তদন্ত চাইনা, প্রাণ ফিরে চাই
কাউন্সিলর একরাম হত্যাকান্ডের অডিও রেকর্ড ভাইরাল হয়েছে। তাকে হত্যার সময় মোবাইল অডিও টেপে গুলির শব্দ ও তৎক্ষণাত তার স্ত্রী-কন্যার বিকট চিৎকারের বিষয়টি দেশ-বিদেশের পাষন্ড হৃদয়কেও নাড়া দিয়েছে। ফলে সরকার বিষয়টি সমাধানে উঠে পড়ে লেগেছে। মন্ত্রীগণ বিষয়টি দুঃখজনক বলে ক্ষমা প্রার্থনার চেষ্টা করছেন। তদন্তের আশ্বাস দিচ্ছেন। প্রশাসনের হুকুম তামিলকারী কর্মকর্তাদের অভিযুক্ত করার চেষ্টা করছেন। আশংকা হচ্ছে, বিডিআর জোয়ানদের মতো হয়তো অনেকে ফেসে যাচ্ছে। দেশবাসী এই একটি হত্যার তদন্ত চায়না। সম্প্রতি দেশে সংঘটিত অসংখ্য হতাকান্ডের মধ্যে একরাম হত্যার ঘটনাটি অতি সাধারণ। বরং প্রতিটি হত্যাকান্ডই মর্মান্তিক। প্রতিটি নিহতের পরিবারের হৃদয়বিদারক কান্না শুনলে এবং মিডিয়া স্বাধীনভাবে তা প্রকাশ করলে, ভয়ঙ্কর চিত্র ভেসে আসবে। তাই মিডিয়ার স্বাধীনতা অতীব জরুরী। অযথা তদন্তের প্রয়োজন নেই। তদন্তের পর আসে বিচারের প্রশ্ন। আর বিচারবিভাগে যদি চলে প্রহসন, তবে কেনইবা তদন্তের প্রয়োজন। অদ্যবধি বাংলাদেশের মানবাধিকার কমিশন ও বিচারবিভাগ পুরোপুরি নিশ্চুপ রয়েছে। সুতরাং নিছক তদন্তের নামে দেশবাসী আর কোনো বিশৃঙ্খলা বা প্রাণহানি দেখতে চায়না। বিচারবহির্ভূত হত্যার পর মন্ত্রীপরিষদের নিছক ক্ষমাপ্রার্থনাও চায়না। একরামের প্রাণ ফিরে পেতে চায়। সরকার যেন ফিরে দেন প্রতিটি প্রাণ।
যেহেতু তদন্তের বিষয়টি খুব জোরালো হয়েছে, তাই বিচারবিভাগের ভূমিকা বিশ্লেষণ প্রয়োজন। দেশে বিচারবহির্ভুত হত্যাকান্ডের সূচনায় মূলত দায়ী তারাই। কারণ, একটি দেশের সর্বোচ্চ আদালত বিচারের নামে একজনের দায় যখন অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে সহজেই হত্যার আদেশ দেয়, তখনই বেপরোয়া হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়। বাংলাদেশের বিচারকেরা এদেশে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে নি¤œ আদালতে পরিণত করেছে। এদেশেরই সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগকে উক্ত ট্রাইব্যুনালের উচ্চ আদালত সাব্যস্ত করেছে। উক্ত বিচারকেরা নিজেরাই উভয় আদালত পরিচালনা করছে। তারা ১৯৭১ এর জঘন্য অপরাধের দায়ে ঘাতক যুদ্ধাপরাধী পাকিস্তানীদের পরিবর্তে শুধুমাত্র বাংলাদেশের যুদ্ধবিধ্বস্থ নাগরিকদের ঢালাওভাবে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিচ্ছে এবং নির্দ্বিধায় তা কার্যকর করছে। এতে বিশ্বজুড়ে পাকিস্তানীদের পরিবর্তে বাংলাদেশীরাই ঘাতক, রাজাকার, আলবদর, আশশামস, নারী ধর্ষণকারী, যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী পরিচিত হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ বিশ্ববাসীর কাছে আরো লান্থিত ও নিগৃহিত হয়েছে। বিচারবিভাগের এমন কর্মকান্ডে জনগণ বেপরোয়া হয়েছে। দেশে গুম, খুন ও অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে। এমনকি প্রশাসনও নির্বিচার খুনে মেতেছে। তারা বিচারবিভাগকে ভ্রুক্ষেপ করেনা। তাহলে সেই প্রশাসনের তদন্তে কিবা ফল হবে?
এজন্য প্রয়োজন-
- শক্তিশালী বিচারবিভাগ গড়ে তোলা।
- বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড বন্ধ করা।
- প্রতিটি নিহতের পরিবারকে হারানো প্রাণের মূল্য স্বরূপ দাবিমূল্য প্রদান করা।
-Siraji M R Mostak
শিক্ষানবিস আইনজীবী, ঢাকা।
mrmostak786@gmail.com
Related Articles
পদ্মাসেতুতে বিশ্বব্যাংককে সরকারের না, নাকি সরকারকে বিশ্বব্যাংকের না?
একি শুনি আজ মন্থরার মুখে, পদ্মাসেতুতে বিশ্বব্যাংককে সরকারের না, নাকি সরকারকে বিশ্বব্যাঙ্কের না? আমরা কি ভুল দেখছি? আমি সত্যিই হতবাক
Let us usher in New Year 2010: A Year of Hope Expectation!
In ancient days, there was no New Year. They used to say ‘in the tenth year of the reign of
স্বাধীনতার ঘোষক – মহান মুক্তিযুদ্ধ
আজকে বাংলাদেশের অনেককেই দেখলাম স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে মহান মুক্তিযুদ্ধের একজন সেক্টর কমান্ডার এবং রাজনৈতিক ক্ষমতার দুষ্টচক্রে প্রেসিডেন্ট হওয়া ও পরে