Rafiqun Nabi's Cartoon
![Rafiqun Nabi's Cartoon](https://priyoaustralia.com.au/wp-content/uploads/files/2011/ra_nabi_225878611-890x395_c.jpg)
রনবীর একটি কার্টুন ও কিছু কথা : ওয়াসিম খান পলাশ প্যারিস থেকে
একজন কবি বা সাহিত্যিক তার লিখনীর মাধ্যমে একটি ঘটনা বা কাহিনীকে তার নিজস্ব চন্তা-ভাবনা দিয়ে অলংকৃত করে করে থাকেন। কেউ ছড়া, কবিতার ভাষায়, কেউবা গল্প, উপন্যাসের ভাষায় প্রকাশ করে থাকেন ঘটনাটি। এখানে শুধু লেখকের নিজস্ব চিন্তা ভাবনারই প্রকাশ পায়। নিজেস্ব কল্পনাটি অনেকটা পাঠকের উপর অনেকটা চাপিয়ে দেয়া হয় বলা যেতে পারে। । যিনি পাঠক তিনি লেখকের মতামতের সাথে একমত পোষণ নাও করতে পারেন। আবার অনেক লেখক আছেন যারা পাঠকের কথা ভেবে গল্পটিকে অলংকৃত করে থাকেন। এরা ব্যাবসায়িক মনোভাব নিয়ে সাহিত্য লিখেন। কিন্তু একটি কার্টুন আপনার চিন্তা-ভাবনাকে উন্মুক্ত করে দিতে পারে। একজন কার্টুনিষ্ট কোন বিষয়ের উপর একটি ছবি একে নিচে দুলাইন কমেন্ট লিখে ছড়ে দেন। তাকে আর কিছু করতে হয় না। শুরু হয় গবেষনা। প্রতিটি পাঠক তার নিজস্ব মেধা ও দৃষ্টিকোন থেকে বিষয়টিকে বিশ্লেষন করে থাকেন। পাঠকই তখন লেখকের ভুমিকায় অবর্তীন হন। একটি কার্টুন আলোচনা সমালচনার ঝড় তুলতে দিতে পারে।
বাংলাদেশের কার্টুনের জগতে জীবন্ত কিংবদন্তী হলেন রফিক উন নবী যিনি রনবী নামে কিংবদন্তীতে পরিনত হয়েছেন। তিনিই প্রথম বাংলাদেশে ফুতপাতের ছেলেদের টোকাই নামের কার্টুন নিয়ে কিংবদন্তীতে পরিনত হয়েছেন। তার নিপুন হাতের তুলিতে আকা টোকাইরা দেশের, সমাজের ছোট বড় সমস্যা গুলো তুলে ধরেছে। কি সামাজিক, কি রাজনৈতিক, কি শিক্ষা সব বিষয়ের সাম্প্রতিক সমস্যাগুলো টোকাইদের কথার মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। এমন একদিন আসবে যখন হয়ত তিনি টোকাইদের পুনবাসিত করবেন। বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে টোকাইরা বাংলাদেশে আমাদের সমাজে একটি স্যাম্বলে পরিনত হয়েছে। তার প্রতিটি কার্টুন সমাজের নিত্যদিনের একেকটি সমস্যা নিয়ে করা। ব্যাঙ্গাত্বক ও রসাত্বক কার্টুনগুলো একদিকে যেমন হাসির খোরাক যোগায় তেমনি প্রশাসনকে আঙ্গুল দিয়ে বুঝিয়ে দেয়া হয় সমস্যাগুলো।
এরই মধ্যে দেশে ও বিদেশে রনবীর হাজর হাজার, লাখ লাখ ভক্ত তৈরী হয়েছে যারা ম্যাগাজিন হাতে নিয়েই প্রথমে রনবীর কার্টুনটি পড়ে নেন। অনেকে আবার দুর্লভ এই কার্টুনগুলো সংগ্রহ করে থাকেন।
সাপ্তাহিক ২০০০ এ রনবীর একটি কার্টুন চোখে পড়লো। কার্টুনটি ক্রিকেট বিষয়ক। কার্টুনের লাইন দুটো এরকম-
প্রথম জন – – ক্রিকেটে আমাদের দেশ কবে আবার জিতবে বলতে পারবি —————————–
দ্বিতীয় জন – যখন অন্যরা কেউ হঠত খারাপ খেলবো ——————————
সদ্য বিশ্বকাপ ক্রিকেট শেষ হলো। আমরা ছিলাম আয়োজক দেশগুলোর একটি। জমকালো লাগানো উদ্ভোধনী অনুষ্ঠান সবার প্রশংসা কুড়ালো। আর স্বাগ তিক দেশের এডভানটেজ তো ছিলোই। এতকিছুর পরও ওয়েষ্ট ইন্ডিস আর সাউথ আফ্রিকার সাথে রেকর্ড সংখক রান করার লজ্জা কিভাবে ঢাকবো।
বাংলাদেশের ক্রিকেট আন্তজাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের সদস্য হয়েছে অনেক দিন হলো। দেখতে দেখতে অনেক গুলো ম্যাচও খেলা হয়ে গেছে বাংলাদেশ দলের। আমাদের খেলোয়াড়রা বিশ্বের সব সেরা খেলোয়াড়দের সাথে খেলছে। মোকাবিলা করছে বিশ্বের সেরা বোলিং। কেটে গেছে সব ভয়। তারপরও কেন আমরা এভাবে ম্যাচ হেরে চলেছি । বড় মাপের কোচ আমরা পেয়েছি। এখনও আছে। ক্রিকেটের উন্নয়নে ফেডারেশনের নেই কোন ঘাটতি,উন্নত মানের কোচ, নিয়মিত ম্যাচ খেলা সবই করে চলেছেন তারা। ফুটবল, হকি শুটিং বা দাবার মত অজুহাত দেবার সুযোগও নেই তাদের – পর্যাপ্ত ম্যাচ খেলতে পারিনা বলে ভাল করতে পারছি না।
এখন দরকার শুধু রেজান্ট। আমরা ইতিমধ্যিই জিম্বাবুয়ে ও কেনিয়ার সমীহা নিতে শুরু করেছি নিয়মিত।একদিনের ম্যাচে আমরা হারিয়েছি প্রায় প্রতিটি দেশকেই। তারপরও এটাকে আমাদের ক্রিকেটের উন্নতি বলা যাবে না । ক্রিকেটের বর্তমান অবকাঠমো ও ক্রিকেটে রাজনীতির অনুপ্রবেশই জিম্বাবুয়ে ও কেনিয়ার ক্রিকেটকে পিছিয়ে দিয়েছে। যদি মনে করি আমাদের ক্রিকেট এগিয়েছে। তাহলে কেন আমরা অষ্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, ওয়েষ্ট ইন্ডিস, সাউথ আফ্রিকা, শ্রীলংকা, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ডের সাথে প্রতিটি ম্যাচেই দল হারবে। সিরিজ না হয় হারলাম তাই বলে হোয়াইটওয়াস। বুঝলাম এবারের বিশ্বকাপে আমরা ইংল্যান্ডকে হারিয়েছি, ভারতের সাথে ফাইটিং ম্যাচ খেলেছি, তারপরের ম্যাচগুলো। প্রতিটি পরাজয়ের ভিতরও আমাদের খেলোয়াড়রা সাফল্য খুজে পান। এখন মনে হচ্ছে আমাদের খেলোয়াড়দের টার্গেট এখন আর জয় না। তারা অষ্ট্রেলিয়ার সাথে ২০০, পাকিস্তানের সাথে ২৫০, সাউথ আফ্রিকার সাথে ২০০ —– করতে পারলেই সন্তুষ্ট।
যদি কোন কারনে প্রতিপক্ষ ইচ্ছে করে খারাপ খেলে বসে বা খেলার জন্য খেলে তাহলেই বাংলাদেশের জয়ের সম্ভবনা জেগে উঠে।
রনবীর কার্টুনের কথা গুলো বাংলাদেশের ক্রিকেট পাগল মানুষগুলোর ক্ষোভেরই বহি :প্রকাশ। তাদের প্রত্যাশা খুব সমান্য। শুধু মাঝে মাঝে একটু চমক। একটি জয়। আমরা যদি এগুতে শুরু না করি তাহলেতো পিছিয়ে যাবো। থেকে যাবো সেই আগের অবস্থানে।
প্যারিস – ০৪।০৪।২০১১