নজরদারিতে প্রধান বিচারপতি!

নজরদারিতে প্রধান বিচারপতি!

ফজলুল বারী: অস্ট্রেলিয়া এসেও বাংলাদেশ সরকারের নজরদারিতে আছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র নাথ সিনহা! এখানকার প্রবাসী বাংলাদেশি সূত্রগুলোর ধারনা তাই। দু’ সপ্তাহ ধরে ছুটিতে অস্ট্রেলিয়া এসে ব্রিসবেনে মেয়ের বাসায় আছেন প্রধান বিচারপতি। কিন্তু এই দু’ সপ্তাহে এখনও একবারও তিনি সে বাড়ির বাইরে বেরোননি! অস্ট্রেলিয়া এসে তার চিকিৎসার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু এই দু’ সপ্তাহে তিনি এখানকার কোন ডাক্তারের কাছেও যাননি! স্থানীয় সূত্রগুলো বলেছে তার প্রতি বাংলাদেশ সরকারের নজরদারি অথবা আক্রোশ তার ব্রিসবেন নামার পর থেকেই প্রকাশ পেতে শুরু করে।

গত ১৪ অক্টোবর প্রধান বিচারপতি ব্রিসবেন পৌঁছেন। এখানকার রানকন এলাকায় তার মেয়ে সূচনা সিনহার বাড়ি। এলাকাটি ব্রিসবেনের কেন্দ্র থেকে প্রায় ১৪ কিঃমিঃ দূরে। প্রধান বিচারপতির আগমন উপলক্ষে ক্যানবেরা থেকে বাংলাদেশ হাইকমিশনের এক কর্মকর্তা ব্রিসবেন আসেন। এই কর্মকর্তা ব্রিসবেন আসার আগেই স্থানীয় বাংলাদেশ এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দকে যে বার্তা দেন তাতেই তারা বুঝে ফেলেন বাংলাদেশ সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি! তাদের বলে দেয়া হয় প্রধান বিচারপতির আগমন উপলক্ষে তারা কেউ যাতে বিমান বন্দরে না যান! তাকে যাতে কোন সম্বর্ধনা বা তাকে নিয়ে যাতে কোন অনুষ্ঠানের চেষ্টা করা না। অথচ এর আগে প্রধান বিচারপতি যখন ব্রিসবেন আসেন বাংলাদেশ এসোসিয়েশনে উদ্যোগে তাকে সম্বর্ধনা দেয়া হয়েছিল। অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড রাজ্যের রাজধানী ব্রিসবেনের বাংলাদেশ কমিউনিটি সিডনি বা মেলবোর্নের মতো বড় নয়। দেশি রাজনীতির দলাদলিও সেখানে কম। সিডনির বাংলাদেশ এসোসিয়েশন বিএনপির লোকজনের নিয়ন্ত্রনে। ব্রিসবেনের এসোসিয়েশন সে রকম নয় বলে তাদের কথা শোনাতে হাইকমিশনের বেগ পেতে হয়নি। হাইকমিশন যা বলেছে তা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলেছে এসোসিয়েশন।

অতএব হাইকমিশনের কথা শোনে এসোসিয়েশনের প্রধান নেতারা সেদিন বিমান বন্দরে যাননি। মাহমুদুল ইসলাম খান নামের এসোসিয়েশনের এক কমিটি সদস্য হাইকমিশনের এই নিষেধাজ্ঞার কথা জানতেননা। ব্যক্তিগত ভাবে তিনি বিমান বন্দরে গিয়েছিলেন। দেশের আলোচিত প্রধান বিচারপতির ব্রিসবেন পৌঁছার দৃশ্য, নাতিকে আদরে জড়িয়ে ধরার দৃ্শ্য তিনি ফেসবুকে লাইভও করেছিলেন। কিন্তু তার সেই লাইভ ভিডিও পরে ডিলিট করানো হয়েছে! নিষেধাজ্ঞার কারনে প্রধান বিচারপতি পিতাকে অভ্যর্থনা করে বাড়ি নিয়ে আসতে বিমান বন্দর যাননি তার মেয়ে সূচনা সিনহা। গিয়েছিলেন তার আইটি প্রকৌশলী স্বামী। কিন্তু প্রধান বিচারপতিকে মেয়ের বাড়ি যেতে হয়েছে হাইকমিশনের গাড়িতে! ওই সময় তাকে যে সরকারি বার্তা দেয়া হয় তা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা! দেশে তাকে নিয়ে এতো হৈচৈ! তার দুর্নীতি নিয়ে সুপ্রীমকোর্ট নজিরবিহীন বিবৃতি দিয়েছে! সহকর্মী বিচারপতিরা বলেছেন তার সঙ্গে এজলাসে বসবেননা! কিন্তু এসব নিয়েও নিশ্চুপ প্রধান বিচারপতি! মিডিয়ায় মুখ খোলা দূরে থাক, অস্ট্রেলিয়া আসার দু’ সপ্তাহে এখন পর্যন্ত মেয়ের রানকনের বাড়ি থেকেও বেরোননি! বাংলাদেশ কী তার একজন প্রধান বিচারপতির পরিণতি জানে?


Place your ads here!

Related Articles

আমি একজন বাংলার যিশু চাই

আমি একজন বাংলার যিশু চাই আমি শুধু একজন বাংলার যিশু চাই যে যিশু ক্রুশবিদ্ধ হবেন, শুধুই বাংলার পাপ মোচনে আমি

ক্যানবেরায় দুর্গোৎসব হোক নতুন প্রজন্মের স্বার্থে

অজয় কর: বাঙালী হিন্দুদের সবচাইতে বড় ধর্মীয় উৎসব হচ্ছে ‘দুর্গোৎসব’। গতবারের মতো এবারেও ক্যানবেরায় বাংলাদেশী হিন্দুদের সংঠন ‘বাংলাদেশ-অষ্ট্রেলিয়া পুজা এসোসিয়েশন

Tahara – A documentary

Trailer of our documentary – ‘Tahara’ is going to showcase true stories and memories of some outstanding Australians who lead

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment