যেমন দেখেছি
![যেমন দেখেছি](https://priyoaustralia.com.au/wp-content/uploads/2017/10/22414721_1103589916442939_953159950_n-890x395_c.jpg)
দীর্ঘ ছুটি কাটিয়ে বাচ্চারা আজ স্কুলে গেল। আবারো সেই ছুটোছুটি। জব। রাজ্যের কর্ম ব্যস্ততা। মাঝে আমার গাড়িটা ও সপ্তাহখানেকের জন্য গাড়ি সারানোর কারখানায় ছিল। কি সব হলো, বুঝি না। টার্নি-এ স্টিয়ারিং ঘোরার সঙ্গে ভাঙচুর আওয়াজ!
ভাঙ্গাগড়ার এ খেলায় কত কিছু যে মনে আনাগোনা করে। সে খোঁজ ক’জন করে!
আবহাওয়ায় বৈচিত্র আসে। ঋতু বদলায়। সম্পর্কের ধরন পাল্টে যায় ক্ষনে ক্ষনে। কত কিছু!
ছেলে-মেয়ে দু’টোকেই নামিয়ে দিলাম স্কুলে। রাস্তা দু’ধারে সারি সারি গাছ। ঝরা পাতা বিবর্ণ হয়ে আছে। চোখ পড়লো ওদের স্কুলে ঘরের কার্নিশে অজস্র পাতার উপর। শুকানো পাতা, ডালপালা ছড়ানো। এলোমেলো বাতাস। রুক্ষ মেজাজে আনমনা প্রকৃতি!
মনটা আনচান করে। কিন্তু জানেন ওঁরা একেবারেই বিপরীত। ওঁরা মানে এদেশের শ্বেতাঙ্গদের কথা বলছি। কোন ক্লান্তি নেই। ঈর্ষায় বিষোদগার নেই চোখে-মুখে। কর্ম ব্যস্ত প্রায় প্রত্যেকে। কেউ অফিসে যাচ্ছেন পায়ে হেঁটে, কেউ গাড়ি চালিয়ে। বাসে করেও যাচ্ছেন অনেকেই। ফুটপাত ধরে সকালের হাঁটাও সেরে নিচ্ছেন কেউ কেউ। সঙ্গে পোষা কুকুর। চলনে বোঝা দায় নারী-পুরুষে ভেদাভেদ। মেয়েদের সংক্ষিপ্ত পোষাক, খোলামেলা বৈশিষ্ট্যে কারো কোন ভ্রূক্ষেপ নেই। রাস্তর মোড়ে স্পিড ডিটেক্টর ক্যামেরা। ট্রাফিক সাইন মেনে পথ চলছেন ড্রাইভার। পথচারীও। দু’ একজন নিয়ম ভাঙা মুক্ত বিহঙ যে একেবারেই চোখে পড়েনি তা ও নয়! প্রতিটি মানুষের ব্যক্তিগত একটি গাড়ী আছে। চুরি ডাকাতির পরিমান খুবই নগণ্য। নামীদামী ব্রান্ডের গাড়ী পার্কিং করে রাখছে কিন্তু চোরের আনাগোনা নেই।
প্রতিটি বাড়ীর আঙ্গিনায়, রাস্তাঘাটে একই আকারের গাছ-পালা। আবাসিক বাড়ীগুলো বাহ্যিক নকশা প্রায় একই রকম। ইচ্ছা করলেই নিজের মত বাড়ী বানানো যায় না। সবকিছুর জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম-নীতি মেনে চলতে হয়। সরকার কর্তৃক সিটি করপোরেশন-এর নোটিশ মেনে চলতে হয়। একই নিয়মের মধ্যে চলে। বাড়ী তৈরী, কেনা-বেচা সবকিছুই এজেন্টের মাধ্যমে করতে হয়। এমন কি বাড়ীগুলো আঙিনায় যদি বড় কোন পুরাতন গাছ থাকে, সেটা কাটার জন্য সরকারের কাছে অনুমতি চাইতে হয়। উল্টো খসাতে হয় নির্ধারিত ফি। অন্যথায় কেস হয়ে যাবে বাড়ীওয়ালার নামে। ঢাল তলোয়ার বিশিষ্ট নিদিরাম সর্দারl
প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট করার জন্যও শাস্তি পেতে হয়। শত্রু ভয়ংকর। মানুষ খুন প্রশ্নাতীত, সাপ মেরেও যেতে হবে শ্রী নগর।
অবাক হয়ে ভাবি, এ কেমন দেশ! নাকি স্বর্গরাজ্য!
ওরা ছোটবেলা থেকে এভাবেই বেড়ে উঠেছেl মানবতা-শিষ্টাচার ওদের রক্তে। কিছুদিন আগে গিয়েছিলাম স্ট্রেটফিল্ড, অস্ট্রেলিয়ার সিডনি শহরের একটা এলাকা এটি। ওখানে বেবী আপা ও মাসুম ভাইদের বাড়ী। পাশেই স্ট্রেটফিল্ড পার্ক। এত সাজানো গোছানো। পরিপাটি, যে কারো মনের ক্যামেরায় অটো ক্লিক হবে। যেন এক একটি কালান্ডারের স্ন্যাপশট্। সেদিন বিকেল ছিলো। গোধূলির ভাঙা রোদ সবুজ পাতার দেয়ালে এমনভাবে হেলে ছিলো যে মনে ছায়ার ফাঁদ পেতেছিল। প্রেম ভর করলো। কবিতার প্রহর গুনছিলাম। কিন্তু প্রেমিকের দেখা কই!
মন ছুটে চলল শৈশবে।
৮০’র দশকে আমাদের বেড়াতে যাওয়া মানে বুঝতাম দাদা কিংবা নানার বাড়ি যাওয়া। স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষা হয়ে গেলে আমরা শহর থেকে গ্রামের বাড়ি যেতাম। আরো পরে বাচ্চাদের নিয়ে কক্সবাজার গিয়েছি। বছরে দু’একবার দেশের বাইরে যেতাম। এখন বিদেশেই সেটল। এখানকার বাচ্চাদের দাদা কিংবা নানার বাড়ি নেই। গ্রামের বাড়িও কল্পনা রাজ্যে। গাঁট ছড়া জীবন এদের। প্রানে স্পন্দন নেই, তবুও বাঁচার আকুলতা। সুন্দর ও সৌন্দর্য্যের ধার বেয়ে।
পশ্চাত্যরা বাচ্চাদের মানসিক বিকাশে সর্বোচচ প্রাধান্য দিয়ে থাকে। সবুজ বনানী, পার্ক, খেলা-ধুলার সরঞ্জামাদি জোগানে সামান্য খুঁত নেই। এরা জানে শিশুর বুদ্ধি বিকাশে খেলা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। খেলাধুলা ও হাসি আনন্দের মধ্য দিয়ে একটু একটু করে বুদ্ধিমান ও মেধাবী করে তুলতে হবে নতুন প্রজন্ম।
হ্যাপী রহমান
সিডনি, অস্ট্রেলিয়া
০৯.১০.২০১৭ইং
Related Articles
My Debating Experience
Debating… Many teenagers nowadays want to flush that option out of mind. I know I wanted to. However, when my
আমাদের ফিরে আসা – আর এক জীবনে
ক্যালেন্ডারে ফেব্রুয়ারি মাসের জন্য অপেক্ষা থাকে সব সময়ই। কারণ প্রাণের মেলা বই মেলা হয় এই মাসে। সেই মত এবারেও সেই
Indian Diplomat in a hot soup in New York: Both Sides to Blame
The senior diplomats from Bangladesh India and Pakistan when posted overseas are allowed to take domestic workers but the salary