জীবন ভ্রমন ১, ২
জীবন ভ্রমন ১ & ২ :
জীবন ভ্রমন ১ :অনেক সময় মনে হয় কোথায় জন্মেছি , কোথায় বড় হয়েছি , আর কোথায় থাকি । ১৯৭২ সালের জুলাই অগাস্ট মাস । ঢাকায় আগমন । যুদ্দ্ব বিধ্বস্ত ঢাকা । মতিঝিলে সরকারী একটি ডাকবাংলায অস্থায়ী আবাসন দেওয়া হয় আব্বাকে । সন্ধার পর একটা ভুতুরে ভাব ছিল । নির্দেশ ছিল রাত সাতটার পর দরজা খোলা যাবে না । এই বাংলায় কিছু সরকারী সম্পত্তি ছিল । গেট টপকিয়ে ভিতরে ঢুকে পিছনের দরজা খোলার জন্য দমক দিত । টিন শেড বিল্ডিং । টয়লেট ও বাথ রুম ছিল বাহিরে । এক রাতে টয়লেট এ যাই । টিনের চালে শব্দ শুনে ভয়ে ঘরে ঢুকে যাই । সকালে দেখি ছাদ বিহীন টয়লেট । গুলির শব্দ শুনে আববা এক রাতে দরজা খুলে দেয় । অনেক কিছু নিয়ে যায় । । জনৈক বিহারী চলে যাওয়ার পর আববা একটা বাসা পায় । শুনেছি আমাদের আগে দুইজন অফিসার এই বাংলায় ছিল। দুই তিন মাসের ঘটনা বহুল ডাকবাংলোর ছোট কাল । (অসমাপ্ত )
জীবন ভ্রমন ২ : ১৯৭২ সালের যুদ্ধ বিধ্বস্ত ঢাকা আর বর্তমান ঢাকার স্ট্রাকচারাল ব্যবধান আকাশ-পাতাল । মতিঝিল ,আরামবাগ ,শাজাহানপুর, পল্টন, শান্তিনগর এলাকায় খাদ-খন্দক বিহীন ২০০ মিটার রাস্তা পাওয়া দুষ্কর ছিল । বর্তমান ইট- পাথরের সভ্যতা আর তখনকার টিন-কাঠ-মাটি ও মানুষের সভ্যতার বেবধান অনেক । ১৯৭১ সালটা গ্রামের বাড়িতেই কাটে । আমাদের বাড়িতে মুক্তি যোদ্ধাদের অস্থায়ী ক্যাম্প থাকার সুবাদে সরাসরি যুদ্দ্বের শত শত গুলির আওয়াজ শুনেছি ,অস্ত্র দেখেছি , রাজাকার দেখেছি , পানিতে ভেসে আসা লাশ দেখেছি ।
তৃতীয় শ্রেণীর মাঝপর্যন্ত আমাদের গ্রামের প্রাইমারি স্কুলে যাই । আমাদের বাড়ি থেকে তিন থেকে চারশ মিটার দুরুত্ব । এর মাঝে রাস্তা একটু কাটা ছিল , ছোট একটা খালের মুখ ও ধান খেতের সংযোগস্থলে । বর্ষা কালে যতক্ষণ পর্যন্ত মুরুব্বিরা লুঙ্গি উচিয়ে যেতে পারত ততক্ষণ পর্যন্ত সাকো হতো না । আর এই সময়টা আমাদের লুঙ্গি / হাফ পেন্ট মাথায় করে পার হতে হতো । কি মজাই না পেতাম । কতবার যে বইগুলো ভিজিযেছি। ভিজা বই নিযে বাড়ি ফিরে দুই চারটা বকাও খেতে হয়েছে । একবার কাল বৈশাখিতে স্কুল ঘরটি ভেঙ্গে যায় । স্কুল এর পাশে বট গাছ তলায় বসে নামতা শিখা । আজ ও সেই নামটা দিয়েই বিদেশ-অফিসে সব অংক চেক করি ।
১৯৭২ সালে ঢাকায় এলাকার পাশের রাস্তায় একটা আধা পোড়া গাড়ি পড়ে ছিল । আমরা এলাকার সমবয়সী কয়েকজন ভাংগা সীটে বসে প্রায়ই steering ও accelerator নিয়ে খেলতাম । একদিন ঐ গাড়ির পাশে একটা লাশ দেখার পর আর ঐ গাড়িতে খেলা হয নি । এখন ড্রাইভিং সীটে বসলে প্রায়ই ওই গাড়িটির কথা মনে হয় । (অসমাপ্ত )
Related Articles
সুধাংশু তুই পালা
একটা ছোট পরিসংখ্যান দেই। বাংলাদেশে ১৯৪১ সালে হিন্দু জনসংখ্যা ছিল শতকরা ২৮ ভাগ। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের অব্যবহিত পরে তা
Foreign Secretaries meeting in New Delhi
There is a saying that one can choose friends but not neighbours. Bangladesh and India are neighbours and they cannot
মেলবোর্নে নতুন করোনায় ভীতসন্ত্রস্ত মুসলিম নেতারা
ফজলুল বারী: করোনা ভীতিতে শুধু সামাজিক পারিবারিক নয়, দেশে দেশের সম্পর্কও নতুন চেহারা নিচ্ছে! যেমন জাপান সহ কয়েকটি দেশে এখনই