প্রবাসী সংগঠনগুলো থেকে প্রবাসীদের প্রত্যাশা !

সকল প্রবাসী সংগঠক ,নেতা ,কর্মী সুশীল ও গুনীজন সমীপে –
দেশীয় সংস্কৃতিকে লালন করাই হোক অথবা প্রবাসের সামাজিক জীবনে পরিবর্তনের ছোঁয়া নিয়ে আসাই হোক, – উদ্দেশ্যের রকমভেদ থাকলেও বিভিন্ন সংগঠনের সাথে আমরা প্রত্যেকেই কোন না কোন ভাবে জড়িত। আর এসব সংগঠনের কোনটা ‘অলাভজনক সংগঠন’, আবার কোনটা ‘সাধারণ লাভজনক’ সংগঠন হিসেবে প্রবাসে তাঁদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকে প্রতিনিয়ত। তবে, আজ অনেকেরই প্রশ্ন – যে সংস্কৃতিকে বুকে লালন করে অথবা যে মাটির কোলে আমাদের ‘আমিত্বের’ সূচনা – সেই দেশ ও এর অগণিত অসহায় মানুষের উন্নয়ন কল্পে এসব প্রবাসী সংগঠনগুলো কতটুকু ভূমিকা রাখে?
১৯৮৫ সাল থেকে আমার প্রবাস জীবনে গোটা বিশ্বের প্রায় সব জায়গায় দেখেছি বাঙ্গালীদের কোন না কোন সংগঠন প্রবাসে বিদ্যমান। ঐ সংগঠনগুলোর মাধ্যমে প্রবাসে কোন না কোন অনুষ্ঠান হচ্ছে। কেউ কেউ পাক্ষিক, কেউ বা মাসিক। কেউ তিন মাসে, ছয় মাসে আবার কেউ বা বছরে একবার বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান করে থাকে। বাংলাদেশের বিশেষ বিশেষ দিনগুলির সাথে মিল রেখে প্রবাসে বেশীর ভাগ অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। যেমন নববর্ষ বা বৈশাখী মেলা, বই মেলা, ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২৬ শে মার্চ, মে দিবস, ১৫ ই আগষ্ট, ৭ই নভেম্বর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ঈদ পুনর্মিলনী বসন্ত মেলা – আরও কত কি! এ ধরনের গুরুত্বপূর্ন দিনগুলো ছাড়াও আরো অনেক দিনকে সামনে রেখে ঘটা করে অনুষ্ঠান করে থাকে প্রবাসের বাঙ্গালীরা।
প্রায় প্রতিটি অনুষ্ঠানকেই সফল ও সার্থক করার উদ্দেশ্যে একটা বাজেট করতে হয় প্রতিটি সংগঠনকেই। ‘লাভজনক’ হোক অথবা ‘অলাভজনক’ অনুষ্ঠান – অর্থের লেনদেনের ভাবনা থাকবেই প্রতিটি সংগঠনের প্রত্যেক অনুষ্ঠান উদযাপনের পেছনে। শীতের পিঠা, ঐ শিল্পীর গান, সেই শিল্পীগোষ্ঠীর জন্য টিকেট বিক্রি ছাড়াও বিভিন্ন রকম ও ধরণের নিত্য-নতুন আমেজে প্রবাসী অনুষ্ঠানের প্রচলন চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। প্রবাসে যেন আজ বারো মাসে তেরো অনুষ্ঠান! আর স্বাভাবিকভাবেই বড় অনুষ্ঠানের আয়োজনের বাজেটও বড় আকারের হওয়ার কথা। বড় বাজেট – বড় মুনাফার নির্দেশকও নিঃসন্দেহে!
তবে, মুনাফা নির্ধারণ আমার উদ্দেশ্য নয়। আমার উদ্দেশ্য সামান্য পরিমাণে হলেও এর যথার্থ ব্যবহার। ঐ যে, শুরুতেই বলেছিলাম, যে সংস্কৃতিকে বুকে লালন করছি অথবা যে দেশের মাটিতে আমার মূল প্রোথিত, – তার ঋণ শোধের কিছুটা হলেও প্রচেষ্টা করা। আমার মূল উদ্দেশ্য, এটাই অনুরোধ করা যে, এ ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজক নেতা-কর্মী, উদ্যেক্তরা যেন দেশের উন্নয়নে অর্থ অনুদান হিসেবে প্রদানের মাধ্যেমে এগিয়ে আসেন। আগামীতে প্রতিটি অনুষ্ঠানের বাজেট বা লভ্যাংশ থেকে কিছু অংশ যদি দেশের উন্নয়নে খরচ করার সিদ্ধান্ত উদ্যোক্তারা নিতে পারেন, – সেটা হবে আমাদের দেশ পরিবর্তনের বেশ বড় এক সিদ্ধান্ত! যে কোন একটি সংগঠন যদি এক্ষেত্রে প্রকাশ্য ঘোষণার মাধ্যমে এগিয়ে আসে, তবে অন্যরাও উৎসাহিত হবে সেই প্রকাশ্য ঘোষণায়। আর আমরা সাধারণ প্রবাসীরা ‘জেনেশুনে সিদ্ধান্ত নিতে পারবো’ – কোন সংগঠনের অনুষ্ঠানকে আমরা পূর্ণ সমর্থন দেবো।
আসলে, দেশের চেহারা পরিবর্তন করতে পারাটা সময়ের ব্যাপার মাত্র। প্রবাসে বসেও আমাদের অনেক কিছুই করার আছে দেশের জন্যে। প্রবাসী সংগঠনগুলো এক্ষেত্রে বেশ বড় ধরণের এক ভূমিকা নিতে পারে নিঃসন্দেহে। আর সেই সাথে প্রতিটি প্রবাসী বাংলাদেশী ভূমিকা রাখতে পারে দেশ গঠনে, দেশের অসহায় মানুষের মুখে হাসির রেখা এঁকে দিতে। যেমন অনেক এলাকায় রয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট, অনেক এলাকায় মানুষ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত, তাই প্রত্যেকটা সংগঠনের উচিৎ তারা বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে যে সকল অর্থ উপার্জন করে থাকে তার একটি অংশ যেন বাংলাদেশের পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর জন্য ব্যাবহার করে তাদের ভাগ্য উন্নয়নে সহায়তা করে। আজ থেকে আমরা প্রবাসীরা অপেক্ষায় থাকলাম – প্রবাসী সংগঠনগুলোর এমনই এক সদিচ্ছার ঘোষণা শোনার প্রত্যাশায়।
এম এ ইউসুফ শামীম, সুপ্রভাত সিডনি www.suprovatsydney.com.au
Related Articles
Prime Minister Sheikh Hasina'sTrip to Nigeria to attend the Summit of D-8 Countries
Prime Minister Sheikh Hasina left Dhaka for Abuja (capital city of Nigeria) in the early hours of July 7 to
Few ways to reduce private car in Dhaka city
ঢাকা শহরে প্রাইভেট গাড়ী কমানোর কয়েকটি পন্থা সূচনাঃ ঢাকা শহরের যানজট সমস্যা সমাধানের একটি অত্যন্ত সহজ এবং কার্য্যকরী উপায় হচ্ছে
জীবন ভ্রমন ১৭, ১৮ :
জীবন ভ্রমন ১৭ : ধুম পান স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর । একবার রাস্তার পাশে এই রকম একটা লেখার নিচে দাড়িয়ে