আপেল মাহমুদ, ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ ও ক্যানবেরা ২০১৭

আপেল মাহমুদ, ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ ও ক্যানবেরা ২০১৭

ইতিহাসবিদ মুনতাসির মামুন আজন্ম রাজাকার এবং একদা মুক্তিযুদ্ধা অধুনা রাজাকার নিয়ে অনেক মন্তব্য করেছেন। মুক্তিযুদ্ধ করেছে কিন্তু পরবর্তীতে হালুয়া-রুটির জন্য রাজাকরে পরিণত হওয়া নিয়ে বলতে গিয়ে উনি বলেছিলেন, “যে একবার রাজাকার সে আজীবন রাজাকার, কিন্তু যে একবার মুক্তিযুদ্ধা সে আজীবন মুক্তিযুদ্ধা নয়”। ১৯৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সাথে জড়িত শিল্পী আপেল মাহমুদ হচ্ছে সেইরকম হালুয়া রুটি খাওয়া কনভার্টেড রাজাকার। ‘মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি… এমন একটা গান সেই সময়ে মুক্তিযুদ্ধা এবং মুক্তিকামী গোটা বাঙালি জাতিকে দারুন অনুপ্রাণিত করেছিল কোনো সন্দেহ নাই।

স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু এবং তার সরকার থেকে কি সুবিধা সে পায় নাই- আপেল মাহমুদকেই জিজ্ঞাসা করেন। অথচ খুনি মেজর ডালিম বাহিনী যখন বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারের সবাইকে খুন করে শাহবাগের রেডিও স্টেশনে (সে সময় বাংলাদেশ বেতার) যায় তখন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ব্রডকাস্ট কক্ষের তালা খুলে দিয়েছিলো এই আপেল মাহমুদ। ডাকসু ১৯৮০’র সাহিত্য সম্পাদক, বর্তমানে বাংলাদেশ সংবাপত্র ফেডারেল উনিয়নের সভাপতি জাফর ওয়াজেদের লেখায় জানা যায় যে খান আতাউর রহমানের নেতৃত্বে আপেল মাহমুদ গং নতুন বাংলাদেশ টাইপের গান লেখা শুরু করে এবং প্রচার শুরু করে। ডালিমের বক্তব্য লেখার জন্য কাগজ কলম সরবরাহ এবং বক্তব্যের মুসাবিদা করে এই আপেল মাহমুদ। বঙ্গবন্ধুর সব রেকর্ড আর্কাইভ থেকে মুছে ফেলার হোতাদের একজন হলো এই আপেল মাহমুদ। ১৯৮১ তে ‘মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি… , গানের প্রতি উত্তরে আপেল মাহমুদ তার সেই জিয়া স্টাইলের গগলস চোখে লাগিয়ে গেয়েছিল, “আমি সেই একটি ফুলকে বাঁচানোর যুদ্ধা….। তারপর এরশাদের সময়ে আপেল মাহমুদ আর ফেরদৌস ওয়াহিদরা শিল্পকলা একাডেমির মাতব্বরি পেয়ে কি করেছে সেই সময়ের পত্র পত্রিকা আর যায় যায় দিন খুঁজে দেখতে পারেন।

শুনলাম এই আপেল মাহমুদ ক্যানবেরার কামবাহস্থ এক প্রাইমারি স্কুল অডিটোরিয়ামে গান গাইবে, তাও আবার এই রক্তাক্ত আগস্ট মাসে! বাঙালির রক্তে যে বেইমানির রক্তও বইছে, এইসব হলো তার নমুনা। আমি বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করবো এই অনুষ্ঠানে যেন বাংলাদেশ দূতাবাসের কোনো সংশ্লিষ্টতা না থাকে এই মর্মে আদেশ জারি করতে। যারা এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করছেন তাদের প্রতি আমার কোনো অনুরোধ নাই, শুধু অনুরোধ করবো যাদের রক্তে বিন্দুমাত্র পরিশোধিত রক্ত বইছে, তারা যেন আপেল মাহমুদের এই অনুষ্ঠান বর্জন করেন।

জয় বঙ্গবন্ধু
জয় বাংলা।


Place your ads here!

Related Articles

১৯৭১ ভেতরে বাইরে – একটি নিরপেক্ষ এবং নির্মোহ বিশ্লেষন

মুক্তিবাহিনীর ডেপুটি চীফ অফ স্টাফ, জনাব এ, কে খন্দকার একজন সৎ এবং ভদ্রলোক বলে সুপরিচিত। মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেওয়া চাকুরিরত সামরিক

চলমান সময় জাফর হোসেন

পৃথিবী একটা কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে । দেশে বিদেশে নানান রকমের সমস্যার ঘনঘটা । এক দিকে অন্ন বাসস্থানের সমস্যা

নতুন অভিবাসী ও ফ্রান্স : ওয়াসিম খান পলাশ প্যারিস থেকে

আমি বাংলাদেশের অভিবাসীদের কথাই বুঝাতে চাচ্ছি। প্রবাস বেশ কঠিন জায়গা। বিশেষ করে যারা প্রথম অভিবাসী হন তাদের জন্যতো বটেই। দেশ

2 comments

Write a comment
  1. অজয়
    অজয় 7 August, 2017, 22:49

    আপনার লেখার সাথে পুরোপুরি একমত।

    Reply this comment
  2. Robin Guda
    Robin Guda 9 August, 2017, 11:51

    Just wanted to let everyone know that Dhrupad Australia is not associated with the event or its organisation.

    Reply this comment

Write a Comment