হৃদ মাঝারে রাখিব – ফাহিমা নাসরিন লিপির একক সংগীত সন্ধ্যা
“জারি গাইও না, বাউল গাইও না
তোমরা কীর্তন গাইও না, বাউল গাইও না
আমার কীর্তন বাউল গাইলে মনে পইড়া যায়
একদিন বাঙ্গালী ছিলাম রে…”
কুমার বিশ্বজিতের গাওয়া এই গানের কথাগুলো ইদানিং বড্ড নিমর্ম সত্য হয়ে প্রাণে বাজে বিশেষকরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ক্ষত্রে কথাটা আরো বেশি সত্য। যেখানে অস্ট্রেলিয়ায় নিজনিজ দেশের ভাষা ও সংস্কৃতিকে চর্চা করার ব্যাপারে উৎসাহিত করা হচ্ছে সেখানে আমরা জোর করে ভাষা ও সংস্কৃতি ভুলে রাতারাতি ফিরিঙ্গি বনে যাওয়ার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। এমন প্রতিযোগিতার মধ্যেও কিছু মানুষ স্রোতের বিপরীতে যেয়ে বাংলাদেশের লোকসঙ্গীতের চর্চা চালিয়ে যাচ্ছেন। ফাহিমা নাসরিন লিপিও তাদেরই একজন।
ফাহিমা নাসরিন লিপির কণ্ঠে আবহমান বাংলার লোকসঙ্গীত যেন প্রাণ ফিরে পায়। উনার কণ্ঠে লোক সংগীতের সেই চিরায়ত রূপটা খুঁজে পাওয়া যায়। তাই একবার শুনতে শুরু করলে বারবার শুনতে ইচ্ছে করবে। লোকসঙ্গীতের প্রতি বাংলাদেশিদের এই ভালোবাসার কথা মাথায় রেখেই গত ২১শে অক্টোবর ২০১৮ রবিবার সন্ধ্যায় সিডনির গ্লেনফিল্ড কমিউনিটি হলে বসেছিল ফাহিমা নাসরিন লিপির একক সঙ্গীত সন্ধ্যা – “হৃদ মাঝারে রাখিব”। সন্ধ্যার পরপরই গ্লেনফিল্ড কমিউনিটি হলের আসনগুলো দখল করে নেন আগত দর্শকবৃন্দ। হলভর্তি দর্শক নিয়ে শুরু হয় গানের আসর। শাহরিয়ার পাভেলের সঞ্চালনায় শুরু হয় অনুষ্ঠানের কার্যক্রম। শুরুতেই লালনের “আপনার আপনি ফানা হলে” গেয়ে দর্শকদের মন জয় করে নেন। তাই গান শেষ হবার পর দর্শকদের হাততালি যেন আর থামতে চায় না।
এরপর একেএকে শাহ আব্দুল করিমের “মন মজালে ওরে বাউলা গান”, পাগল দুরবিন শাহের “নমাজ আমার হইল না আদায়”, হাসন রাজার ” আহারে সোনালী বন্ধু”, সৈয়দ শাহ নূরের “বন্ধু তোর লাইগা রে”, লালনের “মিলন হবে কত দিনে”, দ্বিজভূষন শাহের “তোমায় হৃদ মাঝারে রাখিবো”, পাগল জালাল শাহের “রসিক আমার মন বান্ধিয়া”, রাধা রমনের “ভ্রমর কইও গিয়া”, সরযুবালার “বনমালী তুমি” এবং লালনের “খাঁচার ভিতর অচিন পাখি” পরিবেশন করেন। বলাই বাহুল্য প্রত্যেকটা গানই দর্শকদের মধ্যে আলোড়ন তৈরি করে যার প্রমাণ তারা দিয়েছেন মুহুর্মূহু করতালির মাধ্যমে। এরপর দেয়া হয় বিরতি।
বিরতির পর আইয়ুব বাচ্চু স্মরণে তাঁর জনপ্রিয় কিছু গানের অংশ বিশেষ পরিবেশন করেন সুজন এবং রেদন। পুরো সংগীতায়োজনের সাথে ছিলেন, সুজন (ব্যাক ভোকাল/ রিদম গিটার), শিপলু (বেজ/রিদম গিটার), রেদন (ব্যাক ভোকাল/ লীড গিটার), বিজয় সাহা (পারকিউশন), পুলক খান (ব্যাক ভোকাল/পারকিউশন এসিসটেন্ট) এবং অক্টোপ্যাডে নাহিদ।
বিরতিতে দর্শকদের রসনা বিলাসের জন্য ছিল চিরায়ত বাংলার ঐতিবাহী খাবার। চালতার আচার, চ্যাপা শুটকি ভর্তার সাথে চিতই পিঠা থেকে শুরু করে গরম গরম পিয়াজু ছিল খাবারের উপকরণের মধ্যে। এছাড়াও ছিল ডালপুরি, চিকেন রোল, মুরগির মাংসের এবং গরুর মাংসের বিরিয়ানি। আর মিষ্টান্ন হিসেবে ছিল ফিরনি। তবে দর্শকদের সবচেয়ে আকর্ষণ করেছিল পান-সুপারি। পানীয় হিসেবে কোমল পানীয়ের পাশাপাশি ছিল চায়ের ব্যবস্থা। সমস্ত খাবারের আয়োজনের তদারকিতে ছিলেন মুশফিকার রহমান ইলা, ফারাহ কান্তা, ইয়াকুব, আহমেদ সাগর এবং পুলক। সার্বিক তত্বাবধানে ছিলেন মুশফিকার রহমান ইলা, ফারাহ কান্তা এবং পুলক খান।
অনুষ্ঠানটির স্পনসর ছিলেন মিরাজ হোসেন (রে হোয়াইট – লাকেম্বা),মাহাবুবুল আলম রাসেল (অরিজিন মর্টগেজ ব্রোকার), শামীম আল নোমান (মুক্তমঞ্চ), তালাত, সবুজ (লেমন গ্রাস থাই রেস্টুরেন্ট ব্যাংকসটাউন)।
অনুষ্ঠান শেষে আমন্ত্রিত দর্শকেরা তাদের অভিমত ব্যক্ত করেন। কানিজ আহমেদ বলেন, “অনেক দিন পর বাউল গানের এমন পরিবেশনা ছিল মনে ধারন করার মতন”। শায়লা ইয়াসমিন নুসরাত বলেন, “মন ভরে গেছে, ভবিষ্যতে আরও শুনতে চাই”। শাখাওয়াৎ নয়ন বলেন, “হাউসফুল, দারুন রেসপন্স”!
Md Yaqub Ali
আমি মোঃ ইয়াকুব আলী। দাদি নামটা রেখেছিলেন। দাদির প্রজ্ঞা দেখে আমি মুগ্ধ। উনি ঠিকই বুঝেছিলেন যে, এই ছেলে বড় হয়ে বেকুবি করবে তাই এমন নাম রেখেছিলেন হয়তোবা। যাইহোক, আমি একজন ডিগ্রিধারী রাজমিস্ত্রি। উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করতে অস্ট্রেলিয়াতে আমার আগমন ২০১৫ সালের মার্চে। আগে থেকেই ফেসবুকে আঁকিবুকি করতাম। ব্যক্তিজীবনে আমি দুইটা জীবের জনক। একটা হচ্ছে পাখি প্রকৃতির, নাম তার টুনটুনি, বয়স আট বছর। আর একজন হচ্ছে বিচ্ছু শ্রেণীর, নাম হচ্ছে কুদ্দুস, বয়স দুই বছর। গিন্নী ডিগ্রিধারী কবিরাজ। এই নিয়ে আমাদের সংসার। আমি বলি টম এন্ড জেরির সংসার যেখানে একজন মাত্র টম (আমার গিন্নী) আর তিনজন আছে জেরি।
Related Articles
নবম ওয়েজবোর্ডে বেতন-ভাতা না দিলে সংশ্লিষ্ট পত্রিকা-মিডিয়া বন্ধ করে দিতে কী রাজি হবেন সাংবাদিকরা?
ফজলুল বারী: সাংবাদিকদের নবম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নে সকলপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেবার আশ্বাস দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও সড়ক
Fifth Annual Social Business Day in Dhaka: The theme is “We are job-givers”
Nobel Laureate Professor Yunus organises Annual Global Social Business Summit which will be held from 27 – 28 November 2014
ডাক্তারদের মৌচাকে ঢিল শেখ হাসিনার
ফজলুল বারী: দেশের সড়কের মতো নৈরাজ্য শিক্ষা-স্বাস্থ্যখাতে। নৈরাজ্য কোথায় নেই। মানুষ জিম্মি। এবারে টানা তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেবার পর