প্রিয় মানুষের শহর – ১১

প্রিয় মানুষের শহর – ১১

নিজেকে প্রকাশ করার, তুলে ধরার একটা উছিলা খুঁজছি আমি।

একটু পরিষ্কার করে বলি। আমার জানা মতে, এখানকার অনেক বন্ধুই জানেন না, আমি আসলে কি? মানে আমার বংশ পরিচয় কি, পড়া লেখা কতটুক, কোথা থেকে আসলাম, কোথায় চলে এলাম, কোথায় চলে যাবো। আরো আরো নানাবিধ হাজার হাজার কাব্যিক নানান প্রশ্নের উত্তর।

আমি একজন লেখক, কবি, সাহিত্যিক, গীতিকার, গায়ক, নায়ক, বাদক, নাচক, পরিচালক, শিক্ষক, বাউল আরো কত কি! কেউ কেউ হয়তো দু’একটার ব্যাপারে জানেন। আমি নিশ্চিত বাকি গুলি অনেকের কাছেই অধরা, অজানা। একবার ভাবুন দেখি! কি মিসটাই না আপনি করছেন। হাতের কাছে এতো বড় একজন গুনীকে পেয়েও কাজে লাগাতে পারলেন না। নিজের জীবনটাকে আলোকিত করতে পারলেন না।

দোষ কিন্তু আমার না – কোনো ভাবেই না – দোষটা আপনার। আপনিই তো আবিষ্কার করতে পারেন নি আমাকে। আমি তো খোলা বইয়ের মতো প্রতিটা পৃষ্ঠা আপনাকে দেখাচ্ছি। বাতাসের দোহাই দিয়ে – নিজে নিজেই উল্টে পাল্টে দেখাচ্ছি আপনাকে। আপনি ঠিক মতো না দেখলে, না পড়লে তার জন্যে আমি দায়ী হবো কি করে? কোনো ভাবেই আমি দায়ী না। বলে রাখলাম কিন্তু

নিজের ঢোল নিজে পিটাতে চাই না। ওসব পছন্দও করি না। কিন্তু কি করবো, আধা শতাব্দীর কাছাকাছি অপেক্ষা করেছি আমি। ভেবেছিলাম কেউ না কেউ আমার মতো প্রতিভাবানকে সকল মানব সমাজের কাছে তুলে ধরবে। আপনাদের কাছে নিয়ে যাবে। কোথায় কি! সবাই নিজেকে নিয়ে, নিজের মার্কেটিং নিয়ে ব্যস্ত। আমাকে নিয়ে ভাববার কার সময় কোথায়?

আজ বড় দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে বলতে হয় প্রিয় লেখক “জরিনা, আবুল, চিত্ত রঞ্জন” রা যে ভাবে নিজেদের বংশ, শিক্ষা, জীবন বৃত্তান্ত, রচিত সাহিত্য মান পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন আমাদেরকে। ইনিয়ে বিনিয়ে, গাছ, খুঁটি, জুলন্ত তার – যখন যেটা পেয়েছেন – সেটার সাথে বেঁধে শুনিয়েছেন জীবন গাঁথা। আমাদেরকে করেছেন আলোকিত। আমরা এখন বলতে পারি – কে, কোথায়, কোন বাড়ির পেয়াদা এখন। আমরা কি ভাগ্যবান – ওনাদের মতো প্রতিভাধর মানুষদের কাছে পেয়ে। আমরা সত্যিই আলোকিত আজ।

শুনেছি সুশিক্ষা মানুষকে মানুষ করে। ভদ্র, নম্র, বিনয়ী করে। যে যত বেশি সুশিক্ষিত সে তত বেশি ভদ্র, নম্র, বিনয়ী হয়। সাহিত্য চর্চার কারীদের বিষয় টাও তাই। লেখক যত উপরে উঠতে থাকেন – নিজেকে ততটাই ছোট সাহিত্যের সেবক মনে করেন।

সময় পাল্টেছে এখন। “জরিনা, আবুল, চিত্ত রঞ্জন” রা জানেন, তেনারা কি। জানেন কি ভাবে মাৰ্কেটটিং করতে হয় নিজেদের। কি ভাবে নাঙ্গা রাম দা নিয়ে ঘুরতে হয় পথে পথে – যদি ভিন্ন মতের – সমালোচনাকারী – এমন কাউকে পাওয়া যায়। ঝেড়ে দেন নিজের বহুদিন থেকে জমে থাকা সমস্থ প্রতিভার ভান্ডার। উদাহরণ স্বরূপ হতে পারে – আমি ডাবল ডিগ্রী, নানান বিষয়ে আমি লেখা পড়া করেছি , আমার প্রচুর প্রকাশিত বই আছে, আমার ফ্যামিলির সবাই লেখক, আমি হাজারটা পত্রিকায় লেখালেখি করি, আমার উঠা বসা সব সেলেব্রেটি লেখকদের সাথে। বাকি গুলো আমি এখন আর মনে করতে পারছি না। মনে করে অন্য দিন বলা যাবে।

কিছু কিছু সামাজিক টাবু বিষয় নিয়ে – উলঙ্গ ভাবে লিখে ফেললেই সাহিত্য হয়ে যায় না। যায় কি?

কি? লেখাটা পড়তে পড়তে তেক্ত বিরক্ত, ক্লান্ত হয়ে গেছেন?

ভয় নেই পাঠক, এটিও আমার আরেকটি রম্য রচনা মাত্র। বাস্তব লেখকদের সাথে কোথাও কোনো মিল নেই। কাকতালীয় ভাবেও না।

ভালো থাকবেন সবাই।

Shahadat Manik

Shahadat Manik

Writer, poet, lyricist and social activist.


Tags assigned to this article:
প্রিয় মানুষের শহর

Place your ads here!

Related Articles

Are we looking too much in the invitation of SAARC leaders in the Modi’s swearing in ceremony?

Prime Minister Narendra always thinks big and grandiose. That is why from a teacup seller he became the Prime Minister

নেলসনে নিউজিল্যান্ডকে হারানো যাবে কী

ফজলুল বারী, নেলসন থেকে: বুধরার নেলসনের আকাশ রোদ ঝলমলে ছিল সারাদিন। বৃহস্পতিবারের ম্যাচকে সামনে রেখে এখানকার সেক্সটন ওভালের মাঠে এর রোদেলা

করোনাকালীন দুর্গা পূজা

করোনাকালে মানব জীবনে এনেছে অভাবনীয় পরিবর্তন। আমরা ছোটবেলায় ব্যাকরণ বইয়ে অনুবাদ পড়তাম। বাংলা থেকে ইংরেজি বা ইংরেজি থেকে বাংলা অনুবাদ

2 comments

Write a comment
  1. Dilruba Shahana
    Dilruba Shahana 19 March, 2018, 05:54

    Pora hoyni kichhudin. Aj pore valo laglo. Keep writing pl.

    Reply this comment
  2. SB
    SB 25 March, 2019, 07:28

    Sob somoyer motoi odadharon!!!

    Reply this comment

Write a Comment