ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদা আওয়ামী লীগের ছায়াতলে

ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদা আওয়ামী লীগের ছায়াতলে

ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদাকে পাশে বসিয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা ছবি তুলেছেন এটি ভালো লাগেনি। কারন আওয়ামী লীগের অবস্থা নিশ্চয় এতোটা খারাপ হয়ে যায়নি। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের অন্যতম বিতর্কিত, দূরনীতিবাজ চরিত্র এই নাজমুল হুদা। তার বিরুদ্ধে থাকা দূরনীতির মামলাগুলো থেকে রেহাই পেতে তার আওয়ামী লীগের আশ্রয় দরকার ছিল। আওয়ামী লীগের আরেক বিতর্কিত চরিত্র শেয়ার বাজার লুটেরা সালমান এফ রহমানের আপন চাচা এই নাজমুল হুদা। তার আওয়ামী লীগের আশ্রয়ের ব্যবস্থার দরবেশ চাচা তথা সালমান এফ রহমানের ভূমিকা থাকতে পারে।

জিয়াউর রহমানের হাত ধরে নাজমুল হুদা রাজনীতিতে আসেন। বিভিন্ন সময়ে তাকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার পরে আবার ফিরিয়ে নেয়া হয়। সর্বশেষ বিএনপি আমলে তিনি যোগাযোগ মন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু নেপথ্যে তখন যোগাযোগ মন্ত্রণালয় চালাতেন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে কোকো। ভারত থেকে সিএনজি অটো রিকশা আমদানির নামে কোকো-হুদা মিলে তখন আজান দিয়ে দূরনীতি করেন। এতে করে সিএনজি অটো রিকশার দাম এত বেশি পড়ে যে এগুলো গলাকাটা ট্রান্সপোরট হিসাবে রাস্তায় নামে। এগুলো আজও যাত্রীদের গলা কাটছে। যোগাযোগ মন্ত্রী থাকতে নাজমুল হুদা ঢাকার আনন্দ নগরে রেলওয়ের মূল্যবান জমি তার স্ত্রী সিগমা হুদার এনজিও জাতীয় মানবাধিকার সংস্থাকে দিয়ে দেন। এমন অনেক আকাম-দূরনীতির অভিযোগে তাকে গত তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে গ্রেফতার করা হয়।

একবার লন্ডনে গিয়ে শুনলাম তার অনেক কীর্তি! লন্ডনের এক বিএনপি নেতার মাধ্যমে তিনি দূরনীতির টাকা সেদেশে পাচার করতেন। একদিন আমি লন্ডনে আমার এক বন্ধুর ভাড়া বাড়িতে গেলাম। সে তখন জানায় বাড়িটির মালিক নাজমুল হুদা। এরপর সে তার বাড়ির বাইরের রাস্তায় নিয়ে দেখায় পাশাপাশি তিনটি বাড়ি । যেগুলোর সব ক’টির মালিক নাজমুল হুদা! বিদেশে যারা বাড়ি কেনেন তারা কিছু টাকা জমা দিয়ে দীর্ঘ মেয়াদের ব্যাংক ঋন তথা মর্টগেজের মাধ্যমে বাড়ি কিনেন। এসব কিস্তি শোধ করতে হয় তিরিশ বছরে। একমাত্র লটারি জেতা ছাড়া নগদ টাকায় বাড়ি কেনা তার পক্ষে সম্ভব না। নাজমুল হুদা বাংলাদেশের মন্ত্রীততের লটারি জিতে গিয়েছিলেনতো! তাই বাডিগুলো কিনেছিলেন নগদ টাকায়! লন্ডনের বাংলাদেশি কমিউনিটির এক প্রভাবশালী সিনিয়র সাংবাদিক একদিন সেখানকার এক বিএনপি নেতার সংগে পরিচয় করিয়ে দেন। ওই নেতা চলে যাবার পর আমাকে বলা হয়, এই নেতার মাধ্যমে নাজমুল হুদা টাকা পাচার করতেন! এক পর্যায়ে পাচারের বড় একটি অংশের টাকা মেরে দেন ওই নেতা! কিন্তু চুরির টাকাতো তাই ব্যারিষ্টার হয়েও নাজমুল হুদা এ নিয়ে কোন হৈচৈ করতে পারেননি! কিন্তু ঘটনাটি সেখানকার বিএনপি মহলে ওপেন সিকরেট! সেই নাজমুল হুদা লন্ডনে তারেক রহমান, দেশে ফিরে খালেদা জিয়ার সংগে দেখা করে কী কারনে বিএনপি থেকে বেরিয়ে গেলেন, এখন আবার আওয়ামী লীগের ছায়াতলে এলেন তা হয়তো জানা যাবে আগামীতে ।

 


Place your ads here!

Related Articles

এসো হে বৈশাখ- প্রবাসে বাঙালি জাতিসত্তার স্মারক নববর্ষ উৎসব

কালচক্রে বিশ্বনিখিলে অবশ্যম্ভাবী পরিবর্তন নিয়ে সৃষ্টি ও সংহারের কঠিন বাস্তবতায় আসে দুঃখ-বেদনা, আসে উৎসব আনন্দ, আসে চার হাজার বছরের পুরনো

১৯৭১ ভেতরে বাইরে – একটি নিরপেক্ষ এবং নির্মোহ বিশ্লেষন

মুক্তিবাহিনীর ডেপুটি চীফ অফ স্টাফ, জনাব এ, কে খন্দকার একজন সৎ এবং ভদ্রলোক বলে সুপরিচিত। মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেওয়া চাকুরিরত সামরিক

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি কি সুদ মুক্ত সমাজ চান?

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি আপনি সংসদে দাঁড়িয়ে বেশ কিছু গুরুতপূর্ণ কথা বলেছেন। দৈনিক আমাদের সময় বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ড. মোহাম্মদ

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment