নক্ষত্রের মতো,তারুণ্যের আবীরে রাঙানোর বসন্তবেলা যাকে ছাড়া জীবনবৃথা মনে হবে যৌবনে তাই চরম বালখিল্যতা হিসেবে ধরা দিবে,ততদিনে জীবনের সব রঙের দেখা মিলে যাবে,দাবার বোর্ডের লড়াকু সৈনিকের। হয় তালে তাল মিলিয়ে খেলবে না হলে বাইরে দাঁড়িয়ে দেখবে। এর মাঝেই জীবন কড়া নাড়তে থাকবে আর সব রঙ ফিকে লাগতে শুরু করবে, দর্শক হয়ে খেলা দেখে কাটবে সময়,গতি শেষ খেলা শেষ!

সম্পর্কের এই আসা যাওয়া সময়ের সাথে সাথেই এই নিগুড় সত্য বুঝে উঠতে উঠতেই জীবনকে চড়া মূল্য দিতে হয়। এতে লাভ কেমন হলো সেটা ও বোঝার অবস্থা নেই। অদ্ভুত রকম বিষয় আনন্দ কিনবা দুঃখের ঘটনাগুলো মুদ্রার এ পিঠ আর ওপিঠ। আজ এবেলা বসে দুঃখের ঘটনা মনে করে পুলকিত হই এই ভেবে যে ওটা জীবনের জন্য শিক্ষা আর আনন্দের সময়গুলো মনে পড়ে বিষাদভর করে কেন নেই, কেন ফিরিয়ে আনা যায় না ভেবে! আজকের আনন্দ কালকের বিষাদ, আজকের দুঃখ কষ্ট কালক্রমে সুখের অভিজ্ঞতা হয়ে যায়! কেন ওই সব মানুষেরা এবেলা নেই একদিন যাদের সাথে হাসি আনন্দ ভাগাভাগি হতো, কেন যাকে আত্মার কাছের জন মনে হতো এবেলা আর সে নেই, বন্ধু হয়ে যার চিরকাল পাশে থাকার কথা সে কেন অচেনা মুখ এসব নিয়ে ভেবে ভেবে আবিষ্কার করে ফেলা সময়ের চেয়ে বড় সম্পর্ক আসলে কারো সাথে হয় না।

নানা ঘাত প্রতিঘাত জানিয়ে দিবে নিজের চাইতে বেশি মানুষ আসলে কাউকে ভালোবাসে না,নিজের অনুভূতির চাইতে মূল্যবান মানুষের আর কিছু নেই। আর সম্পর্ক আর আবেগের মাখামাখি মিশিয়ে যে মিথস্ক্রিয়া তৈরি হয় সেটা যে চিরস্থায়ী কিছু না এটা বুঝে যাবার পর সম্পর্ক থেকে আসা বিশ্বাস, অবিশ্বাস, ভালোলাগা, লোভ, ঘৃণা,হিংসা, হতাশা, রাগ সবকিছুই সাময়িক মনে হবে, কোন সম্পর্ক আর আবেগের জায়গায় নতুন করে কড়া নাড়তে দিবে না কিন্তু এ পর্যায়ে আসতে জীবন চড়া মূল্য দিয়ে ফেলে তাই কোন সম্পর্কের রঙ আর রঙিন প্রচ্ছদে আসে না সব সাদা কালোতে ঢাকা পড়ে যায়। কেউ হয়তো ভাবছে যাহ্ দাবার এ চাল আমার ঘরে যাবে ওদিকে আসলে খেলোয়াড় নেই যিনি আছেন তিনি আসলে দর্শক!

এসব জীবন ভাবনাও আসলে সাময়িক, কাজ কর্ম না থাকলে এসব ভেবে ভেবে কিছু সময় পার করে দেওয়া যায়!
Related Articles
রোহিঙ্গা ইস্যুর সমাধান কে করবে? – দুই পর্বের শেষ পর্ব
গত ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখে জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল এন্টোনিও গুটারেস এক প্রেস কনফারেন্সে মিয়ানমার কে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব প্রদান কিংবা কমপক্ষে
Trans-boundary Rivers with India Bangladesh
Bangladesh has 57 trans-boundary rivers, of which 54 are with India and 3 are Myanmar. The water dispute with India
Bangladesh High Commission Observing International Mother Language Day to Conserve Mother Languages
In an informal meeting with the Mother Languages Conservation (MLC) Movement members in the Bangladesh House, Canberra on 19 January


