ধলেশ্বরী-5

ধলেশ্বরী-5

গুলশান টু শোলাকিয়া (ভায়া কল্যানপুর)
সমাজটা খুব দ্রুতই বদলে যাচ্ছে । নিজেকে আজকাল পুরনো দিনের মানুষ মনে হয়, নাকি নিজেই পারছিনা এই পরিবর্তনের সাথে তাল মেলাতে। সমাজের শ্রেনি বিননাশটা অচেনা হয়ে যাচ্ছে, পরিচিত মানুষ গুলো বদলে যাচছে , এতো বছরের শেখা ধর্ম,তার মূল্যবোধ, মানবিকতা সব কেমন এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে । কিছুই যেনো মিলছেনা । আমাদের জীবনে ধর্মের যে বিকাশ এবং বিননাশ তা কি হারিয়ে যাচ্ছে ? না কি এক বিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি ।
একদল টকবগে তরুন গুলশান, কল্যানপুর , শোলাকিয়া method এ ধর্মের প্রতিষ্টা চাচ্ছে, সাথে সাথে একদল বেততা গভীর তত্ব দিয়ে যাচ্ছে । পশ্চিমা ধাঁচের ইংরেজি উচ্চারণে বলছে, আমাদের বাবা দাদারা যে ভাবে ধর্ম করে গেছেন তা ভুল, তাদের ভাষায় বেদাত। আমাদের গুরু জনরা তো বাপ দাদাকে সমমান করতেও শিখিয়ে ছিলেন । ধর্মের যে সাম্য, সহমর্মিতা, ভলোবাসা আজ মনে হচ্ছে এসব মূল্যহীন । আমাদের এই উপমহাদেশে ধর্মের বিকাশ কি হয়ে ছিলো চাপাতির জোরে না ভালোবাসায়? মোগলরা যদি তোমাদের চাপাতি তত্বটা ব্যাবহার করতো তাহলে কি একজনও অন্য ধর্ম বিশ্বাসী খুঁজে পাওয়া যেত আজ ভারত বর্ষে।
আর করেনি বলে কি ধর্মের আবেদন কোন অংশে কমে গেছে? পীর মুরশিদ আর আউলিয়াদের মাধ্যমের আমাদের ধর্মের বিকাশ আমাদের ভূখন্ডে আর আজ বলা হচ্ছে এসব গ্রহণ যোগ্যনা । ছেলেবেলা স্কুলের মৌলবী স্যার
শিখেছিলাম, নিজের রিপুর বিরূদ্ধে জিহাদ করাটা হচ্ছে কঠিন জিহাদ, আমার সন্দেহ হয় আজকালকার বিজ্ঞজনরা এসব বলেন কিনা আর যদি বলতো তা হলে আমি নিশ্চিত ওই টকবগে তরুনরা তারাবি নামাজ বাদদিয়ে চাপাতি তত্বের এতো সুন্দর প্রয়োগ দেখাতোনা, সেদিন গুলশানে। আমাদের হাজার বছরের ইতিহাসে শ্রেনি বৈষম্যের অনেক প্রমান পাওয়া যায়, উচ্চ বিত্ত, নিম্ন বিত্তের ভেদাভেদ, জমিদার আর প্রজার হাহাকার, আমাদের ইতিহাসের একটা বরো আংশ যুরে কিন্তু তারপরও ইতিহাসই প্রমানদেয় কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছারা ধর্মের সহাবস্থান ভারতবর্ষে সব সময়ই ছিলো। আর আজ এক সাথে থাকাতো দুরের কথা মতের অমিল হলেই চলে আসছে চাপাতির ব্যবহার। শুকায়ে যাওয়া ধলেশ্বরীর মত ভালোবাসাও কি শুকায় যাচ্ছে আমাদের জীবন থেকে? চারিদিকে শুধু ভালোবাসার আকাল ।
মাকসুদ আলম
আগস্ট ২০১৬


Place your ads here!

Related Articles

ভার্চুয়াল চিঠি (পর্ব – এক)

একটা নতুন বইয়ের কাজে হাত দিয়েছি … কাজটা একটু অন্যরকম , ইনবক্সে আজকাল ভার্চুয়াল প্রেমের চিঠি ফেসবুক কিম্বা হুয়াটসআপস এ

ফাঁসির মঞ্চ যুদ্ধাপরাধী সাঈদিকে ডাকছে

ফজলুল বারী: ১৯৮৭ সালে প্রকাশিত সাপ্তাহিক বিচিন্তায় প্রতি সপ্তাহে রাজাকারদের তালিকা ছাপা হচ্ছিল। এই তালিকাটি ছিল আমার সারাদেশ পায়ে হেঁটে

দেশের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোও এখন জঙ্গি তৈরির কারখানা

ফজলুল বারী : হলি আর্টিজান হামলার ঘটনায় সাত জঙ্গির ফাঁসির আদেশ হয়েছে বিচারিক আদলে। আদালতকক্ষে জঙ্গিরা হাসিখুশিই ছিল। আদালত কক্ষে

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment