যে সব কারনে ক্ষমতায় থাকছে আওয়ামী লীগ
ফজলুল বারী: নির্বাচন নিয়ে দেশজুড়ে যে পরিস্থিতি তাতে এখনই বলে দেয়া যায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনেও ক্ষমতায় থাকছে। কেনো এখনই এতোটা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বিষয়টি বলছি তা এ লেখায় ব্যাখ্যা করবো। দেশজুড়ে নিজস্ব দলীয় জনসমর্থনের পাশাপাশি ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করার ফসল ঘরে তুলছে আওয়ামী লীগ। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ন হলো আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি ছিলো তুলনামূলক ভালো এবং সংগঠিত। মনোনয়নও তুলনামূলক ভালো হয়েছে। মাশরাফি বিন মোর্তজা, শেখ তন্ময় বা নায়কের ফারুকের মতো একজনও কী বিএনপি জামায়াত জোটের আছে? যারা মাঠে নামলে পিছনে পিছনে জনতার ঢল নামে? বাংলাদেশের তারকা ব্যক্তিরা আওয়ামী লীগের পক্ষ নিয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধা-শহীদ পরিবারের সদস্যরাও মাঠে আওয়ামী লীগের পক্ষে। দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীরা সম্মেলন করে বলেছে তারা ক্ষমতার ধারবাহিকতা চান। পেশাজীবী সংগঠনগুলো আওয়ামী লীগের পক্ষে যেভাবে অবস্থান নিয়েছে তা বিএনপি-জামায়াত জোটের পক্ষে দেখা যায়নি।
উল্টো শুরুতেই বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে মনোনয়ন বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির বিপুল ভরাডুবির অন্যতম কারন ছিল যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সখ্য। এই নির্বাচনেও দলটি এ বিষয়টির মূল্যায়ন করেনি। উল্টো নিবন্ধনহীন দল যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াতের পঁচিশজন প্রার্থীকে প্রতারনামূলক বিএনপি পরিচয়ে ধানের শীষে প্রার্থী করেছে। এ বিষয়টি দেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বিপুল জনগোষ্ঠী বিএনপি জোটের ওপর ক্ষুদ্ধ হয়েছে। নতুন তরুন ভোটারদের ভোটেও বিষয়টি ফ্যাক্টর হিসাবে কাজ করবে। এটি ২০০৮ সালের নির্বাচনেও ফ্যাক্টর হিসাবে করেছে। কারন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক ঘটনা হলো বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ। প্রতারনামূলক এ মনোনয়ন নিয়ে হাইকোর্ট সর্বশেষ যে রুল জারী করেছে তাতে আমার ধারনা জামায়াতের এই প্রার্থীদের কেউ কেউ নির্বাচনে জিতে গেলেও আইনানুগ অবৈধ হিসাবে ভবিষ্যতে তাদের নির্বাচন বাতিল হবে।
দলীয় সরকারের অধীনে এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে যে সব অভিযোগ উঠেছে তা দেশটায় নতুন নয়। এবারে কিছু অভিযোগ ছিল একেবারেই নতুন। এর কারন কিছু কিছু ক্ষেত্রে অতিউৎসাহ এবং প্রতিপক্ষের দূর্বলতা। বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন দল কখনো নির্বাচনে হারতে চায় না। কারন নির্বাচনে হারলে শুরু হয় বিজয়ী দল আক্রোশের আশ্রয় নেয়। পূর্ববর্তী দলের উন্নয়ন কর্মকান্ডও হয় কাটছাট নয়তো বাতিল করে দেয়। ২০০১-২০০৬ মেয়াদের বিএনপিও নির্বাচনে হারতে চায়নি বলে নানান উদ্যোগ নিয়েছিল। দলীয় রাষ্ট্রপতি ইয়াজ উদ্দিনের অধীনে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা হয়। যে ইয়াজ উদ্দিন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টাদের বৈঠকে বসিয়ে রেখে বিএনপির অবস্থান-সিদ্ধান্ত জানতে উঠে যেতেন। বিচারপতি আজিজের নেতৃত্বে তারা একটি আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনও গঠন করেছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের কারনে বিএনপি তখন কামিয়াব হতে পারেনি। এরপর আসে ১/১১’র তত্ত্বাবধায়ক সরকার। যা বিএনপি জামায়াত জোটকে ক্ষমতার নিয়ন্ত্রন থেকে ছিটকে দেয়। ২০০৮ সালের নির্বাচনে দলটির চূড়ান্ত ভরাডুবি হয়। বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে যত নির্বাচন হয়েছে সেগুলোকেও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে বিজিত দল। কোনদিন বিজিত দল বিজয়ী দলে অভিনন্দন জানায়নি। কাজেই বাংলাদেশের বিশুদ্ধ নির্বাচনের সর্বজন স্বীকৃত কোন নজির নেই।
২০০১ সালের ক্ষমতাচ্যুতির অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে ২০০৮ সালে ক্ষমতায় ফিরে ক্ষমতার পরিকাঠামো সাজান শেখ হাসিনা। এরকারনে কারাগারে থাকতেও তিনি এ বিষয়ে নিজস্ব কিছু হোমওয়ার্কের কাজ এগিয়ে রাখেন। সে কারনে ২০০৮ সালে ক্ষমতায় এসে মন্ত্রিসভার বাইরে গঠন করা হয় বিশেষ একটা উপদেষ্টা কমিটি। যা বাংলাদেশের ক্ষমতার কাঠামোতেই একেবারেই নতুন। ক্ষমতায় এসেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম শুরু করে আওয়ামী লীগ। শেখ হাসিনার ছেলে ও তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয়’র নেতৃত্বে শুরু হয় ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার কাজ। পদ্মা সেতু সহ বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন। যা এখন দেশজুড়ে দৃশ্যমান। রাজনৈতিক স্থিতির কারনে দেশের মানুষের জীবনমানেরও অবিস্মরনীয় উন্নয়ন ঘটেছে। বয়স্ক ভাতা, বিধবাভাতা, নারী শিক্ষার প্রনোদনা ভাতা সহ কল্যান রাষ্ট্রের ধারনার এমন কিছু আর্থিক সেবা কর্মসূচি চালু করা হয়েছে যা বাংলাদেশে আগে এভাবে ছিলোনা। উন্নয়ন কর্মসূচির বাইরে দুর্নীতি ছিল বড় একটি উদ্বেগের বিষয়। কিন্তু মানুষ কনভিন্স ছিল শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের সদস্যরা দুর্নীতির উর্ধে। বর্তমান বিশ্বে মিডিয়া এতোটাই শক্তিশালী যে দেশে-বিদেশে কারো দুর্নীতি গোপন করে রাখা সম্ভব না। আর এবারে নির্বাচনী ইশতেহারে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
পাশাপাশি গত দশ-বারো বছর ধরে বিএনপির বড় একটি সমস্যা ছিল খালেদা জিয়া ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দূর্নীতির অভিযোগ। খালেদা জিয়া এবং তার ছেলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে এতিমখানা দুর্নীতি মামলা, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলা এসব ১/১১’র তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দায়েরকৃত। এ মামলা দুটির প্রমানপত্রাদি এতোটাই শক্তিশালী ছিল যে বিএনপির শক্তিশালী আইনজীবী প্যানেল শুরু থেকেই মামলা দুটির বিচার বিলম্বিত করার কৌশল নেয়। তাদের আশা ছিল এরমাঝে সরকার পরিবর্তন হয়ে যাবে। সে আশায় ঢাকায় হেফাজতের কর্মসূচিকে সামনে রেখে শেখ হাসিনার সংলাপের প্রস্তাবেও তখন খালেদা জিয়া সাড়া দেননি। কিন্তু ২০০৪ সালে বিএনপির নির্বাচন বর্জন, নির্বাচন প্রতিহতকরনের ধংসাত্মক কর্মসূচি সামাল দিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় টিকে গেলে বিএনপি আরও কোনঠাসা হয়। যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতের শীর্ষ নেতা এবং বিএনপির অন্যতম শীর্ষ নেতা সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসি কার্যকর হয়েছে, যা বাংলাদেশে কিছুকাল আগেও ছিল অনেকটা অবিশ্বাস্য স্বপ্ন দেখার বিষয়। এতিমখানা ও জিয়া চ্যারিটি দুর্নীতি মামলার সাজা নিয়ে খালেদা জিয়া এখন কারাগারে আছেন। নির্বাচনে প্রার্থীতা বাতিল হওয়ায় তিনি এই প্রথম নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেননা। এসব মামলা এবং গ্রেনেড হামলা মামলার দন্ডিত সাজা নিয়ে আইনত লন্ডনে পলাতক দলের দ্বিতীয় প্রধান নেতা তারেক রহমানও নির্বাচনের বাইরে। তাই নানাক্ষেত্রে পিছিয়ে থেকে বিএনপি এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এসেছে। নির্বাচনের দৌড় শুরু করতে পেরেছেও দেরিতে। একটি রাজনৈতিক পরাজয় সহ এ নির্বাচনে যাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে দলটি ২০০৪ সালের নির্বাচন বর্জন করে। নির্বাচন প্রতিহত করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়। এবারেও ঘোষনা ছিলো শেখ হাসিনার অধীনে কোন নির্বাচনে যাবেনা, শেখ হাসিনার অধীনে কোন নির্বাচন হতে দেবেনা। কিন্তু এসব ছাড়াই তারা নির্বাচনে গেছে। এ ছাড়া তাদের হাতে কোন বিকল্পও ছিলোনা।
এবারের নির্বাচনকে সামনে ডক্টর কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পর এটিকে ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে বড় একটি ধাক্কা মনে করা হচ্ছিল। কারন এ জোটে ডক্টর কামাল ছাড়াও আ স ম আব্দুর রব, কাদের সিদ্দিকী, মাহমুদুর রহমান মান্না’র মতো পরিচিত রাজনৈতিক মুখ আছেন। দল ছোট হলেও দেশের রাজনীতিতে তাদের একটি পরিচয় আছে। সাবেক আওয়ামী লীগার অধ্যাপক আবু সাইয়ীদ, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ, সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এস এম কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়া এখানে যোগ দিয়ে ধানের শীষে প্রার্থী হন। ঋণখেলাপী হবার কারনে কাদের সিদ্দিকী নির্বাচন করতে না পারলেও তার আসনে ধানের শীষে নির্বাচন করছেন তার মেয়ে। বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী জাফরুল্লাহ চৌধুরী এই জোট গঠনের নেপথ্যে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করেন। কিন্তু উদ্যোগটি এসেছে বেশ দেরিতে। আর এই জোট উদ্যোক্তাদের প্রথম ভুল যেটি এরমাঝে চিহ্নিত হয়েছে তাহলো প্রাচীন দল আওয়ামী লীগের নিজস্ব ভোটব্যাংককে এরা গোনায়ই ধরেননি। জোটের নেতা মাহমুদুর রহমান মান্নাগং হুংকার ছুঁড়ে বলেছিলেন তফসিল ঘোষনার পর আর আওয়ামী লীগ খুঁজে পাওয়া যাবেনা, অমুক দিন থেকে প্রশাসন আর সরকারের কথা শুনবেনা ইত্যাদি। কিন্তু এসব তর্জন গর্জন এরমাঝে অন্তঃসারশূন্য প্রমান হয়েছে।
সবশেষ গর্জন ছিল সেনাবাহিনী নামলে সব ওলটপালট হয়ে যাবে। সেনা মোতায়েনকে সামনে রেখে ডক্টর কামাল হোসেন এবং মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অবিশ্বাস্য দুটি বিবৃতি দেন। কিন্তু অভিজ্ঞ নেতারা যেটি ভুলে গেছেন তাহলো এর সবকিছু প্রতিষ্ঠিত সরকার কাঠামোর ভেতরে থেকেই কাজ করে। ২০০১ সালের নির্বাচনের অভিজ্ঞতার কথা বলি। ভোটের দিন আমার এসাইনমেন্ট ছিল মুন্সিগঞ্জ শহরে। সকাল থেকে সেখানে দেখি সেনাবাহিনীর সদস্যরা চারদিকে শুধু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দাবড়ানোর জন্যে খুঁজে বেড়াচ্ছেন! কারন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলেও সেই নির্বাচনের আগেই সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছিল আওয়ামী লীগকে আর ক্ষমতায় আসতে দেয়া হবেনা। ক্ষমতায় আনতে হবে বিএনপিকে। এবার নির্বাচনকে নিয়ে আওয়ামী লীগ যে এভাবে আটঘাট বেঁধে সংঘবদ্ধ, এটি তাদের ২০০১ সালের ক্ষমতা হারানোর অভিজ্ঞতা। কে হায় হৃদয় খুঁড়ে ক্ষমতা হারাতে ভালোবাসে!
এবার আওয়ামী লীগের আরও সুবিধার জায়গাটি হলো নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়ে তাদের গবেষনা, অনলাইন এক্টিভিটিজ সহ নানাকিছুর ধারেকাছেও নেই বিএনপি জোট। এদের গবেষনাগারটি এখন মূলত লন্ডনে। সেটি জামায়াতের লোকজন নিয়ন্ত্রিত। তাদের পরীক্ষা নিরীক্ষা দেশে পৌঁছতে পারছেনা অথবা দেশে পৌঁছলেও আওয়ামী লীগের সংঘবদ্ধ কার্যক্রমের কাছে মার খাচ্ছে। ঐক্যফ্রন্টের কোথাও জামায়াত-তারেক এসব থাকবেনা এ নিয়ে ডক্টর কামালের প্রথম প্রতিশ্রুতিটি মার খাওয়াতে রাজনৈতিকভাবে এরা ছত্রখান। ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের নানা হয়রানি যেটি হয়েছে সেটি আমার কাছে যতোটা না রাজনৈতিক, এর চাইতে প্রশাসনিক। বিএনপি-ঐক্যফ্রন্টের নেতারা এই করবো সেই করবো বলে এতো হুমকি দিয়েছেন যে প্রশাসনের লোকজনও হয়তো মনে করেছে ক্ষমতার পরিবর্তন ঘটলে তাদের খবর আছে। পরিস্থিতি বুঝে গত কয়েকদিন রব-মান্না এদের কোন হুংকার নেই। এরা যেন নিজেদের আসন কিভাবে জিতবেন তা নিয়ে ব্যস্ত। রেজা কিবরিয়া সম্প্রতি বলেছেন, নির্বাচনে জিতলেও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যেতে পারবেনা, ক্ষমতায় গেলেও থাকতে পারবেনা ইত্যাদি। রাজনৈতিক নেতা না হলে যা হয় আর কী! রাজনীতিকদের কৌশলী হতে হয়। হুমকি দিতে গেলে পালটা সমস্যা বাড়ে। পত্রিকায় রিপোর্ট এসে রেজা কিবরিয়ার বাড়িতে এসে পুলিশ তাড়া খেয়েছে! এখন সংশ্লিষ্টদের পুলিশ যে তাড়ার ওপর রাখবে তাহলে তারা ভোট করবেন কখন?
নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের প্রধান নেতা ডক্টর কামাল সাংবাদিকদের হুমকি, চিনে রাখবেন-দেখে নেবেন বলে, পুলিশকে জানোয়ার-লাঠিয়াল বলে এরমাঝে খামোশ। RAB ধরে ফেলেছে বিশাল এক টাকার চালান। এসব নিয়ে জনগনের সামনে তারা নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে পারেনি। ক্ষমতাসীন দল প্রতিপক্ষকে হুমকি দিচ্ছে-হয়রানি করেছে-মেরেছে-পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেছে এসব অভিযোগ করে নির্বাচনের মাঠ ছেড়ে দিতে নেই। এসব মোকাবেলা করেই বিরোধীদলে থাকতে আওয়ামী লীগ নির্বাচন করেছে।
আওয়ামী লীগের এবং মহাজোটের প্রার্থীরা এই নির্বাচনে মাঠে ময়দানে যেটা দেখিয়েছেন তাহলো নিজস্ব প্রচার তৎপরতা নিয়ে তারা কোন আলসেমি দেখাননি। এমনকি মাশরাফির মতো প্রার্থীও নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি ইউনিয়নে যাবার চেষ্টা করেছেন। দেশের টিভি চ্যানেলগুলো প্রতিযোগিতা করে দেখিয়েছে মাঠের নির্বাচনী প্রচারনার আপডেট। বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় পত্রিকা প্রথম আলো, ডেইলি স্টার ছাড়াও মানবজমিন, নয়া দিগন্ত, দৈনিক সংগ্রাম যে আওয়ামী লীগের পতন চাইছে তা তাদের পাতায় পাতায় স্পষ্ট। কিন্তু টিভি চ্যানেলগুলো পক্ষ নিয়েছে আওয়ামী জোটের। এতে করে ভোটারদের মধ্যে ধারনা সৃষ্টি হয়ে গেছে পাল্লা ভারী আওয়ামী লীগের। আওয়ামী জোট জিতছে এবং ক্ষমতায় থাকছেন শেখ হাসিনা। এই ধারনাটি ভাসমান ভোট তথা যারা যে দিকে পাল্লা ভারী সেদিকে ঝুঁকে পড়ে সিদ্ধান্ত নেন, তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহনে প্রভাব ফেলবে। কারন বাংলাদেশের মানুষের বেশিরভাগ জীবনের নানাক্ষেত্রে পরাজিত। সংসারে-সমাজে-চাকরিতে সহ নানা ক্ষেত্রে পরাজিত মনে করেন বেশিরভাগ মানুষ। ভোটের দিন তারা জিততে যান। নানাভাবে আওয়ামী লীগ এরমাঝে ধারনার সৃষ্টি করেছে তারা জিতছে। কাজেই দলের নেতাকর্মী সমর্থকদের বাইরে ভাসমান ভোটারদের বড় অংশ ভোটের দিন জিততে এখন আওয়ামী লীগের পক্ষেই অবস্থান নেবে। এরজন্যে লিখেছি, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকছে।
Related Articles
“বাদল দিনে” মিউজিক এলবাম এর রিভিউ
চরম এক ব্যস্ততার মাঝে যখন এই অ্যালবামটি পেলাম তখন ভাবছিলাম গানগুলো পরে শুনবো কিন্তু এর প্রচ্ছদ এবং নামকরণ আমাকে বারবার
মেলবোর্নের চিঠি – ৬
এয়ারপোর্ট আসলে শুধু একটা স্থান না, যেন অনুভবের সাত রঙের আধার। যেখানে মানুষ খুব কাছ থেকে দেখতে পারে, অনুভব করতে
মুক্তিযুদ্ধে নতুন প্রজ্ম্ম: ন্যায় প্রতিষ্ঠার এক অবিরাম সংগ্রাম
পহেলা মার্চ। দিনটি আমার জীবনে অবিস্মরনীয় হয়ে আছে। আজ থেকে ৪২ বছর আগে এই দিনে একবুক স্বপ্ন নিয়ে আমি আমার