বাংলাদেশ: অস্ট্রেলিয়া
সৌম্যর ব্যাটিংএর একটা মহামারী ধারা আছে। প্রথমে এক, দুই, তারপরে লং অন বা এক্সট্রা কভার দিয়ে একটা চার বা হটাৎ করে চমকে দেয়া একটা ছক্কা! ব্যাস, তারপর শুরু হয় ডান পা সামান্য বাড়িয়ে বা জায়গায় দাঁড়িয়ে ব্যাটকে বড়শির মতো এইয়াংলিং করা। সৌম্যর গত পনেরোটা আউট দেখেন, সে আউট হয়েছে উইকেটের পেছনে বা পয়েন্ট এ- খুব সহজ ক্যাচ উপহার দিয়ে। প্রতিপক্ষের কাছে সৌম্য একটা পড়া বই। ডান হাতি পেস বোলার, দুইটা-তিনটা স্লিপ রাখছে কেন? গতকাল ওয়েড তার বায়ে ঝাঁপিয়ে যে ক্যাচটা নিলো ঐটা তো আসলে ফার্স্ট স্লিপের ক্যাচ। সৌম্যর গতকালের আউট দেখে আমার আবারো গত বিশ্বকাপে MCG তে শ্রীলংকার বিপক্ষে তার আউট হওয়া মনে করিয়ে দিলো। সৌম্য স্লিপ এবং গালি দিয়ে দুইটা বা তিনটা চার মারলো। তারপর কুমারা সাঙ্গাকারা দুইটা স্লিপ রেখে তার বোলারের সাথে কিছু পরামর্শ করলো। বুঝাই যাচ্ছিলো আউটসুইং এর পরামর্শ। ঠিক তার পরের বলটা সৌম্য ওই স্লিপ দিয়ে বের করে চার নেয় কারণ স্লিপের ফিল্ডার সম্ভবত ক্যাচ মিস করেছিল। পরের বল একই কায়দায় মারতে গিয়ে সৌম্য স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরে আসে, বাংলাদেশ এক বিদিকিচ্ছিরি অবস্থায় পড়ে যায়, কারণ আমরা বাহির থেকে চা নিয়ে প্রবেশ করতেই দেখি তামিম নুডলস রান্না করতে চলে গেছে। মাঠে আমরা চার বন্ধু বসেছিলাম একসাথে, সবাই সৌম্যর ক্রিকেটের বেসিক নিয়ে বলাবলি করছিলাম। সৌম্য দেখতে পেলো কুমারা তিনটা স্লিপ দাঁড় করিয়েছে, তারপরেও সে স্লিপ দিয়েই বাউন্ডারি মারতে চাইলো…., একটাবার ভাবলো না যে তিনটা স্লিপ তো সৌম্যর ব্যাটিং দেখতে দাঁড়ায় নাই। এতদিন এতো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেও এই গুলো এখনো মাথায় না খেললে, অন্যকে জায়গা ছেড়ে দাও।
ইমরুল ঘরের মাঠে কেমন খেলে জানি না, তবে সে miserably fails when he needs to deliver. ইমরুল প্রায়শই এমন ক্যাচ দেয় যে ফিল্ডারকে কোনো কষ্ট করতে হয় না, জায়গায় দাঁড়িয়ে ক্যাচ নেয়। ওর ব্যাটিং দেখে একবারও মনে হয় না তার কোনো গেইম প্ল্যান বা ব্যাটিং প্ল্যান আছে। প্রতি বলে যে স্মিথ ফিল্ডারের জায়গা সামান্য অদল বদল করছিলো, আর বোলার সে ভাবেই তার বোলিং সামান্য টেনে বা লাইন বদলে করছিলো, ইমরুলের সেইদিকে কোনো খেয়াল ছিল কিনা সন্দেহ। অস্ট্রেলিয়ান বোলাররাতো একটা প্ল্যান করে বল করছিলো। ইমরুল যে বলে আউট হলো বোলার ইচ্ছে করেই বাউন্স এবং সামান্য ওয়াইড দিলো, কারণ মাঠে ডান থেকে বামে প্রচন্ড বাতাস বইছিলো। ফলে ইমরুলের হাইকাট শর্ট পয়েন্টে না গিয়ে মিড্ উইকেটে সহজ ক্যাচ দেয়। তারপর ইমরুল কব্জি কামড়ে বা ব্যাট মাটিতে আছড়ে বাড়ি ফেরত চলে এলো, কিন্তু দলেরতো সাড়ে বারোটা বেজে গেলো।
মুশফিক এবং তার ভায়রা ভাই মাহমুদুল্লাহ মাঝে মাঝে যে কি করে? মুশফিক জানে তার অবস্থান, সে কেন রিভিউ করলো না? Shakib has past his best – কিছু না বলাই ভালো। ও এখন ক্ষেপ খেলুক। সাব্বির আইলো, একটা শর্ট নিলো, স্মিথের হাতে সোজা ক্যাচ দিলো। নতুন বোলারকে একবার পড়বার চেষ্টা করলো না। মাহমুদুল্লাহ কি করতে চাইছিলো- হাতুরুসিংয়ের উচিত ওকে একান্তে জিজ্ঞাসা করা। তামিমের অনেক পরিপক্কতা দেখা যাচ্ছে, কিন্তু মাঝে মাঝেই মনে হয় তার নুডলস রান্নার কথা মনে পড়ে যায়, আর তখনি হুট্ হাট একটা শর্ট খেলে কেকা আপার কিচেনে চলে যায়। প্রথম খেলাতেও ঐরকম করেছে, গতকালও তাই করেছে। যতটা বেশি রান করবি, ব্যাটা তোর দায়িত্ব ততবেশি। তুই ODI খেলছিস- একটা নতুন ব্যাটসম্যান এসে সেট হতে হতে এক ওভার শেষ হয়ে যায়, তুই তো সেট হওয়া ব্যাটসম্যান, উল্টাপাল্টা শর্ট নেবার দরকার কি? দলের প্রয়োজনেই তো তোর থাকা দরকার। ভুল শর্টের জন্য এদের পারিশ্রমিক কেটে নেয়া দরকার। খুব শ্রদ্ধা ভরেই বলছি যে মাশরাফি কি দিন দিন অপ্রয়োজনীয় হয়ে যাচ্ছে?
অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং দেখি নাই, ঘুমিয়ে পড়েছি। বৃষ্টি বাংলাদেশকে একটা পয়েন্ট দিয়েছে, কিন্তু এই অগৌরবজনক পয়েন্ট দিয়ে কি হবে? আবহাওয়ার উপর ভর করে শেষ চারে….. আসলে বাংলাদেশ তো প্রথম খেলা থেকেই দুই পয়েন্ট পেতে পারতো।
Related Articles
Article on Naimul Islam Khan
নাঈমুল ইসলাম খান : যিনি নিজ পেশায় স্বকীয় চলামান জীবনে সংবাদপত্রের গুরুত্ব অপরিসীম। সংবাদপ্ত্র পৃথিবীকে মানুষের মুঠোর মধ্যে নিয়ে এসেছে।
ইতিহাস গড়েছে টাইগারস
দ্য সিডনি মর্নিং হেরাল্ড – অস্ট্রেলিয়ার সর্ববৃহৎ জাতীয় অনলাইন নিউজ ব্র্যান্ড আজকের খেলার খবরে হেড লাইন: বাংলাদেশ বনাম অস্ট্রেলিয়া: ইতিহাস
Foreign Secretary’s visit to Myanmar: A productive outcome
The recent visit of Bangladesh Foreign Secretary to Myanmar for two days from 13 to 15 June is timely and