ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানালো ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুল

ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানালো ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুল

গর্বের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানালো ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুল

কাজী আশফাক রহমান: ৫২তে যে শোক আমাদের আচ্ছন্ন করেছিল তাই পরবর্তীতে শক্তি এবং সবশেষে গর্বে রুপ নেয়া আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এই গর্ব, এই অহংকার ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুল ধারণ করে হৃদয়ের গভীরে আর অন্তরের অন্তস্থলে। আর তাই প্রতিবারের মত এবারও ভাষা দিবসে বাংলা স্কুল গভীর শ্রদ্ধায় আর ভালবাসায় স্মরণ করে মায়ের ভাষার দাবি প্রতিষ্ঠায় বুকের রক্ত ঢেলে দেয়া সূর্য সন্তানদের।

গত ২৫শে ফেব্রুয়ারি রবিবার মিন্টোস্থ স্কুল প্রাঙ্গনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সকাল সাড়ে দশটায় চিরায়ত প্রভাত ফেরীর মাধ্যমে একুশের এই আয়োজনের সূচনা ঘটে। প্রভাত ফেরিটি স্কুলের খেলার মাঠ থেকে শুরু হয়ে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিন করে শহীদ মিনারের বেদীমূলে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।

অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে স্কুলের সোনামণিদের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা উপস্থিত দর্শকদের আলোড়িত করে।দলীয় এবং একক পরিবেশনায় প্রতিটি শাখায় ছাত্রছাত্রীরা শৃঙ্খলতা আর পারদর্শিতার সুস্পষ্ট ছাপ রাখতে সক্ষম হয়। একক আবৃত্তিতে অংশ নেয় ঋষিকা, জেইনা , ফারহান, রুশনান,রুশদা,সুবা,এলভিরা,অরুপা, অপলা,তাহিয়া,দৃপ্ত আর আলিশা। একক সংগীত পরিবেশন করে রাবাব, অর্নব,নোয়া এবং অবনী। একক নৃত্যে অংশ নেয় সুলগ্না। বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দর্শক বাংলা স্কুলের দৃষ্টিনন্দন পরিবেশনা উপভোগ করে। এই পর্বের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন স্কুলের অধ্যক্ষা রোকেয়া আহমেদ।

দ্বিতীয় পর্বে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনায় বক্তারা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের সার্বজনীনতা এবং প্রয়োজনীয়তার উপর আলোকপাত করেন। অনুষ্ঠানে ক্যাম্বেলটাউন সিটি কাউন্সিলের মেয়র জর্জ ব্রিটতেভিক, ডেপুটি মেয়র মেগান ওট ও স্থানীয় ফেডারেল সংসদ সদস্য মাইক

ফ্রিল্যান্ডার ভাষা সংগ্রামীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বহু সংস্কৃতির এই দেশে বাংলা ভাষাভাষীদের অবদানের কথা উল্লেখ করেন। ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুলের সভাপতি আবদুল জলিল সারা বিশ্বের সকল মাতৃভাষা প্রেমিকের কাছেই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস তাৎপর্যপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন। এই পর্যায়ে স্কুলের প্রথম শিক্ষিকা মিসেস রিজিয়া চৌধুরীকে তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য সম্মাননা ২০১৮ তে ভূষিত করা হয়।

তৃতীয় পর্বে শুরুতে আবৃত্তির মূর্ছনায় সবাইকে আচ্ছন্ন করেন স্কুলের শিক্ষিকা নাসরিন মোফাজ্জল এবং রুমানা সিদ্দিকী। এই পর্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক ছিল সিডনির স্বনামধন্য শিল্পীদের কণ্ঠে দেশাত্মবোধক গান। আমন্ত্রিত শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন মিজানুর রহমান জনি,রোজলীন তুলি, নাফিসা স্বাগতা, তাহমিনা পিও, এ কে এম ফারুক, রথীন ঢালী, ওয়াসিফ শুভ।

পুরো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পর্বের নির্দেশনা ও পরিচালনায় ছিলেন সাংস্কৃতিক সম্পাদক সাজ্জাদ চৌধুরী। তবলায় সংগত করেন নির্বাহী সদস্য বিজয় সাহা। উপস্থাপনায় ছিলেন রুমানা সিদ্দিকী। শব্দ নিয়ন্ত্রণে ছিলেন মাসুদ মিথুন এবং ফায়সাল খালিদ। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের ত্রিমাত্রিক ব্যঞ্জনায় নির্মিত মঞ্চের মূল পরিকল্পনা ও নির্মানে ছিলেন মাসুদ মিথুন এবং আহমেদ সাগর। আপ্যায়নে ছিলেন হাসি, রুপা, নীলা, বর্নি, ইলা,পুলক, ইয়াকুব, স্বপন এবং ফেরদৌস।

একুশ সহ আমাদের জাতীয় জীবনের সমস্ত অর্জন চেতনায় ধারনা করা ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুল ধর্ম বর্ন নির্বিশেষে সকল বাংলা ভাষাভাষী ছেলেমেয়েদের জন্য প্রতি রবিবার সকাল দশটা থেকে একটা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকে।বাংলা ভাষাভাষী ছেলেমেয়েদের জন্য প্রতি রবিবার সকাল দশটা থেকে একটা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকে।

বৃষ্টিস্নাত শহীদ মিনার (প্রকৃতিতেও ছিল শোকাবহ পরিবেশ)।

বৃষ্টিস্নাত শহীদ মিনার (প্রকৃতিতেও ছিল শোকাবহ পরিবেশ)।

বৃষ্টি উপেক্ষা করে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন।

বৃষ্টি উপেক্ষা করে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন।

মঞ্চ সজ্জার একাংশ।

মঞ্চ সজ্জার একাংশ।

শিশুরাও এসেছিল বাবা-মায়ের হাত ধরে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে।

শিশুরাও এসেছিল বাবা-মায়ের হাত ধরে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে।

প্ৰশান্তিকার বুক স্টল।

প্ৰশান্তিকার বুক স্টল।

ভবিষ্যৎ প্রজন্মের হাতে বাংলা বই।

ভবিষ্যৎ প্রজন্মের হাতে বাংলা বই।

টাইটেল: আপ্যায়নেও ছিল বাঙালিয়ানার ছোয়া

আপ্যায়নেও ছিল বাঙালিয়ানার ছোয়া

Kazi Ashfaq Rahman

Kazi Ashfaq Rahman

ছেলেবেলা থেকেই শান্তশিষ্ট ছিলাম বলে আমার মায়ের কাছে শুনেছি। দুষ্টুমি করার জন্য যে বুদ্ধিমত্তার প্রয়োজন তা নিশ্চয়ই আমার ছিল না। আমার এই নিবুর্দ্ধিতা একসময় আমার মাকে ভাবিয়ে তুলেছিল। তিনি হয়তো ভেবেছিলেন আমার এই ছেলে জীবনে চলবে কি করে। এখন যেভাবে চলছি তাতে কোনও আক্ষেপ নেই। ভালই তো আছি। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত শিক্ষা, সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যে অনন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারাকে জীবনের বড় অর্জন বলে মনে করি। আমার স্ত্রী একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্রী, আমার শত বোকামী, আলসেমী আর বৈষয়িক না হওয়াকে প্রকারান্তরে প্রশ্রয় দেওয়াতে আমার আর মানুষ হয়ে ওঠা হয়নি। আমার দুই সন্তান, আমি চাই তারা আমার মত বোকাই থেকে যাক কিন্তু আলোকিত মানবিক মানুষ হোক যা আমি হয়তো হতে পারিনি।


Place your ads here!

Related Articles

সিডনিতে প্রাক্তন ক্যাডেটদের পুনর্মিলনী: ক্যাডেটস ডে আউট

গত ২৭ সেপ্টেম্বর, রবিবার, সিডনির বুকে দ্বিতীয়বারের মত অনুষ্ঠিত হলো অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশের সকল ক্যাডেট কলেজের প্রাক্তন ক্যাডেটদের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল অস্ট্রেলিয়া’র উদ্যোগে মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত

বাংলাদেশের ৩৮তম মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল অস্ট্রেলিয়া শাখা গত ১৯ এপ্রিল , রবিবার সন্ধ্যা ৬টায় এক আলোচনা

ক্যানবেরায়ন্যাশনালমাল্টিকালচারালফেস্টিভালেবাংলাদেশেরঐতিহ্য, সংস্কৃতিওউন্নয়নকর্মকান্ডপ্রদর্শন

ক্যানবেরা, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩: অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরায় অনুষ্ঠিত তিনদিনব্যাপী ন্যাশনাল মাল্টিকালচারাল ফেস্টিভালে বাংলাদেশের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও উন্নয়ন কর্মকান্ড প্রদর্শন করা হয়।গত

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment