নারীবাদী নই সাম্যবাদী

নারীবাদী নই সাম্যবাদী

নারীবাদী কথাটার সাথে কেমন যেন পুরুষ বিদ্বেষী ভাব লাগে। আমি কোন সৃষ্টি-বিদ্বেষী হতে চাই না। আমি সাম্য চাই, আমার যেটুকু প্রাপ্য তা যেন অন্যের চেয়ে কম করে দেখা  বা ভাবা না হয়। যখন বলা হয় একজন পুরুষ নারীর জীবনে কি কাজে আসে, তখন একজন পুরুষও তেমনি তা-ই বলবে… আর এ বলাবলির দ্বন্দ্ব পালটা পালটি চলতে থাকবে। একথা মেনে নিয়েই বলছি যে- শুরুটা আমরা করিনি, আমরা চিরকালের নিগৃহীত। শ্রী বঙ্কিমচন্দ্রের অমর পংক্তি “তুমি অধম তাই বলিয়া আমি উত্তম হইব না কেন” – আমি অধমের দলে না গিয়ে উত্তমের দলে ভীড়তে চাই।

কোন কোন নারী চিৎকার করা বা গালি দেওয়াকে উৎসাহিত ও অনুপ্রানিত করেন দেখেছি। আবার ইদানিং একটা ট্রেন্ড দেখছি ট্যাবু ভাঙ্গার নামে নারী সংশ্লিষ্ট অনুসঙ্গকে সহজ প্রচলনের চেষ্টা। ব্যক্তিগতভাবে একমত নই।

আজ ওড়না না পরাটাকে যদি ট্যাবু ভাঙ্গার প্রক্রিয়া মনে হয় কাল পোশাকটাকেই অবাঞ্ছিত লাগতে পারে, পরশু হয়তো আদিম যুগে পৌঁছে গিয়ে নিজেই ট্যাবুর জগতে চলে যাব! আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি আছে, আছে পরিচ্ছেদ- থাকুক না আমাদের মতই।
এমনকি ওয়েস্টার্ন পোশাকগুলোতেও তো লেডিস জেন্টস আছে- যতই তা প্যান্ট-শার্ট হোক না কেন! কারনটাও একেবারেই প্রাকৃতিক, গঠন অনুযায়ী পোশাক আলাদা কাটিং এর না হলে সৌন্দর্যহানি ঘটে।

তেমনি ব্যক্তিগত পোশাক, অনুসঙ্গ ও বিষয়াবলীর অহরহ প্রচলনও আমার শোভন মনে করি না। জানি না, এসবের প্রচলন করানো কি নারীবাদের নব্য ধারা কিনা! এ কথাগুলোর প্রচলন হলেই বা কি আমরা কি অধিক সম্মানিত হয়ে যাব! যা কিছু প্রাকৃতিক তা থাকুক না সে অনুযায়ী ক্ষতি তো হচ্ছে না কারো, না  বঞ্চিত হচ্ছে কারো অধিকার!

কেবলমাত্র  কাঠামোগত শারীরিক পার্থক্যের কারনে সুবিধা বঞ্চিত হবো এটা ভাবতেই পারি না। যা প্রাকৃতিক তা একেবারেই প্রকৃতি প্রদত্ত একে অবজ্ঞা করা কিচ্ছুটি নেই, বরং সম্মান জ্ঞাপন পূর্বক কিছু বিষয়াবলী থেকে থাকে। বলা যেতে পারে কর্ম ক্ষেত্রে মাতৃত্বজনিত সুবিধাদির কথা। আবার, বাসে কেউ আমার জন্যে নিজের আসনটি ছেড়ে উঠে দাঁড়ালে আমি অপমানিত হই না, বরং সম্মানিত বোধ করি, আর যিনি দাঁড়ালেন তাঁকেও ভদ্রতা করলেন বলে মনে করি।
এখন কথা হলো, আমি যদি প্রাকৃতিক কারণ মেনে নিয়ে কিছু সুবিধা পেয়ে থাকি, তবে একই কারনে পোশাক বা অনুসঙ্গ নিয়ে এত উদ্বিগ্ন হবারই বা কি আছে! তাছাড়া পোশাক-পরিচ্ছেদ আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলেও মনে হয় না কখনো। আমি মনে করি এসব সামান্য বিষয়ের বদলে নিজের বুদ্ধিমত্তা, কর্ম, জ্ঞানচর্চার উৎকর্ষ সাধনে সময় দেয়ার চেষ্টাকে শ্রেয় মনে করি। আর এসবেই মধ্য দিয়ে নিজের তথা স্বজাতির উন্নয়ন সম্ভব বলে আশা করি।


Place your ads here!

Related Articles

বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দানের আহবান

জাতিসংঘে’র কাছে  বাংলাদেশের বর্তমান প্রধান মন্ত্রি শেখ হাসিনা বাংলাকে জাতিসংঘের  দাপ্তরিক ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দানের আহবান জানিয়েছেন। গত ২১ ফেব্রূয়ারী ২০১৬ কেনবেরাতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলখ্যে ‘একুশে রেডিও’র সাথে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে অস্ট্রেলিয়াতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাস্ট্রদুত হিজ   এক্সিলেন্সি কাজী ইমতিয়াজ  হোসাইন বলেন, বাংলাভাষাকে বাংলাদেশের  সর্বস্তরে চালু করার সরকারী পদক্ষেপের পাশাপাশি বাংলা ভাষার  আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের জন্যে জাতিসংঘে’র কাছে  প্রধান মন্ত্রি শেখ হাসিনা বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দানের আহবান জানিয়েছেন। বিশ্বজুরে বাংলা ভাষার ব্যপক ব্যপৃতির প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে রাস্ট্রদুত  হোসাইন বলেন, বর্তমানে বিশ্বের প্রায় দুই তৃতীয়াংশ দেশে বাংলা ভাষা ভাষি লোকেদের বিচরন রয়েছে। এসব দেশে বাংলা’র প্রচলন ও চর্চার মধ্যে দিয়ে বাংলাকে আরো  ব্যপৃত করার সুজোগ রয়েছে। বাংলা ভাষার মধ্য দিয়ে বিশ্বে বাংলাদেশের পরিচয় আরো নিগুড় হবে বলে তিনি মনে করেন। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে’র স্বার্থকতা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি বলেন ১৯৯৯ সালে  এউনেস্কো ২১ ফেব্রূয়ারী’কে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে ঘোষনা করার পর পৃথিবীর সর্বত্রই  সব ভাষাভাষির লোকেরা গর্বের সাথে  এই দিন টিকে উদযাপন করে আসছে।মাজিক কর্মকান্ড সহ জন জীবনের প্রতিটি কাজে ভাষার প্রয়োজনীয়তাটাকে  স্মরন করার একাটা সুজোগ করে দিয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন। বাংলাকে সর্বস্তরে চালু করার সরকারী উদ্দোগ থাকা স্বত্তেও ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানে বাংলাভাষার ব্যবহার তেমনভাবে  দেখা যায় না কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন- বাংলাদেশ একটা রপ্তানী মুখী দেশ। আর ব্যাবসায়িক 

গুলতেকিন ভালো থাকলে ওপারে হুমায়ুন আহমেদও ভালো থাকবেন

ফজলুল বারী: গুলতেকিনের দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে নেটিজানরা এখন বিশেষ তৎপর। কারন গুলতেকিন নামটার সঙ্গে হুমায়ুন আহমেদের নাম জড়িত। বাংলাদেশের সমকালীন

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment